19/06/2025
দেশী গাভীর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য কিছু কার্যকর কৌশল নিচে দেওয়া হলো। এই কৌশলগুলো নিয়মিত প্রয়োগ করলে গাভীর স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে এবং দুধের পরিমাণ ও গুণমান উভয়ই বাড়বে।
✅ ১. উন্নত জাত নির্বাচন
দেশী গাভীর মধ্যে কিছু জাত দুধ দেওয়ার জন্য তুলনামূলকভাবে ভালো। যেমনঃ
রেড সিন্ধি, সাহিওয়াল, গির ইত্যাদি।
স্থানীয় জাতের উন্নয়নের জন্য কৃত্রিম প্রজনন বা উন্নত জাতের ষাঁড়ের সাথে সংকরায়ণ করতে পারেন।
✅ ২. সুষম ও পুষ্টিকর খাদ্য
খাদ্যই মূল চাবিকাঠি।
দুধ বাড়াতে গাভীকে প্রতিদিন সুষম খাদ্য দিতে হবে।
🔹 খাদ্য তালিকা:
ঘাস: ন্যূনতম ২০-২৫ কেজি সবুজ ঘাস।
খৈল: সরিষা/তিল/সয়াবিন খৈল (১-২ কেজি)।
ধানের কুঁড়া: ১-১.৫ কেজি।
ভুট্টা গুঁড়া বা গমের ভাঙা: ১-২ কেজি।
লবণ ও ক্যালসিয়াম: সামান্য পরিমাণে প্রতিদিন।
✅ বিশেষ টিপস:
গাভীর প্রতিদিনের দুধ উৎপাদনের প্রতি লিটার অনুযায়ী অতিরিক্ত ৪০০-৫০০ গ্রাম খাদ্য দিতে হবে।
✅ ৩. পর্যাপ্ত পানি
প্রতিদিন ৫০-৮০ লিটার বিশুদ্ধ পানি দিতে হবে।
গাভী যেন সব সময় পানি পায়, সেটা নিশ্চিত করুন।
✅ ৪. পরিচ্ছন্ন ও আরামদায়ক আবাসন
আবাসস্থল শুষ্ক, পরিষ্কার ও বাতাস চলাচলযোগ্য হতে হবে।
গাভীর গা ঘষে এমন কিছু যেন না থাকে।
✅ ৫. নিয়মিত দোহন (দুধ দোয়া)
দিনে ২ বার (সকাল-সন্ধ্যা) নির্দিষ্ট সময়মতো দুধ দোয়া দরকার।
দুধ দোয়ার সময় গাভীকে আদর করুন, গলায় গান বা মৃদু কথা বললে অক্সিটোসিন হরমোন নিঃসরণ হয়, যা দুধ বের করতে সহায়ক।
✅ ৬. ওষুধ ও টিকা
কৃমিনাশক ও টিকাদান নিয়মিত দিন।
প্রতি ৩-৪ মাস পরপর কৃমির ওষুধ এবং বছরে অন্তত একবার ব্রুসেলোসিস, এফ.এম.ডি, এইচ.এস টিকা দিন।
✅ ৭. গাভীকে চাপমুক্ত রাখা
গাভী যেন ভয় না পায় বা বিরক্ত না হয়।
শিশুর মতো আদর করলে গাভী দুধ বেশি দেয়।
✅ ৮. প্রসবের ২-৩ মাস পর সংকরায়ণ
গাভী প্রসবের পরে ২-৩ মাসের মধ্যে পুনরায় গর্ভধারণ করানো দরকার, যাতে দুধ উৎপাদনের চক্র বজায় থাকে।
✅ ৯. আয়ুর্বেদিক ও প্রাকৃতিক কৌশল (ঐচ্ছিক)
মেথি, হালকা আদা, তুলসীপাতা, হলুদ ইত্যাদি মিশিয়ে গাভীকে মাঝে মাঝে খাওয়ালে হজমশক্তি বাড়ে এবং দুধের গুণমান ভালো হয়।
✅ ১০. ভেটেরিনারি পরামর্শ
গাভীর আচরণে কোনো অস্বাভাবিকতা দেখলে দ্রুত পশু চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
#গরুর #খামার