
06/07/2025
ভালোবাসার লাল গোলাপ
পর্ব ২: অপ্রকাশিত অনুভূতি
রুমানার মনটা যেন এক নতুন আনন্দে ভরে ওঠে। আরিফের কবিতাটি বারবার পড়ে, প্রতিটি শব্দ হৃদয়ে গেঁথে নেয়। তার মনে হয়, সে যেন কোনো উপন্যাসের নায়িকা হয়ে গেছে—যার প্রেমের শুরু একটি কবিতার মাধ্যমে।
তবে মনের ভিতরের কথা মুখে বলা কি এত সহজ?
এরপরের কয়েকটা দিন আরিফের সাথে তার কয়েকবার চোখাচোখি হলেও কেউ কিছু বলে না। কথা হবার মতো পরিবেশ থাকে, সময় থাকে, কিন্তু সাহস থাকে না। মাঝে মাঝে আরিফ কিছু বলতে চায়, ঠোঁট কাঁপে, কিন্তু শব্দ আসে না।
রুমানা ভাবে, মেয়েরা কি সবসময় অপেক্ষাই করে? কেন না সে নিজেও বলতে চায় — “আমিও তোমার কবিতার লাল গোলাপ হতে চাই।”
একদিন কলেজ শেষে রুমানা দেখে, আরিফ একা বসে আছে ক্যাম্পাসের পেছনের বটগাছের নিচে। হাতে খাতা আর কলম। চুপচাপ লিখছে। রুমানা ধীরে ধীরে এগিয়ে যায়।
— “তুমি কবিতা লেখো?”
আরিফ চমকে তাকায়। তারপর ধীরে হাসে, “হ্যাঁ, মাঝে মাঝে।”
— “তোমার লেখা সেই কবিতা… লাল গোলাপ… সেটা কি...?”
আরিফ মাথা নিচু করে বলে, “হয়তো…”
তাদের মাঝখানে কিছুক্ষণ নীরবতা। বাতাসে পাতার ঝরঝর শব্দ, গায়ে নরম আলো। হঠাৎ রুমানা বলে, “তুমি জানো? তোমার কবিতা আমাকে বদলে দিয়েছে।”
আরিফ অবাক হয়ে তাকায়। চোখে প্রশান্তির আভা।
— “আমি এখন অনেক কিছু দেখতে পাই, যা আগে চোখে পড়ত না,” রুমানা বলে। “তোমার কবিতার চোখে এই পৃথিবীটা দেখি এখন।”
সেই দিন বিকেলে তারা প্রথমবারের মতো একসাথে হাঁটে। গল্প হয় বই নিয়ে, গান নিয়ে, কবিতা নিয়ে। কিন্তু ভালোবাসা নিয়ে নয়। কেউই প্রকাশ করে না।
ভালোবাসা তখনো ছিল এক অপ্রকাশিত অনুভূতি। শব্দহীন, কিন্তু স্পষ্ট।
রুমানা রাতে ডায়েরিতে লিখে রাখে:
> “সে কিছু বলেনি, কিন্তু তার নীরবতা আমার হৃদয়ে বৃষ্টির মতো ঝরে পড়েছে।”
চলবে Next