12/07/2025
দুর্বল রাষ্ট্রব্যবস্থার রাজনীতিতে ব্লেমিং গেইম খুবই ইফেক্টিভ। ইন্টারনেটের যুগে এটা বাতাসের আগে ছড়ায়। তারা এর মাধ্যমে খুব সহজেই বিরোধীদের বিপক্ষে ন্যারেটিভ তৈরি করে নেয়।
বাংলাদেশের মানুষের রাজনৈতিক দূরদর্শিতার ভীষণ অভাব রয়েছে। এদেরকে যেটা দেখানো হয় এরা কেবল সেটাই দেখে, যেটা শুনতে বলা হয় শুধু ওটাই শোনে, ওটাই বলে। এরা পোষা পাখির মতো হুঁশ জ্ঞান হারিয়ে তোতাপাখির বুলি আওড়াতে থাকে। আর ওই পাখি যার নিয়ন্ত্রণে থাকে গোটা রাজনীতি তার পক্ষে থাকে। মিডিয়া, প্রশাসন সব সেদিকেই ছোটে।
উদাহরণ হিসেবে যদি গতকাল রাতের কথা বলি, সেখানে বুয়েটে অশালীন শ্লোগান দিয়েছে তারেক রহমানকে নিয়ে। কোথাকার কোন পাতি নেতা যাকে তারেক রহমান চেনার কথাই না। তার জন্য এমনভাবে ব্লেমিং করা হলো যেন শেখ হাসিনার খু নের মার্ডারের মতো। দুইদিন আগে ওই প্রতিবেদন নিয়ে কোনো হইচই দেখিনি। যদি সত্যিই তরুণ নেতারা জুলাই ধারণ করতো তাহলে এটা নিয়ে অনেক বড় ন্যারেটিভ তৈরি করতো। গত এক বছরে কয়বার তারা সরকারকে চাপ দিয়েছে হাসিনাকে ফেরত আনাতে?
এগুলো নিয়ে ইস্যু তারা করবে না। কারণ তাদের এখানে কোনো লাভ নেই। আম্লিগের কোনো ভাত নাই মাঠে। ল্যাংড়ার সাথে তারা এখন দৌড় প্রতিযোগিতা করবে না৷
করবে বিএনপির সাথে। বিএনপিকে হঠাতে পারলে খুব সহজেই নিজেদের আসন পাকাপোক্ত হবে।
অবশ্যই এই হত্যা অত্যন্ত বর্বরোচিত, এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে। তার আগে একটা আলাপ জরুরি। এই লোকগুলোর রাজনৈতিক অবস্থান শতভাগ নিশ্চিত করা। কিন্তু তা না করেই শুরু হলো আন্দোলন। এটা স্পষ্ট রাজনৈতিক ফয়দা হাসিলের আন্দোলন। যত পারো দোষ দাও বিএনপিকে। হ্যা, দেশে কোনো সরকার নেই, প্রশাসন নেই। তাদের কাছে ভুলেও বিচারের কথা বোলো না, বলো বিএনপিকে।
গত কয়েকদিন অনেক গুলো খুনের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু মিডিয়া ট্রায়ালের জন্য বেছে নেওয়া হলো বিএনপির নামযুক্ত এই ঘটনাকে।
ঘটনার শিরোনাম এমন হওয়ার কথা ছিলো, "আধিপত্যকে কেন্দ্র করে যুবদলের এক কর্মীকে হত্যা।"
অথচ পুরো ঘটনা হয়ে গেলো, "যুবদলের কর্মী দ্বারা ব্যবসায়ী খুন।" ব্যাস, বিএনপির ভিত নড়বড়ে হয়ে গেলো।
বেগম জিয়ার কথা আগেও দলের নেতাগুলো শোনেনি, এখন তারেক রহমানের কথাও শুনছে না। এটা দৃশ্যমান সংকট। বিএনপি বাংলাদেশের সবগুলো দলের চেয়ে রাজনৈতিক কৌশলে পিছিয়ে আছে। তাদের সাংগঠনিক ভিত্তি সুদৃঢ় না করলে নতুন যুগের নতুন রাজনীতিতে তাল না মেলাতে পেরে হারিয়ে যাবে। মানুষ এখন রাজনীতির পাঠ পড়ে, আর উনারা মাঠ দখলের রাজনীতিতেই পড়ে আছেন। টাকা ছাড়া রাজনীতির যুগ চলে আসবে সামনে। তাই চান্দাবাজ ধান্দাবাজ দিয়ে দল ভরে মাঠ দখলের প্রস্তুতি নেওয়া হবে নিজের পেছনে বাঁশ নেওয়া। গতকাল নিশ্চয়ই তারা বুঝতে পেরেছে ভালোভাবে। জনপ্রিয়তা থাকলে ক্ষমতা তাকে টানে, জনবিচ্ছিন্ন থাকলে সে ক্ষমতাকে টানে।
তারেক রহমান একবার অন্তত প্রধানমন্ত্রী হোন। উনার বর্তমান চিন্তাধারা অনেক আলাদা গতানুগতিক ধারার রাজনীতি থেকে। তাঁকে সুযোগ দেওয়ার জন্য বিএনপিকে কঠোর হতে হবে দলের কর্মী বাছাইয়ে।