Bibekbangla

Bibekbangla শিকড়ের সন্ধানে। বিবেক বাংলা। একটি অন?

আমাদের কথা
বিবেকবাংলা একটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল কিন্তু এটিকে আমরা এমনটি দেখছি না। বিবেক দিয়ে সাজানো সব লেখনির অভিপ্রায় এখানে। যেখানে বিবেকের ঘাটতি সেখানেই আমরা উপস্থিত আর বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ আর প্রত্যেক মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিবেককে জাগানোর। সমাজের সকল শ্রেনীর সকল পেশার সকল গোত্রের মানুষের কাছে আমরা বিবেক হয়ে দাঁড়িয়ে আছি, ছিলাম আর থাকবো। হোক বিবেকের জয়, ফিরে আসুক মনুষ্য বিবেক-এটাই আমাদের পথচলা।
সম্পাদক, বিবেকবাংলা

চরে কষ্টের জীবন, তবুও শান্তি খুঁজে পান এখানেইচর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাবি৯০ বছরের সোনাভান বেওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের চরেই জন্ম...
11/06/2025

চরে কষ্টের জীবন, তবুও শান্তি খুঁজে পান এখানেই
চর বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দাবি

৯০ বছরের সোনাভান বেওয়া ব্রহ্মপুত্র নদের চরেই জন্মেছেন, বড় হয়েছেন এবং এখানেই বিয়ে হয়েছে তার। চরের মাটিই তার জীবনের সবটুকু। তবু জীবনের সব প্রিয় কিছুই ধীরে ধীরে হারিয়ে গেছে—স্বামী মোজা মিয়ার কবর আজ ব্রহ্মপুত্রের পেটে, বাবা-মা ও আত্মীয়দের কবরেরও কোনো চিহ্ন নেই।
“কবরগুলো নাই, ওইখানে গেলে বুকটা ফাইটা যায়,” বললেন তিনি চোখের কোণে জল এনে। চরজীবনের কষ্ট সত্ত্বেও চরই তার সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়।
তিনি জানান, জীবনে ১৭–১৮ বার তাকে বসতভিটা বদলাতে হয়েছে। এক চর থেকে আরেক চরে—প্রতিবার শুরু করতে হয়েছে নতুন করে। “তবু চর ছাড়তে মন চায় না,” বললেন তিনি, “চরেই জন্ম, চরেই মরতে চাই।”
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের সোনাভান বেওয়ার মতো অনেকেই চর আকড়ে ধরে বেঁচে আছেন নানা কষ্টে।

চরজীবনের নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এখানকার মানুষ কিছু মৌলিক সুখ খুঁজে পান। সোনাভানের বড় ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৭০) বলেন, “বন্যা-ভাঙনে ঘর হারাই, জমি হারাই। কিন্তু বন্যার পর চরজমিতে পলিতে যা ফসল হয়, তা দেখলে প্রাণ জুড়িয়ে যায়।”
তিনি বলেন, চরের মানুষদের এক মৌলিক জীবন—নদী, মাঠ আর পরিশ্রমে গড়া। খাদ্যাভ্যাসও সহজ—ভাত, রুটি, শাকসবজি আর নদীর মাছেই চলে যায় দিন। শহরের পণ্যের প্রতি তেমন চাহিদা নেই বললেই চলে।

লালমনিরহাটের তিস্তাপাড়ের চর হরিণচড়ার দিনমজুর মফিদুল ইসলাম (৫০) গত বছর পরিবারের সবাইকে নিয়ে শহরে গিয়েছিলেন—ভেবেছিলেন সেখানেই থাকবেন। কিন্তু দুই মাস রিকশা চালিয়ে দিন চলে না দেখে ফিরে এসেছেন চরে।
“চরের কষ্ট কষ্ট না। ওটাই আমাদের অভ্যাস,” বললেন তিনি। “আমাদের কোনো সম্পদ নেই ঠিকই, কিন্তু অসুখ-বিসুখও কম। তাই আমরা সুখেই আছি।”
চর এলাকায় বর্তমানে অনেক পরিবার গবাদি পশু পালন করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন বলেও জানান তিনি।

চর নিয়ে কাজ করেন এনজিও কর্মী আহসানুল কবীর বুলু। তিনি বলেন, “আমরা অনেকবার চরের মানুষকে মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসার প্রস্তাব দিয়েছি। কিন্তু কেউই রাজি হননি। কারণ তারা জানে, শহরে তাদের কাজের সুযোগ নেই, নেই পরিচিত পরিবেশ।”
তিনি বলেন, “চরের মানুষকে চরে রেখেই শিক্ষা ও স্বাস্থ্যে সচেতন করতে হবে। আর তাদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি সহায়তা যেন যথাযথভাবে পৌঁছে যায়, সেটি নিশ্চিত করা দরকার।”

কুড়িগ্রাম চর উন্নয়ন কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু জানান, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও গঙ্গাধর নদীর বুকে ৫০০টি চরে ছয় লক্ষাধিক মানুষ বসবাস করছেন। প্রতিটি চরে ১৫০ থেকে ৪০০ পরিবার রয়েছে, যাদের মূল জীবিকা কৃষিকাজ ও পশুপালন।
বন্যা, খরা, নদীভাঙনের ভেতর দিয়েই তারা জীবন কাটান। তবু এই সংগ্রামী মানুষগুলো তাদের অস্তিত্ব ও শান্তির আশ্রয় খুঁজে পান চরেই। ‘চরের মানুষের ভাগ্যের উন্নতি হয়নি। এসব মানুষের ভাগ্যের উন্নতির জন্য একটি পৃথক মন্ত্রণালয় দরকার। এজন্য আমরা চর বিষয়ক মন্ত্রণালয় দাবি করে আসছি অনেকদিনধরে,’ তিনি বলেন।

রিপোর্ট: দূর্জয় রাপয়

08/06/2025

রংপুরে মৌসুমি কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীরা হতাশপাইকারের অভাবে বাড়ছে সংরক্ষণ খরচ, পুঁজি ফেরত নিয়েই শঙ্কাঈদুল আজহা ঘির.....

08/06/2025

ঈদে চাহিদা বাড়তেই লিচুর বাজারে আগুনপ্রতি ১০০ লিচুতে বাড়তি ৮০-১০০ টাকা, ক্ষুব্ধ ক্রেতারাঈদকে কেন্দ্র করে রংপুর অঞ...

08/06/2025

রংপুরে দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্তির পথেআগে ছিল ১০৮ প্রজাতি, এখন টিকে আছে মাত্র ৩০–৩৫টিরংপুর অঞ্চলের এক প্রাচীন ভা...

07/06/2025

আলুর হিমাগারে মিষ্টি মজুতরংপুরে দুই জায়গায় বিপুল পরিমাণ মিষ্টি জব্দ ও ধ্বংসরংপুরে আলুর জন্য নির্ধারিত দুটি হিম.....

07/06/2025

গ্রামীণ ব্যাংকে ‘নাশকতার পরিকল্পনা’ কুড়িগ্রামে পুলিশি নিরাপত্তা জোরদারনোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউ.....

আলুর হিমাগারে মিষ্টি মজুতরংপুরে দুই জায়গায় বিপুল পরিমাণ মিষ্টি জব্দ ও ধ্বংসরংপুরে আলুর জন্য নির্ধারিত দুটি হিমাগারে ঈদ উ...
07/06/2025

আলুর হিমাগারে মিষ্টি মজুত
রংপুরে দুই জায়গায় বিপুল পরিমাণ মিষ্টি জব্দ ও ধ্বংস

রংপুরে আলুর জন্য নির্ধারিত দুটি হিমাগারে ঈদ উপলক্ষে বিপুল পরিমাণ মিষ্টি ও দই অবৈধভাবে মজুতের ঘটনায় পৃথক দুই অভিযানে ৮ হাজার কেজির বেশি মিষ্টি ও দই জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। অভিযানে দুই হিমাগারের মালিক ও সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের মোট ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

শুক্রবার রাতে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ঘনিরামপুর এলাকায় ব্রাদার্স কোল্ডস্টোরেজে অভিযান চালানো হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালত নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রুবেল রানা। অভিযানে সেনাবাহিনী, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ অন্যান্য সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

হিমাগারটির ভেতর ২৬টি ড্রামে প্রায় ৩ হাজার ৩৮০ কেজি মিষ্টি মজুত করা হয়। প্রতিটি ড্রামে ছিল প্রায় ১৩০ কেজি করে মিষ্টি। এর মধ্যে সিলেট মিষ্টিমুখের ১৪ ড্রাম, রব্বানী হোটেলের ৮ ড্রাম, ভাই ভাই মিষ্টিমুখ এবং বাঁধন মিষ্টিমুখের ২টি করে ড্রাম পাওয়া যায়।

খাদ্য মজুতের নিয়ম ভঙ্গের দায়ে ব্যবসায়ী সৃজিত দেবকে ২৫ হাজার, হাফিজার রহমানকে ১৫ হাজার এবং ফজলু হক ও নুর আলমকে ৫ হাজার করে মোট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

ইউএনও রুবেল রানা বলেন, “হিমাগার শুধু কৃষিপণ্য সংরক্ষণের জন্য নির্ধারিত। মিষ্টির মতো পচনশীল ও প্রস্তুতজাত খাদ্য হিমাগারে রাখা আইনবহির্ভূত এবং স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। উদ্ধারকৃত সব মিষ্টি জনস্বার্থে ধ্বংস করা হয়েছে।”

এর আগে বুধবার রাতে রংপুর শহরের ময়না কুটি এগ্রো কোল্ডস্টোরেজে একই ধরনের অভিযানে আরও ৬ হাজার ৭৮০ কেজি মিষ্টি ও দই উদ্ধার করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন রংপুর জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জোয়ার্দার আসিফ ইকবাল।
অভিযান শেষে কোল্ডস্টোরেজ কর্তৃপক্ষ ও ‘পুষ্টি’ মিষ্টি দোকান মালিককে এক লাখ টাকা করে মোট ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে জব্দকৃত সব মিষ্টি ও দই জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় ধ্বংস করা হয়।

তারাগঞ্জে অভিযানে সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. শরিফ বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে আমরা নিশ্চিত হই, ঈদকে কেন্দ্র করে অবৈধভাবে হিমাগারে বিপুল মিষ্টি মজুত করা হয়েছে। এসব অনিয়ম স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায় এবং বাজার ব্যবস্থাকে ব্যাহত করে।”

রিপোর্ট: দূর্জয় রায়

ঈদের দিন স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা, পলাতক মাদ্রাসা শিক্ষকলালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ঈদের সকালে নিজের স্ত্রীকে কুপিয়ে ও ...
07/06/2025

ঈদের দিন স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা, পলাতক মাদ্রাসা শিক্ষক

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় ঈদের সকালে নিজের স্ত্রীকে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে পলাতক হয়েছেন এক মাদ্রাসা শিক্ষক। শনিবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কুচলিবাড়ি ইউনিয়নের মেম্বারপাড়া গ্রামে এ নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত নারী এমি আক্তার (২০) ওই গ্রামের একরামুল হকের মেয়ে। অভিযুক্ত স্বামী হাফেজ হাসিবুল ইসলাম (২৪) একই গ্রামের মোজাফফর হোসেনের ছেলে এবং স্থানীয় একটি হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সামাজিকভাবে তিন বছর আগে হাসিবুল ও এমির বিয়ে হয়। তাদের একটি সন্তান রয়েছে। তবে বিয়ের পর থেকেই পারিবারিক কলহ ও স্বামী কর্তৃক নির্যাতনের অভিযোগ ছিল। একপর্যায়ে ছয় মাস আগে এমি বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন।
ঈদের দিন সকালে স্ত্রীকে দেখতে এসে হাসিবুল ঘরের ভেতরে তার সঙ্গে কথা বলতে থাকেন। এ সময় কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে ধারালো ছুরি দিয়ে স্ত্রীকে পিঠে কোপ দেন এবং পরে গলায় ছুরি চালিয়ে জবাই করেন তিনি। এরপর দ্রুত সেখান থেকে পালিয়ে যান।

নিহতের বাবা একরামুল হক বলেন, “ঈদের নামাজে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এমন সময় হাসিবুলকে দ্রুত বাড়ি ছাড়তে দেখি। ঘরে ঢুকে দেখি মেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই মারা যায়। দীর্ঘদিন ধরে সে আমার মেয়েকে সন্দেহ করে নির্যাতন করত। অবশেষে তাকে মেরেই ফেলল।”

ঘটনার পর উত্তেজিত এলাকাবাসী অভিযুক্ত হাসিবুলের বাবা মোজাফফর হোসেন ও ভাইকে আটক করে মারধর শুরু করলে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়।

পাটগ্রাম থানার ওসি মিজানুর রহমান বলেন, “ঘটনার তদন্ত চলছে। এখনো পর্যন্ত হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যায়নি। নিহতের পরিবার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষকের বাবা ও ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে রাখা হয়েছে।” নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

রিপোর্ট: দূর্জয় রায়

06/06/2025

ঈদের আনন্দ নেই নদীভাঙনে নিঃস্ব পরিবারগুলোর ঘরেভিজিএফের চালও পাননি অনেকেঈদুল আজহা ঘনিয়ে এলেও নদীভাঙনে নিঃস্ব হও...

06/06/2025

ঈদের আনন্দ নেই নদীভাঙনে নিঃস্ব পরিবারগুলোর ঘরে
ভিজিএফের চালও পাননি অনেকে

ঈদুল আজহা ঘনিয়ে এলেও নদীভাঙনে নিঃস্ব হওয়া মানুষদের ঘরে নেই কোনো প্রস্তুতি, নেই কোন আনন্দ। কারও ঘরে খাবার নেই, কারও ঘরই নেই। ঈদের কেনাকাটা তো দূরের কথা—বেশির ভাগ পরিবার এখনও জানে না, ঈদের দিন কী খাবেন।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে পোড়ার চরের বাসিন্দা রহিমা বেগম (৫৫) গত সপ্তাহে নদীভাঙনে তার বসতভিটা হারিয়েছেন। কৃষক স্বামী সুরুজ আলী (৬০) সহ আশ্রয় নিয়েছেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে। নিজের ঘর বানাতে পারেননি এখনও।
“কোরবানির তো প্রশ্নই আসে না। কী খাবো ঈদের দিন, তাও জানি না। কারও কাছ থেকে সাহায্য পাইনি। ভিজিএফের চালও জোটেনি,”—কান্নাজড়ানো কণ্ঠে বলছিলেন রহিমা বেগম।

ঈদের আরেকটু আগেই—বৃহস্পতিবার বিকেলে—চর রাজিবপুর উপজেলার পাইকেনটারী গ্রামে বসতভিটা হারিয়েছেন আমিনুল ইসলাম (৫০)। পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন এক আত্মীয়ের বাড়িতে।
“ঈদের জন্য একটা ছাগল কেনার পরিকল্পনা ছিলো। এখন ছাগল কেনা দূরের কথা, বাচ্চাদের জন্যও কিছু নিতে পারিনি। নিজের হাতে গড়া পাকা ঘরটা নদীতে চলে গেলো—দশ লাখ টাকা খরচ করে বানিয়েছিলাম, সব গেলো পানিতে,”—বলেন তিনি।

নাগেশ্বরী উপজেলার দুধকুমার নদের পাড়ে সন্তোষপুর গ্রামের ৬৫ বছরের বিধবা আকলিমা বেওয়ার অভিযোগ, “ভিজিএফের চাল পাইনি। যারা ভালো অবস্থায় আছে, তারাই কার্ড পেয়েছে। গরিবদের চাল আত্মসাৎ করা হয়েছে। ঈদের দিন কী খাবো জানি না।”

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার গোবর্ধন গ্রামের সখিনা বেগমও তিস্তার ভাঙনে হারিয়েছেন বসতভিটা ও আবাদি জমি। “ঈদে কোরবানি দেওয়ার স্বপ্ন দেখেছিলাম। এখন রাস্তার পাশে থাকি। ঘরে খাবার নেই। ঋণ করে স্বামী কিছু আনতে পারলে খাওয়াদাওয়া হবে। আমাদের এলাকায় ভাঙনের পরও কেউ সরকারি সহায়তা দেয়নি,”—বলেন তিনি।

কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের বিভিন্ন জায়গায় নদীভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে এই দুই জেলায় অন্তত ৮৬০টি পরিবার ভাঙনের শিকার হয়েছে—যার মধ্যে কুড়িগ্রামে ৫৮০টি ও লালমনিরহাটে ২৮০টি পরিবার রয়েছে।
প্রায় ৩০ হাজার পরিবারে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ বসবাস করেন ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা ও ধরলার চরে। কিন্তু সবার ঘরে সহায়তা পৌঁছায়নি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিস জানায়, ঈদ উপলক্ষে কুড়িগ্রামে ৪ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯৯টি এবং লালমনিরহাটে ১ লাখ ৪১ হাজার ২৭৬টি ভিজিএফ কার্ড বিতরণ করা হয়েছে, প্রতিটি কার্ডে ১০ কেজি করে চাল দেওয়া হয়। কিন্তু অনেক ভাঙনকবলিত পরিবার অভিযোগ করছেন, তারা সেই তালিকায় ছিলেন না।

নাগেশ্বরী উপজেলার সন্তোষপুর ইউনিয়নে গত বুধবার সন্ধ্যায় ৭ হাজার ৫০০ কেজি ভিজিএফ চাল উদ্ধার করে প্রশাসন। পরদিন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার ইউনিয়নে উদ্ধার হয় আরও ১,৫৪৫ কেজি চাল।

নাগেশ্বরীর ইউএনও সিব্বির আহমেদ বলেন, “চাল বিতরণের তালিকা করেছে চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা। আমরা মনিটরিং করেছি। জব্দ করা চাল দুস্থদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে।”

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, তিস্তা, ধরলাসহ প্রায় ১৩০টি স্থানে ভাঙন চলছে। লালমনিরহাটেও ধরলা ও তিস্তার ৩৪টি স্থানে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। কিছু কিছু স্থানে ভাঙন তীব্র আকার ধারন করেছে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, ‘কিছু স্থানে ভাঙন ঠেকাতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে, কিন্তু ভাঙন এত তীব্র যে ভাঙন ঠেকাতে তষ্ট হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ঈদ উদযাপনের সময় যখন অধিকাংশ পরিবারে হাসি-আনন্দ, তখন নদীভাঙনকবলিত এই মানুষগুলো দিন কাটাচ্ছেন অনিশ্চয়তায়, অনাহারে আর সরকারি সহায়তা থেকে বঞ্চিত হয়ে।

ফুটেজ ও রিপোর্ট: দূর্জয় রায়

ক্রেতা নেই, উৎসবেও হাসে না পাদুকা কারিগররাপুঁজি হারানোর শঙ্কায় দিশেহারা প্রায় ৭০০ রবিদাসঈদের মতো উৎসব এলেই বাড়ে পাদুকা ক...
06/06/2025

ক্রেতা নেই, উৎসবেও হাসে না পাদুকা কারিগররা
পুঁজি হারানোর শঙ্কায় দিশেহারা প্রায় ৭০০ রবিদাস

ঈদের মতো উৎসব এলেই বাড়ে পাদুকা কারিগরদের ব্যস্ততা। রংপুর অঞ্চলের লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, রংপুর ও নীলফামারীর প্রায় ৭০০ রবিদাস সম্প্রদায়ের পাদুকা কারিগরের জন্য এটি সারা বছরের অন্যতম রোজগারের সময়। কিন্তু এবছর বিক্রি না থাকায় তারা পড়েছেন চরম হতাশায়। কেউ কেউ পুঁজি হারানোর ভয়েও রয়েছেন।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার কালমাটি গ্রামের ধনেশ্বর চন্দ্র রবিদাস (৫২) লালমনিরহাট শহরের আলোরুপা মোড়ে গত দুই যুগ ধরে জুতা তৈরি ও সেলাইয়ের কাজ করছেন। তিনি বলেন, “প্রতি উৎসবে আমি ২০০-২৫০ জোড়া পাদুকা তৈরি করি। এবছর ঈদ-উল আযহা সামনে রেখে ২০০ জোড়া তৈরি করেছি। কিন্তু এখনও ৪০ জোড়াও বিক্রি হয়নি।”
তিনি জানান, এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কাঁচামাল কিনেছেন। “সব পাদুকা বিক্রি না হলে পুঁজি হারিয়ে যাবে,” বলেন তিনি।

বাংলাদেশ রবিদাস ফোরাম (বিআরএফ) সূত্রে জানা গেছে, উৎসব সামনে রেখে একজন কারিগর গড়ে ১০০-৪০০ জোড়া পর্যন্ত পাদুকা তৈরি করেন। এই জুতা মূলত গ্রামের প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের মানুষজন কিনে থাকেন। তবে এখন সেই ক্রেতারাও সংকটে।

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীর হাসপাতাল সড়কের মুদির দোকানদার বাহার (৫০) বলেন, “আমার সংসারে পাঁচ জোড়া পাদুকার দরকার, কিন্তু এখনও একজোড়াও কিনিনি। হাতে টাকা নেই, ঈদের আগে হলে দুই-তিন জোড়া কিনবো।”

রংপুরের কাউনিয়া উপজেলঅর মধুপুর গ্রামের সুরেশ চন্দ্র রবিদাস (৫৫) বলেন, “গত বছর ঈদে ২৪০ জোড়া বিক্রি করেছিলাম। ২২০ জোড়া বিক্রি হয়েছিলো। এবার ২৫০ জোড়া বানালেও এখনো ২০ জোড়া বিক্রি হয়নি।”
তিনি জানান, প্রতি জোড়া বানাতে খরচ হয় ২০০-৩০০ টাকা, আর বিক্রি করেন ৪০০-৫৫০ টাকায়। “যদি বিক্রি না হয়, লোকসানে পড়বো,” বলেন তিনি।

কুড়িগ্রাম শহরের কলেজ রোডের কারিগর সুনীল চন্দ্র রবিদাস (৫২) বলেন, “আগের মতো জুতা সেলাইয়ের কাজ নেই। শুধুই উৎসবের সময় নতুন পাদুকা বানিয়ে বিক্রি করি। কিন্তু এবার তেমন ক্রেতাই নেই।”
তিনি জানান, সচ্ছল মানুষরা স্থানীয় কারিগরের তৈরি পাদুকা কেনেন না, তারা দোকানের ব্র্যান্ডেড জুতা কেনেন। ফলে একমাত্র ভরসা যারা সীমিত আয়ের মানুষ, কিন্তু তারা কিনতে পারছেন না।
রংপুর শহরের মাহিগঞ্জ এলাকার রিকশাচালক সিরাজুল ইসলাম (৪৮) বলেন, “ঈদে স্ত্রী-সন্তানদের নতুন জুতা কিনে দেই স্থানীয় কারিগরের কাছ থেকে। কিন্তু এবার হাতে টাকাই নেই। কিনতে পারবো কিনা নিশ্চিত না।”

বাংলাদেশ রবিদাস ফোরামের লালমনিরহাট জেলা ইউনিটের সভাপতি বিশ্বনাথ চন্দ্র রবিদাস বলেন, “রবিদাস সম্প্রদায়ের মানুষদের টিকিয়ে রাখতে হলে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সুদমুক্ত ঋণ দিলে অন্তত উৎসবপূর্ব পুঁজি জোগাড়ে সুবিধা হবে।”
তিনি আরও বলেন, “যদি এবছরও জুতা বিক্রি না হয়, তাহলে অনেকেই পেশা ছেড়ে অন্য কিছু করতে বাধ্য হবেন।”

রিপোর্ট: দূর্জয় রায়

05/06/2025

বালুমাটির দেশে জন্ম নেওয়া যোদ্ধারানদীভাঙন, দারিদ্র্য আর অবহেলার মাঝেও স্বপ্ন দেখে যারাকুড়িগ্রামের নদীঘেরা চরা....

Address

Roypara
Lalmonirhat
5500

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Bibekbangla posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share