05/09/2024
*🏣বিদ্যুৎ বিলের ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া নিয়ে কনফিউশন দূর করুন।*
*👉ডিমান্ড চার্জ কি, কারা নির্ধারন করেঃ-*
যখন কোন একজন গ্রাহক বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে মিটারের জন্য আবেদন করে, তখন উক্ত গ্রাহকের ব্যবহার সীমা কতটুকু হবে, তা উল্লেখ করে তাকে ফর্মে অঙ্গীকার/স্বাক্ষর দিতে হয়। যেমন, কোন গ্রাহক যদি বলে তার ২ কিঃওঃ (কিলোওয়াট) লাগবে। তার মানে উক্ত গ্রাহকের সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ব্যবহার সীমা ২কিঃওঃ। এই ২ কিঃ ওঃ হলো তার চুক্তিবদ্ধ লোড। এই সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ ব্যবহারের সীমা বা চুক্তিবদ্ধ লোডের উপর যে চার্জ ধার্য করা হয় তাকেই ডিমান্ড চার্জ বলা হয়।
গ্রাহকের সেই চুক্তিবদ্ধ লোড সরবরাহ করার জন্য বিদ্যুৎ বিতরণকারী সকল প্রতিষ্ঠান প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, মালামাল সহ যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে উক্ত গ্রাহকের সরবরাহ নিশ্চিত করে থাকে। যেমন, ট্রান্সফরমার, খুঁটি, তার ইত্যাদি। এসব যন্ত্রপাতি ও মালামালের টাকা যেমন সরকার বহন করে, তেমনি ডিমান্ড চার্জের মাধ্যমে এই টাকা সরকার আবার ফেরতও নেয়। ০১ টি সার্ভিস পোলের লাইন নির্মান করতে ২৭০০০ টাকা, সিংগেল ফেজ এইচটি-৪৮০০০ টাকা, ৩ ফেজ এইচটি লাইনের দাম ৬৩০০০ টাকা।যা গ্রাহকদের বিনামূল্যে সরবরাহ করা হয়।এখন ডিমান্ড চার্জ না দিলে এই টাকা একেবারে দেওয়া লাগবে তখন অনেকেই সংযোগ ই নিতে পারবেনা।
ডিমান্ড চার্জ কেউ চাইলে নিজের ইচ্ছামত ধার্য করতে পারে না। ইহা নির্ধারণ করে দেয় সরকারি সংস্থা Bangladesh Energy Regulatory Commission (BERC). বিদ্যুৎ সংক্রান্ত বেচা, কেনা, উৎপাদন, বিতরন, জরিমানা, ভর্তুকি, বিলের রেট, ডিমান্ড চার্জ, ভ্যাট সব কিছু নির্ধারণ করে দেয় এই BERC.
যেমন- আবাসিক, সেচ-কৃষি কাজের গ্রাহকদের জন্য ডিমান্ড চার্জ প্রতি কিলোওয়াট ৪২ টাকা, বানিজ্যিক বিপণনের জন্য ৯০ টাকা ইত্যাদি ধার্য করে দিয়েছে BERC. উক্ত ডিমান্ড চার্জ ও ব্যবহৃত বিদ্যুৎ খরচের উপরই মোট বিল হিসাব করা হয়। এই টাকা সরকারি রাজস্ব খাতে জমা হয়। কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই টাকার মালিক না।
*👉মিটার ভাড়া কি ও কেন?*
পল্লী বিদ্যুৎ বেশিরভাগই গ্রামীণ মানুষকে বিদ্যুৎ সেবা দিয়ে থাকে। যাদের অধিকাংশ সচ্ছল না। একটি ১ ফেইজ মিটারের দাম ১২০০/১৫০০ টাকা। অনেক গ্রাহকের উক্ত টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ নেয়ার মতো সাধ্য নাই ফলে ১০ টাকা মাস প্রতি নিয়ে থাকে। একটি মিটারের আয়ু সচরাচর ১০ বছর।তাহলে ১০ বছর x ১২ মাস x ১০ টাকা = ১২০০ টাকা। তবে মিটার বেশিরভাগই ১০ বছরের আগেই নষ্ট হয়ে যায়।এমনকি ১০ দিন কিংবা ১ মাসেও নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তখন গ্রাহককে বিনামূল্যে পুনরায় নতুন মিটার দেওয়া হয়। প্রতি মাসে ১০ টাকা গ্রাহক স্বার্থেই করা হয়, যাতে গ্রাহক সুবিধা পায়। কিন্তু, কোন গ্রাহক যদি নিজে মিটার কিনে নেয়, তবে তাকে মিটার ভাড়া দিতে হয় না। এক্ষেত্রে যদি মিটার নষ্ট হয়ে যায় তবে গ্রাহককে আবার টাকা দিয়ে কিনতে হবে।
১০ বছর পরেও কি মিটার ভাড়া চলতেই থাকবে? উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ। কারণ, ১ মাস পরেও যদি কোন গ্রাহকের মিটার নষ্ট হয়, তখন যেহেতু কোন টাকা নেওয়া হয় না, তাই ১০ বছর পরেও যদি মিটার ভালো থাকে, মিটার ভাড়া চলতেই থাকবে।
আরো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড এর আওতাধীন পবিসসমূহ ৬.২৩ টাকা রেটে বিদ্যুৎ ক্রয় করে থাকে। কিন্তু, গ্রামের আবাসিক গ্রাহকদেরকে ০-৫০ ও ০-৭৫ ইউনিটের দাম নিচ্ছে ৪.৬৩ ও ৫.২৬ টাকা রেটে। পল্লী বিদ্যুতায়নের আওতায় মোট গ্রাহক ৩ কোটি ২৫ লক্ষ। ৭৫ ইউনিটের নিচে ব্যবহারকারী গ্রাহক রয়েছে প্রায় ২.৫ কোটি। এই বিরাট সংখ্যক গ্রাহকদেরকে ক্রয়মূল্যের চেয়ে কম দামে বিদ্যুৎ দিচ্ছে তাদের সুবিধার জন্য।
সঠিক তথ্য জানুন, সঠিক তথ্য জানিয়ে দিন অন্যদের। বিদ্যুৎ বিলের ডিমান্ড চার্জ ও মিটার ভাড়া নিয়ে কনফিউশন দূর করুন।