02/09/2024
স্বামী মা*রা যাওয়ার একমাসের মাথায় উপায় না পেয়ে চার বছরের ছোট মেয়েটাকে নিয়ে যেদিন ছোট বোনের বাসায় উঠেছিলাম সেদিন না বুঝতে পারলেও আন্দাজ করতে পেরেছিলাম আমার এই আগমনে আমার ছোটবোন বা তার স্বামী দুজনের কেউই খুশি হয়নি।কিন্তু আমি যে নিরুপায় ছিলাম,না ছিলো বাবা-মা,না ছিলো কোন ভাই।দু-কুলে থাকার জন্য শুধু ছোট বোনটাই ছিলো।তাই বাধ্য হয়ে তার বাড়িতেই এসে ঠাঁই নিতে হলো।
বোনের বাড়িতে উঠেছি প্রায় সপ্তাহখানেক হবে।খেয়াল করে দেখলাম বোনটা আমাকে আর আগের মতো আপু আপু বলে ডাকেনা,আমার সাথে আগের মতো নরম স্বরে কথা বলেনা।বাড়ির কাজগুলো থেকেও কেমন যেন নিজেকে সরিয়ে নিয়েছে সে।বুঝতে পারলাম সে আমার আপন বোন হলেও আমার এভাবে আগমনে সে মোটেও খুশি নয়।কিন্তু সব বুঝতে পারলেও কিছু বললাম না,চুপচাপ ঘরের কাজ করে মেয়েটাকে নিয়ে বাড়ির এককোণে পড়ে থাকতাম।কারণ আমার যে যাওয়ার আর কোন জায়গা নেই,এই ছোট বাচ্চা মেয়েটাকে নিয়ে কোথায় যাবো আমি।তাই মুখ বুজে বোনের বাড়িতেই পড়ে রইলাম।
একদিন রাতে থালাবাসন ধুঁয়ে রুমে আসার সময় বোনের রুম থেকে কিছু কথা কানে এসে লাগলো।বুঝলাম তারা আমাকে নিয়েই কথা বলছে।শোনাটা ঠিক হবেনা তাও অবাধ্য মন তো মানেনা,তাই দরকার কাছে দাঁড়িয়ে শুনতে লাগলাম তাদের কথা।
" নীলা,তোমার বোন এই বাড়ি থেকে কবে যাবে বলো তো?কতদিন হয়ে গেলো এখনো এখানেই পড়ে আছে।তোমার বোনের জন্য এখন বাড়িতে থাকতেও অস্বস্তি হয়।আর তোমার বোন আমাদের বাড়িতে আছে যার কারণে মিতু তার স্বামীকে নিয়ে আমাদের বাড়িতেও আসতে পারছেনা।মিতুর শশুড়বাড়ির লোকেরা যদি এই কথাটা জানে তারা কি মনে করবে বুঝতে পারছো।"
" আ.....মিতুল আস্তে কথা বলো,আপু শুনতে পাবে।আর আমারো কি ভালো লাগছে বলো।কোথাও বের হলে,কিছু করলে বারবার তাকে কৈফিয়ত দিতে হয়।তার উপর আমার সব জিনিসও তাকে ব্যবহার করার জন্য দিতে হয়।"
" যত্তসব উটকো ঝামেলা।স্বামী ম*রেছে তাই বলে কি বোনের বাড়িতে এসে উঠবে?শশুর বাড়ির কারো গলায় গিয়ে ঝুলতে পারেনি?পাড়াপ্রতিবেশিরা কি বলবে।তুমি তোমার বোনকে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজের ব্যবস্থা করতে বলে দাও।"
" আরে এভাবে কি ধুম করে মুখের উপর চলে যেতে বলা যায় নাকি?কেউ জানলে তো আমাদেরই দোষ দেবে।না পারছি গিলতে আর না পারছি সইতে।"
" ধুর যত্তসব ঝামেলা আমার ঘাড়েই এসে ঝুলে।"
এসব আর কিছু শুনলে পেলাম না আমি,হয়তো দুজনে ঘুমিয়ে পড়েছে।খেয়াল করে দেখলাম চোখ থেকে পানি পড়ছে।চোখের পানিটা মুঁছে মুখে হাসি বজায় রেখে ঘরে