07/08/2025
# # # **গল্পের নাম: নিশির বাঁশির সুর**
বাংলার এক প্রত্যন্ত গ্রাম—নাম **চাঁদপুর কালীপুর**। চারদিকে ধানক্ষেত, কুয়াশা ঢাকা মেঠোপথ, আর মাঝখানে একটা পুরনো, পরিত্যক্ত জমিদার বাড়ি। লোকমুখে শোনা যায়, সেই জমিদার বাড়িতে নাকি **নিশির ভূত** বাস করে।
গ্রামের বয়স্করা বলে—“জমিদার হরিশচন্দ্রের একমাত্র মেয়ে ছিল রূপসী। হঠাৎ করেই সে এক রাতে হারিয়ে যায়। তারপর থেকে প্রতি অমাবস্যার রাতে কেউ একজন বাঁশি বাজায়, ঠিক মাঝরাতে। বাঁশির সুরে যার কানে পৌঁছায়, সে আর সকালে ফিরতে পারে না!”
মাঝে মাঝে গ্রামের কিছু কুকুর রাতে হাউকাউ করে ওঠে, বাঁশির সুরও শোনা যায় দুর থেকে। অনেকেই বলে—ওই সুরে এক মায়াবী টান আছে, পা চালিয়ে নিয়ে যায় সেই পুরনো বাড়ির দিকে। একবার গেলেই ফিরে আসা দায়।
একদিন শহর থেকে আসা এক তরুণ সাংবাদিক—**সুমন**, সেই গল্পের সত্যতা যাচাই করতে আসে। তার হাতে ক্যামেরা, রেকর্ডার আর বুকভরা সাহস। সে ঠিক করে, পুরনো বাড়িতে রাত কাটাবে।
রাত বারোটার সময়, হঠাৎ চারপাশ নিস্তব্ধ হয়ে গেল। তখনই ভেসে এল মৃদু বাঁশির সুর—মন কেমন করে দেওয়া এক সুর, যেন কারও কান্না আর আর্তনাদের মিশেল। সুমনের চোখ অজান্তেই ঝাপসা হয়ে আসে। সে হাঁটতে শুরু করে, পা যেন নিজের ইচ্ছেতেই চলে যায় সেই পুরনো বাড়ির দিকে।
বাড়ির দরজাটা খোলা। ভিতরে ঢুকেই সে দেখে—একটা সাদা শাড়ি পরা মেয়ে, মুখ ঝুলে পড়া, পা মাটি ছুঁয়েই না। হঠাৎ ঘরভর্তি ঠান্ডা বাতাস, আর সেই মেয়েটি মুখ তুলে তাকায়—চোখ নেই, শুধু শূন্য গহ্বর।
সুমনের ক্যামেরা হাত থেকে পড়ে যায়, আলো নিভে যায়, আর রেকর্ডারে শেষ শব্দ ছিল—
**"আমার বাঁশির সুরে আর কেউ না আসুক..."**
পরদিন সকালে গ্রামের লোকজন এসে দেখে, সুমনের রেকর্ডার পড়ে আছে, কিন্তু সে নেই। জমিদার বাড়ির ভিতর শুধুই নিস্তব্ধতা। শুধু একটি বাতাসে ভেসে আসা সুর—
**“তুমি না এলে ভালোই হতো...”**
---
**শেষ।**