25/01/2024
ঈগল পাখি গড়ে ৭০ বৎসর বাঁচে।কিন্তু সে ৪০ বৎসরে এসে জীবনের সবচেয়ে ট্র্যাজিক সময়ের মুখোমুখি হয়।যেই ডানা মেলে আকাশের সীমানায় সবচেয়ে উঁচুতে সে উড়ে বেড়াত সেই ডানাগুলো ভারী হয়ে যায়,শরীরের সাথে লেগে যায়,সে আর উড়তে পারে না।যেই পায়ের নখের সাহায্যে শিকার ধরে নিয়ে মাইলের পর মাইল পথ পাড়ি দিয়ে সেই শিকারকে ছিন্নভিন্ন করত সেই নখ নরম হয়ে যায়।যেই ঠোঁট দুটির সাহায্যে শিকারকে খাবার উপযোগী করত সেই ঠোঁটগুলো এতটাই নরম হয়ে যায় যে তা আর খাবারকে খাওয়ার উপযোগী করতে পারে না।অর্থাৎ জীবনধারনের জন্য প্রকৃতি প্রদত্ত তার টুলস গুলো সব অকেজো হয়ে যায়।একটি শিকারী পাখির জন্য তখন ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।
ঈগল তখন তার জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্তটি নেয়।মরনকে বরন করার আগে সে নিজেকে পরিবর্তন করে।ঈগল তখন পাহাড়ের সবচেয়ে উঁচু স্থানে চলে যায়।দাঁত দিয়ে নিজের পাখার সব পালক টেনে টেনে ছিড়ে ফেলে।এরপর পাথরে ঠুকে ঠুকে ঠোঁট আর নখগুলোকে ভেংগে ফেলে।অবর্ননীয় কষ্ট সহ্য করে সে তার এই অংগগুলোকে ভেংগে ওই নির্জন জায়গায় ক্ষুধায় তৃষ্ণায় কাহিল হয়ে অপেক্ষা করতে থাকে নতুন করে গজানোর জন্য।অবশেষে দীর্ঘ ছয় মাস পর সে নতুন ডানা, নতুন ঠোঁট আর নতুন নখ নিয়ে তার পরিচিত আকাশ প্রাঙ্গনে রাজপাখির মতই ফিরে আসে এবং এরপরের ৩০ বৎসর রাজত্ব করে বেড়ায় এবং পরবর্তীতে স্বাভাবিক মৃত্যু গ্রহন করে।
আমরা মানুষরা জীবনের কোন না কোন পর্যায়ে এসে এই মূহুর্তের মুখোমুখি হই যখন জীবনের কাছে আশা করার মত আশাটুকুও আমাদের থাকে না।মনে হয় মৃত্যুকে আলিঙ্গন করাই হয়ত সহজ।হয়ত অর্থনৈতিক অসামর্থতা,সম্পর্কের অস্বচ্ছতা,সামাজিক দায়বদ্ধতা,ভুল মানুষের উপর নির্ভরতা,অন্যের চাহিদা পূরনে অক্ষমতা, স্বপ্ন আর বাস্তবের ব্যবধান আমাদের এমন এক সময়ের মুখোমুখি করে যখন আমরা বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়া কেই সহজ মনে করি।কিন্তু নিজেকে আরেকবার প্রথম থেকে পরিবর্তন করে নিজেকে একটা সুযোগ দেওয়া অনেক অনেক কষ্টকর হলেও মৃত্যুর চেয়ে অনেক বেশি সুন্দর।শুধু নিজের জন্য একবার নিজেকে প্রাধান্য দিয়ে বাঁচার চেষ্টা করাই যেতে পারে।রাজপাখি ঈগলের দ্বারা স্রষ্টা আমাদের এই বার্তাই হয়তো প্রেরন করেছেন....আল্লাহ সর্বশক্তিমান।
(collected)