26/05/2025
পিচ্চি রাগী বউ
পর্ব:-২
বর্ষা ভাবছে রিপনের দেয়া সারপ্রাইজ টা আসলে ঠিক কি হতে পারে যার জন্য রিপন আজকে এতো খুশি,ওর মুখ দেখেতো মনে হচ্ছে ওর জীবনে ভালো কিছু ঘটেছে যার জন্য ও আমাকে সারপ্রাইজ দিতে চায়,কিন্তু ওর দেয়া সারপ্রাইজ টা কি আমি সহ্য করতে পারবো,এসব ভাবতে ভাবতে বর্ষা আনমনা হয়ে বাইরে থাকিয়ে থাকে,
এদিকে রিপন বার বার হরন বাজিয়ে যাচ্ছে সেদিকে বর্ষার কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই সে তার ভাবনায় মগ্ন হয়ে আছে।
রিপন বুঝতে পারে বর্ষা কোনো ব্যাপার নিয়ে ভীষণ চিন্তায় আছে তাই রিপন বর্ষাকে আলতো করে একটা ধাক্কা মারে,
রিপন:-কিরে বর্ষা অনেক্ষন হলো ভার্সিটি তে এসেছি,সেই কখন থেকে হরন দিয়েই যাচ্ছি তুই কি কিছুই শুনতে পাসনা নাকি,কি এমন ভাবছিস যে এতো জুড়ে হরন দিচ্ছি তাও সেটা তোর কানে যাচ্ছে না।
বর্ষা:-না কিছু না এমনি কিছু ভালো লাগছে না।
রিপন:-তো আমি কি গাড়িটা ব্যাক করে বাসায় নিয়ে যাবো, তোর যখন ভালো লাগছে না থাক আজ আর ক্লাস করার দরকার নেই।
বর্ষা:-সেটা কিভাবে হয় ভার্সিটি তে এসে ক্লাস না করেই চলে যাবো। একটু কষ্ট করে ক্লাসটা করেই যাই।
রিপন:-ঠিক আছে আয়।
বর্ষা:-হুম।
রিপন:-একটু সাবধানে নামবি।
বর্ষা:-আচ্ছা।
রিপন বর্ষার হাততা ধরে গাড়ি থেকে নামিয়ে বর্ষাকে ওর ক্লাসে দিয়ে প্রিন্সিপাল এর কাছে যায়,
বর্ষা:-তুমি ওদিকে কোথায় যাচ্ছ?
রিপন:-তুই ক্লাসে বস আমি একটু আসছি।
বর্ষা:-ওদিকে প্রিন্সিপাল স্যারের কক্ষ।
রিপন:-হ্যা, আমি স্যারের সাথে ই কথা বলতে যাচ্ছি।
বর্ষা:-স্যার কে তুমি কিভাবে চিনো,আর স্যারের সাথে তোমার কিসের দরকার?
রিপন:-সেটা একটু পরই বুঝতে পারবি,তুই ক্লাসে বস।
বর্ষা ক্লাসে বসে ভাবছে রিপন আসলে ঠিক কি জন্য এখানে এসেছে,এমন সময় দিশা এসে বর্ষা কে বলে।
দিশা:-কি রে বর্ষা কি ভাবছিস তখন থেকে ডেকেই যাচ্ছি কোনো সাড়াই তো দিচ্ছিস না।
বর্ষা:-ওহ তুই,(কিছু টা অবাক হয়ে)
দিশা:-হ্যা আমি, কি ভাবছিলি তুই আর তকে এতো আনমনা লাগছে কেনো, কি হয়েছে?
বর্ষা:-নারে কিছু না, মাথায় একটু ব্যাথা করছে।
দিশা:-ওহ এটা ঠিক হয়ে যাবে,চিন্তা করিস না।
একটু পর প্রিন্সিপাল স্যার ক্লাসে এসে সবার উদ্দ্যেশে কিছু কথা বলেন।প্রিয় ছাত্র ছাত্রীরা আজ এই ভার্সিটি তে ম্যাথের নতুন স্যার জয়েন করবেন তোমরা সবাই স্যার কে সম্মান দিয়ে ভালোবাসা দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবে,আর মনে রাখবে স্যার কে কোনো ভাবেই যেন অপমানিত হতে না হয়,আর স্যারের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনবে, বুঝতে পেরেছো তো কি বললাম।
ছাত্র ছাত্রী :-জি স্যার,
প্রিন্সিপাল :-এক্সকিউজ মি স্যার আপনি একটু ভেতেরে আসুন।(নতুন স্যার কে উদ্দেশ্য করে)
এরপর রিপন এসে ক্লাসে প্রবেশ করে,তখন প্রিন্সিপাল স্যার আবার বলেন
প্রিন্সিপাল :-ইনি হলেন তোমাদের নতুন ম্যাথ টিচার রিপন আহমদ ।
(রিপন কে দেখে বর্ষা এতোটাই অবাক হয় যে খুশিতে ওর চোখে পানি চলে আসে তবুও রিপনের উপর হাল্কা অভিমান নিয়ে মুখবার করে ক্লাসে বসে থাকে)
ছাত্র ছাত্রী:-আসসালামু আলাইকুম স্যার,কেমন আছেন আপনি?
রিপন:-ওয়ালাইকুম আসসালাম।আলহামদুলিল্লাহ ভালো,তোমরা কেমন আছো?
ছাত্র ছাত্রী :-জি স্যার ভালো।
প্রিন্সিপাল :-তাহলে স্যার আপনি ক্লাস নিন আমি আসছি।
রিপন:-ওকে স্যার, আসসালামু আলাইকুম।
প্রিন্সিপাল স্যার চলে যাওয়ার পর রিপন এক এক করে সবার সাথে পরিচিত হয়।শেষে বর্ষাকে জিজ্ঞেস করে তখন বর্ষা ওর পরিচয় দেয়, কিছুটা রাগি রাগি ভাব নিয়ে,এমন ভাবে কথা বলে যেন সে রিপন কে আজই প্রথম দেখছে।
এরপর রিপন সবার সাথে কিছুটা সময় গল্প করে কাটিয়ে দেয়,এরপর রিপন ওদের ক্লাস নেয়,প্রথম দিন তাই একটু পড়াশোনার দিকে সবাইকে নজর দিতে বলে।আর এই ভার্সিটির সম্পর্কে কিছু আলোচনা করে সবার থেকে জেনে নেয়।
ক্লাস শেষ করে বর্ষা কিছু না বলেই দিশাকে সাথে নিয়ে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যায়, রিপন কিছু বলতে যাবে সেই সময়টাই বর্ষা ওকে দেয়নি,রাগ নিয়ে বেরিয়ে যায়।
বর্ষা আর দিশা কিছুক্ষণ একসাথে বসে গল্প করে,ঠিক তখনই রিপন এসে ওদের সামনে দাঁড়ায় আর বলে,,
রিপন:-তো মিসেস রিপন আহমদ , কেমন দিলাম আজকের সারপ্রাইজ টা।
বর্ষা:-.........(চুপ)
রিপন:-কি হলো চুপ করে আছো কেনো আমি কি কোনো অন্যায় করেছি।
বর্ষা:-...........(চুপ)
রিপন:-তুমি আমার সাথে কথা বলবে না,দেখো বর্ষা আমি তো তোমাকে খুশি দেখতে চেয়েছিলাম তাই আজ এইভাবে তোমাকে সারপ্রাইজ দেয়ার প্লেন করি,বিশ্বাস করো আমি তোমাকে একটু ও কষ্ট দিতে চাইনি।
বর্ষা:-........(চুপ)
রিপন:-ঠিক আছে তুমি যদি না চাও তাহলে আমি এই জব ছেড়ে সিলেট চলে যাব।
বর্ষা:-অনেক বলেছেন স্যার আপনি আর না, কি ভাবেন নিজেকে আপনি, আর আমাকেই বা কি ভাবেন আজ এতোগুলো দিন পেরিয়ে এসে আপনি আমাকে সারপ্রাইজ দিচ্ছেন,কেনো কি চাই আমার কাছে,আমি তো আপনার কেউ না,তাহলে আপনি কেনো এখানে এসেছেন,আমি তো আপনাকে এখানে আসতে বলিনি।ফিরে যান না আপনার ওই জীবনে যেখানে আমার কোনো মুল্য কোনো কালেই ছিলো না।আমি এখানে ভালোই আছি।শুধু শুধু কষ্ট করে এখানে কেনো আসলেন(অনেক কষ্টে কথা গুলো শেষ করে বর্ষা)
রিপন:-আমি জানি বর্ষা আমার উপর তোমার অনেক রাগ অভিমান, কিন্তু তুমি সেদিন আমাকে ভুল বুঝেছিলে,আমাকে কিছু বলার ও সুযোগ দাওনি তুমি।
বর্ষা:-আমি সেদিন ঠিকই ভেবেছিলাম আমি কোনো ভুল দেখিনি আর ভাবিনি যে আমি তোমাকে ভুল বুঝবো,ওহ সরি আপনাকে ভুল বুঝবো
রিপন:-বাহ বর্ষা বাহ আজ আমি তোমার এতোটা পর হয়ে গেলাম,আমি ভেবেছিলাম আজকে তোমাকে এই সারপ্রাইজ টা দিয়ে তোমার সাথে কিছু সময় একা কাটাবো বলে,তোমার সেদিনের দেখা সেই ভুলটা ভাঙিয়ে দিবো বলে কিন্তু না তুমি সেই সুযোগ টাই তো আমাকে দিচ্ছোনা।প্লিজ একবার আমার সাথে চলো আমার তোমার সাথে অনেক কথা আছে।
বর্ষা:-সরি আমি কোথাও যাব না আমাকে বাসায় যেতে হবে।
দিশা এতক্ষন নিরব শ্রোতার মতো ওদের কথা শুনেই যাচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছে না।
দিশা:বর্ষা ইনি কে, তোর সাথে এনার কি সম্পর্ক আর ইনি তোকে মিসেস রিপন আহমদ বলে কেনো ডাকলেন।কি রে উত্তর দে কথা বল আমার সাথে আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি তোকে।(একটু জুড়ে ধাক্কা দিয়ে)
বর্ষা:-কেউ না,ওনি আমার কেউ হন না কোনো সম্পর্ক নেই আমার ওনার সাথে কোনো সম্পর্ক নেই।(কাঁপা কাঁপা গলায় কথাগুলো বলে যেন আর একটু হলেই কান্না করে দিবে)
বর্ষা দিশাকে কে জুড়ে ধাক্কা দিয়ে দৌড়াতে দৌড়াতে রাস্তায় চলে যায়।কোনো দিকেই খেয়াল না থাকায় খুব জুড়ে একটা ধাক্কা খেয়ে রাস্তার পাশে পরে থাকে, ধাক্কা খাওয়ার সাথে সাথেই রিপন বলে জুড়ে একটা চিৎকার দেয়।আর সাথে সাথেই জ্ঞান হারায়।
রিপন ওর গলার আওয়াজ শুনে খুব দ্রুত সেখানে গিয়ে দেখে বর্ষা সারা শরীর রক্তে মাখামাখি, আর অচেতন অবস্তায় পড়ে আছে।
রিপন ওকে কোলে তুলে গাড়িতে বসিয়ে দেয় সাথে দিশা ও যায়, রিপন গাড়ি ড্রাইভ করছে আর বিড়বিড় করছে তোমার কিছু হবে না বর্ষা কিছু হবে না আমি তোমার কিছুই হতে দেবো না আমার প্রান থাকতে ও না।
দিশার কোলে মাথা রেখে আছে বর্ষা,আর দিশা বলছে কেনো এমন পাগলামি করলি বর্ষা,কি এমন কষ্ট তোর যার জন্য এইভাবে ছুটতে ছুটতে রাস্তা পার হচ্ছিলি,এমন কেউ করে।
রিপন ওকে গাড়ি থেকে নামিয়ে কোলে নিয়ে হাসপাতালের ভেতরে প্রবেশ করে। ডাক্তার কে ডাক দেওয়ার পর ডাক্তার আসে।
রিপন:-ডাক্তার যে করেই হোক আপনি আমার বর্ষাকে বাচান,ওর কিছু হলে আমি বাঁচতে পারবো না।ও যে সবকিছু আমার রিদরের স্পন্দন, প্লিজ ডাক্তার ওকে বাচান,যতো টাকা লাগে আমি দেবো তবুও আপনি ওকে বাচিয়ে তুলুন ডাক্তার।(হাউমাউ কিরে কাদতে থাকে রিপন)
ডাক্তার:-নার্স এক্ষুনি ও টির ব্যবস্থা করুন, ইম্মিডিয়েট অপারেশন করতে হবে নাহলে পেসেন্টকে বাঁচানো মুশকিল হয়ে যাবে,Go fast.
ডাক্তার বর্ষাকে অপারেশন থিয়েটার এ নিয়ে যায় আর ওদের কে বাইরে অপেক্ষা করতে বলে।
একজন নার্স এসে রিপনকে একটা কাগজ দেয়।
নার্স:-আপনি রোগীর কি হোন।
রিপন:-Husband.
নার্স:-এই কাগজে সই করুন।অপারেশন চলাকালিন সময়ে পেসেন্টের কিছু হলে এই হাসপাতাল বা ডাক্তার কেউই দায়ী থাকবে না।
রিপন:-ঠিক আছে দিন আমি সই করছি।
নার্স চলে যায়, তখন দিশা বলে...
দিশা:-স্যার আপনি শান্ত হোন ওর কিছু হবে না ও ঠিক হয়ে যাবে, আল্লাহ ওকে এই ভাবে আমাদের থেকে কেড়ে নিতে পারেন না।(শান্তনা দেয়ার চেষ্টা)
রিপন:-ওর কিছু হলে আমি নিজেকে ক্ষমা করতে পারবো না,আমার উপর ওর অনেক অভিমান জমে আছে আমি জানি কিন্তু আমি এটাও জানি বর্ষা আমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসে।আমার একটা ভুলের সাজা ও আমাকে এইভাবে দিতে পারে না।ও কেনো বুঝেনা ওকে ছাড়া আমি যে বড্ড অসহায়।(কেঁদে কেঁদে)
দিশা:-আপনি কাঁদবেন না স্যার ছেলেদের এইভাবে কান্না সাজে না,আপনাকে সুস্থ হতে হবে,স্যার আমি আজো জানিনা আপনার সাথে বর্ষার কি সম্পর্ক বর্ষার মুখে কোনোদিন ও আপনার কথা শুনিনি সেটা না শুনেছি অনেক বার তবে আপনাদের মাঝে কি সম্পর্ক জানতাম না,তবে আজ আমি বুঝতে পারলাম আপনারা স্বামী-স্ত্রী।আর আমি এতোক্ষনে এটা বুঝতে পেরেছি যে আপনি বর্ষাকে খুব ভালোবাসেন।আর সত্যিকারের ভালোবাসা কখনো হারায় না স্যার,আপনি নিজেকে শক্ত রাখেন দেখবেন বর্ষা ঠিক সুস্থ হয়ে যাবে এটা আমার বিশ্বাস।
রিপন:-তাই যেন হয় দিশা।আমি ওকে সত্যি অনেক ভালোবাসি।
হঠাৎ অপারেশন থিয়েটার কক্ষের আলো নিভে গেলো আর ডাক্তার বাইরে বেড়িয়ে এলো,ডাক্তারের মুখটা মলিন হয়ে আছে।রিপন বুঝতে পারলো যে অপারেশন শেষ, ও দৌড়ে ডাক্তারের কাছে যায়।
রিপন:-ডাক্তার সাহেব বর্ষার কি অবস্তা ও ঠিক আছে তো,কিছু তো বলুন ডাক্তার কি হলো আপনি চুপ করে আছেন কেনো?(ভয়ে ভয়ে জিজ্ঞেস করে রিপন)
ডাক্তার:-অপারেশন সাকসেসফুল তবে....
রিপন:-তবে কি ডাক্তার, প্লিজ চুপ করে থাকবেন না।
ডাক্তার:-দেখুন মি.রিপন ওনি মাথায় খুব বেশি আঘাত পেয়েছেন যার ফলে ওনার মাথায় বেশি চাপ লাগে ওনি সুস্থ হবেন তবে মানসিক ভাবে কিছুটা ডিপ্রেশন এ ভুগবেন।
রিপন:-কি বলছেন ডাক্তার এসব,ও কি পুরোপুরি ঠিক হতে পারবে না।(কেঁদে কেঁদে)
ডাক্তার:-হতে পারবেন তবে অনেক সময় লাগবে,ওনাকে বেশি দুর্বল হতে দিবেন না সবসময় খেয়াল রাখবেন যাতে ওনি হাসিখুশি থাকেন।ওনাকে প্রচুর টাইম দিবেন আর একটু যত্ন নিবেন ধীরে ধীরে ওনি এই চাপটা কাটিয়ে উঠবেন আমার বিশ্বাস।
রিপন:-Thank you doctor,thank you so much.
ডাক্তার:-এখন ওনাকে কেবিনে শিপট করা হবে,২ঘন্টা পর জ্ঞান ফিরবে।আপনি চাইলে একটু পর ওনার সাথে দেখা করতে পারেন।
রিপন:-ওকে।(একটু খুশি হয়ে)
দিশা:-বলেছিলাম না স্যার ওর কিছু হবে না আপনি শুধু শুধু এতো টেনশন করছিলেন।আপনি বরং এখন ওর কাছে যান আমি আন্টিকে কল করে বলছি বর্ষার অপারেশন ঠিকঠাক মতো হয়েছে।
রিপন:-আচ্ছা ঠিক আছে আমি যাচ্ছি।
দিশা কল দেয় বর্ষা আম্মুর কাছে।
দিশা:-হ্যালো আন্টি আপনি চিন্তা করবেন না অপারেশন সাকসেসফুল হয়েছে আর বর্ষা এখন ঘুমাচ্ছে, আপনি চাইলে বিকেলে একবার আসবেন। আর রিপন স্যার তো আছেন ই বর্ষা সাথে।
বর্ষার আম্মু:-আচ্ছা মা আমি আসবো আমার বর্ষার খেয়াল রেখো আমি বরং তোমাদের জন্য হাল্কা নাস্তা নিয়ে আসছি।
দিশা:-আন্টি কিছু লাগবে না আমরা বাইরে থেকে আনিয়ে নেবো।
বর্ষার আম্মু:-চুপ বেয়াদব মেয়ে বড়দের কথা অমান্য করতে নেই।
দিশা:-আচ্ছা আন্টি আপনার ইচ্ছা,আমি যে আপনার কথা ফেলতে পারিনা সেটা আপনি ভালো ভাবেই জানেন।আন্টি একটা কথা জানার ছিলো।
বর্ষার আম্মু:-হ্যা মা বল?
দিশা:-আন্টি আপনি কি জানতেন যে রিপন ই আমাদের কলেজের স্যার,আর ওনি আজ আমাদের ভার্সিটি তে জয়েন করবেন।
বর্ষার আম্মু:-হ্যা মা জানতাম আর ওই জন্যেই তো বর্ষাকে ওই ভার্সিটি তে এডমিশন এর জন্য জোর করি।
দিশা:-কিন্তু আন্টি কেনো?
বর্ষার আম্মু:-আমি এসে তোকে সবটা বলবো, তুই একটু অপেক্ষা কর।
দিশা:-আচ্ছা আন্টি রাখি তাহলে আর আপনি সাবধানে আসবেন কিন্তু।
বর্ষার আম্মু:-হ্যা মা আসবো তুই চিন্তা করিস না।
দিশা:-আচ্ছা আন্টি রাখছি।বাই(টুট টুট) কল কেটে দিশা ওয়াশ রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসে,ওর সারাগায়ের রক্ত এতোক্ষনে জমাট বেধে গেছে।সেটা ধুতেই ওয়াশ রুমে যায়।
একটা কেবিনে বর্ষাকে নিয়ে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়।রিপন গিয়ে ওর মাথার কাছে একটা চেয়ার টেনে বসে,বর্ষার মাথায় হাত বুলাতে থাকে আর নিজে নিজে বলে উঠে,,
আজ আমার জন্য তোর এই হাল,আমি তোর ক্ষতি করতে চাইনি বর্ষা আমি বুঝতে পারিনি আমার উপর রাগ করে তুই এমন ভাবে রিয়েক্ট করবি।তুই খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যা তোর সাথে অনেক কথা আছে,অনেক কিছু বলার আছে তোকে,সবটা জেনে তুই আর আমার উপর রাগ করে থাকতে পারবি না।
কিছুক্ষণ পর বর্ষার জ্ঞান ফিরে বর্ষা খুব জুড়ে চিৎকার দিয়ে উঠে,রিপনকে দেখে আরো বেশি রেগে যায়।
বর্ষার চিৎকার শুনে দিশা দ্রুত কেবিনে ডুকে দেখে বর্ষা রিপন কে নানা রকম ভাবে অপমান করছে আর কথা শুনাচ্ছে।
কথাগুলো ছিলো এরকম...
বর্ষা:-আপনি এখানে কেনো, কি চান আমার কাছে, চলে যান এখান থেকে।আমার সাথে কোনো কাজ নেই আপনার, আমি আপনার কেউ না চলে যান আপনি এইখান থেকে,আমি আপনাকে সহ্য করতে পারছি না।আর আপনি আমার গায়ে হাত দিলেন কোন সাহসে, কোন অধিকারে আপনি আমাকে স্পর্শ করছেন,আপনার তো সাহস বেড়েই গেছে দেখছি।চলে যান এইখান থেকে আমি আপনার মুখও দেখতে চাইনা আর।(খুব জুড়ে জুড়ে বলে)
রিপন:-প্লিজ বর্ষা শান্ত হও এইভাবে পাগলামি করো না,তুমি এখনোও অসুস্থ।প্লিজ বর্ষা নিজের জন্য হলেও একটু শান্ত হও।
বর্ষা:-আপনি কি যাবেন নাকি আমি(ছুরি দেখিয়ে)
রিপন:-ওকে তুমি যা চাও তাই হবে, কিন্তু সেটা তোমার সুস্থ হওয়ার পর।
এই বলে রিপন বাইরে বেরোয়। আর দিশা কেবিনে যায়। দিশা, বর্ষা কে অনেক কষ্টে শান্ত করে ঘুম পাড়িয়ে দিয়ে রিপনের কাছে যায়, তারপর দিশা রিপন কে বলে.
দিশা:-স্যার আপনি মন খারাপ করবেন না।ডাক্তার কি বলেছিলেন মনে আছে নিশ্চয়ই।
রিপন:-এজন্য ই কিছু বলিনি আমি জানি ওর ভুলটা একদিন ভাংবেই আর ও আমার কাছে ফিরবে।ও নিজেই এসে বলবে এই রিপন দেখো আমি তোমার পিচ্চি বউ।তোমার কাছে ফিরে এসেছি আমি।
দিশা:-পিচ্চি বউ মানে...(অবাক হয়ে)
বর্ষার আম্মু:-হ্যা রে মা পিচ্চি বউ(ওদের কাছে এসে)
দিশা:-আমি কিছুই বুঝতে পারছি না,এই নাম টা আগে কখনো বর্ষার মুখে শুনিনি।(জিজ্ঞাসু চোখে তাকিয়ে আছে বর্ষা মায়ের দিকে)
বর্ষার আম্মু:-তাহলে শুন মা........
চলবে......
ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।
আল্লাহ হাফেজ সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন।
পরের পর্ব খুব তারাতাড়ি নিয়ে আসবো।