26/08/2025
জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে গিয়ে বদলি: মেহেরপুরের সাবেক সার্কেল এসপি আজমল হোসেনের সাহসী ভূমিকা
মেহেরপুরের সাবেক সার্কেল এসপি আজমল হোসেন অনলাইন জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন। কিন্তু তার এই সৎ ও সাহসী পদক্ষেপের কারণে তাকে বদলির শিকার হতে হয়। অভিযোগ ওঠে, তৎকালীন মেহেরপুরের এসপি রাফিউল আলম মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে জুয়াড়িদের পক্ষ নিয়েছিলেন এবং আজমল হোসেনের কাজে বাধা দেন।
ঘটনার বিস্তারিত: আজমল হোসেন যখন মেহেরপুরের সার্কেল এসপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন, তখন তিনি এলাকার অনলাইন জুয়াড়িদের বিরুদ্ধে একটি বড় অভিযান শুরু করেন। এই অভিযান চলাকালীনই তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের, বিশেষ করে তৎকালীন এসপি রাফিউল আলমের, বাধার সম্মুখীন হন। অভিযোগ অনুযায়ী, এসপি রাফিউল আলম একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর শ্যালক হওয়ার কারণে তার প্রভাব খাটিয়ে জুয়াড়িদের রক্ষা করতে চেয়েছিলেন।
আজমল হোসেন এসপির কথা না মেনে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এর ফলে এসপি রাফিউল আলম তাকে বিভিন্নভাবে ফাঁসানোর চেষ্টা করেন। তিনি সার্কেল এসপিকে ফাঁদে ফেলার জন্য একটি পরিকল্পনা করেন। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, আজমল হোসেন ডিবি'র এসআই সাহেব আলীর সাথে একটি কল রেকর্ড করেন, যেখানে তারা জুয়াড়িদের ধরার জন্য একটি ফাঁদ পাতার বিষয়ে আলোচনা করেন। দুর্ভাগ্যবশত, এই কল রেকর্ডটি ফাঁস হয়ে যায়।
ফাঁদে ফেলার চেষ্টা ও তার ফলাফল: ফাঁস হওয়া এই কল রেকর্ডের সুযোগ নেন এসপি রাফিউল আলম। তিনি এই রেকর্ড ব্যবহার করে আজমল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি তদন্তের ব্যবস্থা করেন, যার ফলে তাকে পুলিশ হেডকোয়ার্টারে তদন্তের মুখোমুখি হতে হয়। কিন্তু পুলিশ হেডকোয়ার্টারের তদন্তে আজমল হোসেন নির্দোষ প্রমাণিত হন এবং তাকে সহায়তা করা হয়।
একই সময়ে, অনলাইন জুয়াড়ি চক্রটি ফাঁস হওয়া কল রেকর্ডটি ব্যবহার করে 'কালবেলা' পত্রিকায় আজমল হোসেনের বিরুদ্ধে একটি নেতিবাচক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই চক্র দেশের বাইরে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করছে বলে অভিযোগ আছে।
এখন টিভির অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদন
এই পুরো ঘটনাটি সম্প্রতি 'এখন টিভি'র একটি অনুসন্ধানমূলক প্রতিবেদনে উঠে আসে, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা তৈরি করে। প্রতিবেদনটিতে দেখানো হয়, কীভাবে একজন সৎ পুলিশ কর্মকর্তা তার দায়িত্ব পালনের জন্য প্রভাবশালী মহলের রোষানলে পড়েন।
আজমল হোসেনের এই ঘটনাটি আমাদের দেশের পুলিশ প্রশাসনের ভেতরের নানা অনিয়ম এবং প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপের একটি স্পষ্ট চিত্র তুলে ধরে। তার মতো সৎ এবং সাহসী পুলিশ কর্মকর্তাদের পাশে দাঁড়ানো অত্যন্ত জরুরি। বর্তমানে তিনি কুলাউড়া সার্কেল এসপি হিসেবে কর্মরত আছেন এবং আশা করা যায় তিনি তার কর্মক্ষেত্রে এই সাহসিকতার পরিচয় অব্যাহত রাখবেন।
সুত্রঃ এখন টিভি