21/07/2025
নতুন কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য সতর্কবার্তা: ফেসবুকে ভিডিও আপলোডের আগে যা জানা জরুরি
বর্তমানে ফেসবুক শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি একটি বৃহৎ ভিডিও কনটেন্ট প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও পরিচিত। অনেক তরুণ-তরুণী এখন কনটেন্ট ক্রিয়েটর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে। কেউ হচ্ছে ইনফ্লুয়েন্সার, কেউ করছে ভিডিও ব্লগিং, কেউ আবার চালাচ্ছে ধর্মীয় বা শিক্ষামূলক পেজ। কিন্তু এই যাত্রায় অনেকেই অনিচ্ছাকৃত ভুলে পড়ে যাচ্ছে Facebook Community Standards–এর লঙ্ঘনে, যার ফলে ভিডিও রিমুভ, পেজ লক হওয়া এমনকি আইনি সমস্যার মুখোমুখি হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
🚫 কোন ধরনের ভিডিও আপলোড করা ফেসবুকে নিষিদ্ধ?
১. সহিংসতা ও রক্তপাতের দৃশ্য
যুদ্ধ, মারামারি, হত্যা, দুর্ঘটনার রক্তাক্ত ভিডিও।
প্রাণী নির্যাতনের দৃশ্য।
Facebook সরাসরি এসব ভিডিও সরিয়ে দেয় বা একাধিক রিপোর্ট পেলে পেজ বন্ধ করে।
২. শিশুদের অন্তর্ভুক্ত যৌন বা আপত্তিকর ভিডিও
কোনো শিশুকে যৌন দৃষ্টিতে উপস্থাপন করলে তা শুধু নিষিদ্ধই নয়, আইনি অপরাধ।
এমন ভিডিও আপলোড বা শেয়ার করলেই ফেসবুক রিপোর্ট করে এবং আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।
৩. হেট স্পিচ ও ধর্মীয় বিদ্বেষ
কোনো জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, ভাষা বা সম্প্রদায়কে কটাক্ষ করা ভিডিও।
ভিডিওতে কাউকে "কুৎসিত", "জঘন্য", "অযোগ্য" ইত্যাদি বলে অপমান করাও হেট স্পিচের মধ্যে পড়ে।
৪. Deepfake ও ভুয়া তথ্যযুক্ত ভিডিও
AI বা সফটওয়্যার দিয়ে বানানো এমন ভিডিও যা কাউকে ভুলভাবে উপস্থাপন করে।
রাজনৈতিক বা ধর্মীয় নেতাদের কণ্ঠ নকল করে ভিডিও বানানো গুরুতর অপরাধ।
৫. অনুমতি ছাড়া ব্যক্তিগত ছবি ও ভিডিও প্রকাশ
কারো ব্যক্তিগত ভিডিও বা কথোপকথন, এমনকি সিসিটিভি ফুটেজও অনুমতি ছাড়া শেয়ার করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
নতুন কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের জন্য সতর্কবার্তা
নিজস্ব ভিডিও বানান:
যতটা সম্ভব নিজের বানানো ভিডিও আপলোড করুন। অন্যের ভিডিও ডাউনলোড করে ব্যবহার করলে Unoriginal Content Violation হতে পারে।
ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিকও হতে পারে কপিরাইটেড!
YouTube বা TikTok থেকে নেওয়া গান বা সাউন্ড অনেক সময় ফেসবুক কপিরাইট ধরতে পারে। তাই ‘copyright-free’ music ব্যবহার করুন।
Facebook Reels ও Watch–এ মনিটাইজ করতে চাইলে:
1 মিনিটের বেশি দৈর্ঘ্য রাখতে হবে।
Original content হতে হবে।
Community Guidelines–এর বিরুদ্ধে কিছু থাকতে পারবে না।
ভিডিওতে অশ্লীল ভাষা বা ইঙ্গিত পরিহার করুন:
শুধু কথা নয়, ভিডিওর থাম্বনেই যদি এমন কিছু থাকে যা “শালীনতা বহির্ভূত”, তাহলে সেটিও সীমিত করে দেওয়া হয়।
বাস্তব অভিজ্ঞতা:
একজন নতুন কনটেন্ট ক্রিয়েটর ফেসবুকে প্রতিদিন ভিডিও আপলোড করতেন। বিষয় ছিল ধর্মীয় কনটেন্ট। হঠাৎ একদিন তার পেজ “Limited Originality” নামে একটি নোটিশ দেয়। তদন্ত করে দেখা যায়, ভিডিওর একাংশ অন্য একটি ইউটিউব চ্যানেল থেকে কাটা হয়েছে। এতে তার ২ মাসের মনিটাইজেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়।
শেষ কথা:
নতুন কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের উচিত—
ভিডিও আপলোডের আগে অন্তত একবার Facebook–এর কমিউনিটি স্ট্যান্ডার্ড পড়া।
নিজে তৈরি না করলে সেই ভিডিও ব্যবহার না করা।
কপিরাইট, গোপনীয়তা ও নীতিমালার বিষয়ে সচেতন থাকা।
কনটেন্ট তৈরি মানে শুধু ক্যামেরা চালানো নয়, এটি একটি দায়িত্বশীল পেশা — যেখানে নিজের কনটেন্টে সত্য, সৌন্দর্য ও সততা থাকতে হবে।