08/08/2025
গরু পালনের উপকারিতা
গরু পালন একটি লাভজনক ও বহুমুখী উপকারিতাসম্পন্ন কার্যকলাপ। এটি শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই নয়, বরং পুষ্টি, কৃষি এবং সামাজিক উন্নয়নের দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গরু পালন করে কৃষকরা দুধ, মাংস, বাছুর ও গোবরের মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করতে পারে। বিশেষ করে ঈদুল আযহার সময় কোরবানির জন্য গরু বিক্রি করে অনেকে মোটা অংকের আয় করে থাকে।
গরুর দুধ একটি পুষ্টিকর খাদ্য, যাতে ক্যালসিয়াম, প্রোটিন এবং নানা ধরনের ভিটামিন থাকে। দুধ থেকে তৈরি করা যায় ঘি, মাখন, দই, ছানা ইত্যাদি, যা ঘরোয়া পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বিক্রয়ের মাধ্যমেও আয় করা সম্ভব। এছাড়াও গরুর গোবর ও মূত্র থেকে তৈরি জৈব সার কৃষি জমিতে ব্যবহার করে মাটির উর্বরতা বাড়ানো যায়, যা রাসায়নিক সারের পরিবেশবান্ধব বিকল্প।
কৃষিকাজে গরুর ব্যবহারও কম নয়। দেশি গরু দিয়ে হালচাষ, মাল টানা ইত্যাদি কাজে সহায়তা পাওয়া যায়, ফলে যান্ত্রিক নির্ভরতা কমে এবং খরচও সাশ্রয় হয়। গরু পালন করে উন্নত জাতের গরুর প্রজনন সম্ভব, যা পশুসম্পদের মান বৃদ্ধিতে সহায়ক। পাশাপাশি গরু পালন অনেকের জন্য আত্মকর্মসংস্থানের পথ খুলে দেয়। দুধ প্রক্রিয়াজাতকরণ, পশুখাদ্য উৎপাদন, পশু চিকিৎসা ইত্যাদি পেশায় নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়।
পরিবারের পুষ্টি নিশ্চিত করার দিক থেকেও গরু পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দুধ ও দুধজাত পণ্য সহজলভ্য হওয়ায় পুষ্টির ঘাটতি কমে। বাছুর বড় হলে বিক্রি করে বাড়তি আয় করা যায় এবং প্রজননের মাধ্যমে গবাদিপশুর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ানো সম্ভব হয়।
সব মিলিয়ে বলা যায়, গরু পালন শুধু একটি ব্যবসা নয়, এটি দেশের অর্থনীতি, পুষ্টি, কৃষি ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। সঠিক পরিকল্পনা ও যত্নের মাধ্যমে গরু পালন করে একজন মানুষ স্বাবলম্বী হয়ে উঠতে পারে।