16/03/2025
শুভ্রতার প্রেমপত্র
শুভ্র আর নীলা—দুজন দুজনের পরিপূরক। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন থেকেই তাদের বন্ধুত্ব, আর তারপর ধীরে ধীরে ভালোবাসা। শুভ্র চঞ্চল, স্বাধীনচেতা, আর নীলা শান্ত, সংযত।
একদিন বিকেলে ক্যাম্পাসের লেকের ধারে বসে নীলা বলল,
— "তুমি কি কখনো ভেবেছো, আমরা যদি আলাদা হয়ে যাই?"
শুভ্র অবাক হয়ে বলল,
— "আমাদের পথ কি আলাদা হবে?"
নীলা হেসে বলল,
— "জীবন তো নিশ্চিত কিছু নয়, শুভ্র। যদি এমন হয়, তুমি কোথাও দূরে চলে গেলে?"
শুভ্র হাসল।
— "আমি তোমাকে প্রতিদিন চিঠি লিখব।"
নীলা মৃদু হেসে বলল,
— "কাগজের চিঠি?"
— "না, হৃদয়ের চিঠি। যেটা তুমি অনুভব করবে, পড়তে হবে না।"
কিন্তু জীবন সত্যিই অপ্রত্যাশিত।
গ্র্যাজুয়েশনের পর শুভ্র উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে চলে যায়। প্রথম কয়েক মাস তারা যোগাযোগ রাখে, কিন্তু সময়ের সাথে দূরত্ব বেড়ে যায়। শুভ্র ব্যস্ত হয়ে পড়ে পড়াশোনা আর কাজের চাপে, আর নীলা একাকী অপেক্ষা করে।
একদিন নীলার হাতে একটি খাম আসে। শুভ্রের লেখা চিঠি।
"নীলা,
তুমি বলেছিলে, যদি আমরা আলাদা হয়ে যাই? সত্যি বলতে, আমি কখনো ভাবিনি এটা হবে। কিন্তু প্রতিদিন সকালে তোমাকে মনে পড়ে, বিকেলের আকাশ দেখলে মনে হয়, তুমি পাশে থাকলে ভালো হতো। আমি বলেছিলাম, তোমাকে হৃদয়ের চিঠি লিখব। এই চিঠিটা ঠিক তাই। তুমি কি এখনো আমার অপেক্ষায়?"
নীলার চোখে পানি চলে আসে। সে জানত, শুভ্র কখনো ভুলবে না।
পরের সপ্তাহে, সে শুভ্রকে উত্তর পাঠায়—
"শুভ্র,
আমি জানতাম তুমি লিখবে। আমি অপেক্ষা করছিলাম, শুধু তোমার চিঠির জন্য নয়, তোমার ফেরার জন্যও। তুমি কি এবার ফিরবে?"
শুভ্র দেশে ফিরে এলে তাদের প্রথম দেখা হয় সেই লেকের ধারে। দুজন কিছু না বলে শুধু একে অপরের দিকে তাকিয়ে থাকে। শুভ্র নীলার হাত ধরে ফিসফিস করে বলে,
— "আমাদের গল্প তো এখনো শেষ হয়নি, তাই না?"
নীলা হাসল।
— "না, শুভ্র। আমাদের গল্প এখন শুরু হলো।"