05/09/2025
কুষ্টিয়া শহরের নতুন কাপল-কাপোলীরা সবচেয়ে বেশি যে সমস্যায় ভোগে সেটা হলো ডেটিং প্লেসের সংকট। রেস্টুরেন্টে গেলে প্রচুর টাকা খরচ হয়, মাঠ-ঘাট, পার্কে গেলে নিরাপত্তা সংকট৷ তাহলে কোথায় যাবে তারা? এই কয়েক লক্ষ মানুষের কুষ্টিয়া শহরে প্রেম করার স্বাধীনতাও কি নেই? সেইসব কাপলদের কথা ভেবেই আমি আজ কুষ্টিয়ার ট্রেন্ড নিয়ে এসেছে নিরাপদে প্রেম করার কয়েকটি অসাধারণ প্লেসের ঠিকানা।
১. কুষ্টিয়া পাসপোর্ট অফিসে চলে যাবেন দুজন মিলে সকাল সকাল। একটু ঘুরলেই দেখতে পাবেন এনআইডি ভেরিফিকেশনের বিশাল লাইন। লাইনে আবার দাঁড়িয়ে থাকা লাগে না, বসার ব্যবস্থা আছে আলহামদুলিল্লাহ। একদম লাইনের শেষে গিয়ে দুজন বসে পড়ুন আর যতক্ষণ ইচ্ছা গল্প করুন। হাত ধরে কচলাকচলি বা কাঁধে মাথাও রাখতে পারেন। কেউ কিছু মনে করবে না। সবাই ভাববে হাজবেন্ড ওয়াইফ। কারণ পাগল না হলে কোন প্রেমিক প্রেমিকা পাসপোর্ট অফিসে প্রেম করতে যাবে? লাইন শেষ হতে দুই ঘন্টা লাগবে কমপক্ষে। আপনাদের সিরিয়াল আসার আগে উঠে চলে আসুন বা আবার পেছনে গিয়ে বসুন।
২. সদর হাসপাতালে গিয়ে ১০ টাকার টিকিট কেটে বহির্বিভাগে বসে পড়ুন। এখানে চাইলে কাঁধে মাথা রাখার পাশাপাশি একজন আরেকজনকে জড়িয়ে ধরতেও পারেন, একজনের কোলে আরেকজন শুয়েও থাকতে পারেন। কেউ দেখলে ভাববে খুব অসুস্থ, এজন্য বসতে পারছে না। কেউ কোনো সন্দেহই করবে না। মনের আনন্দে চিল করুন।
৩. পপুলার হাসপাতালে একটু আরামদায়কভাবে বা এসিতে প্রেম করতে চাইলে চলে যাবেন। কোন ডাক্তারের কাছে রোগী সবচেয়ে বেশি সেই ডাক্তারের সিরিয়াল দিবেন। তারপর কর্নারে গিয়ে বসে পড়ুন আর এসির বাতাস খেতে খেতে প্রেম করুন নিশ্চিন্তে। বিকালে গেলে আপনাদের সিরিয়াল আসতে আসতে কমপক্ষে রাত আটটা নয়টা বাজবে। নাম ডাকার আগেই কেটে পড়ুন।
৪. সনো হাসপাতালে গেলে দেখবেন রোগীর ভিড়ে কেউ কারো দিকে তাকানোর সময় পাবে না। রিসিপশনের কর্নারে গিয়ে বসে পড়ুন। ডাক্তার দেখানোর অপেক্ষায় দুজনের গল্প করতে করতে বিকেল থেকে সন্ধ্যা হয়ে যাবে। মানুষ ভাববে সিরিয়ালের জন্য বসে আছেন।
৫. আমিন ডায়াগনস্টিক সেন্টারও প্রেমের জন্য অসাধারণ জায়গা। রিপোর্টের সিরিয়াল দিলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে থাকার সুযোগ পাবেন। পেছনের দিকে বসলে কেউ খেয়ালও করবে না।
৬. ভূমি অফিসে গিয়ে খাজনা দেওয়ার লাইনে দাঁড়াতে পারেন। পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে মিটার বা বিল ঠিক করার অজুহাত দিতে পারেন। পরিচিত কেউ দেখে ফেললেও ভাববে কাজে এসেছেন। উল্টা প্রশংসাও করতে পারে যে কত দায়িত্বশীল ছেলে বা মেয়ে।
৭. লালন শাহ মাজারও প্রেম করার জন্য অদ্ভুত নিরাপদ জায়গা। এখানে বসে প্রেম করলে কেউ সন্দেহ করবে না। সবাই ভাববে ভক্তি করতে এসেছেন। তবে সাবধান, বাড়াবাড়ি কিছু শুরু করলে ভক্তি উল্টা অভিশাপে পরিণত হতে দেরি হবে না।
৮. কুষ্টিয়ার জ্যামও প্রেম করার দারুণ সুযোগ দেয়। জ্যামে আটকা পড়লে ১-২ ঘন্টা আরামে পাশাপাশি বসে প্রেম করতে পারবেন কোনো ঝামেলা ছাড়াই। খরচও কম, সময়ও বেশি পাওয়া যাবে।
তবে শুধুমাত্র গল্পটল্প বা হাত ধরা পর্যন্ত ডেট সীমাবদ্ধ থাকলেই এসব জায়গায় যাবেন, আরো বেশিকিছু চাহিদা থাকলে এগুলোতে কাজ হবে না। তখন বন্ধুর ফ্ল্যাট বা পার্কের চিপাচাপায় যেতেই হবে। নাহয় পাসপোর্ট অফিস টাইপ জায়গায় গিয়ে অন্যকিছু শুরু করলে ভোট একটাও মাটিতে পড়বে না।
এগুলো ছাড়াও আর কোথায় কোথায় যাওয়া যায় প্রেম করতে? কমেন্টে জানান, এবং কাপল কাপোলীদেরকে আইডিয়া দিয়ে সহায়তা করুন।