Mim's world, Madaripur (2025)

08/04/2024

#চন্দ্র (৩য় পর্ব)

★জীবনের সময় সীমিত। তাই হয়তো জীবন সুন্দর। তবে মৃত্যুও কিন্তু সুন্দর।
মৃত্যু কিভাবে সুন্দর হলো?
কারণ মৃত্যু যে নিশ্চিত। মৃত্যু চিরন্তন সত্য। মৃত্যু হবেই। তাই তো মৃত্যু সুন্দর। সত্যিই সবকিছুই সুন্দর হয় শশী।
★শশী মুখে কিছুটা বিষন্নতার ছাপ এনে বলল, জীবন এতো ছোট কেন? আমি তো তোমার সাথে অনন্তকাল থাকতে চাই।
আমিও তাই চাই শশী। জীবন ছোট তার আরো একটি কারণ হলো যাতে আমরা এই ছোট জীবনে থেকেই অনন্তকাল একসাথে থাকার প্রতিজ্ঞা করতে পারি।
তবে আমাদের প্রতিজ্ঞা হোক অনন্তকালের জন্য মহান আল্লাহতায়ালা যেন আমাদের এই পবিত্র ভালবাসাকে অনন্তকালের জিন্দেগীতেও একসাথে রাখেন। আমিন।
তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো তারপর একসাথে কফি খেতে খেতে সন্ধ্যা তারা আর রাতের জোছনা দেখব।
উহু
তোমার কি মনে আছে বিয়ের রাতে আমরা সারারাত ছাদে বসে জোছনাদের সঙ্গী করে গল্প করেছিলাম? সে কথা কি করে ভুলে যাই বল? প্রথম সেদিন এই সুন্দর চাঁদ টিকে আমি আপন করে পেয়েছিলাম।
তবে যাও এখন ফ্রেশ হয়ে আসো।
শশী কথাটা বলে বাথরুমের দিকে যাবে ঠিক সেই সময় পিছন থেকে মুহিত শশীর হাত টেনে ধরল। শশীর চুলের খোপায় থাকা কাঠিটা সরিয়ে ফেলল। শশীর চুলগুলো সাথে সাথেই এলোমেলো ভাবে ছড়িয়ে গেল। মুহিত শশীর চুলের মধ্যে নিজের মুখ গুজে দিয়ে আবারো একটি পদ্য বললো --
তোমায় পাবার ইচ্ছে হোক -- আসবে সেদিন ধ্বংস,
রূপবতীর স্নিগ্ধ মায়া জোছনা রাতের অংশ।
আমি সবটা রাত জাগিয়া থাকিব তোমার জন্য,
তোমার চুলের খানিক মায়ায় জোছনা ছড়ায় রূপ, লাবণ্য।
মুহিত পদ্যটি বলে চুপ করে রইল। শশী কিছু বলছে না রাজ্যের লজ্জা আর ভুবন রাঙানো কিছু হাসি মুখে এঁটে মুহিতের পাগলামো উপভোগ করছে। মুহিত পকেট থেকে কিছু একটা বের করে শশীর পায়ের কাছে বসে পড়ল তারপর মাথা উঁচু করে শশীর দিকে তাকিয়ে বলল গুটি গুটি পায়ের ছাপ আমার বাড়ির সবটা জুড়ে কোমল পায়ের চলার শব্দে যদি ঝুমঝুম শব্দের সুর থাকে তবে মন্দ কিসে?
শশীর বুঝতে বাকি নেই মুহিত কী বোঝাতে চাচ্ছে। শশী আর দেরি না করে নিজের বা পা মুহিতের সামনে খানিকটা উঁচু করে ধরলো। মুহিত শশীর পা তার হাটুর উপরে রেখে পায়ে নুপুর পরিয়ে দিলো।শশী মিটমিট করে হাসতে হাসতে বলল পাগল একটা। মুহিত এবার দাড়িয়ে বলল এই পাগলা মোর শেষ হবে না কখনো। তোমার জন্য করলাম না হয় কিছু পাগলামি।
আচ্ছা ওয়েট!
কি হলো আবার?
শশীর কৌতুহলী চোখে তাকিয়ে বলল
নিচে চলো তো।
নিচে কেন?
আমি একদমই ভুলে গেছি আসার সময় রিক্সা দাঁড় করিয়ে এসেছি। আজ আমরা সারারাত রিক্সায় ঘুরবো তাই। ইশ!
একদমই মনে নেই। রিক্সাওয়ালা মামা বেচারা না জানি কি ভাবছে?
এভাবেই যাবে?
হুম। এভাবেই।
অফিস থেকে এসেছো , শার্টটা তো চেঞ্জ করবে? একটা পাঞ্জাবি না হয় পর? আচ্ছা বাবা তোমার পছন্দের একটা পাঞ্জাবি নিয়ে আসো। পাগল একটা ছেলে।
বাহিরে হালকা ঠান্ডা বাতাস বইছে। শশীর হাত ধরে রিকশায় বসে আছে মুহিত। দেখে মনে হচ্ছে সদ্য প্রেম হওয়া দুজন প্রেমিক প্রেমিকা। শশী বলল শুনেছি বিয়ের পর নাকি ভালোবাসা কমে যায়। কিন্তু আমার কথাটা একদমই বিশ্বাস হয় না। আমাদের ভালোবাসা দিন দিন নতুন হচ্ছে। সুখের অনুভূতিগুলো কমছে না বরং বাড়ছে।
হ্যাঁ মনে হচ্ছে গতকালই প্রেম হয়েছে আমাদের ঠিক বলেছ।
হুম। তুমি আমাকে এত বেশি ভালোবাসো কেন?
বেশি হয়ে যাচ্ছে ভালোবাসা? যাও কাল থেকে কম কম ভালোবাসবো।
হুহ আসছে কম কম ভালবাসবে! একদমই না। আমাকে বেশি বেশি ভালবাসতে হবে। বুঝেছেন মশাই।
যথা আজ্ঞে ম্যাডাম। আচ্ছা চন্দ্র! ধরো আর যদি শহরের সব নিয়ন আলো বন্ধ হয়ে যায় তবে কেমন হত বলতো? ধরো নিস্তব্ধ শহর চারিদিকে আকাশ তারাদের মেলা আর জোনাক মিলে যে কোলাহল হত সেই নিস্তব্ধ কোলাহল দেখতে কেমন লাগতো?
অসম্ভব সুন্দর। তোমার কাঁধে আমার মাথা স্বপ্নের মত এক দৃশ্য আচ্ছা আমরা যাচ্ছি কোথায়?
জানিনা গন্তব্যহীন পথিক হব আজ আমরা। দুজনার প্রেম স্বপ্নের রেশ কাটছে না কিছুতেই।রিক্সা চলছে গন্তব্যহীন হঠাৎ করে। শশী বলল আমার শরীরটা কেমন যেন খারাপ লাগছে। মুহিত আর দেরি করলো না।
সে শশীকে নিয়ে একেবারে হাসপাতালে গেল। সেখানে যাওয়ার পরে ডাক্তার যে সংবাদটি দিল মুহিত কে সেটা শোনামাএই মুহিত চমকে গেল।

( #চলবে..........)

07/04/2024

#চন্দ্র (পর্ব :-২য়)

★যে কবিতাটি আপনি লুকিয়ে আমার বইয়ের ভাজে রেখে দিয়ে ছিলেন। মুহিত এতক্ষন ঘামছিল, এই কনকনে ঠান্ডার মধ্যেও তবে সে চট করে চমৎকার একটা কাজ করে ফেলল। সে একেবারে শশীর সামনে হাটু গেড়ে বসে পরল একদম ভালোবাসা নিবেদনের ভঙ্গিতে তারপর শশীকে একটি কবিতার ছোট্ট অংশ শোনালো
আমি তোমার প্রেমিক হলে এক শহর প্রেমের,
কবিতা নিয়ে হাজির হব তোমার বারান্দায়।
কবিতা আমার ভীষণ যত্ন করে লিখি,
যেমনি আদুরে তোমায় ভালোবাসি।

এটা কি কবিতার অংশ ছিল নাকি ভালোবাসা নিবেদন ছিল তা শশীর মাথায় ঢুকছে না। কিন্তু সে মুগ্ধ হয়েছে এতটা বেশি যে এই মুহূর্তে অবাক হয়ে গেছে কিভাবে এতটা সুন্দর করে কবিতা শোনালো! এই ভেবে।
শশীর ভাবনার মাঝে মুহিত আবার বলল শশী আমি তোমাকে ভালোবাসি। ভালোবাসি মানে ভালোবাসি আর শুধু তোমাকেই ভালোবাসি। তুমি কি আমার জীবনকে আলোকিত করবে না? বল থাকবে না আমার জীবনে? শশীকে মুহিত তুমি করে বলতে শুরু করল। মুহিত কি কিছু না ভেবেই অবচেতন মনে আপনি থেকে একেবারে তুমিতে চলে এলো নাকি সে অনেক ভেবেই শশীকে তুমি বলে সম্মোধন করেছে?
আপনি কথায় অনেক সময় দূরত্ব প্রকাশ পেলেও তুমি কথাটির মধ্যে কোন দূরত্ব থাকেনা। হয়তো এজন্যই মুহিত শশীকে আপনি থেকে তুমি বলে সম্বোধন করতে শুরু করেছে।
শীতের হিমে কাক ডাকা ভোরে মুহিতের এই কথাগুলো কি শশীর শুভ্র মনকে ছুঁয়ে দিতে পারবে? পারবে কি তার মনে কিছুটা ভালোবাসা জাগিয়ে তুলতে?
মুহিত এই কথাগুলো ভাবছে আর নিরব চোখে তাকিয়ে আছে শশীর মায়া ভরা মুখের দিকে শশীর উত্তরের অপেক্ষায়।
শশী যেন দেরি করলো না, আর সে একদম চট করে বলে ফেলল এই কথাগুলো বলতে এতদিন সময় নিলে? কেন আরো আগে বললে না? একটি মেয়ে কি মুখ ফুটে সব বলতে পারে কবি হয়েও আমার মনের কথা বুঝলে না এতদিন?
মুহিত এবার উঠে দাঁড়ালো তারপর বলল কবিরা সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করে।
ও তাই বুঝি
জি তাই
তবে তোমার দায়িত্ব আমি নিতে পারি যদি প্রতিদিন আমাকে এভাবে কবিতা শোনাও। কি শোনাবে তো?
কবি এবং কবির সকল কবিতা আজ থেকে শুধু চন্দ্রের জন্য।
আর ঠিক এভাবেই মুহিতের সাথে শশীর প্রেমের শুরু তারপর বিয়ে আজ বিয়ের এক বছর পূর্ণ হল দুজনার।
মুহিত তাকিয়ে আছে এক দৃষ্টিতে। মুহিতের অবাক করা চাহনি শশীর লজ্জার কারণ হয়ে দাঁড়ালো। শশী লজ্জা করার আজব কন্ঠে বলল কি দেখছো তুমি?
মুহিত কাব্যিক ছন্দে বলল, নীল শাড়িতে এক অপরূপা নারী তার রূপের আলোয় আলোকিত পুরো বাড়ি।
কিরূপ দিয়েছে বিধাতা তাকে এই মন নিল কারি।
মুহিতের কবি কবি ভাবটা সুশীল ভালো লাগে মুহিত শশির জন্য কবিতা লেখে এবং সকল ব্যস্ততার মাঝেও। শশী মায়াবী কন্ঠে মুহিতের দিকে তাকিয়ে বলল বাহ! সুন্দর কবিতা বললে কবি। কিন্তু তুমি কি কিছু ভুলে গেছো?
কি ভুলেছি বলতো?
শশীম মুখটা একটু মলিন করে অন্যদিকে তাকিয়ে অভিমানী কন্ঠে বলল না কিছু না।
মুহিত মৃদু হাসলো। সে জানে মেয়েটা বড্ড অভিমানী। খুব অল্পতেই তার অভিমান হয়। আসলে মেয়েরা এমনই প্রিয় মানুষ যদি তাকে খানিক অবহেলা করে অথবা ব্যস্ততায় কিছু ভুলে যায় তবে তাদের অভিমান হয়। অথচ ছেলেরা মেয়েদের অভিমান টাকে রাগ ভেবে উল্টো রাগ দেখায়। কিন্তু মেয়েরা কখনো প্রিয় মানুষটির উপরে বিরক্ত বা রাগ পোষন করে না। যেটা করে সেটা হল অভিমান। মেয়েরা সবসময় চাই প্রিয় মানুষটি তার অভিমান ভাঙাক।
মুহিত শশীর এই অভিমান ভাঙাতে জানে। সে আবারো কাব্যিক ছন্দে বললো ---
আমার জীবনে দুনিয়ার সুখ সব পালাইয়া যাইতো,
এই মায়াবী মায়াবিনী কন্যা যদি অন্য কারো হইত।
কি মায়া দ্বারা চোখ বান্ধাইলা প্রভু,
হাসলে হাসে তরুলতা --
রাগলে পরেও খারাপ লাগে না কভু।
রাগের শেষে মেঘ কন্যার মুখে মিষ্টি হাসি,
এক বছরের ব্যবধানে আরো বেশি ভালোবাসি।
অভিমানী কন্যা এবার আর রাগের ছদ্মবেশে অভিমান করে থাকতে পারলো না। শশী এবার হাস্যজ্জল মুখ নিয়ে মুহিতের দিকে তাকাতেই চমকে গেল। মুহিত হাটু গেড়ে বসে কয়েকটি কাঠগোলাপ হাতের পাতায় মেলে ধরে আছে। বিষয়টা দেখে শশী উচ্ছ্বাশিত কন্ঠে বলল তোমার সত্যি মনে আছে এই দিনটা।
মুহিত স্বাভাবিক কণ্ঠে বলল শুভ বিবাহ বার্ষিকী আমার চন্দ্র। গত একটি বছর তোমার আলোয় আলোকিত আমার জীবন। তোমার বাবা মা তোমার নাম রেখেছে শশী। তারা তোমার নাম শশী রেখে ভুল করেনি কোন। সত্যি তুমি চাঁদ। চাঁদের আলোয় আলোকিত করা আমার পুরো পৃথিবী।
শশীর চোখ ছল ছল করছে।মুহিত কত সুন্দর করে কথা বলে সব সময়। আচ্ছা, এই মুহিত কে যদি সে তার জীবনে না পেতো তবে তো তার জীবনের ষোল আনাই বৃথা হয়ে যেত। শশী কি বলবে বুঝতে পারছে না আনন্দে তার চোখ কেমন যেন ঝাপসা হয়ে আসছে। মুহিত এবার উঠে দাঁড়িয়ে নিজের হাতের মধ্যে থাকা ফুলগুলো শশীর হাতের মুঠোর মধ্যে গুঁজে দিল।এতক্ষণে শশীর ছল ছলে দুটি আঁখিতে সুখের বান উঠেছে। চোখের বাঁধ ভেঙে কাজল ধুয়ে নোনা জল গড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে শশীর। শশীর মুগ্ধ হাসির সাথে কাজল রঙের ঝরনা যেন এক টুকরো শুভ্র প্রকৃতির রূপ। এমন দৃশ্য মুহিত আগে অনেকবার দেখেছে।কিন্তু আজ আরো সুন্দর লাগছে শশীকে। মনে হচ্ছে তার রূপ বৃদ্ধি পেয়েছে আরো কয়েক শত গুণ বেশি। মুহিত খুব যত্নের সাথে নিজের হাত দিয়ে শশীর চোখের জল মুছে দিলো।
শশী গুলুমুলু ভঙ্গিতে জড়োসড়ভাবে মুহিতের বুকের মধ্যে মাথা রাখলো। এই মুহূর্তে শশী যেন আহ্লাদী বাচ্চা একটা। মেয়েরা সম্ভবত এমনই হয়, অনেক বেশি আনন্দে তারা বাচ্চাদের মত আচরণ করে। মুহিত নিজের দুহাত দিয়ে শশীকে বুকের মধ্যে খুব যত্নে ধরে রাখল। তারপর বেশ কিছু সময় দুজনে এভাবে থাকলো একদম নিশ্চুপ কোলাহলহীন। দুটি আত্মা এই মুহূর্তে এক হয়ে আছে,বুকের কম্পনের শব্দ শুনছে দুজনেই তবে কম্পনের শব্দ আলাদা নয় একই সাথে চলছে দুটো হৃদপিণ্ড।
শশী মাথা তুলে মুহিতের দিকে তাকিয়ে বলল, 'আচ্ছা মুহিত, জীবন এতো সুন্দর কেন?

( #চলবে.....)

Address

Madaripur

Website

https://vt.tiktok.com/ZSNKfnFba/

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Mim's world posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Mim's world

08/04/2024

07/04/2024

Address

Website

Alerts

Shortcuts

Share

Category