07/11/2025
সুদানে চরম নিষ্ঠুরতা। আন্তর্জাতিক মিডিয়া চুপ!
পৃথিবীর এক একটা গণ হত্য া র বিবরণ লিখতে গেলে মনে হয় নিজেই নিজেরই মৃ*ত আত্মা দিয়ে অনুভূতিগুলো লিখছি।
পৃথিবীতে যেন দেশে দেশে গণ হ ত্য ার মহোৎসব চলছে। তার কোনটা আমরা একটু-অর্ধেক জানি, আবার কোনটা একটা বিশাল সময় ধরে আমাদের জানার বাইরে থেকে যায় বা আমাদের চোখের সামনেই ঘটে আমরা থাকি নিশ্চুপ। যখন জানি তখন অনেক কিছুই শেষ হয়ে যায়।
তার একটার নাম হলো সুদান। আপনারা জানেন যে সুদানে ক্ষমতা ভোগ দখলের লড়াই আজকের না। একের পর এক ক্ষমতা লোভিরা আসে আর অন্য পক্ষে তৈরি থাকে গণ হত্য ার কারিগররা।
সুদানের দারফুর অঞ্চলের ( দারফুর হচ্ছে সুদানের একটি অঞ্চল। কয়েকশ বছর ধরে এখানে সুলতানাতের শাসন বিদ্যমান। অঞ্চলটি তিনটি স্বায়ত্বশাসিত প্রদেশ নিয়ে গঠিত। এই তিনটি প্রদেশ হচ্ছে: পশ্চিম দারফুর, দক্ষিণ দারফুর, এবং উত্তর দারফুর; এবং এগুলো ট্রাঞ্জিশনাল দারফুর রিজিওনাল অথরিটি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। - উইকিপিডিয়া ) আল ফাশের শহর মিলিশিয়া বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্স (আরএসএফ) বহুদিন ধরে আধিপত্য বিরাজ করে চারিদিক ঘেরাও করে রেখেছিল।
তারপর এই রাক্ষুসের দল করেছে কী অঞ্চলটিতে ঢুকে পড়ে রিসেন্টলি। ঢুকে তো বসে থাকে নি। শুরু করেছে সুদানের নিরীহ মানুষ হত্ ্যা যজ্ঞ যা গণ হ ত্যা য় পর্যাবেশিত হয়। যাকে বলা যায় এক নরকীয় লোমহর্ষক নিষ্ঠুরতা।
জানা গেছে সেখানে একটা হাসপাতালে এই নরপিসাচরা ঢুকে পড়ে পাঁচশো মানুষ হ*ত্যা করে ফেলেছে। যাকে পেয়েছে তাকেই মেরেছে।
এত নিষ্ঠুর বর্বরতা, এত জাহেলি নির্যাতন, গণ হ ত্য া আমরা গা*জাতেও দেখেছি। এটা যেন তারই এক রূপরেখা আরো ভয়ংকরভাবে ঘটেছে।
তাহলে কেন এই অমানুষিক বর্বরতা? পৃথিবীর ভয়ংকরতম গণ হত্য া কেন?
এর মূলে তো রয়েছে যুগ যুগের অনৈতিক লড়াইয়ের ইতিহাস।
তবে বর্তমানে এই যুদ্ধে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এসএএফ এবং মিলিশিয়া বাহিনী আরএসএফ দেশেটির নিয়ন্ত্রণের ধরে রাখতে অবিরাম লড়ে যাচ্ছে।
আর এসবের মূলে রয়েছে সুদানের বিপুল প্রাকৃতিক সম্পদ ও সোনার খনি।
গা*জায় যেমন হি স রা ইলে র দখলদার শয়তান মোড়লের আস্ফালনে সবকিছু শেষ করে দিয়েছে বেশিরভাগ বেইমান মুসলিম বিশ্ব মুখে কুলুপ এঁটে ছিল ঠিক তেমনই হয়েছে সুদানেও।
যদিও সুদানে চলছে নিজেদের মধ্যকার লড়াই।
আন্তর্জাতিকভাবে অভিযোগ উঠেছে এই গণ হ ত্য া র সব মাল-মশলা আরব আমিরাত জোগান দিচ্ছে। কারণ কী তা তো জানা গেছে। স্বর্ণ হরণ।
সুদানের মিলিশিয়া বাহিনী আরএসএফ যে জঘন্যতম গণ হত্য া করে সুদানের সাধারণ মানুষকে শেষ করে ফেলতেছে তার সব অস্ত্র ও অর্থের জোগান আরব আমিরাতের দুবাইয়ের শেখ দিতেছে বলে আন্তর্জাতিকভাবে অভিযোগ উঠেছে।
আর এই আরএসএফ দুবাইয়ের আমিরকে তুলে দিচ্ছে ভুরি ভুরি সোনা। কথা উঠেছে ইউএই হলো গিয়ে আরএসএফ-এর ঘনিষ্ঠ মিত্র বা ইউএইর ভাড়া করা গুণ্ডা হলো আরএসএফ।
আর এই আরএসএফ সুদানে তাদের নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলো থেকে সোনা তুলে ইউএইকে পাঠিয়ে দিচ্ছে। আর ইউএই ওদের টাকা ও অস্ত্র দিচ্ছে। এই তথ্য এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত।
সংক্ষিপ্ত ইতিহাস:
২০১৯ সালে এক বিপ্লবের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশির ক্ষমতাচ্যুত হন।
এরপর সুদানের সশস্ত্র বাহিনী এসএএফ এবং মিলিশিয়া বাহিনী আরএসএফ মিলে একটা জোট গঠন করেছিল।
পরে এই দুই দল একে অন্যের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে।
আরএসএফ হলো ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট ওমর আল-বশিরের গড়ে তোলা বাহিনী।
২০২৩ সাল থেকে ব্যাপক যুদ্ধ হয়ে যায়।
এরপর থেকে অসংখ্য মানুষ ভিটে ছাড়া হয়েছে। হ ত্য া করা হয়েছে।
তবে কিছুদিন ধরে যে গণ হ ত্য া চলছে তা নৃশংসতার এক জ্বলন্ত বাস্তবতা। যা দেখার যেন কেউ নেই। গণ হ ত্য া করে র*ক্ত এমনভাবে বিছিয়ে ছিল যা মহাকাশের ক্যামেরায় পযর্ন্ত ধরা পড়েছে।
ছোট ছোট বাচ্চাদের ধরে আরএসএফের হ ত্য াকারীরা বুকে গু*লি করে মাটিতে লূটিয়ে দিচ্ছে আর ঐ ছোট শিশুগুলো তখন আল্লাহ ডেকে সুরা পড়ে হ ত্য া কারীদের কাছে জীবন ভিক্ষা চাচ্ছিল এই ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায় যা চোখে দেখার মতো না।
শোনা গেছে তুরস্ক নাকি এই নরকীয়তা বন্ধে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে ও আরএসএফের গতিপথ রোধের চেষ্টা করছে। এদিকে নাকি যুক্তরাষ্ট্র ইউএইর সঙ্গে একটা যুক্তি করার চেষ্টা করতেছে।
পৃথিবীটা একটা নৃশংস হ ত্য া কাণ্ডের মঞ্চ হয়ে গেছে। যে মঞ্চে যেকোনো সময়ে যে কোনো দেশে গণ হ ত্য ার ঘটনা মঞ্চায়িত হবে।
সুদানের ঘটনা আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় এতটা তুলে ধরা হয় নি। আমরা যতটুকু পারি যেন তুলি ধরি আল্লাহ যেন সুদানের নিরীহ মানুষের রক্ষা করেন।
আল্লাহ আপনাদের সুস্থ রাখুন।
কাজী হালিমা আফরীন
টরন্টো, কানাডা।