
04/06/2025
"চেঙ্গী নদীর গর্ভে গিলে যাচ্ছে জীবন: পল্টন জয় পাড়ার কান্না কি কেউ শুনবে?"
খাগড়াছড়ির চেঙ্গী নদী আর কিছুই কাড়ছে না—সে কেড়ে নিচ্ছে একেকজন মানুষের জীবনের পথ, সম্ভাবনা আর স্বপ্ন।
সদর উপজেলার ২৬৫ নম্বর বাঙ্গালকাটি মৌজার পল্টন জয় পাড়া গ্রাম যেন আজ এক নিঃসঙ্গ দ্বীপ—চলাচলের রাস্তাঘাট নেই, আছে শুধু নদীভাঙনের দগদগে ক্ষত আর থমকে যাওয়া মানুষের জীবন।
প্রতিবছর বর্ষা এলেই গৌরাঙ্গ ত্রিপুরার জমির একাংশ চেঙ্গী নদীর পেটে চলে যায়। শুধু তার জমিই নয়, হারিয়ে যাচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক চলাচলের পথ, স্কুলে যাওয়ার সড়ক, ক্লিনিকে পৌঁছার একমাত্র সহজ রাস্তাটি। এ পথ দিয়ে প্রতিদিন হাঁটত সিয়াই হারুম উচ্চ বিদ্যালয়ের শতশত শিক্ষার্থী, রোগী নিয়ে যাওয়া হতো খামার পাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে, কৃষকেরা ফসল নিয়ে যেত বাজারে। এখন সেই পথ কেবল স্মৃতি।
বর্ষাকালে নদীর পানি বাড়লেই এই এলাকার মানুষ পড়ে যায় চরম বিপদে। না আছে সেতু, না আছে নৌকার সহজ ব্যবস্থা। তখন বুক কাঁপানো ভয় নিয়ে নদী পাড়ি দিতে হয়—কে বাঁচবে, কে হারিয়ে যাবে, কেউ জানে না। স্থানীয়দের কণ্ঠে শোনা যায় করুণ স্মৃতি—“এই ঘাটেই এক সময় প্রাণ গেছে আমাদের আপনজনের। এখনো চোখে ভাসে।”
উত্তরের লার্মা পাড়া, বানতৈসা, চেলাছড়া, মায়ুং কপাল—এইসব পাড়ার মানুষ প্রতিদিন যাতায়াত করত যে রাস্তায়, আজ সেখানে কেবল নদীর জল আর নীরব কান্না।
সবচেয়ে কষ্টের বিষয়, পাশের ধর্মপুর এলাকায় ব্লক বসানো হলেও পল্টন জয় পাড়া এখনও অবহেলিত। এলাকার মানুষ বলে—"বাসন্তী চাকমা ম্যাডামের সময় ধর্মপুরে ব্লক বসেছিল, কিন্তু আমাদের দিকে কেউ ফিরে তাকায়নি। আমরা কি মানুষের মত মানুষ না?"
---
আমাদের দাবি, আমাদের আর্তনাদ:
🔹 চেঙ্গী নদীর পাড়ে দ্রুত ব্লক বসিয়ে ভাঙন ঠেকাতে হবে
🔹 পল্টন জয় পাড়া ঘাটে স্থায়ী সেতু নির্মাণ করতে হবে
🔹 বছরের পর বছর অবহেলায় থাকা এই জনপদের প্রতি প্রশাসনের মানবিক দৃষ্টি চাই
---
আজ যদি এই অসহায়তার ছবি না ছড়ায়, কাল হয়তো আরও একটি ঘর হারাবে জমি, আরও একটি শিশু থেমে যাবে স্কুলের পথে, আরও একটি জীবন থমকে যাবে নদীর পাড়ে।
প্লিজ, এগিয়ে আসুন। শোনান এই জনপদের কথা। যাতে বর্ষার ঢেউ না হয় আর কারো শেষ কান্না।
Deputy Commissioner Khagrachari
Deputydirector Khagrachari
Deputy Civil Surgeon Khagrachari
📸 ছবি: Tripura Pintu
📝 প্রতিবেদন:Beni Madov Tripura