17/03/2024
আজ ৮৭ বছর বয়সের এই রুগ্ন শরীর নিয়েও রোজ তাকে রিকশা চালাতে হয়। এক সময় মুক্তিযুদ্ধাদের সহযোগী হিসেবে কমলাপুর, সাওতা, ভাড়লা তে যুদ্ধ করেছিলেন রাব্বানি শেখ ,কিন্তু আজ মেয়েগুলোদের বিয়ে দিতে দিতে জায়গা, জমি, দোকান সব বিক্রি করতে করতে আজ তার আর্থিক অবস্থাও করুন। চোখে কম দেখেন এবং কানেও কম শোনেন তাই মোটর আলা রিকশা কেউ তাকে ভাড়া দেয় না। নিজের অতি কষ্টে সাড়ে সাত হাজার টাকার পায়ে ঠ্যালা পুরোনো রিকশা কে অবলম্বন করেই তাকে রোজ ছুটতে হয়। সে রিকশায় একজনের বেশি দুজনকে নিয়ে চলতে পারেন না। তাছাড়াও প্যাডেল চালিয়ে যেতেও তার অনেকটা সময় লাগে এই কারণে অনেক প্যাসেঞ্জারি তার রিক্সায় উঠতে চায় না। তবুও রোদ ঝড়-বৃষ্টি মাথায় রেখেই চাতকের মত চেয়ে থাকে যদি কোন মেসেঞ্জার তার উপরে করুনা করে তার রিকশায় ওঠে। সারাদিনে ৫০ থেকে ১০০ টাকা বড়জোর ইনকাম হয় তার। এতেই রান্নার জন্য লাকড়ি এবং কিছু উপকরণ কিনে বাসায় ফেরে। তার বাসার অবস্থাও করুন। সামনের বর্ষায় তার টিনের চালের কি অবস্থা হবে এবং তার পরিবার নিয়ে কোথায় থাকবে সেই চিন্তা তাকে সর্বদাই ভারাক্রান্ত করে তুলছে। তার চার মেয়ে এবং তিন ছেলের মধ্যে শুধু ছোট ছেলেটার হাড়িতেই তার কোনরকম ভাত জোটে( বিনিময়ে তাকে জ্বালানির লাকড়ি এবং শাক সবজি কেনার খরচ দিতে হয়)। বাকি ছেলেমেয়েরা তার নূন্যতম খোঁজখবর নিয়েও দেখেনা। যে মেয়েগুলোর বিবাহ দিতে যেয়ে তার আজ এই অবস্থা তারা তাদের তাকে নূন্যতম একটা টাকা দিয়েও সাহায্য করে না,আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকা সত্ত্বেও। তবে সে মরে গেলেও কখনো ভিক্ষাবৃত্তি পেশায় নিয়োজিত হবে না । কেউ সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলে সে অবশ্যই নেবে কিন্তু কারোর কাছে হাত পাতবেনা।
আমরা কি পারিনা এই অসহায় মানুষটার পাশে দাঁড়াতে! ?
আমাদের দেশকে স্বাধীন করতে তারও তো অবদান ছিল।মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট না থাকায় সে সরকার প্রদত্ত কোন রকমের সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে না।
আমরা যদি সবাই তার পাশে না দাঁড়াই, অতি দ্রুতই শুনতে পারব সে কোন একদিন রিকশা নিয়ে বের হয়েছে এবং এক্সিডেন্ট করে মারা গিয়েছে( যেহেতু সে চোখে এবং কানে কম দেখে এবং শোনে এটা হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি)।
সেই দিন অবশ্যই আমরা সবাই দুঃখ করব তাকে নিয়ে কিন্তু তাতে কি কোন লাভ হবে!