07/07/2025
মানিকগঞ্জের বেতিলা জমিদার বাড়ি সম্পর্কে কিছু তথ্য নিচে দেওয়া হলো:
অবস্থান:
বেতিলা জমিদার বাড়ি বাংলাদেশের মানিকগঞ্জ জেলার সদর থানায় বেতিলা মিত্রা ইউনিয়নে অবস্থিত।
ইতিহাস:
বেতিলা জমিদার বাড়ির সঠিক ইতিহাস সম্পর্কে তথ্যগত অভাব রয়েছে। স্থানীয় লোককথা এবং কিছু তথ্য অনুযায়ী, এই জমিদার বাড়ির পূর্বপুরুষ ছিলেন জ্যোতি বাবু নামের এক কলকাতার বণিক, যিনি পাটের ব্যবসা করতেন। ধারণা করা হয়, এই এলাকার পাটের ব্যবসার সুবিধার জন্য তিনি বেতিলা খালকে ব্যবহার করে এখানে বসতি স্থাপন করেন এবং এই বিশাল দালান কোঠা নির্মাণ করেন। স্থানীয়দের কাছে এটি "সত্য বাবুর বসতবাড়ি" নামেও পরিচিত। বেতিলা খাল একসময় ধলেশ্বরী ও কালিগঙ্গা নদীর সাথে সংযুক্ত ছিল এবং এটি একটি নিরাপদ নৌপথ হিসেবে ব্যবহৃত হত, যা বণিকদের জন্য সুবিধাজনক ছিল।
স্থাপত্য:
বেতিলা জমিদার বাড়ি দুটি পাশাপাশি অবস্থিত দোতলা ভবনের সমন্বয়ে গঠিত। এর স্থাপত্যে ইউরোপীয় প্রাসাদের আদল এবং বারোক সজ্জা দেখা যায়। ভবনের পলেস্তারার উপর বিস্তারিত চিত্রকলা চোখ ধাঁধানো। যদিও এর স্থাপত্যশৈলী ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ির মত, কিন্তু এতে ইউরোপীয় প্রভাব স্পষ্ট।
বর্তমান অবস্থা:
বর্তমানে বেতিলা জমিদার বাড়ি সরকারি আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যদিও এটি সরকারি ব্যবস্থাপনায় আছে, তবে এর অবস্থা খুব একটা ভালো নয়। অযত্ন ও অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। তবে এর স্থাপনা এখনও যথেষ্ট মজবুত রয়েছে।
যাতায়াত:
ঢাকার গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে মানিকগঞ্জের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন বাস (যেমন নীলাচল, পদ্মা লাইন, সেলফি) চলাচল করে। বাসে প্রায় ১২০-১৫০ টাকা ভাড়া লাগে। মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে বেতিলা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত অটো-রিকশা বা অন্যান্য যানবাহনে যাওয়া যায়। বেতিলা বাজার থেকে অটো-রিকশায় করে সহজেই জমিদার বাড়ি পৌঁছানো যায়।
পর্যটকদের জন্য টিপস:
* বেতিলা জমিদার বাড়ি ঢাকার কাছাকাছি হওয়ায় দিনের বেলায় ঘুরে আসা সম্ভব।
* আশেপাশে থাকার তেমন কোনো ভালো ব্যবস্থা নেই, তবে মানিকগঞ্জ শহরে কিছু আবাসিক হোটেল পাওয়া যায়।
* ঐতিহাসিক এই স্থানটি পরিদর্শনের সময় এর ঐতিহ্য ও পরিবেশ রক্ষার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিত।
বেতিলা জমিদার বাড়ি যদিও একটি জমিদার বাড়ি হিসেবে পরিচিত, তবে এটি মূলত একজন বণিক পরিবারের বসতবাড়ি ছিল। এর অস্পষ্ট ইতিহাস এবং বর্তমান বেহাল দশা সত্ত্বেও, এটি মানিকগঞ্জের একটি গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত।
তথ্য:গুগল জি মিনি।