19/07/2025
কবরের পাশে বসে থাকা মেয়েটি আর কেউ নয়- সে আমার একমাত্র বোন, খাদিজা আক্তার (হুমায়রা)।
গত ৪ জুলাই আমার বোনের স্বামী এক সড়ক দুর্ঘটনায় ইন্তেকাল করেন। তিনি জামায়াতে ইসলামীর একটি থানার সেক্রেটারি ছিলেন। দুর্ঘটনার দিন তিনি নিজের থানার এক রুকন ভাইকে রক্ষা করতে গিয়ে নিজেই প্রাণ হারান।
আমার বোন তার এই মৃত্যু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। স্বামীর মৃত্যুসংবাদ শুনে সে আট ঘণ্টার বেশি সময় অচেতন ছিল। দাফনের পরদিন সন্ধ্যায় কাউকে না জানিয়ে, গোপনে কবরে চলে যায়। স্বামীর কবরের সমস্ত মাটি সরিয়ে, মৃতদেহ উঠিয়ে বুকে জড়িয়ে ধরে সে কান্নাকাটি করতে করতে ভেঙে পড়ে। এলাকাবাসী কান্নার আওয়াজ শুনে দৌড়ে গিয়ে এই হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখতে পান। আমরা খবর পেয়ে গিয়ে বোনকে জোর পূর্বক নিয়ে আসি, আবার ইমামকে ডেকে এনে দাফনের ব্যবস্থা করি। এরপর থেকে বোনকে সর্বক্ষণ চোখে চোখে রাখি। প্রতিদিন ফজরের পর তাকে নিয়ে যাই স্বামীর কবর জিয়ারতে, যেখানে সে ইচ্ছেমতো কান্না করে, দোয়া করে।
কিন্তু ওই দিন কবর থেকে ফিরে আসার পর থেকে আজ পর্যন্ত বোন আমাদের সঙ্গে আর একটা কথাও বলেনি।
সে শুধু নামাজ পড়ে সিজদায় দু'হাত তুলে একটি দোয়া করত "হে আল্লাহ, আমি আত্মহত্যা করতে চাই না, কিন্তু আমি আমার স্বামীকে ছাড়া থাকতে পারছি না। আপনি যদি সত্যিই রহমান হন, আমাকে আমার স্বামীর কাছে নিয়ে যান।"
আজ ভোর ৫:১৫ সেই সিজদার মধ্যেই আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করেছেন। আমার বোন চলে গেছেন রবের জিম্মায়।
এই মৃত্যু আমাদের পরিবারের জন্য এক অপূরণীয় শোক, অসহনীয় শূন্যতা। আমার বোন একজন আদর্শ স্ত্রী ছিলেন।
স্বামী বাসায় না ফিরা পর্যন্ত কখনো একগ্রাস খাবার মুখে তোলেনি। স্বামীর অনুমতি ছাড়া কোনো কাজ করত না।
কোনো পুরুষের সঙ্গে দেখা বা কথাও বলত না।
আজ রাত ১১:৩০টায় বোনের জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করব, ঢাকার সমাবেশ শেষে আমি নিজে উপস্থিত থাকব ইনশাআল্লাহ।
আমার প্রিয় বোনের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
বিঃদ্রঃ তার হৃদয়াবেগ ব্যাথা,আর পরপারে পাড়ি জমানো তো এই বুঝায়..
যে স্বামী নামক মানুষটা তার কাছে কি ছিলো।
নিঃসন্দেহে স্বামীও স্ত্রীর সন্তোষভাজ সার্টিফিকেট অর্জন করেছেন।
আল্লাহ দুজনকে সেই সু-সজ্য জান্নাতে মিলিত করুন।
আমিন🥀 ©
゚viralシfypシ゚viralシalシ