30/09/2023
অবিসংবাদিত রাজনীতিবিদ পীর সাহেব চরমোনাই
------------- আমিনুল ইসলাম কাসেমী
বর্তমানে এদেশের রাজনীতিতে দুরদর্শি, প্রাজ্ঞ এবং অবিসংবাদিত রাজনীতিবিদ বলা যায় পীর সাহেব চরমোনাইকে।। অনেক দুরে যার দৃষ্টি। সুদুরপ্রসারী চিন্তা যার। রাজনীতিতে উদার এবং দিলখোলা ব্যক্তি তিনি। ইসলামী রাজনীতিবিদদের অন্যতম ব্যক্তি। অবশ্য শুধু ইসলামী রাজনীতিপাড়ার কথা বললে ভুল হবে। বর্তমানে এদেশের রাজনীতিতে তাঁর ব্যক্তি ইমেজ এবং তাঁর দলের যে গ্রহণযোগ্যতা তৈরী হয়েছে, তাতে জাতীয় রাজনীতির অন্যতম পুরোধা তিনি। রাজনীতি কী এবং কাকে বলে? সবকিছু যেন পীর সাহেবের রপ্ত করা। যেভাবে নিজের সংগঠন এবং দেশের রাজনীতির হাল ধরেছেন সেটা বিশ্লেষকদের হয়রান করে দিচ্ছে। নিজের সংগঠন এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তীব্র গতিতে। সেই সাথে দেশীয় রাজনীতিতে এক সুখকর অবস্হার আশা জাগানিয়া দেখা যাচ্ছে।
পীর সাহেব চরমোনাই এর সংগঠনের নাম "ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ "। নির্বাচনী প্রতীক " হাতপাখা"। সংগঠনের প্রতিষ্টাতা মরহুম সৈয়দ ফজলুল করীম ( পীর সাহেব চরমোনাই)। আশির দশকের শেষে এর যাত্রা। মুলতঃ কার্যকরি ভাবে নব্বই দশক থেকে শুরু। মরহুম পীর সাহেব ২০০৬ সন পর্যন্ত এর দায়িত্বে ছিলেন। প্রতিষ্টাকাল থেকে এ সংগঠন বহু চড়াই- উৎরাই পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে। সৈয়দ ফজলুল করীম ( রহঃ) এর অন্তর্ধানের পর দায়িত্বে আসেন বর্তমান পীর সৈয়দ রেজাউল করীম সাহেব। নায়েবে আমীর হিসাবে দায়িত্ব প্রাপ্ত হন সৈয়দ ফয়জুল করীম শায়েখে চরমোনাই।
আশির দশক বা নব্বই দশকে এ সংগঠনের যাত্রা শুরু হলেও এর দায়িত্বশীলদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং কঠোর পরিশ্রমে সংগঠনকে গোটা বাংলাদেশের আনাচে- কানাচে ছড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। দেশের এমন কোন জায়গা এখন বাকি নেই যেখানে চরমোনাই এর সংগঠন নেই। এমন কোন জেলা- উপজেলা, ইউনিয়ন পৌরসভা নেই যেখানে এখন হাতপাখার সমর্থক নেই।মানে সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে চরমোনাই তথা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর জয়গান। মানুষের মুখে মুখে এখন চরমোনাই এর পীরের কথা আর হাতপাখার গুঞ্জন।
অবশ্য এ অবস্হানের জন্য পীর সাহেব চরমোনাই এবং তাঁর দলের নেতা- কর্মিদের মোবারকবাদ জানাতে হয়। পীর সাহেবের হক ও হক্কানিয়্যাতের উপর কঠোর অবস্হান। হার না মানা এক মনিষা তিনি। বহু সমালোচনা এবং বাঁধার সম্মুখিন হতে হয়েছে তাদের। বহু ধরনের কথার যাঁতাকলে পিষ্ট হতে হয়েছে বারবার। সমালোচকগণ ওঁত পেতে থেকেছে সবসময়।বিশেষ করে ফেরাকে বাতেলার শ্যেন দৃষ্টি। তবুও পীর সাহেব চরমোনাই তাঁর নীতিতে অনড়। এভাবে বহু গ্লানি সহ্য করেছেন। অনেক মানুষের ষড়যন্ত্র এবং বাঁকাচোখ উপেক্ষা করে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেকে সঁপে দিয়েছেন। সকল সমালোচনাকে হজম করে হকের মিশন নিয়ে ছুটে চলেছেন দেশ থেকে দেশান্তরে।
রাজনীতিতে সকল পেশার মানুষকে নিয়ে সাথে চলতে হয়, সকল স্তরের মানুষকে বুকে টেনে নিতে হয়,সেটা যেন তাঁর ধ্যানজ্ঞানে। যে কারণে বহুমুখি সংগঠনের প্রবর্তক তিনি। ইসলাহী বা আত্মশুদ্ধির সংগঠনের সাথে সাথে রাজনৈতিক সংগঠন তৈরী করেন "ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ" নামে। আবার যুবকদের সাথে নেওয়ার জন্য "যুব আন্দোলন, শ্রমিকদের সাথে নেওয়ার জন্য "শ্রমিক আন্দোলন"। ছাত্রদের সাথে নিতে "ছাত্র আন্দোলন"। শিক্ষকদের সাথে নিতে "শিক্ষক ফোরাম"। এভাবে বহুমুখি পদক্ষেপ তাঁর।
সবচেয়ে বড় মজার বিষয় হল, এদেশের আলেম- উলামাদের এক প্লাট- ফরমে দাঁড় করাতে তিনি গঠন করেছেন, "জাতীয় উলামা মাশায়েখ ও আইম্মা পরিষদ" । এক যুগান্তকরি পদক্ষেপ। আর এ সংগঠন যেন মকবুলিয়্যাতের দরজায় চলে যাচ্ছে। বর্তমানে এ সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদে যুক্ত হয়েছেন দেশের সর্বোচ্চ ইসলামী বিদ্যাপীঠ হাটহাজারী মাদ্রাসার মোহতামিম সাহেব। আরো যুক্ত হয়েছেন এদেশের হাজারো আলেমের পীর অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান (পীর সাহেব দেওনা)। তাছাড়া দেশসেরা বহু উলামা- মাশায়েখ এখন চরমোনাই এর পীর সাহেবের এ সংগঠনের সাথে।
আলেমগণ যেদিকে যায় সেদিকেই সাধারণ জনতা ধাবিত হয়। তাছাড়া যে সংগঠনে ওলামাদের দুআ এবং ফুয়ুজ থাকবে সেটার গতি বেড়ে যাবে অনেক। দেশের শীর্ষ আলেম এবং বুজুর্গদের সংশ্লিষ্টতায় বহুদুর যাবে চরমোনাই এর পীর সাহেব এবং তাঁর সংগঠন।
মোটকথা যে ধারায় এবং যে কৌশলী ভুমিকায় এগিয়ে যাচ্ছেন চরমোনাই এর পীর, সেটা কোন সাধারণ ব্যক্তির কাজ নয়। অনেক বিজ্ঞ এবং প্রাজ্ঞ রাজনীতিবিদের কর্মযজ্ঞ সেটা।অতুলনীয় দৃষ্টিভঙ্গি এবং সৎ সাহসে সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। যাতে দৃষ্টি এবং দিল কেড়ে নিচ্ছে সবার। আসলে তিনি সাধারণ ব্যক্তি নন। এ যেন অসংবাদিত এক ব্যক্তিত্ব। রাজনীতির আকাশে উজ্জল তারকা। যেটা দিনে দিনে আলো ছড়াচ্ছে সর্বত্র।
আল্লাহতায়ালা পীর সাহেব চরমোনাই এবং তাঁর সংগঠনকে কবুল করুন। আমিন।
( শিক্ষক ও কলামিস্ট)