26/04/2025
শিমলা চুক্তি বাতিল: কাশ্মীরের জন্য আশাবাদ, বাংলাদেশের জন্য শিক্ষা
পাকিস্তান সম্প্রতি ঐতিহাসিক শিমলা চুক্তি (1972) বাতিল করেছে। অনেকেই বুঝে না বুঝে হইচই শুরু করেছে, কিন্তু সময় এসেছে সত্যিটা বিশ্লেষণ করার।
১. শিমলা চুক্তি আসলে কী ছিল?
১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে। তখন পাকিস্তানি বাহিনী ভারতীয় সেনা ও বাংলাদেশি মুক্তিবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে। বাংলাদেশ থেকে আত্মসমর্পণ করা ৯০ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য ভারত বন্দি করে রাখে।
এই বিপুল সংখ্যক বন্দির বিনিময়ে ভারত ১৯৭২ সালে পাকিস্তানের সাথে 'শিমলা চুক্তি' করে। এতে ভারত পাকিস্তানকে দয়া করে ক্ষমা করে দেয় এবং বন্দিদের ফেরত পাঠায়। বিনিময়ে পাকিস্তান কাশ্মীর ইস্যু আন্তর্জাতিক ফোরামে না তুলার অঙ্গীকার করে, এবং ভারত তা ব্যবহার করে কাশ্মীরকে কার্যত স্থায়ীভাবে দখল করে নেয়।
মানে, বাংলাদেশের কাধের উপর বন্দুক রেখে কাশ্মীর দখল করে নেয়া হয় পাকিস্তানের কাছ থেকে।
২. বাংলাদেশের এখানে ভূমিকা কী ছিল?
এই চুক্তিতে বাংলাদেশের কোনো অংশগ্রহণ ছিল না। অথচ পাকিস্তান আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল, আমাদের লাখো মানুষ শহীদ হয়েছিল, মা-বোনদের ইজ্জত হারিয়েছিল, দেশ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল—তার বিচার না চেয়ে ভারত বরং পাকিস্তানের সাথে "বন্ধুত্ব" চুক্তি করে।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে ভারত কৌশলে ব্যবহার করেছে নিজের আঞ্চলিক রাজনৈতিক ও ভূকৌশলগত স্বার্থে।
৩. চুক্তি বাতিলের তাৎপর্য কী?
শিমলা চুক্তি ভাঙার মাধ্যমে পাকিস্তান এখন কাশ্মীর ইস্যুতে নতুন করে আন্তর্জাতিক চাপ তৈরি করতে পারবে। কাশ্মীরিদের জন্য এটি ইতিবাচক বার্তা।
তবে কেউ কেউ অযথা বাংলাদেশের নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়ছে, যেন পাকিস্তান আবার আমাদের দাবী করে বসবে! এটি ভিত্তিহীন ভয়। পাকিস্তান কৌশলে ভারতের ওপর চাপ বাড়াতে এমন বার্তা দিতে পারে, তবে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের জন্য এর কোনো বাস্তব হুমকি নেই।
৪. শিক্ষণীয় দিক
শিমলা চুক্তির মাধ্যমে ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই নিজেদের স্বার্থ দেখেছে, আর সবচেয়ে বড় ব্যবহার হয়েছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে।
আজকের দিনে আমাদের দরকার ইতিহাস থেকে শিক্ষা নেয়া—যেন আর কেউ আমাদের রক্ত, আত্মত্যাগ আর সংগ্রামকে ব্যবহার করে নিজেদের রাজনীতি চালাতে না পারে।
মানে মুক্তিযুদ্ধের যে চেতনার ব্যবসা,
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে সর্বপ্রথম ব্যবসা শুরু করেছিল ভারত।