Sonar Bangla, Kushtia

Sonar Bangla, Kushtia We are a force that makes one wise. It is open for all. If you agree to change yourself, you will c

আমরা চাই মানুষ মানুষের মর্যাদা নিয়ে বসবাস করুক : ডা. শফিকুর রহমানসিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল ইউনিয়নের তেলিখাল ব...
20/07/2022

আমরা চাই মানুষ মানুষের মর্যাদা নিয়ে বসবাস করুক : ডা. শফিকুর রহমান

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার তেলিখাল ইউনিয়নের তেলিখাল বাজারে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মধ্যে ঈদসামগ্রী বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান

সিলেট সংবাদদাতা : বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, এবারের বন্যায় সিলেটসহ দেশের বন্যাকবলিত এলাকায় মানুষের ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে দেয়ার ক্ষমতা কোনো মানুষের কিংবা সরকারের নেই, এটা কেবলমাত্র আল্লাহ তায়ালাই পুষিয়ে দিতে পারেন। তবে এ ব্যাপারে সরকারেরও দায়িত্ব আছে আর মানুষ হিসেবে আমাদেরও কিছু দায়িত্ব আছে। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করিÑ তারা তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করুক। সরকার যদি এ দায়িত্ব পালন করে, তাহলে তাদের মর্যাদা মহান আল্লাহর কাছে বাড়বেÑ কিন্তু তারা যদি দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে এর জবাব আল্লাহ তায়ালা আমাদের কাছে চাইবেন না। কিন্তু আমরা যে দল করি, যে দল একটা মানবিক সংগঠন, যে দল দেশে একটা পরিবর্তন চায়, যে দল চায় এখানে সব ধরনের অপরাধ বন্ধ হোক, আর মানুষের মর্যাদা নিয়ে বসবাস করুক এবং তা সম্ভব কেবলমাত্র মহান আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী, নবী (সা.)-এর দেখানো পথ অনুযায়ী। আমরা এ সংগ্রামই করি।
তিনি গত ১১ জুলাই দিনভর সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ফুডপ্যাক, ঈদ উপহার (শাড়ি-লুঙ্গি) বিতরণকালে উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। তিনি তেলিখালী ইউনিয়নের তেলিখালী বাজারে, উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের রামাইল বাজারে, পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের রাজনগর ও পশ্চিম ইসলামপুর ইউনিয়নের চৌমুহনী এলাকার বিভিন্ন স্পটে ঈদ উপহারসামগ্রী (ফুডপ্যাক, শাড়ি ও লুঙ্গি) বিতরণ করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি এ.এইচ.এম হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সিলেট মহানগরী আমীর মুহাম্মদ ফখরুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও সিলেট জেলা উত্তরের আমীর মাওলানা আনোয়ার হোসাইন খান, সেক্রেটারি ও জৈন্তাপুর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি শফিউল আলম শাহিন, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আমীর মাওলানা ফয়জুর রহমান, সেক্রেটারি মাওলানা রফিক আহমদ, সাবেক আমীর আজমান আলী। এছাড়া জেলা ও উপজেলা জামায়াত ও ছাত্রশিবির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
আমীরে জামায়াত আরো বলেন, সাম্প্রতিক বন্যার ক্ষয়ক্ষতি দীর্ঘমেয়াদি এবং খুবই ভয়াবহ। একটি দীনি সংগঠন হিসেবে সর্বোচ্চ সামর্থ্যটুকু নিয়ে জামায়াতে ইসলামী বিপন্ন ভাই-বোনদের পাশে থাকবে, ইনশাআল্লাহ। আপনারা আমাদের জন্য বুক ভরে দোয়া করবেন। আমরা যেন সবসময় মানবতার ডাকে সাড়া দিতে কোনো ত্রুটি না করি। মজলুম সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আপনাদের কাছে আরো প্রত্যাশা করে, দীন কায়েমের কাজে আমরা যেন আপনাদের অকুণ্ঠ ও আন্তরিক সহযোগিতা পাই।
আবের মৃত্যুতে বিশ্ব এক মহান নেতাকে হারাল : জামায়াত
জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হওয়ার ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান। গত শনিবার (৯ জুলাই) সংবাদমাধ্যমে দেয়া এক শোকবাণীতে তিনি বলেন, ‘৮ জুলাই জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে জাপানের নারা শহরে একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন। এ সময় তিনি দৃষ্কৃতিকারীর দ্বারা গুলিবিদ্ধ হলে তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই তিনি মৃত্যুবরণ করেন। আমরা এই হৃদয়বিদারক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’ জামায়াত আমীর আরো বলেন, ‘শিনজো আবে আততায়ীর গুলিতে নিহত হওয়ার ঘটনায় বাংলাদেশসহ সারা বিশ্ব স্তম্ভিত ও আতঙ্কিত। এটি একটি ঘৃণ্য ও কাপুরুষোচিত ঘটনা। তার হত্যাকারী মানবতার দুশমন। তার মৃত্যুতে বিশ্ব এবং জাপান একজন মহান নেতাকে হারাল।’
তিনি বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে তার পরিবার এবং জাপানের জনগণের প্রতি আমরা গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।’ প্রেস বিজ্ঞপ্তি।

শ্রীলঙ্কায় গণঅভ্যুত্থানপ্রেসিডেন্টের পলায়নবিক্ষোভকারীদের দখলে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ। রয়টার্স থেকে নেওয়া॥ সৈয়দ খ...
20/07/2022

শ্রীলঙ্কায় গণঅভ্যুত্থান
প্রেসিডেন্টের পলায়ন

বিক্ষোভকারীদের দখলে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ। রয়টার্স থেকে নেওয়া

॥ সৈয়দ খালিদ হোসেন ॥
শ্রীলঙ্কার সাধারণ মানুষের নেতৃত্বে একটি শান্তিপূর্ণ গণঅভ্যুত্থান হয়েছে। এতে পতন হয় ব্যর্থ প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারের। বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে প্রবেশ করলেও কোনো ভাঙচুর চালায়নি, লুটপাট করেনি। তারা প্রেসিডেন্ট ভবন থেকে পাওয়া লাখ লাখ টাকা যথাযথ প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা দিতে পুলিশের হাতে দিয়েছেন। নিজের পকেটস্থ করেননি। বিক্ষোভ সফল হওয়ার পর আন্দোলকারীরা সড়কে বিক্ষোভ করলেও সরকারি বা বেসরকারি স্থাপনায় ধ্বংসযজ্ঞ চালাননি। লুটপাট করেননি। জাতীয় সংকট মোকাবিলায় ব্যর্থ সরকারের প্রেসিডেন্ট বিক্ষোভের মুখে পালাতে নৌপথে চেষ্টা চালিয়ে ব্যর্থ হয়েছেন। স্থলপথে পারেননি, আকাশপথে বাধার সম্মুখীন হয়ে দেশটির সামরিক ঘাঁটিতে আশ্রয় নেন, পরে সামরিক বিমানে দেশ ছেড়ে মালদ্বীপে পালিয়েছেন। প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া’র ইচ্ছা ছিল আরব আমিরাতে যাওয়ার, সেই ইচ্ছাও তার পূরণ হয়নি। জনতার তোপে পড়ে তিনি সামরিক আশ্রয়ে দেশ ছেড়েছেন। তার এই পতন দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের তথ্যানুযায়ী, ৭৩ বছর বয়সী গোটাবায়া গত ১৩ জুলাই বুধবার প্রথম প্রহরে দেশ ছাড়েন, কোনো কোনো সংবাদমাধ্যম বলেছে ১২ জুলাই মধ্যরাতে তিনি দেশ ছেড়েছেন। চরম অর্থনৈতিক সংকটে শ্রীলঙ্কার মানুষ গত কয়েক মাস ধরে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে এবং তার পরিবারের বিরুদ্ধে আন্দোলন চালিয়ে আসছিল। দেশ ছেড়ে পালানোর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপ দেশে মহাপ্রতাপশালী রাজাপাকসে পরিবারের কয়েক দশকের কর্তৃত্বের লজ্জাজনক অবসান ঘটল। এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে ১৩ জুলাই দেশটির কর্তৃপক্ষ জরুরি অবস্থা জারি করেছে। একইসঙ্গে কারফিউ জারি করা হয়েছে পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে। সূত্র: বিসিসি, আল-জাজিরা, রয়টর্স, এএফপি, এনডিটিভি।
যে কারণে বিক্ষোভ শুরু
শ্রীলঙ্কায় রিজার্ভ সংকট দেখা দেয়ার পর শুরু হয় জ্বালানি-সংকট। এর পরপরই ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের পণ্যের সংকটও দেখা দেয় দেশটিতে। এর জেরে শ্রীলঙ্কাজুড়ে বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভ থেকে দাবি জানানো হয়, প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। এরপর মাহিন্দা রাজাপাকসে গত মে মাসে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে অনড় থাকেন। মূলত স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রটি। এ পরিস্থিতি দেশটির রাজনীতিতেও উত্তেজনা ও অনিশ্চয়তা ছড়িয়ে দিয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকায় আমদানি ব্যয় পরিশোধ করতে পারছে না দেশটি। এ কারণে ২ কোটি ২০ লাখ জনসংখ্যার দেশটিতে খাবার, ওষুধ ও জ্বালানির মতো অতি জরুরি আমদানিপণ্যের প্রয়োজন মেটাতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন ক্ষমতাসীনরা। এ দুরবস্থার জন্য শ্রীলঙ্কার অধিকাংশ মানুষ প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দায়ী করছেন। গত মার্চ থেকেই তাঁর পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন চলছে রাজধানী কলম্বোসহ বিভিন্ন শহরে। গত ১০ জুলাই শুক্রবার কলম্বোজুড়ে তুমুল বিক্ষোভ হয়। এর ধারাবাহিকতায় ১১ জুলাই শনিবারের বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে ঢুকে পড়েন। আর পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট। সেই থেকে বিক্ষোভকারীরা সেখানেই অবস্থান করছেন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগপত্রে সই করার পর একটি সর্বদলীয় সরকার গঠনের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে দেশটির বিরোধী দলগুলো। কিন্তু বিক্ষোভকারীরা কোনো সর্বদলীয় সরকার চায় না। তারা চায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। যারা সংবিধান সংস্কার করবে এবং নতুন নির্বাচনের আয়োজন করবে। কে প্রেসিডেন্ট হবেন আর কে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তার চাইতে লঙ্কানরা একটি নতুন নির্বাচনের প্রত্যাশায় রয়েছেন। যে অভ্যুত্থান বিপ্লব উপহার দিতে পারছে না, তাকে অন্তত একটা নির্বাচন করে জনগণকে সন্তুষ্ট রাখতেই হবে। সম্ভাব্য সেই নির্বাচনে উগ্র জাতীয়তাবাদের বিপরীতে সংস্কারপন্থী শক্তিগুলো ভালো করবে- এই প্রত্যাশাটুকুই কেবল চলতি গণঅভ্যুত্থানের প্রাপ্তি।
পালিয়ে মালদ্বীপে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট
পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভের মুখে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়েছেন। ১২ জুলাই দিবাগত রাতে একটি সামরিক বিমানে তিনি মালদ্বীপ গেছেন। অভিবাসন কর্মকর্তারা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কার ৭৩ বছর বয়সী নেতা গোটাবায়া, তাঁর স্ত্রী ও একজন দেহরক্ষীসহ চার যাত্রী নিয়ে সামরিক বিমানটি মধ্যরাতে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মালদ্বীপের উদ্দেশে রওনা করে। গত মার্চ থেকে শ্রীলঙ্কায় চলছে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। গত ৯ জুলাই শনিবার শত শত বিক্ষোভকারী প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ার বাসভবনে ঢোকে। এরপর এদিন রাতে পদত্যাগের ঘোষণা দেন গোটাবায়া। ঘোষণা অনুযায়ী বুধবার তাঁর পদত্যাগের কথা ছিল। এর আগে তিনি দেশ ছাড়লেন। তবে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া তার পদত্যাগপত্রে ১২ জুলাই মঙ্গলবার সই করেছেন। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার পর শ্রীলংকা পার্লামেন্টের স্পিকার তা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করে থাকেন। এটাই নিয়ম। জানা গেছে, প্রেসিডেন্টের পদত্যাগপত্রে সই করা হয়েছে এবং তা এক সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তার কাছে হস্তাস্তর করা হয়েছে। স্পিকার মহিন্দা ইয়াবা আবেবর্ধনেকে পদত্যাগপত্রটির বিষয় অবগত করা হয়েছে।
যা চাচ্ছেন আন্দোলনকারীরা
শ্রীলঙ্কার অধিকাংশ বিক্ষোভকারী সর্বদলীয় সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। তারা চান অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার। যারা আগামী ছয় মাস থেকে এক বছরের মধ্যে নির্বাচনের আয়োজন করবে। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে বলেছেন, সব দলের অংশগ্রহণে সরকার গঠনে তিনি পদত্যাগ করবেন। তবে এরপরও বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাসবভনে অবস্থান করছেন। বিক্ষোভকারীদের ভাষ্য, এই দুই নেতা আনুষ্ঠানিকভাবে সরে না দাঁড়ানো পর্যন্ত দুই বাসভবন ছাড়বেন না তাঁরা। এমন পরিস্থিতিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা। সাবির মোহাম্মদ নামে ২২ বছরের এক তরুণ আন্তর্জাতিক এ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা অনতিবিলম্বে গোটাবায়া রাজাপাকসে ও রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগ চাই। এরপর অন্তত ছয় মাস একটি অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব পালন করবে। আমরা কোনো সর্বদলীয় সরকার চাই না।’ অধিকাংশ বিক্ষোভকারীই শ্রীলঙ্কান পদুজানা পার্টির (এসএলপিপি) বিরোধী। এই দলটির নিয়ন্ত্রণ রাজাপাকসের পরিবারের হাতে। সর্বদলীয় সরকার গঠিত হলে ক্ষমতা তাদের হাতেই থাকবে বলে আশঙ্কা করছেন বিক্ষোভকারীরা। মেলানি গুনাথিলাকে নামে ৩৫ বছরের এক নারী বলেন, বিক্ষোভকারী নেতারা সর্বদলীয় সরকারের কঠোর বিরোধী। তিনি বলেন, সর্বদলীয় সরকার গঠিত হলে রাজাপাকসে পরিবার পেছন থেকে কলকাঠি নাড়তে পারে। গত ৫ জুলাই একটি কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেন বিক্ষোভকারীরা। সেখানে জনতা আরাগালয় (জনগণের সংগ্রাম) এর সদস্যদের মধ্য থেকে একটি গণপরিষদ গঠন করতে হবে, যা দেশের রাজনৈতিক পালাবদলের বিষয়টি দেখভাল করবে এমন দাবি জানানো হয়। এছাড়া ছয় দফা দাবি জানান বিক্ষোভকারীরা।
বিক্ষোভকারীদের অন্যতম আরেকটি দাবি হলো অন্তর্র্বর্তী সরকারের অধীন একটি নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে, যা মানুষের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে। আন্দোলনকারীদের আপাতত ৬টি দাবি। এক. প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসেকে দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে। ইতোমধ্যে তিনি দেশ ছেড়েছেন। দুই. প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে ও তাঁর সরকারকে অতিসত্বর ক্ষমতা ছাড়তে হবে। তিন. একটি অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। যার মেয়াদ হবে ন্যূনতম ১ বছর। চার. গণভোটের মাধ্যমে জনগণের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত হয় এমন নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে এবং আগামী ১ বছরের মধ্যে এটা নিশ্চিত করতে হবে। পাঁচ. নতুন সংবিধানের খসড়া প্রণয়ন করা পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা কমাতে হবে, পাশাপাশি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও শক্তিশালী করতে হবে এবং ছয়. উল্লেখিত দাবিগুলো বাস্তবায়ন করা হবে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের মূল নীতি। বর্তমানে বিক্ষোভকারীদের নেতৃত্বের কোনো কাঠামো বা একক কোনো সংগঠন নেই। তবে ইন্টার ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্ট ইউনিয়ন যা বামপন্থী ফ্রন্টলাইন সোশ্যালিস্ট পার্টির অঙ্গ সংগঠন এবং জনতা বিমুক্তি পেরামুনার (জেভিপি) ছাত্র সংগঠন সোশ্যালিস্ট ইয়ুথ ইউনিয়ন বিক্ষোভে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। সোশ্যালিস্ট ইয়ুথ ইউনিয়ন ইরাঙ্গা গুনাসেকারা আল-জাজিরাকে বলেন, সাধারণ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন প্রজন্মকে যাতে নিজেদের ভবিষ্যৎ কাণ্ডারি বেছে নিতে পারে, সেই পথ তৈরি করে দিতে অন্তর্র্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় সংস্কার করতে হবে। শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করলে প্রেসিডেন্ট দায়িত্ব পালন করবেন পার্লামেন্টের স্পিকার। কিন্তু বর্তমান স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে রাজাপাকসে পরিবারের আত্মীয়। এ কারণে বিক্ষোভকারীদের আশঙ্কা তিনি প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিলে অবস্থার তেমন একটা পরিবর্তন হবে না।
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের যে বাঙ্কার নিয়ে আগ্রহী বিক্ষোভকারীরা
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের গোপন একটি বাঙ্কার নিয়ে বিক্ষোভকারীদেরও আগ্রহের কমতি নেই। এনডিটিভির ভিডিওতে দেখা যায়, বাংকারটির প্রবেশমুখ একটি আলমারি দিয়ে আড়াল করা ছিল। এটিতে প্রবেশের জন্য প্রশস্ত সিঁড়ি রয়েছে। আরও রয়েছে লিফট। এটির প্রবেশমুখে ধাতুর তৈরি ভারী দরজা রয়েছে, যা সহজে ভাঙা যাবে না। কেউ চাইলেও জোর করে এটি খুলতে পারবে না। এর মধ্য দিয়ে মূলত গোপন বাঙ্কারটির নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, দরজার চারপাশে অসংখ্য দাগ রয়েছে। অর্থাৎ বিক্ষোভকারীদের অনেকেই হয়তো এটি খোলার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু সফল হননি। বিক্ষোভকারীদের অনেকেই বলছেন, প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া এই বাঙ্কারে লুকিয়ে রয়েছেন। সেখানে তিনি (গোটাবায়া) দুর্নীতি করে আয় করা কোটি কোটি রুপি রেখেছেন। আবার অনেকের ধারণা, প্রাসাদ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গোটাবায় গোপন ও সুরক্ষিত এ পথ ব্যবহার করেছেন। বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে থাকা ১ কোটি ৭৮ লাখ ৫০ হাজার শ্রীলঙ্কান রুপির সন্ধান পেয়েছেন। পরে তাঁরা সেই অর্থ পুলিশের হাতে তুলে দেন।
জরুরি অবস্থা জারি
শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পরই দেশটিতে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে। ১৩ জুলাই বুধবার সকালে দেশটির বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন বলে বিবিসি জানিয়েছে। এছাড়া পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশে জারি করা হয়েছে কারফিউ। ১২ জুলাই মঙ্গলবার দিবাগত রাতে একটি সামরিক বিমানে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। প্রেসিডেন্ট দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় আবারও বিক্ষোভ শুরু হয়েছে দেশটিতে। হাজারো বিক্ষোভকারী জড়ো হন রাজধানী কলম্বোয়। প্রধানমন্ত্রীর বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভ দমনে টিয়ার শেল ছুড়েছে পুলিশ। প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেরও পদত্যাগ চাইছেন বিক্ষোভকারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কোন পথে
সংকটে শ্রীলঙ্কা। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ যে সামনে শ্রীলঙ্কানদের কপালে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা এখনই আন্দাজ করা মুশকিল। তবে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে গভীর অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা চীনের প্রভাব কমতে পারে দেশটিতে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কলম্বোয় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিশৃঙ্খলা স্বল্প মেয়াদের জন্য হলেও চীনের সঙ্গে সম্পর্কের ‘বড় প্রভাব’ ফেলবে। তাঁরা এই পরিস্থিতিকে চীনের বিনিয়োগকারীদের জন্যও বার্তা বলে মনে করছেন। শ্রীলঙ্কার যত বৈদেশিক ঋণ রয়েছে, তার ১০ শতাংশ বা তার কম চীন এবং জাপানের কাছ থেকে নেওয়া। আন্তর্জাতিক বন্ডহোল্ডারদের কাছ থেকে বেশিরভাগ ঋণ নিয়েছে শ্রীলঙ্কা। গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কাকে দেউলিয়া ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে। প্রেসিডেন্টের বাসভবনে বিক্ষোভকারীদের হামলার পর তিনি বলেন, তিনি পদত্যাগ করবেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় বলেছে, গত ১১ জুলাই সোমবার মন্ত্রিপরিষদ একমত হয়েছে যে সর্বদলীয় অন্তর্র্বর্তী সরকার গঠনে চুক্তি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা তাদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করবে। চীনের সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক বিশেষজ্ঞ লিন মিনওয়াং বলেছেন, আর্থিক সংকট নিয়ে কয়েক মাস ধরে চলা বিক্ষোভের পর সম্প্রতি রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। এটি শ্রীলঙ্কার সঙ্গে চীনের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি আঘাত হবে। প্রায় দুই দশক ধরে শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তারকারী রাজাপাকসে পরিবারকে বেইজিংয়ের ঘনিষ্ঠ মিত্র মনে করা হতো। যখন প্রেসিডেন্ট গোটাবায়ার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন, তখন চীনের অর্থায়নে বেশ কয়েকটি অবকাঠামো প্রকল্প গড়ে তোলা হয় দেশটিতে। এসব প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে হাম্বানটোটার গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ। বিতর্কিত ঋণের অংশ হিসেবে ৯৯ বছরের চুক্তির অধীনে একটি চীনা রাষ্ট্রীয় সংস্থাকে সমুদ্রবন্দরটি ইজারা দেয়া হয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ে বিশেষজ্ঞ লিন আরও বলেন, ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি, উচ্চঋণ এবং অর্থনৈতিক অব্যবস্থাপনার ফলে সৃষ্ট শ্রীলঙ্কার এ সংকট চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি ‘সতর্কবার্তা’। এসব বিনিয়োগকারী উন্নয়নশীল দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছেন, যেসব দেশ জ্বালানি খরচ বৃদ্ধি, খাদ্যঘাটতি এবং ক্রমবর্ধমান মার্কিন সুদের জন্য ঝুঁকিতে রয়েছে। ওই বিনিয়োগকারীদের বিষয়ে লিন আরও বলেন, ‘আমি একে উচিত শিক্ষা পাওয়া বলব না। তবে একে বলব সতর্কবার্তা। কারণ বিদেশে বিনিয়োগ করার সময় স্থানীয় প্রশাসনের দক্ষতা বিবেচনায় নেয়া উচিত। বিশেষ করে যখন সামগ্রিক আন্তর্জাতিক পরিবেশ অনূকূলে নয় এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর ঋণের অনুপাত সাধারণত খুব বেশি।’ সাংহাইয়ের এই বিশেষজ্ঞ মনে করেন, শ্রীলঙ্কায় চীনের যে বিনিয়োগ, তার জন্য কিছু লোকসান গুনতে হতে পারে।
যেভাবে উত্থান-পতন হলো গোটাবায়ার
চেয়েছিলেন পদত্যাগ করবেন না! আর জনতাও ছিল নাছোড়, চেয়েছিলেন কেবল তারই পতন। নাটকের শেষ অঙ্কে টানটান উত্তেজনার শেষ পরতে উত্তেজিত জনতা প্রেসিডেন্ট ভবনে, সুইমিংপুলে, রান্নাঘরে। পরিস্থিতির ভয়াবহতা আঁচ করতে পেরে আগেই সরকারি বাসভবন ছেড়ে পালালেন শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে। অবশেষে এলো সেই কাক্সিক্ষত ঘোষণা, জানা গেল ১৩ জুলাই পদত্যাগ করছেন গোটাবায়া। ইতোমধ্যে তিনি পদত্যাগপত্রে সই করেছেন। ১৩ জুলাই স্পিকার তার পদত্যাগের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার কথা, কিন্তু ১৩ জুলাই বেলা দেড়টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় পর্যন্ত এ ঘোষণা আসেনি।
ইতিহাস বলছে, তামিল বিদ্রোহীদের সমূলে নির্মূল করে একসময় সিংহলীদের কাছে নায়ক থেকে মহানায়ক হয়ে উঠেছিলেন গোটাবায়া ও তার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে। তাদের নামে আর ভারে দুটিতেই কাটতো সমানে সমান। ভাই মাহিন্দা শ্রীলংকার রাজনীতিতে আধিপত্য বজায় রেখেছিলেন প্রায় ২০ বছর। ২১ বছর বয়সে সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন গোটাবায়া, দুই দশক সেই বাহিনীতে কাজ করে হয়েছিলেন লেফটেন্যান্ট কর্নেল। তার পর স্বেচ্ছা অবসর নিয়ে পাড়ি দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে তিনি কাজ করতেন তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে। ২০০৫ সালে মার্কিন জীবনের ইতি টেনে এবার রাজনীতিতে প্রবেশ করলেন গোটাবায়া। ভাইয়ের অধীনে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব হিসেবে কাজে যোগ দেন তিনি। এ সময় লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল এলাম (এলটিটিই) দমনের ভার নিজের হাতে নেন গোটাবায়া। ২০০৯ সালে তামিলদের ২৬ বছরের স্বাধীন রাষ্ট্রের স্বপ্নকে ভূলুণ্ঠিত করে গোটাবায়া বাহিনী। শেষ কয়েক মাসের সেই সংঘাতে ৪০ হাজার বেসামরিক তামিল নাগরিককে লংকার সেনাবাহিনী হত্যা করেছিল, জাতিসংঘের প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য জানা যায়। তামিলদের স্বপ্ন হত্যা করে সিংহলীদের কাছে বীর বনে যান গোটাবায়া। ২০১৫ সালে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন গোটাবায়ার বড় ভাই মাহিন্দা রাজাপাকসে। ফলে শ্রীলংকার রাজনীতিতে রাজাপাকসে পরিবারের প্রভাবও কমতে থাকে। ২০১৯ সাল ইস্টার সানডেতে শ্রীলংকার গির্জায় সন্ত্রাসী হামলা; ২৫০ জনের প্রাণ যায়। আবারও জোরালো হয়ে ওঠে জাতীয় নিরাপত্তার দাবি। আর সেই সূত্র কাজে লাগিয়েই শ্রীলংকার মসনদ ফের দখলে নেয় রাজাপাকসে পরিবার। এবারের নায়ক মাহিন্দা নয়, সেই গোটাবায়া; যার হাত ধরেই তামিল নির্মূল হয়েছিল। লঙ্কানরা ভাবল তার হাতেই নিরাপদ থাকবে তাদের দেশ। তবে এবার বিধিবাম, ৯ জানুয়ারি ২০২০ সালে প্রেসিডেন্টের আসনে বসা গোটাবায়াকে ২০২২ সালের জুলাইয়েই ক্ষমতার ইতি টানতে হয়েছে।
রনিল বিক্রমাসিংহে শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট : স্পিকার
সর্বশেষ খবরে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে শ্রীলঙ্কার ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির পার্লামেন্টের স্পিকার।
শ্রীলঙ্কার স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে বলেন, প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে তাকে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহেকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দিতে। সংবিধানের ৩৭ ধারার ১ অনুচ্ছেদের আওতায় এই নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
গত ১৩ জুলাই বুধবার বিবিসি অনলাইনে শ্রীলঙ্কার চলমান অস্থিরতা নিয়ে দেয়া লাইভ আপডেটে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
রনিল বিক্রমাসিংহকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োগের ব্যাপারে সরাসরি কিছু বলেননি গোটাবায়া। এমনকি গোটাবায়ার সম্প্রতি দেয়া সব ঘোষণাই হয় পার্লামেন্টের স্পিকার, না হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাধ্যমে আসছে।
এদিকে অর্থনৈতিক সংকটের মুখে গণআন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন দেশটির সাধারণ মানুষ। তাঁরা গোটাবায়া ও রনিল বিক্রমাসিংহের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে যাচ্ছেন। এখন দেখার বিষয়, স্পিকারের এ ঘোষণার পর বিক্ষোভকারীরা কী প্রতিক্রিয়া দেখান।

11/07/2022
যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য ও জাপানসহ পশ্চিমাদের চাপ ক্রমেই বাড়ছেঅবাধ নির্বাচন দিতে হবেhttps://www.weeklysonarbangla.net/new...
11/07/2022

যুক্তরাষ্ট্র যুক্তরাজ্য ও জাপানসহ পশ্চিমাদের চাপ ক্রমেই বাড়ছে
অবাধ নির্বাচন দিতে হবে
https://www.weeklysonarbangla.net/news_details.php?newsid=28888 #
বিকল্প শক্তির ওপর নির্ভর করতে চায় শাসক দল
॥ ফারাহ মাসুম॥
যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ ১৪টি শীর্ষ পশ্চিমা দেশের কূটনীতিদের স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে অব্যাহত চাপে শাসক দল বিকল্প দেশগুলোর ওপর নির্ভর করার কৌশল গ্রহণ করতে চাইছে। এসব দেশের গণতন্ত্র, মানবাধিকার বা স্বচ্ছ নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে তেমন মাথাব্যথা নেই। বরং তারা দ্বিধাবিভক্ত হওয়া বৈশ্বিক মেরুকরণে বাংলাদেশকে পাশে পেতে চাইছে। তবে সরকারি দল এখনই বলয় নিরূপণের ব্যাপারে পরিষ্কার কোনো বার্তা না দিয়ে ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নেয়ার কথাই ভাবছে। আর চেষ্টা করছে কসমেটিক কিছু ব্যবস্থা নেয়ার মাধ্যমে উদার গণতান্ত্রিক বিশ্বকে নির্বাচন মেনে নেয়ার ব্যাপারে রাজি করানো যায় কিনা।
সরকারি দলের উচ্চপর্যায়ের নীতিনির্ধারকরা মনে করছেন, নির্বাচন কমিশনের সাথে পশ্চিমা শীর্ষ দেশ এবং তাদের মিত্ররা বৈঠক করে স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে যে চাপ প্রয়োগ করছে, সেটি ক্রমেই ঐক্যবদ্ধ ও জোরালো রূপ নিতে পারে। এমনকি এই চাপ পর্যায়ক্রমে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পর্যন্ত গড়াতে পারে। কয়েকদিন আগে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে বৈঠকে তারা আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণমূলক এবং অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার জন্য সহযোগিতার আশ্বাস দেন। একই সাথে তারা আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের অভিপ্রায় এবং আকাক্সক্ষার কথাও ব্যক্ত করেন। এর মধ্য দিয়ে সুস্পষ্ট হয় যে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের দেশগুলোর একটি অভিন্ন অবস্থান রয়েছে এবং তারা কয়েকটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে আগামী নির্বাচন সামনে রেখে। এ লক্ষ্যসমূহের মধ্যে রয়েছেÑ প্রথমত, নির্বাচনে যেন সব দল অংশগ্রহণ করে। বিশেষত প্রধান বিরোধী দল বিএনপি যেন নির্বাচনে অংশ নেয়। দ্বিতীয়ত, এ নির্বাচনে যেন নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠভাবে দায়িত্ব পালন করে। তৃতীয়ত, এ নির্বাচনে যেন জনগণের মতামতের প্রতিফলন ঘটে। চতুর্থত, নির্বাচন যেন অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়। এই মেরুকরণের মধ্য দিয়ে আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের যে নেটওয়ার্ক, তা আরও সম্প্রসারিত ও সুস্পষ্ট হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। একই সাথে যুক্তরাষ্ট্র আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে বাংলাদেশের ওপর যে একটি প্রচ্ছন্ন চাপ সৃষ্টি করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, তা আরও দৃশ্যমান হচ্ছে।
তবে আরেকটি বিষয় দেখা যাচ্ছে, এই নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা দেশের কূটনীতিকদের অবস্থানের সাথে একমত নয় বেশকিছু প্রভাবশালী দেশ। যে দেশগুলোর প্রভাবও বাংলাদেশের ওপর উল্লেখযোগ্য। এদেশগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারত, চীন ও রাশিয়া। এর বাইরে মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি রাজতান্ত্রিক দেশ রয়েছে যেগুলো সাধারণভাবে নির্বাচন ও গণতন্ত্র ইস্যুতে প্রকাশ্যে তেমন কোনো ভূমিকা নেয় না। তবে তারা মোটাদাগে পশ্চিমা দেশগুলোর অবস্থানকে সমর্থন করে থাকে।
সরকারের উচ্চপর্যায়ের মনোভাব থেকে জানা গেছে, তারা কৌশলগতভাবে এখনই পশ্চিমা দেশগুলোর সাথে তারা সংঘাতে যাবে না। তবে চীন, ভারত ও রাশিয়া এই তিন পক্ষের ওপর নির্ভর করে আরো এক মেয়াদের জন্য ক্ষমতাকে ধরে রাখতে সরকারি দল সব পরিকল্পনা সাজাবে। এক্ষেত্রে মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশ গণতন্ত্র-মানবাধিকারÑ এসব ইস্যু নিয়ে মাথা ঘামায় না, তাদেরও পাশে পাবার চেষ্টা করবে।
সম্প্রতি, ১৪টি দেশের কূটনীতিকরা প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করার আগে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাস নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রদূতও নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে অন্তত ২০টি দেশের কূটনীতিকরা খোলামেলা কথাবার্তা বলছেন। এ কথাবার্তাগুলো থেকে সুস্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে যে, আগামী নির্বাচনের ব্যাপারে তাদের যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে এবং এ নির্বাচনের ব্যাপারে তারা সরকারের ওপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করতে চায়।
অনেক পর্যবেক্ষকই ২০০৭ সালের মেরুকরণের সাথে বর্তমান কূটনৈতিক মেরুকরণের তুলনা করতে চান। ২০০৭ সালেও কূটনৈতিকপাড়ায় এরকম মেরুকরণ হয়েছিল এবং তারা অভিন্নভাবে বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিল। সেই জোটের মধ্যে ভারত ছিল। কিন্তু এবার ভারত নেই, আর গতবার চীন ও রাশিয়ার অবস্থান ছিল একবারেই নিষ্ক্রিয় ধরনের। এবার বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের অবস্থানকে সম্পূর্ণ ভিন্ন হিসেবে দেখছে শাসক দল। ভারত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ১৪ দেশের সংলাপে যোগদান করেনি, বরং বলেছে, বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এই নির্বাচন কীভাবে হবে, না হবে, এটি বাংলাদেশের জনগণ, রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন কমিশন নির্ধারণ করবে। পাশাপাশি চীন ও রাশিয়ার ভূমিকাও একই রকম। চীন মনে করে, বাংলাদেশের নির্বাচন সম্পূর্ণ বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এই নির্বাচনের ব্যাপারে চীন কোনো হস্তক্ষেপ করতে চায় না। রাশিয়াও বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের দিক থেকে একটি প্রভাবশালী দেশ এবং সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ব মেরুকরণে রাশিয়ার প্রভাব বিভিন্ন দেশের ওপর আরও বেড়েছে। রাশিয়াও বাংলাদেশের নির্বাচনের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার পক্ষপাতী নয়। এই তিন দেশ ১৪টি দেশের কূটনীতিকদের সাথে না থেকে যে আলাদা অবস্থান তৈরি করেছে, তাকে শাসক দল তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছে। তারা এটিকে ব্রিকস ঐক্য হিসেবে দেখতে চাইছে। এই দেশগুলো গণতন্ত্র প্রশ্নে অং সান সু চির বিপরীতে মিয়ানমারের সামরিক জান্তাকে সবাত্মকভাবে সহায়তা করে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও তারা একই ধরনের ভূমিকা নেবে বলে বিশ্বাস করছে শাসক দলের নীতি প্রণেতারা।
সরকারের নীতিপ্রণেতারা আরো মনে করছেন, বাংলাদেশ সরকার নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ইত্যাদি ইস্যু নিয়ে যে অবস্থান গ্রহণের দিকে যাচ্ছে, সেখান থেকে নিবৃত করা না গেলে এক পর্যায়ে ঢাকা সরাসরি ব্রিকসের দিকে ঝুঁকে যাবে। এতদিন যুক্তরাষ্ট্র ঢাকাকে আকসা ও জিসুমিয়া নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষর এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অর্থনৈতিক ফোরামে যোগ দেয়ার ব্যাপারে যে চাপ দিয়ে আসছিল তাতে সম্মতি জানিয়ে আসে। তবে একই সাথে এক্ষেত্রে সিদ্ধান্তকারী কোনো পদক্ষেপও গ্রহণ করেনি। যখন আন্তর্জাতিক চাপ বেশ প্রবল হয়ে উঠবে, তখন প্রকাশ্যে সরকার ব্রিকস দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক আরো গভীর করার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
জানা যাচ্ছে, সরকারের হিসাব অনুসারে ইউরোপ-আমেরিকা বাংলাদেশের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চাইলে সেটি অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আকারে আসার সম্ভাবনাই বেশি। এজন্য ইউরোপ-আমেরিকার পক্ষ থেকে এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা এলে কীভাবে টিকে থাকতে হবে তার জন্য কিছু প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হচ্ছে। রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা সর্বাত্মক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এই নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়া চীন, ভারত, ইরানসহ তার মিত্র বলয়ের সাথে নানাভাবে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। পাশ্চাত্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিষেবা সুইফট থেকে রাশিয়ার ব্যাংকগুলোকে বের করে দেয়া হলে মস্কো রুবলের পাশাপাশি চীনা মুদ্রা ইউয়ান এবং চীনা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য তথ্য পরিষেবা চিপস নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতের সাথে চীনের কৌশলগত নানা দ্বন্দ্ব-সংঘাত থাকলেও রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল ও অন্যান্য পণ্য কেনাবেচার লেনদেনে ইউয়ান ও চিপস ব্যবহার করছে দিল্লি।
অতিসম্প্রতি রাশিয়ার কাছ থেকে সস্তায় তেল-গম কেনার উপায় সম্পর্কে ভারতের পরামর্শ চেয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. একে মোমেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশকে রাশিয়ার সাথে কারেন্সি সোয়াপ এবং রুবল ও অন্য মুদ্রায় লেনদেনের জন্য বিশেষ চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে ব্যাংক অব রাশিয়া। বাংলাদেশ বিষয়টি কীভাবে বাস্তবায়ন করা যাবে, তা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
ঢাকার কিছু কিছু পর্যবেক্ষক মনে করছেন, বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে যে মেরুকরণ ঘটছে, তাতে বিশ্ব সুস্পষ্ট দুটি বলয়ে বিভক্ত হয়ে পড়বে। একই সাথে বৈশ্বিক অর্থনীতিও স্পষ্ট দুটি ভাগে ভাগ হয়ে যাবে। কিছু দেশ দুই পক্ষের সাথে সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করবে। তবে পক্ষ অবলম্বন ছাড়া টিকে থাকা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে দাঁড়াতে পারে। পশ্চিমের উদার গণতান্ত্রিক দেশগুলোর চাপ ও নিষেধাজ্ঞায় ইরান অনেক দশক ধরে টিকে আছে। কিউবা, উত্তর কোরিয়াসহ ক্যারিবিয়ান আরো কয়েকটি দেশ পশ্চিমের চাপের কাছে মাথা নত করেনি। ভেনেজুয়েলাও মার্কিন বৈরিতার মুখে চীন-রাশিয়ার সহায়তা নিয়ে টিকে আছে। প্রয়োজনবোধে বাংলাদেশও শক্ত সিদ্ধান্ত নিলে টিকে থাকা সম্ভব বলে মনে করছে, সরকারি নীতিপ্রণেতাদের অনেকে।
এই মতের লোকেরা মনে করছেনÑ চীন, রাশিয়া ও ভারত তিনটি দেশই দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি অর্থনীতি ও নিরাপত্তার ব্যাপারে অত্যন্ত প্রভাবশালী শক্তি। এই তিন দেশের শক্তিমান সমর্থনের কারণে মিয়ানমারের জান্তা সরকারকে কোনোভাইে টলানো যাচ্ছে না। বাংলাদেশেও পশ্চিমা শক্তি তার ব্যতিক্রম কিছু করতে পারবে না বলে তারা মনে করছে। তারা অবশ্য পাশ্চাত্য সর্বাত্মক চাপ তৈরি করলে অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশ চাপে পড়বেÑ এটি স্বীকার করেন। বিশেষত বাংলাদেশের ৮০ ভাগ রফতানি বাজার ও রেমিট্যান্সের বড় উৎস পশ্চিমা দেশ হবার পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক আইএমএফ সুইফটের মতো প্রতিষ্ঠানে পশ্চিমা একচ্ছত্র প্রভাব থাকায় কিছুটা চাপে পড়তে হবে ঢাকাকে। তবে চীন, ভারত, রাশিয়া পাশে থাকলে এই চাপ কাটানো যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। এর মধ্যে চীন ব্রিকসকে সম্প্রসারণ করার প্রস্তাবে বাংলাদেশকে এর সদস্য করার কথা বলেছে বলে জানা যাচ্ছে।
ঢাকার নীতিনির্র্ধারকদের একটি অংশ গণতন্ত্র প্রশ্নে মধ্যপ্রাচ্যের কিছু কিছু দেশের সমর্থন পশ্চিমারা পাবে না বলেও প্রত্যাশা করেন। তারা মনে করেন, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত গণতন্ত্র প্রশ্নে মধ্যপ্রাচ্যে কঠিন নীতি গ্রহণ করছে। বাংলাদেশের ব্যাপারেও তারা একই ধরনের নীতি আশা করেন।
এদিকে স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাপারে চাপ সৃষ্টি করতে যেসব শক্তির ওপর পশ্চিমা দেশগুলো নির্ভর করতে পারে সেগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে অন্যতম টার্গেট করা হচ্ছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে। তিনি সাম্প্রতিক সময়ে নানাভাবে চাপে রয়েছেন। ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে আইনজীবীকে প্রলুব্ধ করে মামলা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। গ্রামীণ টেলিকমের ৪৩৫ কোটি টাকা কর্মচারীদের বকেয়া, বেতন ইত্যাদি আপসরফার জন্য এক আইনজীবীকে ১২ কোটি টাকা দেয়া হয়েছে বলে গণমাধ্যমে সংবাদ বেরিয়েছে। হাইকোর্ট ইতোমধ্যে এ বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কথিত ওই আইনজীবীর ব্যাংক অ্যাকাউন্টও জব্দ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এছাড়া ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে একাধিক আর্থিক অনিয়মের বিষয় তদন্ত করা হচ্ছে।
এছাড়া সরকার বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি; বিশেষত ২০ দলের প্রভাবশালী দলগুলোর ওপরও সরকার নানাভাবে চাপ বাড়িয়ে চলছে বলে জানা গেছে। বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও আর্থিক খাতে সমস্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে এই চাপ সামনে আরো বাড়তে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। তবে এই চাপ শেষ পর্যন্ত কাজ করবে কিনা, তা নিয়ে সরকারের মধ্যেই অনেকের সংশয়ও রয়েছে।

বিকল্প শক্তির ওপর নির্ভর করতে চায় শাসক দল॥ ফারাহ মাসুম॥যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপানসহ ১৪টি শীর্ষ পশ্চিমা দেশ....

11/07/2022

Address

Kushtia

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Sonar Bangla, Kushtia posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Sonar Bangla, Kushtia:

Share

Category