Abida Muftea Moon

  • Home
  • Abida Muftea Moon

Abida Muftea Moon stories, daily life�

আসসালামু আলাইকুম। আমি একজন মধ্যবয়সি নারী। আমি স্বামীর কাছ থেকে আলাদা হতে চাই কিন্তু সে চায় না। আমার স্বামী অত্যন্ত ভাল...
13/07/2025

আসসালামু আলাইকুম। আমি একজন মধ্যবয়সি নারী। আমি স্বামীর কাছ থেকে আলাদা হতে চাই কিন্তু সে চায় না।
আমার স্বামী অত্যন্ত ভালো মানুষ। প্রায় ১০ বছরের সংসার, বড় কোন ঝামেলা কখনো হয়নি। শ্বশুরবাড়ি আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো। শশুর শাশুড়ি নিজের মেয়ের মতোই ভালোবাসেন।
সমস্যাটা হল আমার। আমি ভালো মানুষ নই। আমি সবকিছুতেই স্বামীর খুৎ ধরার চেষ্টা করি। আমি আবার এটাও বুঝি, আমারি ভুল আমারই দোষ। আপনারাই বলেন, আমার ভুলের মাশুল সে কেন দিবে?
১. আমার স্বামী খুবই হ্যান্ডসাম। তাকে দেখতে অবিবাহিতই লাগে। কিন্তু আমি দেখতে মধ্যবয়সী মহিলার মতই। ওর পাশে আমাকে মানায় না। সে নিশ্চয়ই একটা সুন্দরী কম বয়সী বৌ ডিজার্ব করে।
২. আমি আর আমার স্বামী একই ধরনের প্রতিষ্ঠানে জব করি। সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটনি করে আমার স্বামী ঘরে ফিরে আসে। আসার পর সে সেবা চায়।
এইদিকে আমি আমার প্রতিষ্ঠানে থেকে শুয়ে বসে ঘুমিয়ে দিন পার করি। ফিরে আসার পর স্বামীকে সেবা পর্যন্ত করি না।
৩. সারাদিন খাটাখাটনির পরে সে নিজেকে সময় দিতে বাইরে যায়, ৪-৫ ঘণ্টা কাটিয়ে আসে। আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যায়। অথচ এটা হওয়া উচিত নয়। যেহেতু অফিস থেকে ফিরে বাসায় আমি শুয়ে বসেই থাকি।
৪. বাসায় ফিরে আমার স্বামী রাত দুইটা পর্যন্ত মোবাইল দেখে। আশ্চর্য, পুরুষ মানুষ কি বাচ্চা নিয়ে বসে থাকবে? সকালে অফিস আছে না? আমার ঘুমাতে অসুবিধা হয়। যদিও সেটা হওয়া উচিত নয়।
৫. আমার স্বামী চেষ্টা করে বাচ্চাদের কাছ থেকে নিজেকে দূরে রাখতে। বাচ্চাগুলো বেয়াদব। খালি বাবা কে ডিস্টার্ব করে। বাচ্চার বাবার সাথে বাইরে যেতে চায়।
বাচ্চাদের কিন্তু আমার নিয়ে যাওয়া উচিত। বাবা রেস্টের প্রয়োজন আছে না?
৬. আমার বেতনের টাকা স্বামী তোলে এবং খরচ করে। আমাকে রোজ হাত খরচ দেয়। কিন্তু আমার খুব রাগ হয়। অথচ আমার রাগ হওয়া উচিত নয়। আমি মহিলা মানুষ, টাকা দিয়ে কি করব?
৭. আমার কাছে তো লালন-পালন করতে আমার বাবা মা খুব কষ্ট করে, কিন্তু আমি চাই শশুর শাশুড়ি করুক। এটাকে আমি অত্যন্ত ভুল। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি কষ্ট করে বাচ্চার জন্ম দিয়েছে, তাদের বাচ্চা আবার আমাকে খাওয়াচ্ছে পড়াচ্ছে, আমার বাচ্চাদেরও খাওয়াচ্ছে পড়াচ্ছে। তারা কেন খাটাখাটনি করবে বলেন?
৮. আমি বাইরে জব করি বলে আমি রোজ আমার ফোনটাকে চেক করে। আননোন নাম্বারে কল আসলে আমাকে স্পিকার দিয়ে কথা বলতে হয়।
আমার রাগ হয়। কিন্তু এখানে আমার স্বামী তো ঠিক, নিজের বউকে দেখে শুনে রাখতে হবে না?
আর প্রাইভেসি? যার কাছে আমি কাপড় খুলি, তার কাছে কিসের প্রাইভেসি?

আমি বিবেচনা করেছি, আমি আর আমার সন্তানেরা আমার স্বামীর প্রচুর টাকা-পয়সা নষ্ট করছি। বাচ্চাদের অসুস্থতায় তার ঘুম নষ্ট করছি। এসব আসলে ঠিক নয়।

তাই, আমি আমার স্বামীর শান্তি চাই। চলে যেতে চাই।
তিনি যাতে আমাকে যেতে দেন, তার জন্য কী করতে পারি??

পাঠিয়েছেন:নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন

গতকাল SSC এর রেজাল্ট দিয়েছে....তাতে আমার কি.আমি তো ১৩ বছর আগে SSC পাশ করছি😎😎
11/07/2025

গতকাল SSC এর রেজাল্ট দিয়েছে....

তাতে আমার কি.
আমি তো ১৩ বছর আগে SSC পাশ করছি😎😎

বিয়ের দ্বিতীয় দিনেই শ্বশুরবাড়িতে খুব খারাপ একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেললাম, কোন কারন ছাড়াই হাত থেকে চা সহ কাপ পড়ে ভেঙ্গে গে...
10/07/2025

বিয়ের দ্বিতীয় দিনেই শ্বশুরবাড়িতে খুব খারাপ একটা ঘটনা ঘটিয়ে ফেললাম, কোন কারন ছাড়াই হাত থেকে চা সহ কাপ পড়ে ভেঙ্গে গেল। আমার হঠাৎ কেমন যেন কান্না পেয়ে গেল। শব্দ শুনে সবাই ছুটে এলো, আমার কান্না ভাব দেখে আমার শাশুড়ি মা হেসে ফেললেন। আমিও যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম।

বিয়ের তৃতীয় সপ্তাহে আবার একটা অঘটন ঘটালাম, আয়রন করতে গিয়ে আমার বরের খুব শখের একটা শার্টের অংশ পুড়ে ফেললাম। ও চোখ রাঙিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো, মাঝখান থেকে এসে আমার শাশুড়ি মা ঝাড়ি খেলো। আমার ভীষণ কান্না পেল, ও বেচারীর কি দোষ।

রাগ উঠতে লাগল আমার বাবা-মায়ের উপর। আমাকে কোন কাজ শেখায়নি, উপরন্তু মাত্র উনিশ বছর বয়সে ঘাড় থেকে বোঝা নামিয়েছে।

পড়াশোনাটা আর হলো না, সময় গড়িয়ে চললো, ততদিনে আমি বুঝে গেছি এই বাড়িটা আর আমার না, যতই চেষ্টা করি না কেন কোন না কোনভাবে আমাকে এই বাড়ি তে থাকতে দেয়া হয়েছে শুধু , এটা আমার ঠিকানা নয়। বাবার বাড়ি বেড়াতে গেলেও অনেকেই প্রথম প্রশ্ন করে

- কিরে কদিনের জন্য এসেছিস থাকবি তো কিছুদিন? আমার চোখে শুধু জল চলে আসে।

প্রথম অ্যানিভার্সারি দিনটাই ও ভুলে গেল, আমার খুব রাগ হলো, রাত করে বাড়ি ফেরায় ঝগড়াটা আসলে প্রথমে আমিই শুরু করি, ও ঠাস করে আমার গালে একটা চড় দিয়ে নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে বললো

- বের হয়ে যাও আমার বাড়ি থেকে। যদিও বাড়িটা তার নিজস্ব না, ভাড়াবাড়ি। তবুও ভাড়ার টাকাটা তো তার পকেট থেকেই যায়। ততক্ষনে আমার শ্বাশুড়ি চলে এসেছেন। উনি কিছু বলার আগেই ও খুব বিশ্রী ভাবে চিৎকার করে বললো,
-এখানে কি সার্কাস চলছে, যাও বলছি, সব বাতিল জিনিস গুলো আমার ঘাড়ে এসে পরেছে। কি লজ্জা!

পরের দিন কাকডাকা ভোরে ঘুম ভেঙে গেল। এক মগ কফি হাতে ছাদে গেলাম, গিয়ে দেখলাম মা দাঁড়িয়ে আছেন ছাদের এক কোনে। এত ভোরে আচমকা আমি তাকে দেখে অবাক হলাম, পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম, দেখলাম মায়ের চোখে জল। আমাকে কিছু জিজ্ঞেস করতে হলো না, মা নিজে থেকেই বলতে শুরু করলেন,

- বুঝলি রে মা, প্রথমে থাকতাম বাবার বাড়িতে, পরে স্বামীর বাড়িতে আর এখন ছেলের বাড়িতে। এবার কবরে গেলে বাঁচি অন্তত কবরটা তো নিজের হবে। আমার বুকটা দুমড়ে মুচড়ে গেল।

আমি পুরোপুরি সংসারে মনোযোগী হওয়ার চেষ্টা করলাম যেন আমার কোন কাজে আমার বর আমার উপর অসন্তুষ্ট না হয়, কিন্তু সব সময় কিছু না কিছু সমস্যা থাকতোই। আমি আরো মন দিতাম আরো চেষ্টা করতাম, অবিরাম। একদিন বুঝলাম আমি মা হবো। সবাই খুব খুশী আর আমি খুশি এই ভেবে যে আপাতত আমার বর আমার ওপর রাগ ঝাড়ছে না।

মেঘে মেঘে অনেক বেলা কেটে গেল, আমার দুই ছেলে এক মেয়ে। মেয়ের বিয়ে দিয়েছি কানাডা প্রবাসী এক ছেলের সাথে। ছেলেদেরকে যথাসাধ্য চেষ্টা করে , সর্বস্ব শেষ করে মানুষের মত মানুষ করার চেষ্টা করেছি। একজন ডাক্তার আর একজন ম্যাজিস্ট্রেট, এরকম ভাগ্য কতজন বাবা-মায়ের হয়?

আমি আর আমার বর এখন আর একসাথে থাকি না ছেলেরা ভাগাভাগি করে নিয়েছে আমি পড়েছি বড় ছেলের ভাগে, বাবা-মা ভাগাভাগি করা যায় আমি জানতাম না।

হঠাৎ অতীত স্মৃতি হাতরে মনে পড়ে গেল আমার শাশুড়ি মায়ের বলা সেই লাইনগুলো, নিজের বাড়ি। আহারে তখন যদি এর মর্ম বুঝতাম। শুধু স্বামীর মনোযোগ আর সংসারের প্রতি মনোযোগী হয়ে কী লাভ হলো? যার মনোযোগের আশায় এতকিছু করেছি আজ সে নিজেও নিজেরই ছোট ছেলের বাড়িতে আশ্রিত।
প্রায় রাতেই স্বপ্ন দেখি, ছোট্ট একটা হাফ বিল্ডিং দু কামরার বাড়ি, গেটের কাছে বাগানবিলাসের ছায়া, আচ্ছা মাও কি জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এরকম স্বপ্ন দেখতেন? খুব জানতে ইচ্ছে করে.....

আফসোস
কলমে: সুবর্না শারমিন নিশী

বাংলাদেশ বলে কথা😎
10/07/2025

বাংলাদেশ বলে কথা😎

আমি যখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ি তখন জোর করে  আমাকে পাত্রপক্ষের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়..আমি জানতাম বাড়িতে এমনিতে মেহমান আসবে কিন্...
07/07/2025

আমি যখন একাদশ শ্রেণিতে পড়ি তখন জোর করে আমাকে পাত্রপক্ষের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়..আমি জানতাম বাড়িতে এমনিতে মেহমান আসবে কিন্তু সাথে যে ছেলে আর ছেলের পরিবার আসবে সেটা ঘুনাক্ষরেও টের পাইনি.
সবার অনুরোধে আমি পাত্র পক্ষের সামনে গেলাম. আসসালামুওয়ালাইকুম বলার পরিবর্তে " বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" বলে ফেলছিলাম..দেখলাম উপস্থিত সবাই হাসছেন..ছেলে আর তার পরিবারও মুচকি মুচকি হাসছেন. আমার বড় বোন সেখান থেকে বের হয়ে বাইরে গিয়ে হাসি নিয়ন্ত্রণ করছিলো...
পাত্রের মা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য আমাকে বললেন " তোমার নাম কি মা?".
আমার উপস্থিত জ্ঞান খুব কম..আমি আমার পাশে বসে থাকা ফুপাতো ভাই এর দিকে তাকিয়ে ইশারায় জিগ্যেস করলাম " আমার নাম কি?". ভাইয়া আমার বদলে ওনাদের বললেন " ওর নাম ইউশা ".
পাত্রের মা তারপর আবার জিগ্যেস করলেন " দেখতে তো পুরো হাড্ডি, তা কয় প্লেট ভাত খাও".
আমি মাথা নিচু করে বললাম " আপনাদের থেকেও কম ". হাড্ডি বলাতে খানিক অপমানবোধ হওয়ায় এভাবে জবাব দিলাম...
ওনি আমার হাতে চা দিয়ে বললেন " লজ্জা পেওনা খাও ".
আমি চায়ের কাপ হাতে নিয়ে বিস্কুট চুবিয়ে খেতে লাগলাম.
তারা বিস্কুট নিলোনা আমার খাওয়া দেখে পাত্রের বড় বোন বললেন " তোমার কি বিস্কুট গুলো বেশ পছন্দের?". ওনার কথা শুনে আমার ব্রেইন সজাগ হলো. মনে মনে বললাম " এটা কি করতেছি আমি ". পিরিচের দিকে তাকিয়ে দেখি দুটো বিস্কুট ছাড়া কিছুই নেই. পাত্রের মা আমার হাতে দুটো বিস্কুট সহ পিরিচটা তুলে দিয়ে বললেন " খাও ল-জ্জা পেতে হবে না ".. আমার আবার খাওয়ার বেলায় ল-জ্জা কম. ল-জ্জা নেই বললেই চলে.

পাত্রের মা আর বড় বোন আমাকে তাদের মধ্যখানে বসালো. আমার হাত ধরে বললেন " এত শুকনো মানুষ হয়? একদম হাড্ডি, এই সময় এমন চিকন মানুষ চলে? ". আমি মুচকি হেসে বললাম " আপনাদের থেকে দু-কেজি করে দিয়ে দিয়েন তাহলে মোটা হয়ে যাবো...

ওনাদের যাওয়ার পালা আসলো..চলে যাওয়ার সময় পাত্রের মা আমার হাতে হাজার তিনেক টাকা দিয়ে বললেন " ভিটামিন ঔষধ কিনে খেও"..
আমি এই টাকা পাত্রের ভাগ্নির হাতে দিয়ে বললাম " এই টাকা দিয়ে আপনার মামাকে ওয়েট লস হওয়ার ঔষধ কিনে খেতে বলবেন, কন্ট্রোল করা জরুরী 🙂

collected

আমি বর্তমানে এক গভীর ও জটিল সমস্যার মধ্যে রয়েছি। আমার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলাম প্রায় তিন বছর আগে। আমাদের মধ্যে ...
05/07/2025

আমি বর্তমানে এক গভীর ও জটিল সমস্যার মধ্যে রয়েছি। আমার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিয়েছিলাম প্রায় তিন বছর আগে। আমাদের মধ্যে দাম্পত্য জীবন একেবারেই সুস্থির ছিল না—দুজনেই বুঝে ও সম্মত হয়েই আলাদা হই।

প্রথম স্ত্রীকে বিচ্ছেদের এক বছর পর আমি পুনরায় বিয়ে করি। আমার বর্তমান স্ত্রী অত্যন্ত ভালো একজন মানুষ, তার সঙ্গে সম্পর্ক অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও মজবুত। সে এখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা এবং সংসার নিয়ে সে অত্যন্ত আন্তরিক।

তবে জটিলতা তৈরি হয়েছে তখন, যখন আমার সাবেক স্ত্রী পুনরায় আমার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে। তালাকের পরে আমি চেষ্টা করেছিলাম নিজেকে দূরে রাখতে, কিন্তু তার প্রতি আমার কিছু দুর্বলতা ছিল—এটা অস্বীকার করতে পারি না। সে আমাকে ইমোশনাল কথা বলত, মিস করত, আগের সম্পর্কের স্মৃতি টেনে টেনে আমার মন দুর্বল করে তুলেছিল। মাঝে মাঝে দেখা হত, কথা হত—এমনকি শারীরিক সম্পর্কও হয়েছে।

এই আবেগের টানাপোড়েনের মাঝে হঠাৎ সে আমাকে জানায়, সে এখন সাত সপ্তাহের অন্তঃসত্ত্বা। এবং সে এই সন্তানকে নষ্ট করতে রাজি নয়। তার দাবি, সে এখন আমাকে সত্যিকারভাবে ভালোবাসে এবং সে চায় আমি তাকে আবার বিয়ে করি।

অন্যদিকে, আমার বর্তমান স্ত্রীও গর্ভবতী, এবং সে আমার প্রতি পুরোপুরি বিশ্বস্ত। তার এই পরিস্থিতিতে এমন কিছু জানানো, যা তার মন ও শরীরের ক্ষতি করতে পারে, সেটা ভেবেই আমি আতঙ্কিত।

আমি এখন চরম দোটানার মধ্যে আছি। একদিকে একটি ভুল সিদ্ধান্ত, আবেগপ্রবণ সম্পর্ক এবং অপর দিকে একটি দায়িত্বশীল সম্পর্ক ও আসন্ন পিতৃত্ব। আমি বুঝতে পারছি না কোন পথে হাঁটলে সকলের জন্য সবচেয়ে কম ক্ষতিকর হবে। আমি আমার বর্তমান স্ত্রীকে হারাতে চাই না, কিন্তু সাবেক স্ত্রীর এই সন্তান নিয়েও আমি দুশ্চিন্তায় আছি।

আমি সত্যিই জানি না কী করা উচিত, কোন সিদ্ধান্তটা আমার, আমার সন্তানদের ও সকলের জন্য সবচেয়ে ন্যায়সংগত ও মানবিক হবে।

পাঠিয়েছেন:নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন

আমি একজন ছেলে, প্রেম করে বিয়ে করেছি ৬/৭ বছর হয়েছে! একটা বাচ্চা আছে। সম"স্যা হচ্ছে বাচ্চা হওয়ার পর আমার বউ আমাকে ঠিক মতো ...
04/07/2025

আমি একজন ছেলে, প্রেম করে বিয়ে করেছি ৬/৭ বছর হয়েছে! একটা বাচ্চা আছে। সম"স্যা হচ্ছে বাচ্চা হওয়ার পর আমার বউ আমাকে ঠিক মতো সময় দিতে পারে না, বা ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারে না। সংসার আর বাচ্চা সামলাতে সামলাতে তার দিন কে/টে যায়। আমি এটা নিয়ে ডি"প্রে"সড না নিজেকে এর সাথে মানিয়ে নিয়েছিলাম, কিন্তু ঝা"মে"লা লাগে গত ৪ মাস আগে!

ফেসবুকে এক মেয়ে আমাকে ফ্রেন্ড রিকুয়েষ্ট পাঠায় আমিও কিউরিয়াস হয়ে এক্সেপ্ট করে কথা বলি, তবে তার কাছে কিছু লু"কা"ই না! সে জানে আমার বউ বাচ্চা আছে। প্রথমে আমার সাথে ফ্রেন্ড হিসেবেই কথা বলে আস্তে আস্তে বুঝতে পারি সে আমাকে পছন্দ করেছিল বিয়ের জন্য! আমি বিবাহিত জানার পর সে আশা ছেড়ে দিয়েছে! বন্ধু হিসেবেই আমার সাথে কথা বলেছে।

আমি যেহেতু বিবাহিত তাই এটা গুরুত্ব দেই নাই, ফ্রেন্ড হিসেবেই কথা বলেছি।
তবে আস্তে আস্তে সে ফ্রেন্ড এর থেকে বেশি কিছু হয়ে যায়! ঘুরতে যাওয়া এবং এর মাঝে ২ দিন আমার আর তার সাথে ফি"জি"কা"ল মে"লা"মেশা-ও হয়ে যায়! এর পর থেকে ২ জন ২ জনের প্রতি বেশি দু"র্ব"ল হয়ে যাই।

এভাবেই চলছিলো হঠাৎ এই সপ্তাহে তার একটা বিয়ের প্রস্তাব আসে, ছেলে পক্ষ তাকে পছন্দ করে খুব শীঘ্রই তার বিয়ের ডেট ফিক্স করবে।

এখন আমি কোনভাবেই এটা মানতে পারছিনা, সেও আমাকে ছাড়তে চাচ্ছে না, আমার-ই হতে চাচ্ছে। এখন আমার কাছে ২ টি পথ। হয় তাকে ২য় বিয়ে করে আলাদা রাখা, অথবা তাকে নতুন জীবন শুরু করতে দেয়া।

এখন আমি যখন পরিবার সমাজ এর কথা ভাবছি, তখন তাকে আর বিয়ে করার সাহস পাচ্ছিনা! কিন্তু যখন আমি তাকে অন্য কারও হওয়ার কথা ভাবছি, তখন তাকে ছাড়তেও পারছিনা! আমার সব কিছু মনে হচ্ছে সেশ হয়ে যাচ্ছে।

এই মুহুর্তে আমার জন্য সঠিক সমাধান কি? আর আমি কিভাবে এই সিচুয়েশন হেন্ডেল করবো? নিজেকে মানসিক ভাবে স্টেবল করবো?

দয়া করে কেউ বা"জে কথা বলবেন না! পরামর্শ দিন। 🙏

>নাম প্রকাশ করবেন না।

04/07/2025

#ছোটগল্প
#বালিশ

এক

সকাল থেকেই চুলার পাড়ে বসে খুন্তি নাড়ছে হনুফা বিবি। মন মেজাজ জায়গামত নাই। তাই খুন্তি নাড়ানাড়িতে অন্যদিনের চাইতে একটু বেশিই শব্দ হচ্ছে।

একটু আগে ছেলের বউ মরিয়ম এসে রান্নাবান্নার জিনিসপাতি এগিয়ে দিয়েছে। শাশুড়ির মেজাজ বুঝে একটু কাটাকুটিও করে দিতে চেয়েছিল। হনুফা বিবির মেজাজ তাতে আরো চড়ে গেছে। মুখ বাঁকিয়ে বলেছে, ‘অন্যদিন তো হাজার ডাকলেও সহজে এই মুখা আসো না! আইজ এক্কেরে তরকারি কুইটা দিবার আইছ? মাথায় এত বুদ্ধি গিজগিজ করে তুমার!’

এই অভিযোগ সত্য না। বরং অন্যদিন বেশিরভাগ রান্না মরিয়মই করে। শাশুড়ি এসে মন চাইলে একটু কুটাবাছা করে দেয়। মন চাইলে কখনো রান্না করে। কোনোদিন কিছুই করে না। অল্পবয়সী আনাড়ি মরিয়ম একা একা বাড়ির সবার জন্য তিন চার পদের রান্না করে।
তার শ্বশুর সাদাসিধা মানুষ। কিছু একটা পাতে পড়লেই তিনি খুশি। একমাত্র দেবরেরও খাওয়াদাওয়া নিয়ে কোনো বাই নাই। সে সারাদিন বন্ধুবান্ধব নিয়ে টই টই করে ঘুরে বেড়ায়। ক্ষুধা লাগলে বাসায় এসে চারটা মুখে গুঁজেই আবার বের হয়ে যায়। আর মরিয়মের স্বামী তো বাড়িতেই থাকে না!

শাশুড়ির খাওয়াদাওয়ায় অনেক বাছবিচার। দেশি ডিম ছাড়া খেতে পারে না। তরকারিতে বেগুন দিলে নিজেও তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠে। যা যা খেলে চুলকানি হয়, কিছুই তার তরকারিতে দেওয়া যাবে না। ভাত বেশি নরম হলে ছুঁড়ে ফেলে দেয়, শক্ত হলে সেদিন ভাতই খায় না। হাজার বায়নাক্কা।
সেগুলো মাথায় রেখে মরিয়ম শাশুড়ির জন্য আলাদা সালুন রান্না করে। ভিন্ন পাতিলে যত্ন নিয়ে ভাত বসায়। কিন্তু এতকিছু করেও শাশুড়ির মন পাওয়া হয় না মরিয়মের। পান থেকে চুন খসলেই তিনি বাতাসে কথা ছুঁড়ে দিয়ে বলে, ‘কপাল কইরা আইছিলাম গো! এত্ত বড় কপাল আমার! বাপের বাড়ি শ্বশুরবাড়ি কুনোখানেই কুনোদিন ঠেকন লাগেনি। খালি বউয়ের হাতের রান্ধন খাওনের কপাল হয়নি আমার! দুইটা সালুন রান্ধতে গিয়া কত কী ব্যাড়াছারা করছে! বলি ও গো বউ! বাপের বাড়িত থিকা কি কিছুই শিইখা আসো নাই?’

আজ সকাল থেকেই শাশুড়ির রান্নাঘরে আসার প্রধান কারণ হচ্ছে, তার বড় পুত্র সুজন আজ বাড়িতে এসেছে। সুজন শহরে চাকরি করে। গার্মেন্টসের ম্যানেজার। দুই মাসে একবার বাড়িতে আসতে পারে। তিন চারদিনের বেশি থাকতে পারে না। ঘরে তার আটমাসের বিয়ে করা বউ। শহরে মন টেকে না। কিন্তু গার্মেন্টসের চাকরিতে এত ঘন ঘন ছুটিছাঁটা পাওয়া যায় না।
সুজন বাড়িতে এলেই মরিয়মের শাশুড়ির ব্যস্ততা বেড়ে যায়। বউ যাতে খুব বেশিসময় স্বামীকে একা না পায়, সেই চেষ্টায় তার কমতি থাকে না। বেশি একা পেলেই বিপদ! আড়ালে বসিয়ে কী না কী কানপট্টি দিতে থাকবে তার কোনো ঠিক আছে?

এদিকে ছেলের কাছে নিজের ইমেজটাকেও তো মজবুত রাখতে হবে। ছেলে যাতে ঘুণাক্ষরেও টের না পায় যে, সব রান্নাবান্না তার বউই করে। বরং এই সুযোগে ছেলেকে বুঝিয়ে দিতে হবে, বৃদ্ধা মায়ের দেখাশুনার কাজটাও তার বউ ঠিকমত করে না! উল্টো রান্নাবান্নার দায়িত্ব থেকে এই বয়সেও তার নিষ্কৃতি মেলেনি।

সেই উদ্দেশ্যেই হনুফা বিবি আজ সকাল থেকেই রান্নাঘরে।
ছেলের বউ যতবার ঘরের ভেতরে ঢুকছে, হনুফা বিবির কড়াইখুন্তির ঝনঝনানিও ততই বেড়ে চলেছে। ছেলে মায়ের পাশে বসে কোথায় দু চারটা সুখ দুঃখের কথা বলবে, তা না! কিছুক্ষণ পরে পরেই ‘ও বউ কই গেলা?’ মনে মনে গজর গজর করে হনুফা বিবি, ‘অসভ্য পোলা, প্যাটে থুইলাম আমি, অখন বউই হইল সব! নিমকহারাম!’

দুই

হনুফা বিবি রান্নাবান্না শেষ করে সবে মোড়া থেকে গা টা তুলেছে, এমন সময় সদর দরজা থেকে হাঁক ভেসে এলো, ‘মা, ও মা... দরজা হাট কইরা খুইলা থুইছ ক্যান? ছিঁচকা চোরের অভাব পড়ছেনি গেরামে?’

হনুফা বিবির বুকটা ধড়াস করে উঠল। তার মেয়ে কুসুমের গলা না? হ্যাঁ তাই তো! এইভাবে খবরটবর না দিয়ে তো কুসুম আসে না! আজ হঠাৎ এভাবে আসার কারণ কী? খারাপ কিছু হয়নি তো? ধড়মড় করে সামনে এগুতে গিয়ে শাড়ির আঁচলে পা বেঁধে হনুফা বিবি রান্নাঘরের সিমেন্টের মেঝেতে একেবারে ধড়াম করে পড়ে গেলেন।

একে তো সকাল থেকেই তার মেজাজটা হয়ে আছে খারাপ। তার ওপরে এই বেআক্কেল আছাড় খেয়ে হনুফা বিবি গগনবিদারী চিৎকার জুড়ে দিলো, ‘ওরে আল্লাহ্‌ রে!...’
ঘর থেকে ছেলে ছেলের বউ ছুটে এলো। চিৎকার শুনে মেয়ে কুসুমও এক দৌড়ে ‘ও মা কী হইল তুমার’ বলে মায়ের পায়ের কাছে এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ল। কুসুমের গোমড়ামুখো জামাই এই হুলুস্থুলের মধ্যে পিছন থেকে একটু উঁকি দিয়েই আবার মুখ নামিয়ে ফেলল। শাশুড়ির বেহাল দশা দেখে সম্ভবত লজ্জাতেই মুখ লুকালো সে।

হনুফা বিবি তখনো মেঝেতে লুটিয়ে পড়ে ‘ওহ মা গো ওহ বাবা গো’ বলে চেঁচিয়েই চলেছে। ব্যথা যত না তার শরীরে লেগেছে, মনে লেগেছে কয়েকগুণ।
বউ মরিয়মকে রান্নাবান্নার আশেপাশে ভিড়তে না দিয়ে লাভের লাভ কিছু হয়নি। বউ আর ছেলের এতে আরো পোয়াবারোই হয়েছে। দুজনে ঘরের দরজায় খিল মেরে দিয়ে মনের সুখে প্রেম করেছে। মা যে এদিকে রান্নাঘরে হেদিয়ে মরছে, সেটা নিয়ে ছেলের কোনো হেলদোলই নেই! মাঝে একবার শুধু ঘর থেকে একটু ফুচকি মেরে বলেছে, ‘ও মা, তুমার হাতের মাশকলাইয়ের ডাল ম্যালাদিন খাই না! আইজ এট্টু মাছের কাঁটাকুটা দিয়া রাইন্ধ! হাউশ মিটাইয়া খামু!’

বলেই আবার ঘরে ঢুকে পড়েছে। দুঃখে হনুফা বিবির জবানই বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়েছে। পোলার বউ নির্লজ্জ বেহায়ার মতো স্বামীর সাথে সোহাগ করছে, আর তাকে কী না এই গরমের মধ্যে সিদ্ধ হয়ে মাশকলাইয়ের ডাল রান্না করতে হচ্ছে!
কুসুম মায়ের গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে একটু ধাতস্থ করে বলল, ‘তুমি রান্নাঘরে কী করতাছ? ভাবি কই?

মরিয়ম আজ সকাল থেকে কয়েকবার পাকের ঘরে ঢুকতে গিয়ে বাধা পেয়েছে। শাশুড়ি তাকে আজ পাকের ঘরে ঢুকতেই দেয়নি! এই অল্পদিনের সংসারেই মরিয়ম সংসারের নাড়িনক্ষত্র বুঝে গিয়েছে। ছেলের চোখে ত্যাগী মায়ের তকমা পেতে শাশুড়ি আজ আদাজল খেয়ে লেগেছে। ওদিকে স্বামীর মনও উচাটন হয়ে আছে। পরশুদিন সকালবেলাতেই সে শহরে চলে যাবে। এই দুইদিনে বউকে সে ক্ষণে ক্ষণে চোখে হারাচ্ছে। এদিকে শাশুড়ির চোখের সামনে ঘরে খিল এঁটেও বসে থাকা যায় না। বারকয়েক আপত্তি করতেই স্বামী কপট রাগ দেখিয়ে বলেছে, ‘ওমুন করলে কইলাম কাইলই চইলা যামু! আর আসুম না!’
মরিয়ম পড়েছে মহা বিপদে। শেষমেশ লাজ শরমের মাথা খেয়ে তাকে ঘরে ঢুকে খিল দিতে হয়েছে। শাশুড়ির মেজাজ যে ওদিকে ফুটন্ত পানির মতো টগবগ করে ফুটছে, সেটা তাকে বলে দেওয়ার দরকার পড়ে না!

মেয়ের কথায় হনুফা বিবি ক্ষিপ্ত হয়ে কিছু একটা বলতে যাবে এমন সময় জামাইয়ের দিকে চোখ পড়তেই শশব্যস্ত হয়ে বলে উঠল, ‘ও মা জামাইও আইছে দেখি! ও কুসুম একটা খবর দিয়া আইবি না?’
কুসুম মুখ ভেটকিয়ে বলল, ‘ভাইজানরে তো ফোন দিছিলাম! কইছিলাম আমরা আইতাছি! ভাইজান যে তুমারে কয়নি, সেইডা আমি ক্যামনে জানুম?’

সুজন জিভ কেটে বলল, ‘এ্যাহ হে, তুই যে কাইল ফোন দিছিলি এক্কেরে ভুইলা গেছি!’

হনুফা বিবি খুব গোপনে ছোট করে একটা ভেংচি কেটে বলল, ‘হ তুমি অখন দুনিয়া ভুইলা বইসা আছ। তুমার কি আর কিছু মনে থাকব!’

তিন

হনুফা বিবির মেয়ের জামাই হাসান মোল্লা রাশভারী মানুষ। দশটা কথা বললে সে ভেবেচিন্তে একটার উত্তর দেয়। সে এবারে পৌরসভার ইলেকশনে দাঁড়িয়েছে। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। এই ভোটের ক্যাম্পেনিং করার জন্যই সে দীর্ঘদিন পরে শ্বশুরবাড়িতে পা দিয়েছে।

কুসুমের বিয়ে হয়েছে পাঁচ বছর। এখন অব্দি সে মা হতে পারেনি। দুজনের কারো সমস্যা আছে কী না জানতে চাইলে কুসুম মাথা নিচু করে ফেলে। তার মাথা নিচু করাতে হনুফা বিবির ধারণা হয়েছে, সমস্যাটা তার জামাইয়ের। নিজের বরের অক্ষমতার কথা বলতে কোন মেয়েরই বা ভালো লাগে?

জামাইকে দেখে তড়িঘড়ি মাথায় একটা ঘোমটা টেনে দিয়ে হনুফা বিবি কোনোমতে উঠে দাঁড়ায়। ছেলে আর ছেলেবউয়ের দিয়ে অপাঙ্গে একটা ক্রুর দৃষ্টি দিয়ে মেয়েকে বলে, ‘ভাইয়ের কাছে ফোন না দিয়া আমারে ফোন দিবার পারস নাই? ওহন জামাইরে কী খাওয়াই!’
কুসুম টেনে টেনে বলে, ‘ক্যা, পোলার লাইগা রান্ধ নাই? তুমার জামাই কি বিরাট খাদক নাকি?’

কুসুমের বর হাসান মোল্লা হাঁড়ির মতো মুখে একটু ঝুঁকে পড়ে শাশুড়ির পা ছুঁয়ে সালাম করার একটা ভঙ্গি করল। বলল, ‘আমরা কাইল সকালেই চইলা যামু আম্মা। ম্যালা কাম বাকি আছে। আপনাগো দোয়া লইতে আইছি। একটু দোয়া কইরা দিয়েন!’
হনুফা বিবি গদগদ হয়ে বলে, ‘দোয়া তো করুমই বাবা! তুমি চেয়ারম্যান হইলে গর্বে আমাগো বুকডা কত ফুইলা যাইব!’
সুজন একটু কথা বলার সুযোগ পেয়ে বলে, ‘দুলাভাই কাইলই যাইবেন গা এইডা কেমুন কথা? আমি আইছি... আরেকটা দিন থাকতে হইব!’
হাসান মোল্লা গম্ভীর মুখে বলে, ‘আচ্ছা দেখি... ম্যালা কাম।’

সুজনের বাবাও বাসায় ফিরে মেয়ে আর মেয়েজামাইকে আরেকটা দিন থেকে যাওয়ার অনুরোধ করে। কুসুম বিয়ের পর বাপের বাড়িতে তেমন একটা আসার সুযোগ পায় না। এই নিয়ে তার মা হনুফা বিবির দুঃখের সীমা নাই। বিয়ের এত বছর পরেও সে তার স্বামীকে নিজের বশে আনতে পারেনি দেখে হনুফা বিবি দিনরাত আফসোস করে।
কুসুমের শ্বশুরবাড়ি পাশের গ্রামেই। কিন্তু তার শাশুড়ি বেজায় কড়া। কুসুমের বরও বউয়ের কথায় তাল দেয় না। মা যা বলে সেটাই শেষ কথা।
শ্বশুরবাড়ি আসার আগে হাসান মোল্লার মা পান চিবুতে চিবুতে ছেলেকে বলে দিয়েছে, ‘শ্বশুরবাড়ি যাইতাছ যাও! বেশি গড়াগড়ি দিবার যাইয়ো না! বেশি গড়াগড়ি দিলেই কইলাম ধরা খাইবা। দিন গিয়া দিন ফেরত আইতে পারলে বেশি ভালা। সেইডা না পারলে পরদিন বিয়ানবেলাই চইলা আইবা। বাড়ি আইসা বউ লইয়া নাস্তা করবা। বউরে আবার বাপরে বাড়ি থুইয়া আইসো না!’

সকলের মিলিত অনুরোধে হাসান মোল্লা জীবনে প্রথমবারের মতোই একটু দোটানায় পড়ে। তাছাড়া সে একটু অন্য হিসাবনিকাশও করছে। ইলেকশনে দাঁড়িয়েছে। একটু মন রক্ষা করে না চললে যদি এদিকের সমর্থনটা না জোটে! সেই কারণেই যত টানাপোড়েন! নইলে মায়ের কথার এদিক ওদিক করার মতো ছেলে সে নয়। মায়ের কথার ওপরে আর কথা নাই।
তবু এবারে সে টলল। শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে বলল, ‘ঠিক আছে আম্মা। আপনারা যখন এত কইরা কইতাছেন তখন কালকের দিনটা থাইকাই যাই!’

হনুফা বিবির অসময়ে যেন দুই ঈদ লেগে গেল। জামাই পুরো দুইদিন থাকবে, এটা তো ভাবাই যায় না। তার ওপরে কুসুম তাকে এক ফাঁকে জানিয়েছে, শাশুড়ি একদিনের বেশি না থাকার ব্যাপারে কড়াভাবে বলে দিয়েছিল। জামাই এবারে তাদের কথাকে মায়ের কথার ওপরে স্থান দিয়েছে, এ তো রীতিমত অকল্পনীয় ব্যাপার!
দুপুরবেলা মেয়ে মেয়েজামাইকে ভালোমত খাইয়ে দাইয়ে হনুফা বিবি মেয়েকে নিজের ঘরে ডেকে আনল। ছেলে আর ছেলের বউয়ের নকরামি দেখেও না দেখার ভান করছে এখন। আগে তার মেয়ের সংসার ঠিক করে দিতে হবে। ছেলের বউকে কীভাবে টাইট দেওয়া যায় সেটা পরে ভাবলেও চলবে।

চার

‘মা তুমি কী সব কথা জিগাও। আমি পারুম না এত কিছু কইতে!’ কুসুম লজ্জায় লাল হয়ে মাকে বলল।

হনুফা বিবি মেয়ের কথাকে পাত্তা না দিয়ে বলল, ‘ঐ ছেড়ি! যা জিগাইতাছি ঠিক ঠিক কইরা ক! বিয়ার এত বছর হইয়া গ্যালো! অহনো তর প্যাট ফুলল না। জামাই কি ডাকেডুকে না?’

কুসুম গ্যাঁট হয়ে বসে রইল। মায়ের কথাগুলো শুনে তার খুব লজ্জা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু মনের মধ্যে অন্যরকম ঝড়ও বইছে। তার স্বামী মানুষটা রাশভারী হলেও কুসুমের সমস্যা ছিল না। কিন্তু মানুষটা বড্ড বেশি মা পাগল। মাকে ভক্তিশ্রদ্ধা করুক না, কে না করেছে? কিন্তু এই পাগলামি অন্যরকম। মায়ের কথার ওপর সে আর দ্বিতীয় কোনো কথাই শোনে না!
বিয়ের পরে সে যাতে ঘন ঘন বাপের বাড়ি না আসতে পারে, সেজন্য তার শাশুড়ি নানারকম কথাবার্তা বলে স্বামীর কান ভারি করে রেখেছে। কুসুমের কোনো কথাই চলে না ও বাড়িতে। স্বামীর কাছে মুখ বড় করে একটা কিছু বললে স্বামী ধমক দিয়ে বলে ওঠে, ‘আহ! তুমি থামো! বেবাক কথার মইধ্যে না সান্ধাইলে হয় না তুমার? দেহি মা কী কয়। মায়ে যেইডা কইব সেইডাই হইব!

বাচ্চাকাচ্চা হচ্ছে না দেখে কুসুমের মনে কষ্ট থাকলেও স্বামীর তাতে কোনো চিন্তাভাবনা নাই। কারণ কুসুমের শাশুড়ি তাকে শুনিয়েই ছেলেকে বলেছে, ‘পুরুষ মাইনষের দুই তিনডা বিয়া হইলে সমস্যার কিছু নাই। এক বউ সন্তান দিবার না পারলে আরেকজন দিব। সন্তান হওনডাই হইল আসল কথা! কার কাছ থেইকা হইতাছে হেইডা বিষয় না!’

এই কথা শোনার পর থেকে কুসুম দিনরাত আড়ালে চোখের পানি ফেলে। স্বামী তাকে একটা মোবাইলও কিনে দেয়নি যে মাকে ফোন করে একটু মনের কথা বলে। একদিন মোবাইলের কথা বলতেই হাসান মোল্লা খেঁকিয়ে উঠে বলেছিল, ‘তুমি মোবাইল দিয়া করবাডা কী? দিনরাত ফেসবুক চালাইবা আর বেগানা পুরুষ মাইনষের লগে ইটিস পিটিস করবা! ঘরের বউরে নষ্ট করোনের লাইগাই ওইসব আইছে দুনিয়ায়!’

কুসুমের মুখের দিকে তাকিয়ে হনুফা বিবি যা বোঝার সব বুঝে নিলো। মেয়ে যে তার স্বামীকে মোটেও হাত করতে পারেনি, সেটা তার অভিজ্ঞ চোখে ঠিকই বুঝে নিয়েছে। মনটা বিষাক্ত হয়ে গেল হনুফা বিবির। তার নিজের দুটো ছেলেমেয়েই ক্যাবলাকান্ত হয়েছে। পরের মেয়ে মরিয়ম এসে তার ছেলেটাকে একেবারে কুরবানি করে ফেলেছে। দিনরাত মাথায় কাঁঠাল ভেঙে খাচ্ছে। অথচ তার নিজের মেয়ে কুসুম স্বামীটাকে একটুও বশ করতে পারেনি। বোঝাই যাচ্ছে, হাসান মোল্লা কোনোভাবেই স্ত্রীর প্রতি আসক্ত নয়। হয়ত সেই কারণেই বাচ্চাকাচ্চা হতেও দেরি হচ্ছে।

মেয়েকে আরেকটু শক্তমতো চেপে ধরল হনুফা বিবি। মায়ের এত চাপাচাপিতে কুসুম আর পারল না। ঝরঝর করে কাঁদতে কাঁদতে আসল কথা খুলে বলল। শাশুড়ি যে তার ছেলের কানে আরেকটা বিয়ের বাজনা বাজিয়ে দিয়েছে, এটাও সে চেপে রাখতে পারল না।

সব শুনে হনুফা বিবির মাথায় বাজ পড়ল। তলে তলে এতদূর চলে গিয়েছে সবকিছু! অথচ তিনি মা হয়েও এসবের কিছুই জানেন না!
মেয়ে খুব একটা বাপের বাড়িতেও আসতে পারে না। এলে না হয় গাধি মেয়েটাকে একটু বুদ্ধিশুদ্ধি দিয়ে লাইনে আনা যেত! পুরুষ মানুষ হচ্ছে শিং মাছের মতো। ধরতে গেলেই হাতে কাঁটা ফুটায়ে দেয়। সহজে ধরা দিতে চায় না। কিন্তু একবার যদি সাইজমতো ধরা যায়, সোজা বটির নিচে ঘ্যাঁচাং! জীবনে আর মাথা তোলার সাধ্য নাই।
হনুফা বিবি কিছু একটা বলতে যাবে, এমন সময় স্বামীর ডাক শুনে কুসুম পড়িমরি করে বাইরে গেল। কিছুক্ষণ পরে ফিরে এসে বলল, ‘মা, বাড়িত কি নরম বালিশ নাই? তুমার জামাই তো শক্ত বালিশে শুইবার পারে না!’

‘থাকব না ক্যা? ম্যালা বালিশ তুইলা থুইছি।’

হঠাৎ কিছু একটা মনে পড়তেই হনুফা বিবির মুখচোখ উজ্জ্বল হয়ে উঠল। বলল, ‘তুই জামাইয়ের লাইগা বিছানাটা ঝাইড়া দিয়া আয়। আমি বালিশ বাইর করতাছি!’

মাত্র কিছুদিন আগে কুসুমের কথা চিন্তা করেই একটা তাবিজ বানিয়ে এনেছিল হনুফা বিবি। স্বামী বশীকরণের তাবিজ। এতদিন মেয়েকে দেওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। সেটার কথা মনে পড়তেই আর দেরি করল না হনুফা বিবি। হাতে সময় কম। চট করে তাবিজটা বালিশের মধ্যে ভরে সেলাই করে দিতে হবে।

দেরি না করে কাজে নেমে পড়ল সে।

পাঁচ

মায়ের ঘর থেকে বালিশ নিয়েই কুসুম ছুটল তার স্বামীকে দিতে।

একটু দেরি সহ্য করতে পারে না হাসান মোল্লা। সামান্য বালিশ পেতে এত দেরি হওয়ায় তার কপাল কুঁচকাতে শুরু করেছে।
ওদিকে তড়িঘড়ি কাজে ফাঁকফোকর থাকতে পারে ভেবে হনুফা বিবি একটু সময় নিয়ে বালিশটা ভালো করে সেলাই করে দিয়েছে। ভেতরে তাবিজটা ভরে দিয়ে কয়েকবার দোয়া দরুদ পড়ে ফুঁ দিতেও ভুল করেনি। তার দেরি দেখে কুসুম অধৈর্য হয়ে বলেছে, ‘ও মা, তুমি কি বালিশ সেলাই কইরা দিতাছ নাকি? এত দেরি করতাছ ক্যান?’

মাকে বালিশের ধার সেলাই করতে দেখে কুসুম অবাক গলায় প্রশ্ন করে। ভেতরে তাবিজ গুঁজে দেওয়ার বিষয়টা সে জানে না।
হনুফা বিবি শান্ত গলায় বলে, ‘বেবাক কিছুতে খালি হৈ হৈ করলেই চলে না বুঝলি? ভালা কইরা সেলাই কইরা না দিলে যদি তুলা বাইরাইয়া যায়!’
কুসুমের মাথায় কিছুই ঢোকে না। বালিশের তুলা কেন বের হয়ে যাবে এটা সে কিছুতেই বুঝতে পারে না।

মেয়ের হাতে বালিশ তুলে দিয়ে হনুফা বিবি লম্বা একটা শ্বাস ছাড়ে। মনে মনে ভাবে, এইবার তার মেয়ের সংসার ভাঙে কার সাধ্যি!

কুসুমকে বালিশ হাতে ব্যস্তভাবে হাঁটতে দেখে সুজন জিজ্ঞেস করে, ‘কীরে, বালিশ লইয়া দৌড় লাগাইছিস ক্যা?’
কুসুম ব্যস্ত ভঙ্গিতে বলে, ‘তিনি বালিশ চাইছেন। নরম বালিশ। শক্ত বালিশে ঘুমাইবার পারেন না।’
সুজন বোনের হাত থেকে বালিশটা টেনে নিয়ে বলে, ‘এইডা তর নরম বালিশ? খাড়া আমার বালিশটা লইয়া যা। ঐডাও নতুন, আরো নরম। এইডা আমারে দে।’

কুসুম না করার সুযোগ পায় না। সুজন বালিশ হাতে নিয়ে ততক্ষণে নিজের ঘরের দিকে রওয়ানা দিয়েছে। ঘর থেকে তার জন্য সদ্য বানানো নরম তুলতুলে বালিশটা এনে বোনের হাতে দিয়ে বলে, ‘দুলামিয়ার লাইগা সেরা বালিশ। দ্যাখ কেমুন নরম!’
কুসুম ভাইয়ের দেওয়া বালিশটা হাতে নিয়ে খুশি হয়। আসলেই তো! এটাই বেশি তুলতুলে। এই বালিশে মাথা দিলে স্বামীর গরম মেজাজ ঠাণ্ডা হতে সময় লাগবে না।

ওদিকে কুসুমের কাছ থেকে বালিশটা নিয়ে সুজন বিছানায় কাত হয়। মরিয়মকে খুঁজতে থাকে মনে মনে। বউ তার চড়ুইপাখির মতো ইচিং বিচিং করে নেচে বেড়ায়। কোথায় একটু পাশাপাশি শুয়ে গল্প করবে, তা না!

সুজন বিছানায় শুয়ে জানালা দিয়ে বাইরে তাকায়। আকাশে ঘন করে মেঘ করেছে। বৃষ্টি নামবে ঝমঝমিয়ে। সেই আকাশভরা মেঘের মধ্যে মরিয়ম দৌড়ে দৌড়ে তারে মেলে দেওয়া কাপড় তুলছে। মাথার আঁচল পড়ে গিয়ে একরাশ ঘন কালো চুল এলিয়ে পড়েছে পিঠের ওপরে।

সুজন মন্ত্রমুগ্ধের মতো সেদিকে তাকিয়ে থাকে।

#ফাহ্‌মিদা_বারী

আমাদের যেদিন অফিসিয়ালি ডিভোর্স হলো সেদিন ছিল শনিবার।ছোটবেলায় দাদী বলত--'বুইঝছ বুইন্ডি শনিবারে শনি ঘটে !'কি জানি !ঐদিন ত...
02/07/2025

আমাদের যেদিন অফিসিয়ালি ডিভোর্স হলো সেদিন ছিল শনিবার।ছোটবেলায় দাদী বলত--'বুইঝছ বুইন্ডি শনিবারে শনি ঘটে !'
কি জানি !
ঐদিন তো জানতাম না শনিবারে আমার জীবনে শনি ঘটল নাকি আমি শনির রাহু মুক্ত হলাম........

আমাদের সমস্যার শুরুটা হয়েছিল ঠিক বিয়ের দিন থেকেই।বিয়ের অনুষ্ঠানে আমার এক্স মাদার ইন ল -আমার অতীতের সবথেকে গুরুত্ব পূর্ণ চরিত্রে থাকা মানুষটি (!); বিয়ের খাবার স্পর্শ না করে সরাসরি যুদ্ধ ঘোষনা করছিলেন আমার সাথে ।ওনার কথা ছিল---ওনার একমাত্র ছেলের জন্য দশ জায়গায় মেয়ে দেখবে তারপর বিয়ে দিবে অথচ ওনার রাজপুত্রের মতো দেখতে ছেলে এই খুব সাধারণ দেখতে মেয়েটিকে বিয়ে করতে কেন পাগল হলো ??!! নিশ্চয়ই এই মেয়ে তার ছেলেকে জা&%দুটোনা করেছে !! কি হাস্যকর কথা, একজন সরকারী চাকরী করা যথেষ্ট শিক্ষিত মহিলা এগুলো বলে বলে দিনের পর দিন আমাকে আঘাত করতেই থাকতেন।

অথচ সত্যটা ছিল এ রকম -- আমি মেডিকেল ছাত্রী বলে আমার বাসা থেকে কখনোই ইন্জিনিয়ারের সাথে বিয়ে দিতে কোনভাবেই রাজী ছিল না।অথচ আমার এক্স হাজবেন্ড কোনভাবেই আমাকে ছাড়া আর কোন মেয়েকে বিয়ে করবে না বলে চরম সিদ্ধান্তটা তার বাসায় জানানোর পরে তার বাবা এবং বোনেরা মিলে বারবার আই রিপিট রিফিউজ হবার পরেও বারবার বিয়ের প্রস্তাব পাঠাতে থাকে আমার বাসায় তিন বছর ধরে।

যাহোক বেচারা অনেক স্ট্রাগল করেই আমাকে পেয়েছিল।আমিও তাকে পেয়েছিলাম পুরোটুকুই.........
কিন্তু ভাগ্য এবং সময় আমাদের সাথে ছিল না প্রথম দিন থেকেই।

বিয়ের রাত যাকে আমরা বাসর রাত বলে থাকি ঐদিন আমাদের বিছানায় ওর বোনেরা একটা মাত্র বালিস দিয়ে ফিসফিস করে আমাকে তাদের ভাইয়ের অনুপস্থিতিতে বলেছিল -- এই বাসায় তোমাকে আমরা মেনে নেইনি।শুধু ভাইকে হারাতে হবে বলে এইসব লোক দেখানো আনুষ্ঠানিকতা।আজকে এই একটা বালিশ দিয়ে এই বাড়িতে আমাদের কাছে তোমার অবস্থান ঠিক কি তা বুঝিয়ে দিলাম ! কেমনে সংসার কর দেখব !
নতুন বৌ আমি ভয়ে কাঁপতে কাঁপতে কাঁদতেই থাকলাম।

আমি তখনও ছাত্রী বলে আমাদের সম্পর্ক টা ছিল অনেকটাই long distance relationship এর মতো।মাসে একবার দেখা, ফোনে কথা এভাবেই চলছিল আমাদের বিবাহিত জীবন।

পরিবার যখন আপনার বিরুদ্ধে থাকে এবং আপনাদের সম্পর্কটা যদি দূরত্বের হয় তাহলে অনেক ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ ঘটে যায়, নিজেদের মাঝে নিজেদের অজান্তেই এত গ্যাপ সৃষ্টি হয়ে যায় যে তখন দেখা হওয়া মাত্রই ছোটছোট ইস্যু নিয়ে ঝগড়া করতে করতেই সময় শেষ হয়ে যায়।আমাদের সাথেও তাই হচ্ছিল।

ভুল বোঝাবুঝি এতোই মারত্বক পর্যায়ে চলে যেত যে ও পারত না নিজের রাগকে কন্ট্রোল করতে।আমি ছাড়া আর কেউ তো ওর আসলে ছিল না যার উপর সহজে ও রাগ ঝাড়তে পারে।তাই ইচ্ছে মতো মা&%রত আমাকে............মায়ের উপরে রাগ,বোনের উপরের রাগ, অফিসের রাগ সবকিছুই ঢালত আমার উপরে।আমি তখন শুধুই অবাক হয়ে দেখতাম ওকে, কাঁদতে ভুলে যেতাম।যে মানুষটা প্রচন্ড ভালোবেসে বিয়ে করল আমাকে সেই একই মানুষ কিভাবে প&%শুর মতো মা&%রতেই থাকত আমাকে.........আমার ভীষন কষ্ট হতো।

বাবা মায়ের খুব আদরের মেয়ে ছিলাম কিনা........আব্বু কোনদিনও মা ছাড়া কথা বলেনি আমার সাথে।আমার বাসায় কেউ জানত না ও যে আমার গায়ে হা&%ত তোলে।নিজের হাজবেন্ডকে পৃথিবীতে কোন মেয়ে ই কিছুতেই চায় না বাবার বাড়িতে ছোট করতে, তা যতই খারাপ স্বামী সে হোক না কেন।
রাগ কমে গেলে সে কিন্তু সরি বলত আমাকে, ভালোও বাসত, বলত -- আমি কি করব বল? সবাই আমার মাথা খারাপ করে দেয়।তুমি বেশিদিন আমার সাথে থাকবা না। এক দুদিন থেকে হোস্টেলে নাহয় তোমার বাবার বাসায় ফিরে যাও।আমাদের সম্পর্ক এভাবেই চলুক !!!

এভাবেই চলছিল।এরমধ্যে ওর বাসা থেকে প্রচন্ড প্রেসার দিতে থাকল বাচ্চার জন্য।নাতীর মুখ না দেখে ম&%রতে হবে তাদেরকে ! কি দরকার ছিল ডাক্তারী পড়ুয়া মেয়ে বিয়ে করার !!

যাহোক আল্লাহর অশেষ রহমতে আমি ঠিকই কনসিভ করে ফেললাম।আর ঠিক তখন থেকেই ভীতু ভীতু গা&%ধা টাইপের এই আমি বদলে যেতে শুরু করলাম একটু একটু করে।এখন আর আমি শুধু একজন মেয়ে নই, একজন মানুষের মা হতে যাচ্ছি।মায়েদের নরম দুর্বল হলে চলে না, কিছুতেই।

পুরো প্রেগনেন্সি পিরিয়ডটা আমি মেডিকেল কলেজের হোস্টেলে ই কাটাই। ততদিনে আমি ঠিকই বুঝে ফেলেছিলাম--ডাক্তার আমাকে হতেই হবে।আমার জীবনটা নরমাল না হবার সম্ভাবনা খুবই বেশী।আমার হাজবেন্ড ঐসময়েও আমার গায়ে হা&%ত তোলা বন্ধ করতে পারেনি।সে একদিন আমাকে বলল---listen প্রেগনেন্ট হয়েছ বলে এক্সট্রা এটেনশন সিক করবা না।এইটা সব মেয়ের জন্য খুবই স্বাভাবিক একটা ঘটনা।ঐদিনের পরে আর কোনদিন তার মনোযোগ আশা করিনি।ইন্ট্রোভার্ট আমি দিনে দিনে ডিপ্রেশনের রোগী হয়ে যেতে থাকলাম।

বাচ্চা হয়ে যাবার পরে তার নতুন এক চেহারা দেখার ভাগ্য হলো আমার।বাচ্চা বাচ্চা করে অস্থির যে পরিবার তারা আমার লেবার পেইন ওঠার এবং হাসপাতালে নেবার পনের ষোল ঘন্টা পরে এসে হাজির হন।তার মায়ের যুক্তি ছিল -- ব্যাথা উঠলেই সাথে সাথে বাচ্চা হয়ে যায় না।তুই এখন ঘুমা।ওর সাথে ওর বাবা মা আছে।!!! অথচ ঐ রাতে- জীবনের ভয়াবহতম দীর্ঘতম রাতে ওকে আমি ভীষণভাবে ই আমার পাশে চাচ্ছিলাম শেষবারের মতো।
আমার obstructive labor থাকায় ম্যাডাম সিজারের সিদ্ধান্ত নেয়ায় রীতিমত ম্যাডামের সাথে ঝগড়া শুরু করে দেয়।এগুলো নাকি হাসপাতালের টাকা নেবার ধান্ধা !! তার পাবলিক হেলথ এক্সপার্ট বোন ঘোষনা দেয় -- এভাবে থাকতে দে, সময় হলে বাচ্চা বাইর হবে, ডাক্তাররা এসব বলেই !!!

যাহোক বাচ্চা হবার পর সে যোগাযোগ করা একদমই কমিয়ে দিল।সে যে শুধু একজন দায়িত্বহীন স্বামীই নয় বরং একজন দায়িত্বহীন পিতাও তা প্রমান করল।
সে তার বাসায়, আমি মেডিকেলে আর বাচ্চা আমার বাবা মায়ের বাসায় এভাবেই কোনরকম যোগাযোগহীন ভাবেই আমি MBBS পাশ করে ফেললাম। অজস্র কান্নাময় নির্ঘুমরাতের বিনিময়ে, অসংখ্য ঘুমের বড়ির সংস্পর্শে, সন্তানের থেকে দূরে থেকে।ততদিনে আমি জেনে গেছি পৃথিবী টা একটা যুদ্ধক্ষেত্র হতে যাচ্ছে আমার জন্য।ডাক্তার হতে না পারলে আমি কিছুতেই যুদ্ধের ময়দানে দাঁড়াতেই পারব না।তাই দাঁতে দাঁত চেপে বই নিয়ে পরে থেকেছি।
অতঃপর বছরখানেক কোন রকম যোগাযোগহীন থাকার পরে পারিবারিক ভাবে সিদ্ধান্ত হলো আমাদের অফিসিয়ালি আলাদা হতে হবে, আমাদের ভবিষ্যত আছে না !!!!

কাগজে সাইন করার সময়ে এক ফোঁটা জল ছিল না আমার চোখে।কাজী বলল-- বলেন সব দেনা পাওনা আপনি মাফ করে দিচ্ছেন।খুব হাসি পাচ্ছিল আমার।মানুষটাই আমার থাকছে না, সেখানে আবার দেনা পাওনা !! প্রথমবারের মতো উচ্চ স্বরে বলে উঠলাম --মাফ করার মালিক আল্লাহ, আমি কেউ না।একবার তাকালাম ওর দিকে।তারপর মাথা উঁচু করে গাড়িতে এসে বসলাম।বাসায় ফিরে কলিজার টুকরো বাচ্চাটাকে জড়িয়ে ধরে দরজা বন্ধ করে খুব কাঁদলাম।সমস্ত চোখের জলে এক জীবনের ভালোবাসার দায় মেটালাম যেন।ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ঘুম পাড়লাম আর প্রতিজ্ঞা করলাম----বাবা আমি কখনোই তোকে ছেড়ে যাব না।নিজের সুবিধার জন্য , সুখের জন্য, পৈতৃক সম্পত্তির লোভেও না ! মা একাই তোকে সম্মানের একটা জীবন দেবে,ঠিক দেখে নিস।

এরপর অবধারিত ভাবেই সমাজ হাজার হাজার প্রশ্নে কৌতুহল দৃষ্টিতে আমাকে ছিঁড়ে খু%&বলে খেল.......প্রতিদিন ম&%রতে হলো আমাকে।
আমি লাকি পুরোটা সময় আমার পরিবার এবং কাছের কিছু বন্ধু দেয়াল হয়ে সাথে ছিল।
বছরখানেকের মধ্যে অসহনীয় হয়ে উঠছিল পরিচিত জীবনটা।

তাই জীবনকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর উদ্দেশ্য ছোট্ট বাচ্চাটার হাত ধরে অজানা অপরিচিত এক পৃথিবীতে পা বাড়ালাম আমি চাকরি সূত্রে।শহরের কোলাহল পেছনে ফেলে শান্ত শীতল প্রকৃতিরকোল ঘেষা পৃথিবীর কোন এক কোনে এসে আস্তানা গেঁড়ে বসলাম একদম একা--- নিজের উপর বিশ্বাস, সাহস আর একাডেমিক সার্টিফিকেটগুলোর ভরসায়।
সন্তানকে নিজের পরিচয়ে মানুষ করব বলে।এই নোংরা চরম হিপোক্রিয়েট সমাজকে কিছুতেই সুযোগ দিব না আমার সন্তানের দিকে আঙুল তুলে বলার ---ও তো নানা বাড়িতে মানুষ !!

আলহামদুলিল্লাহ।আজ তিন বছর হলো ঠিকই টিকে আছি নিজের পরিচয়ে , সততাত সাথে, কঠোর পরিশ্রমের বিনিময়ে, মাথা উঁচু করে, আশেপাশের সবার কাছে কৌতুহল ছাপিয়ে সম্মানের দৃষ্টিতে-- সবার ডাক্তার ম্যাম/দাক্তুরনী হয়ে একদম সত্য পরিচয়ে।
অনেক ভয় ছিল মনে----একজন ডিভোর্সির সন্তানের স্কুলিংটা সহজ ছিল না কিছুতেই।কিন্তু আমার সন্তানের পরিচয় ডিভোর্সীর ছেলে নয় বরং ডাক্তারের ছেলে হিসেবেই গণ্য হয়।

এই পৃথিবীতে শেষ পর্যন্ত শুধু যোগ্য এবং যোদ্ধারা ই টিকে থাকে।
কিছু কিছু মেয়ে ভীষন unpredictable হয়।ওরা জীবনে কখনো হেরে যায় না.............

-ডাঃ মীম

Address


Telephone

01719313552

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Abida Muftea Moon posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Abida Muftea Moon:

Shortcuts

  • Address
  • Telephone
  • Alerts
  • Contact The Business
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share