Paranormal Stories BD

Paranormal Stories BD বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্যারানরমাল স্টোরিজ গ্রুপের অফিশিয়াল পেইজে আপনাকে স্বাগতম।

আমি পদ্মজা - পর্ব ১___________ফাহিমা ক্লান্ত হয়ে ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়ল। হাত থেকে লাঠি পড়ে গিয়ে মৃদু আওয়াজ তুলে। তার শরীর...
13/01/2024

আমি পদ্মজা - পর্ব ১
___________
ফাহিমা ক্লান্ত হয়ে ধপ করে ফ্লোরে বসে পড়ল। হাত থেকে লাঠি পড়ে গিয়ে মৃদু আওয়াজ তুলে। তার শরীর ঘেমে একাকার। কপালের বিন্দু বিন্দু ঘাম হাতের তালু দিয়ে মুছে, বার কয়েক জোরে জোরে নিঃশ্বাস ফেলল। এরপর চোখ তুলে সামনে তাকাল। রিমান্ডে কোনো পুরুষই টিকতে পারে না,সেখানে একটি মেয়ে আজ চার দিন ধরে রিমান্ডে। তাঁর সামনে চেয়ারে বাঁধা অবস্থায় ঝিমুচ্ছে। চার দিনে একবারও মুখ দিয়ে টু শব্দটি করল না। শারিরীক, মানসিক কত নির্যাতন করা হয়েছে তবুও ব্যথায় আর্তনাদ অবধি করেনি! মনে হচ্ছে, একটা পাথরকে পিটানো হচ্ছে। যে পাথরের রক্ত ঝড়ে কিন্তু জবান খুলে না। তখন সেখানে আগমন ঘটে ইন্সপেক্টর তুষারের। তুষারকে দেখে ফাহিমা কাতর স্বরে বলল, 'সম্ভব না আর। কিছুতেই কথা বলছে না।'
তুষার অভিজ্ঞ চোখে মেয়েটিকে দুয়েক সেকেন্ড দেখল।এরপর গম্ভীর কণ্ঠে ফাহিমাকে বলল, 'আপনি যান।'

ফাহিমা এলোমেলো পা ফেলে চলে যায়। তুষার একটা চেয়ার নিয়ে মেয়েটির সামনে বসল। বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, 'আপনার সাথে আজ আমার প্রথম দেখা।'

মেয়েটি কিছু বলল না। তাকালও না। তুষা মেয়েটির দিকে সূক্ষ্ম দৃষ্টি মেলে তাকাল। বলল,'মা-বাবাকে মনে পড়ে?'

মেয়েটি চোখ তুলে তাকায়। ঘোলাটে চোখ। কাটা ঠোঁট থেকে রক্ত ঝরছে। চোখের চারপাশ গাঢ় কালো। চোখ দু'টি লাল। মুখের এমন রং রিমান্ডে আসা সব আসামীর হয়। তুষার মুখের প্রকাশভঙ্গী আগের অবস্থানে রেখেই আবারও প্রশ্ন করল, 'মা-বাবাকে মনে পড়ে?'

মেয়েটি মাথা নাড়ায়। মনে পড়ে তার! তুষার একটু ঝুঁকে। মেয়েটি অসহায় দৃষ্টি মেলে তাকায়। তুষার মেয়েটির হাতের বাঁধন খুলে দিয়ে নির্বিকার ভঙ্গিতে প্রশ্ন ছুঁড়ল, 'নাম কী?'

যদিও তুষার মেয়েটির নাম সহ পুরো ডিটেইলস জানে।তবুও জিজ্ঞাসা করল। তার মনে হচ্ছে,মেয়েটি কথা বলবে। সত্যি তাই হলো। মেয়েটি ভারাক্রান্ত কণ্ঠে নিজের নাম উচ্চারণ করল, 'পদ্ম...আমি...আমি পদ্মজা।'

পদ্মজা হেলে পড়ে তুষারের উপর। তুষার দ্রুত ধরে ফেলল। উঁচু কণ্ঠে ফাহিমাকে ডাকল,'মিস ফাহিমা। দ্রুত এদিকে আসুন।'
ফাহিমা সহ আরো দুজন দ্রুত পায়ে ছুটে আসে।

___________

১৯৮৯ সাল। সকাল সকাল রশিদ ঘটকের আগমনে হেমলতা ভীষণ বিরক্ত হোন। তিনি বার বার পইপই করে বলেছেন, 'পদ্মর বিয়ে আমি এখুনি দেব না। পদ্মকে অনেক পড়াবো।' তবুও রশিদউদ্দিন প্রতি সপ্তাহে, সপ্তাহে একেক পাত্রের খোঁজ নিয়ে আসবেন। মেয়ের বয়স আর কতই হলো? মাত্র ষোল। শামসুল আলমের মেয়ের বিয়ে হয়েছে চব্বিশ বছর বয়সে। পদ্মর বিয়েও তখনি হবে। পদ্মর পছন্দমতো। হেমলতা রশিদকে দেখেও না দেখার ভান ধরলেন। রশিদ এক দলা থুথু ফেললেন উঠানে। এরপর হেমলতার উদ্দেশ্যে বললেন, 'বুঝছো পদ্মর মা,এইবার যে পাত্র আনছি,এক্কেরে খাঁটি হীরা।'
হেমলতা বিরক্তভরা কণ্ঠে জবাব দিলেন, 'আমি আমার মেয়ের জন্য পাত্র চাইনি। তবুও বার বার কেন আসেন আপনি?'
'যুবতী মাইয়া ঘরে রাহন ভালা না।'
'মেয়েটা তো আমার। আমাকেই বুঝতে দেন না।' হেমলতার কণ্ঠে বিরক্তি ঝরে পড়ছে।

রশিদ অনেক চেষ্টা করেও সুবিধা করতে পারলেন না।ব্যর্থ থমথমে মুখ নিয়ে সড়কে পা রাখেন। প্রতিদিনই কোনো না কোনো পাত্রপক্ষ এসে হাতে টাকা গুঁজে দিয়ে বলবে, 'মোর্শেদের বড় ছেড়িডারে চাই।'

রশিদ নিজে নিজে বিড়বিড় করে আওড়ান, 'গেরামে কি আর ছেড়ি নাই? একটা ছেড়িরেই ক্যান সবার চোক্ষে পড়তে হইব? চাইলেই কি সব পাওন যায়?'

পূর্ণা স্কুল জামা পরে পদ্মজাকে ডাকল, 'আপা? এই আপা? স্কুলে যাবি না? আপারে..."
পদ্মজা পিটপিট করে চোখ খুলে কোনোমতে বলল, 'না।' পর পরই চোখ বুজে ঘুমে তলিয়ে গেল। পূর্ণা নিরাশ হয়ে মায়ের রুমে আসে।

'আম্মা,আপা কী স্কুলে যাইব না?'

হেমলতা বিছানা ঝাড়া রেখে পূর্ণার দিকে কড়াচোখে তাকান। রাগী স্বরে বললেন, 'যাইব কি? যাবে বলবি।'

পূর্ণা মাথা নত করে ফেলল। হেমলতার কড়া আদেশ, মেয়েদের পড়াশোনা করাচ্ছি অশুদ্ধ ভাষায় কথা বলার জন্য নয়। শুদ্ধ ভাষায় কথা বলতে হবে। পূর্ণাকে মাথা নত করতে দেখে হেমলতা তৃপ্তি পান। তার মেয়েগুলো মান্যতা চিনে খুব। খুবই অনুগত। তিনি বিছানা ঝাড়তে ঝাড়তে বললেন, 'পদ্মর শরীর ভালো না। সারারাত পেটে ব্যাথায় কাঁদছে। থাকুক,ঘুমাক।'

পূর্ণার কিশোরী মন বুঝে যায়,পদ্মজা কীসের ব্যাথায় কেঁদেছিল। সে রাতে নানাবাড়ি ছিল বলে জানতো না।ভোরেই চলে এসেছে। নানাবাড়ি হেঁটে যেতে পাঁচ মিনিট লাগে। পূর্ণাকে চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে হেমলতা বললেন, 'তুই যা। মাথা নীচু করে যাবি মাথা নীচু করে আসবি।'
'আচ্ছা,আম্মা।'

পূর্ণা রুমে এসে আয়নার সামনে দাঁড়াল। নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখল। এরপর গত মাসে মেলা থেকে আনা লাল লিপস্টিক গাঢ় করে ঠোঁটে মাখে। চৌদ্দ বছরের পূর্ণার ইদানীং খুব সাজতে ইচ্ছে করে। হেমলতা সেজেগুজে স্কুলে যাওয়া পছন্দ করেন না বলে,পূর্ণা আগে লিপস্টিক মাখেনি।

___________

টিন দেয়ালের কাঠের ঘড়ির কাঁটায় সকাল দশটা বাজল মাত্র। এখনো পদ্মজা উঠল না। হেমলতা মেয়েদের রুমে ঢুকেন। পদ্মজা দু'হাত ভাঁজ করে ঘুমাচ্ছে। জানালার পর্দা ভেদ করে আসা আলতো পেলব রোদ্দুরের স্পর্শে পদ্মজার মসৃণ, পাতলা ঠোঁট, ফর্সা ত্বক চিকচিক করছে। হেমলতা বিসমিল্লাহ বলে,তিনবার ফুঁ দেন মেয়ের শরীরে। গুরুজনরা বলেন, মায়ের নজর লাগে বেশি। নজর কাটাতে বিসমিল্লাহ বলে ফুঁ দিতে হয়। হেমলতার মায়া লাগছে পদ্মজার ঘুম ভাঙ্গাতে। তবুও আদুরে গলায় ডাকলেন, 'পদ্ম। এই পদ্ম...'

পদ্মজা চোখ খুলে মাকে দেখে দ্রুত উঠে বসে। যেদিন ঘুম থেকে উঠতে দেরি হয় সেদিনই হেমলতা ডেকে তুলেন। পদ্মজা অপরাধী কণ্ঠে প্রশ্ন করল, 'বেশি দেরি হয়ে গেছে আম্মা?'
'সমস্যা নেই। মুখ ধুয়ে খেতে আয়।'

পদ্মজা দ্রুত কলপাড়ে গিয়ে ব্রাশ করে,মুখ ধৌত করে। হেমলতা শিক্ষকের মেয়ে। তাই তাঁর মধ্যে নিয়ম-নীতির প্রভাব বেশি। মেয়েদের শক্তপোক্ত নিয়মে রেখে বড় করছেন। পদ্মজা রান্নাঘরে ঢুকে দেখল প্লেটে খাবার সাজানো। সে মৃদু হেসে প্লেট নিয়ে টেবিলে গিয়ে বসল। তখন হেমলতা আসেন। পদ্ম দ্রুত ওড়না দিয়ে মাথা ঢাকে। হেমলতার দেওয়া আরেকটা নিয়ম, খাওয়ার সময় মাথা ঢেকে খেতে হবে। পদ্মজা নিশ্চুপ থেকে শান্তভঙ্গিতে
খেতে থাকল । হেমলতা মেয়েকে সহজ কণ্ঠে বললেন, 'তাড়াহুড়ো করছিস কেন? মুখ ধুতে গিয়ে চুল ভিজিয়ে এসেছিস।খেয়ে রোদে বসে চুলটা শুকিয়ে নিবি ।'
'আচ্ছা,আম্মা।'
'আম্মা, পূর্ণা, প্রেমা আসে নাই?'
'পূর্ণা আসছে। স্কুলে গেছে। প্রেমা দুপুরে আসব।'
'আম্মা,আব্বা কবে আসবেন?'

পদ্মজার প্রশ্নে হেমলতা দাঁড়িয়ে পড়লেন। শুকনো গলায় জবাব দেন, 'জানি না। খাওয়ার সময় কথা বলতে নেই।'

হেমলতা চলে যেতেই পদ্মজার চোখ থেকে টুপ করে এক ফোঁটা জল পড়ে পাতে। পদ্মজা দ্রুত হাতের উল্টো পাশ দিয়ে চোখের জল মুছে। পদ্মজার জীবনে জন্মদাতা আছে ঠিকই। কিন্তু জন্মদাতার আদর নেই। সে জানে না তাঁর দোষটা কী? কেন নিজের বাবা বাকি বোনদের আদর করলেও তাকে করে না? কথা অবধিও বলেন না। দুইবার মাকে জিজ্ঞাসা করেছে সে, 'আমি কী তোমাদের সত্যিকারের মেয়ে আম্মা? সন্তান হয় না বলে কি দত্তক এনেছিলে? আব্বা কেনো আমাকে এতো অবহেলা করেন? ও আম্মা বলো না?'

হেমলতা তখন নিশ্চুপ থাকেন। অনেকক্ষণ পর বলেন, 'তুই আমার গর্ভের সন্তান। আর তোর বাবারই মেয়ে। এখন যা,পড়তে বস। অনেক পড়তে হবে তোর।'

ব্যস এইটুকুই! এর বেশি কিছু বলেন না হেমলতা। পদ্মজার কেন জানি মনে হয়,একদিন হেমলতা নিজ থেকে খুব গোপন কোনো কথা বলবেন। তবে সেটা যেন সহ্য করার মতো হয়। এই দোয়াই সারাক্ষণ করে সে।

'এতো কী ভাবছিস? তাড়াতাড়ি খেয়ে উঠ।'

হেমলতার কথায় পদ্মজার ভাবনার সুতো ছিড়ল। দ্রুত খেয়ে উঠে। আজ আমের আচার বানানোর কথা ছিল।

___________

সন্ধ্যা কাটতেই বিদ্যুৎ চলে গেল। কয়েক মাস হলো গ্রামে বিদ্যুৎ এসেছে। আট গ্রাম মিলিয়ে অলন্দপুর। তাঁদের গ্রামের নাম আটপাড়া। প্রতিদিন নিয়ম করে সন্ধ্যারাত থেকে তিন ঘন্টা গ্রাম অন্ধকারে তলিয়ে থাকে। আর সারাদিন তো বিদ্যুৎ-এর নামগন্ধও থাকে না। বিদ্যুৎ দিয়ে লাভটা কী হলো? পদ্মজা,পূর্ণা,প্রেমা তিন বোন একসাথে পড়তে বসেছিল। বাড়ি অন্ধকার হতেই নয় বছরের প্রেমা খামচে ধরে পদ্মজার ওড়না। পদ্মজা মৃদু স্বরে ডাকল,
' আম্মা? আম্মা..."
' আয়,টর্চ নিয়ে যা।'

হেমলতার আহ্বানে পদ্মজা উঠে দাঁড়াল। প্রেমা অন্ধকার খুব ভয় পায়। পদ্মজার ওড়না ছেড়ে পূর্ণার হাত চেপে ধরে। টর্চ নিয়ে রুমে ঢোকার মুহূর্তে পদ্মজা গেইট খোলার আওয়াজ পেল। উঁকি দিয়ে হানিফকে দেখে সে দ্রুত রুমে ঢুকে পড়ল। হানিফ পদ্মজার সৎ মামা।

' বুবু...বাড়ি আন্ধার ক্যান!বাত্তি-টাত্তি জ্বালাও।' হানিফের কণ্ঠ।
' হানিফ আসছিস?'হেমলতা রুম থেকে বেরিয়ে বলেন। হাতে হারিকেন। হানিফ সবকটি দাঁত বের করে হাসল। বলল, 'হ,আমি।'
'আয়,ভেতরে আয়।'
হানিফ বারান্দা পেরিয়ে বড় ঘরে ঢুকে বলল, 'তোমার ছেড়িগুলান কই তে?'
'আছে রুমেই। পড়ছে।'
'এই আন্ধারেও পড়ে!'

হেমলতা কিছু বললেন না। হানিফ এই বাড়িতে আসলে কেন জানি খুব অস্বস্তি হয়। অকারণেই!

'ওদের খাওয়ার সময় হয়েছে। তুইও খেয়ে নে?'
'এইহানেই খামু? না তোমার সরাইখানাত যাইতে হইবো?'

কথাটায় রসিকতা ছিল। গ্রামে থেকেও হেমলতা খাওয়ার জন্য আলাদা রুম নির্বাচন করেছেন সেটা হানিফের কাছে রসিকতাই বটে! হেমলতা প্রশ্নের জবাব সোজাসাপটা না দিয়ে বললেন, 'খেতে চাইলে খেতে আয়।'

পদ্মজা কিছুতেই খেতে আসল না। কেমন জড়োসড়ো হয়ে আছে। মনে হচ্ছে, হানিফকে ভয় পাচ্ছে বা অবহেলা করছে। হানিফ ছয় বছর সৌদিতে ছিল। তিন মাস হলো দেশে ফিরেছে। তিন মাসে যতবার হানিফ এই বাড়িতে পা রেখেছে ততবারই পদ্মজা অজুহাত দিয়ে দূরে দূরে থেকেছে। হেমলতার বিচক্ষণ মস্তিষ্ক মুহূর্তে ভেবে নিল অনেক কিছু। তাই জোর করলেন না। আজই এই লুকোচুরির ফয়সালা হবে। হানিফ পদ্মজাকে দেখার জন্য অনেক ছলচাতুরী করল। কিছুতেই সুযোগ পেল না। বিদ্যুৎ আসার ঘন্টাখানেক পর হানিফ চলে যায়। পূর্ণা, প্রেমা রুমে ঢুকতেই পদ্মজা ঝাঁপিয়ে পড়ে। রুদ্ধশ্বাস কণ্ঠে বলল, 'কতবার না করেছি? লোকটার পাশে বেশিক্ষণ না থাকতে? তোরা কেনো শুনিস না আমার কথা?'

পূর্ণা ও প্রেমা বিস্ময়ে হতবিহ্বল। পদ্মজা কখনো তাদের এমন নিষেধ দেয়নি। তাহলে এখন কেন এমন বলছে?হেমলতা রুমে ঢুকতেই পদ্মজা চুপসে গেল।
'পদ্ম আমার রুমে আয়।'

মায়ের এমন কঠিন কণ্ঠ শুনে পদ্মজার কলিজা শুকিয়ে আসে। হেমলতা নিজের ঘরে চলে যান।

হেমলতা মেয়ের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। পদ্মজা নতজানু হয়ে কাঁপছে। সুন্দরীরা ভীতু আর বোকা হয় তার দৃষ্টান্ত প্রমাণ পদ্মজা। হেমলতার খুব মায়া হয় পদ্মজার সাথে উঁচুকণ্ঠে কথা বলতে। পদ্মজা রূপসী বলেই হয়তো! গোপনে আবেগ লুকিয়ে তিনি বজ্রকণ্ঠে প্রশ্ন করলেন, 'কী লুকোচ্ছিস? হানিফের সামনে কেন যেতে চাস না? সে কী করেছে? '

পদ্মজা ফোঁপাতে থাকে। হেমলতা সেকেন্ড কয়েক সময় নিয়ে নিজেকে সামলান। কণ্ঠ নরম করে বললেন, 'হানিফ ধড়িবাজ লোক! সৎ ভাই বলে বলছি না। আমি জানি। তাঁর ব্যাপারে যেকোনো কথা আমার বিশ্বাস হবে। তুই বল কী লুকোচ্ছিস?'

মায়ের আদুরে কণ্ঠে পদ্মজা আচমকা বাঁধ ভাঙ্গা নদীর মতো হু হু করে কেঁদে উঠল।

চলবে....
®ইলমা বেহরোজ

আমার আর শ্রাবণীর বিয়ের ঠিক ৪দিন পর খেয়াল করি আমাদের বাসার কাজের মেয়েটা আর আসছে না। আমি তখন মাকে বলি,-- মা, শেফালী অসুস্থ...
30/10/2023

আমার আর শ্রাবণীর বিয়ের ঠিক ৪দিন পর খেয়াল করি আমাদের বাসার কাজের মেয়েটা আর আসছে না। আমি তখন মাকে বলি,
-- মা, শেফালী অসুস্থ নাকি? দুইদিন ধরে ওকে দেখছি না
মা উত্তর দিলো,
- কাজের মেয়ের আর দরকার নেই। শুধু শুধু মাস গেলে এতগুলো টাকা দিতে হয়। তাছাড়া এখন তো বউমা আছে

আমি আর মাকে কিছু বলি নি। বেলকনিতে দাঁড়িয়ে শুধু ভাবতে লাগলাম, আমার বিয়ের পর মা কাজের মেয়ে বিদায় করে দিলো অথচ আমার ছোট বোনকে বিয়ে দেওয়ার সময় উপহার সামগ্রীর সাথে সাথে একটা কাজের মেয়েও দিয়েছিলো

এইসব কথা যখন ভাবছিলাম তখন শ্রাবণী আমার পিছনে দাঁড়িয়ে বললো,
- তোমায় একটা কথা বলবো?
আমি ওর দিকে তাকিয়ে বললাম,
-- হুম, বলো
শ্রাবণী তখন মাথা নিচু করে বললো,
- আমার একজোড়া স্যান্ডেল লাগবে। হিল জুতা পরে চলাচল করতে সমস্যা হচ্ছে

শ্রাবণীর মুখ থেকে কথাটা শুনার পর নিজের খুব লজ্জা লাগছিলো। আমার বউ ৪দিন ধরে হিল জুতা পরে চলাচল করছে আর আমি সেটা খেয়াল করি নি। আমার উচিত ছিলো বিষয়টা খেয়াল করা। আমি তখন শ্রাবণীকে বললাম,
--ঠিক আছে আজকে আমি এনে দিবো

সন্ধ্যার পর বাসায় যখন ফিরি তখন শ্রাবণীর জন্য একজোড়া স্যান্ডেল কিনে আনি। কাগজে মুড়ানো স্যান্ডেলগুলো নিয়ে যখন বাসায় ঢুকি তখন খেয়াল করি মা পাশের বাসার আন্টির সাথে কথা বলছে। মা আমার হাতের দিকে তাকিয়ে বললো,
- কিরে, তোর হাতে কি এটা?
আমি উত্তর দেওয়ার আগেই পাশের বসার আন্টি ঠোঁট বাঁকিয়ে হেসে বলতে লাগলো,
~কি আর আনবে, বউয়ের জন্য নিশ্চয়ই লুকিয়ে সন্দেশ মিঠাই এনেছে। এখন জামাই বউ মিলে দরজা বন্ধ করে খাবে। মাকে দেওয়ার কথা মনেও করবে না

আমি কাগজটা সরিয়ে আন্টিকে বললাম,
--বউয়ের জন্য ৬৫ টাকা দিয়ে একজোড়া বাটা স্যান্ডেল এনেছিলাম। এখন আপনার কাছে যদি এটা সন্দেশ মিঠাই মনে হয় তাহলে চায়ের সাথে বসে বসে এটাও খেতে পারেন

এইকথা বলে আন্টির কোলের উপর স্যান্ডেলজোড়া রেখে রুমের ভিতর ঢুকলাম। তারপর শ্রাবণীর দিকে তাকিয়ে বললাম,
--আন্টি যদি স্যান্ডেলগুলো না খায় তাহলে আন্টি চলে গেলে স্যান্ডেলগুলো পায়ে লাগিয়ে দেখো ঠিকঠাক মত হয় কিনা
শ্রাবণী চাপা হাসি হেসে বললো,
-ঠিক আছে

হাসিটা চেপে রাখার জন্য শ্রাবণীর কপালের রগটা নীল হয়ে গিয়েছিলো। আমি মুগ্ধ হয়ে ওকে দেখে ভাবছিলাম, একটা মেয়ে এতটা সুন্দর হয় কি করে...
---
----

ছোট বোনের শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য আমি ৩ কেজি মিষ্টি নিয়েছিলাম বলে মা রাগে বলেছিলো,
"৩ কেজি মিষ্ট নিয়ে গেলে শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার মেয়েকে নানা রকম কথা শুনাবে "
তাই আমি সেদিন ৬ কেজি মিষ্টি ২কেজি দই আর ১ কেজি রসমলাই নিয়ে গিয়েছিলাম। অথচ আজ আমি যখন শ্রাবণীকে নিয়ে শ্বশুরবাড়ি যাবো তখন মা বললো,
- শ্বশুরবাড়ি এতকিছু নিবার দরকার নেই। দুইকেজি মিষ্টি আধা কেজি আধা কেজি করে ৪টা প্যাকেটে নিয়ে গেলেই হবে।
আমি মার কথা শুনে কোন উত্তর দেই নি শুধু একটু মুচকি হেসেছিলাম আর শ্রাবণীর দিকে তাকিয়ে দেখি ও ওর চোখের জলটা লুকানোর চেষ্টা করছে

বাসের মধ্যে শ্রাবণী আমার সাথে একটা কাথাও বলেনি। শুধু বাসের জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে ছিলো। বাস থেকে নেমে যখন রিকশায় উঠলাম তখন শ্রাবণীকে বললাম,
-- তোমাদের এইখানে ভালো মিষ্টি কোথায় পাওয়া যায়?
শ্রাবণী তখন আমায় বললো,
- পিয়াস, তুমি আমাদের বাসায় শূন্য হাতে গেলেও তোমার যত্নের এতখানি কমতি হবে না।
আমি তখন শ্রাবণীর হাতটা শক্তকরে ধরে মুচকি হেসে বললাম,
-- পাগলি...

দুইরাত শ্বশুরবাড়ি থাকার পর ৩দিনের দিন যখন শ্রাবণীকে নিয়ে বাসায় ফিরি তখন মা দরজা খুলে প্রথম কথাটা বলেছিলো,
- শ্বশুর শ্বাশুড়ির আদর যত্ন পেয়ে মাকে তো ভুলেই গেলি। তা শ্বশুর শ্বাশুড়ি তোর কানে কি কি মন্ত্র শিখিয়ে দিলো?
আমি তখন ক্লান্ত চোখে মার দিকে তাকিয়ে বললাম,
-- মা, অনেকটা পথ জার্নি করে এসেছি। তোমার সাথে পরে কথা বলছি...

খাবার টেবিলে বসে মা শ্রাবণীর দিকে তাকিয়ে বললো,
- বউমা, তোমায় না বলেছিলাম শুটকি আলু দিয়ে রান্না করতে। তুমি তা না করে বেগুন দিয়ে রান্না করলে কেন?

শ্রাবণী তখন বললো,
- মা, আমাদের এইখানে শুটকি বেগুন দিয়ে হালকা ঝুল করে রান্না করে। আপনি একবার খেয়ে দেখেন ভালো লাগবে
মা তখন হেসে দিয়ে বললো,
-এখনি শ্বাশুড়ির কথা না শুনে নিজের মত কাজ করা শুরু করেছো। বাকিদিন তো পরেই আছে

মা'র খোচা দেওয়া কথাটা শ্রাবণী ঠিকিই বুঝতে পেরেছিলো তাই ও মাথা নিচু করে বললো,
- পরের বার এমন ভুল হবে না মা...
---
-----

শ্বাশুড়ির সাথে ঝগড়া করার পর ১৩ দিন ধরে ছোট বোন মালিহা আমাদের বাসায়। অবশ্য সায়েম( মালিহার স্বামী) দুইবার এসেছিলো মালিহাকে নিতে কিন্তু মা সায়েমকে সরাসরি বলেছে মালিহাকে দিবে না। যদি সায়েম আলাদা ফ্ল্যাট নেয় তবেই মালিহাকে যেতে দিবে। শ্বাশুড়ির হুকুম মেনে তার মেয়ে চলতে পারবে না

আজকে আবারও সায়েম এসেছে। ড্রয়িংরুমে বসে সায়েম মাকে বললো, সে আলাদা ফ্ল্যাট নিয়েছে। এখন সে মালিহাকে নিয়ে আলাদাভাবেই থাকবে। আড়াল থেকে কথাগুলো শুনে আমি ড্রয়িংরুমে গেলাম। সায়েমের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললাম,
-- যাক, অবশেষে তোমার সুবুদ্ধি উদয় হলো

মা'র চোখে মুখে তখন ঈদের খুশি। মা হাসতে হাসতে বললো,
- যাক বাবা, এইবার আমি চিন্তামুক্ত। মেয়েকে নিয়ে আমার আর চিন্তা হবে না। আরে এটা কি আশির দশক নাকি, যে শ্বশুর শ্বাশুড়ি সবাইকে সাথে নিয়ে একসাথে সংসার করতে হবে? এটা ২০২০ সাল। এইযুগের মেয়েরা সবসময় চায় নিজের মত করে সংসারটা সাজাতে। আজকাল শ্বশুর শ্বাশুড়ির হুকুম মত চলার দিন আছে নাকি?

এমন সময় শ্রাবণী নাস্তা নিয়ে ড্রয়িংরুমে ঢুকলো। আমি তখন শ্রাবণীকে বললাম,
-- যাও, তাড়াতাড়ি কাপড় চোপড় গুছিয়ে বাবার বাড়ি চলে যাও
শ্রাবণী অবাক হয়ে তাকিয়ে বললো,
- মানে!
আমি তখন কিছুটা রাগ দেখিয়ে বললাম,
-- মানেটা হলো তুমি এখন বাপের বাড়ি যাবে। আর আমি যখন তোমায় নিয়ে আসতে যাবো তখন তুমি সোজা বলে দিবে আলাদা ফ্ল্যাট নিলে তবেই তুমি আমার সাথে আসবে তার আগে আসবে না। আরে তুমি এই যুগের মেয়ে। তোমারও তো ইচ্ছে হয় স্বামীকে নিয়ে আলাদা ভাবে থেকে সংসারটাকে নিজের মত গোছাতে। আজকাল শ্বাশুড়ির হুকুম মত চলার দিন আছে নাকি?

শ্রাবণী তখন কেঁদে দিয়ে বললো,
-পিয়াস! প্লিজ
আমি তখন ওরে জোরে ধমক দিয়ে বললাম,
--যা বলছি তাই করো গিয়ে

শ্রাবণী কাঁদতে কাঁদতে অন্যরুমে চলে গেলো। মা ছোট বোন আর ছোট বোনের স্বামী সবাই আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো। আমি তখন মাকে বললাম,
--বিয়ের আগে যদি আমার বাসায় কাজের মেয়ে রাখতে পারি তাহলে বিয়ের পর কেন আমি কাজের মেয়ে রাখতে পারবো না? তুমি তো বিয়ে করিয়ে ছেলের বউ এনেছো কাজের মেয়ে তো আনো নি।
আমি যদি ছোট বোনের বাসায় ৩ কেজি মিষ্টি নিয়ে যায় তাহলে সবাই ছোটবোনকে কথা শুনাবে। আর আমি যদি শ্বশুর বাড়ি ২কেজি মিষ্টি নিয়ে যায় তখন কি শ্রাবণীকে ওর বাড়ির লোক কথা শুনাবে না?
নিজের মেয়ে শ্বাশুড়ির হুকুম মত চলতে পারবে না অথচ প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ছেলের বউ তোমায় জিজ্ঞেস করে, মা আজ রুই মাছ কি দিয়ে রান্না করবো

আচ্ছা মা তোমাদের শ্বাশুড়িদের সমস্যাটা কি? তোমরা কেন ছেলের বউকে নিজের মেয়ের মত দেখতে পারো না। আজকাল যে ছেলেরা বাবা মার থেকে আলাদা হয়ে যায় এতে কি শুধু ছেলের বউয়ের শুধু দোষ থাকে? শ্বশুর শ্বাশুড়ির কি কোন দোষ থাকে না?

মা আমার প্রশ্নের কোন জবাব না দিয়ে চুপচাপ শুধু শুনলো। আমি তখন সায়েমের দিকে তাকিয়ে বললাম,
-- তোমায় আমি ভালো ছেলে ভাবতাম। আমি যদি জানতাম তুমি মেরুদণ্ডহীন তাহলে কখনোই তোমার কাছে নিজের বোনের বিয়ে দিতাম না৷ বউয়ের সাথে শ্বাশুড়ির টুকটাক ঝগড়া হবে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু এর জন্য বাবা মাকে ছেড়ে আলাদা ফ্ল্যাটে থাকতে হবে নাকি? বউ রাগ করে বাপের বাড়ি এসে পড়েছে।বউকে একদিন বুঝাবে দুইদিন বুঝাবে তিন দিনের দিন গালে একটা থাপ্পড় মেরে নিয়ে যাবে। তবুও যদি না যায় তাহলে বললে, সারাজীবনের জন্য এইখানে থাকো আমি তোমায় ডিভোর্স দিবো। ডিভোর্সের কথা শুনলে আর কিছু করা লাগবে না এমনিতেই সুরসুরিয়ে যাবে।

সায়েম মাথা নিচু করে বললো,
- দুঃখিত ভাইয়া আমার ভুল হয়ে গেছে

ছোট বোনের দিকে তাকিয়ে বললাম,
-- তোরা কেন পারিস না নিজের শ্বাশুড়িকে মার চোখে দেখতে। মনে রাখিস একদিন তুইও শ্বাশুড়ি হবি তখন ছেলের বউ তোর সাথে এমন করলে বুঝবি কতটা কষ্ট হয়...
---
----

বাস ছেড়ে দিবে। জানালা দিয়ে তাকিয়ে শ্রাবণী কাঁদতে কাঁদতে আমায় বললো,
-পিয়াস, আমি যাবো না
আমি তখন মুচকি হেসে বললাম,
-- মা'র মন থেকে ছেলের বউ আর নিজ মেয়ের মধ্যকার পার্থক্যটা দূর হলেই মাকে সাথে নিয়ে তোমায় নিতে আসবো

বাসটা চোখের সামনে থেকে কিছুক্ষণের মধ্যে আড়াল হয়ে গেলো। শ্রাবণীর জন্য মনটা কেমন কেমন জানি করছে। তবুও নিজের মনকে এই বলে সান্ত্বনা দিলাম, সারাজীবন সবাইকে নিয়ে ভালো থাকার জন্য কয়েকদিন নাহয় কষ্টে রইলাম

সমাপ্ত
ভালো লেগেছে গল্পটা

নতুন গ্রুপে জয়েন হয়ে নিবেন ভূতের গল্প! Paranormal Stories BD

নতুন গল্প পেতে পেইজে ফলো করে রাখবেন!

 ং_শেষ_অংশএরপর আম্মু কোন হুজুর থেকে এক বোতল পানি,কিছু কিতাব,আর কিছু জিনিস পলিথিনে মোড়ানো দেয় আমাকে আর বলে এগুলা অনেক পবি...
12/02/2022

ং_শেষ_অংশ
এরপর আম্মু কোন হুজুর থেকে এক বোতল পানি,কিছু কিতাব,আর কিছু জিনিস পলিথিনে মোড়ানো দেয় আমাকে আর বলে এগুলা অনেক পবিত্র জিনিস আরবি বই আছে তুমি যাত্রাপথে এই ব্যাগ তোমার সাথেই রাখবা এবং পাক থাকবা।
এর মাঝে আর খুটিনাটি সমস্যা আছে তা আর নাই বল্লাম। তারপর সন্ধায় বাসে উঠি জানালার পাশেই সিট ছিল। আম্মুর কথা মাথায় রেখে ব্যাগ কাধেই রাখি।
এরপর অনেক দূর যাওয়ার পর একটু চোখ লেগে আসে আর জানালা টা খোলাই রাখি হালকা বৃষ্টি হচ্চিল ভালই লাগছিল।
একটা সময় ঘুমিয়ে পড়ি আর একটু পর যাত্রা বিরতির জন্য স্টাফ ডাক দেয়।
আমি কোনরকম উঠে নামি একটু ফ্রেস হবো বলে। আর ব্যাথা টা তখনো বিদ্যামান কিন্তু একটু কম।
তারপর ফ্রেশ হই ওয়াশরুম ব্যাবহার করি। এসবের মাঝে মাথায় ছিল না ব্যাগ যে আমার কাধে।
বের হয়ে পুরা ভ্যাবাছেকা খেয়ে যাই করলাম টা কি।
এটা চিন্তা করতে করতে যে আমার ধারা এই ভূলটা হলো কিভাবে একটা পবিত্র জিনিস,ভাবতে ভাবতে বাস ছেড়ে দেয়।
বিশ্বাস করেন বাকি রাস্তা টা খুব কষ্টে কেটেছে আমার। খুবই অস্তিরতা আবার। মাথা ঘুরাচ্ছে শরীর ভার লাগছে। মানে বুঝাতে পারবো না কেমন ছিল সময় টা।
আবারো মনে হচ্চিল জানালা দিয়ে কেও উকি দিচ্ছে বাইরে থেকে। সবার জানার কথা শেষের দিকে বাস অনেক জোরে টানে এবং লাইট সব অফ থাকে। আমি আমার সিটের লাইট অন করে দেই। আর না ঘুমানোর চেষ্টা করি।
রাত ১টায় একটু আগে আমাকে নামিয়ে দেয় তারপর কোনরকম একটা রিক্সা নিয়ে বাসার সামনে এসে ছোট ভাই কে কল দেই ছোট ভাই দাড়োয়ান কে উঠায় তারপর ঘরে ঠুকে ব্যাগটা ঠিক একটা জানালার নিচে রাখি।
কোনরকম গোশল করে বের হয়ে বেড এ পরি। ছোট ভাই তখন পাশেই ছিল। তাই লাইটটা অফ করে দেই। তখনো শরীর টা ভার অনেক অস্থির লাগছিল। আগেই বলেছি বাসাটা নিচ তলায় হওয়ায় জানালা সব নরমালি বন্ধই থাকে।

তো ভাইটার সাথে কথা বলে একটু ঘুমানোর চেষ্টা করি। কিন্তু ঘুম নাই। একবার এদিক আরেকবার ওদিক মুরি আবার উঠে বসি আবার শুয়ে পরি।
ছোট ভাই সব লক্ষ্য করে।
আমাকে জিজ্ঞেস করে কি হইছে ভাইয়া। ওকে বল্লাম জানিনা অনেক অস্থির লাগছে।
ও বল্লো অনেক জার্নি করছেন তাই ঘুমানোর চেষ্টা করেন।
আমার রুমের জানালা দুইটা একটা উত্তরে আরেকটা পূর্বে। তো আমরা দুই ভাই পা পূর্বে আর মাথা পচ্শিমে দিয়ে শুই। তাহলে খেয়াল করেন পূর্বের দিকের জানালাটা আমাদের ঠিক নাক বরাবর ছিল সাদা পরদা যে ফ্যানের হাওয়ায় যে হালকা উরছে তা দেখতে পাচ্ছি।
তো যাই হোক ছোট ভাইয়ের কথা শুনে আবার চোখটা জাস্ট ৫সেকেন্ড হবে বন্ধ করি। আর ঘুম ও চলে আসে আর এই ৫ সেকেন্ডের ভেতর দেখতে পাই আমার উত্তরের দিকের জানালা টা খোলা অনেক বাতাশ আর জানালার বাইরে সাইড ওয়ালে একটা বিড়াল দাড়িয়ে আমার দিকে চোখ বড় করে তাকিয়ে আছে।
আপনাদের কাছে অনুরোধ এর একটি কথাও মিথ্যা না বা বানানো না,তো কেউ এটা ফেক ভাব্বেন না। আমি আর আমার ভাই ভুক্তভোগী।

তো যাই হোক সাথে সাথে আমার চোখ খুলি আর ঠিকই দেখি বাম দিকে উত্তরের জনালায় একটা বিড়াল খুবি বাজে ভাবে তাকিয়ে আছে আমি ভাইকে উঠিয়ে দেই,,,,, ভাই দেখ চোখ বন্ধ করেই আমি দেখলাম বিড়াল একটা আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আর চোখ খুলে দেখি ঠিকই সেম ভাবে একটা সাদা বিড়াল তাকিয়ে আছে। আমার ভাইও ওই বিড়াল টা দেখেছে এরপর বিড়ালটা চলে যায় জানালা সবি বন্ধ।
আমি আর আমার ভাই ভাবতে থাকলাম হলোটা কি এটা। তারই একটু পর একটা স্টিল এর পাত্র পাচতলা থেকে ফেল্লে যে শব্দ টা হবে ঠিক সেরকম শব্দ আমাদের রুমে হলো আর দুইভাই আৎকে উঠলাম ।
একটু পরেই আমার ছোট ভাইয়ের শরীরের যত শক্তি আছে সব শক্তি দিয়ে এক চিৎকার।পূর্ব পাশে জানালার ঠিক কোনায় ছবিতে দেখানো সাদা পর্দার যে জানালা ওইটাই পূর্ব পাশের জানালা।
তো আমার ভাইটা চিৎকার দিয়ে বলতে লাগলো।

ভাইয়া ওইটা কার হাত এই চোর চোর বলে আমার ভাই চিৎকার করতে থাকে ততক্ষনে আমি মনে হয় দুনিয়াতে নাই। কোনরকম উঠে লাইট টা দিলাম।

আর ভাই আতকে উঠে বলতে থাকলো ভাই এটা কি দেখলাম এত্ত লম্বা এত্ত কালো,হাত ঢুকিয়ে আপনার ব্যাগ নিতেছিল। আমি বল্লাম আস্তে। বলেই ব্যাগটার দিকে তাকালাম আর মনে পরলো মায়ের কথা,এই ব্যাগে পবিত্র জিনিস তোর সাথেই রাখবি আর বাসায় গিয়ে যেভাবে বলা আছে ঠিক সেই ভাবে ব্যাবহার করবি।

আপনারা শুনলে অবাক হবেন আমি কিচ্ছু করিনি শুধু এসেই ব্যাগ টা জানালার পাশে রেখে গোসল করে শুয়ে পড়ি। এরপরই তাকাই ব্যাগ বরাবর জানালার দিকে। ---->দেখলাম ওই একটা জানালাই খোলা

 #হারানো_সুর ২য়-পর্বমেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিতেই বাহির থেকে শাশুড়ি আম্মা ডাক দিলো। আমি সাবাকে বুকের সাথে লাগিয়ে দরজা খুলে দিত...
30/01/2022

#হারানো_সুর ২য়-পর্ব
মেয়েকে বুকে জড়িয়ে নিতেই বাহির থেকে শাশুড়ি আম্মা ডাক দিলো। আমি সাবাকে বুকের সাথে লাগিয়ে দরজা খুলে দিতেই আম্মা ঘরের ভিতর ঢুকলো।

আম্মা, মারে সারাদিনতো কিছু খাইলি না। আয় কিছু খেয়ে নে।

আমার ক্ষুদা নেই মা আপনি খেয়ে নেন ওদের সঙ্গে নিয়ে।

আম্মা, আমি ওদের সাথে খাবো এইটা তুমি কি করে ভাবতে পারলে? আমি যদি খাই তবে তোমার সাথে আর আমার নানতীর সাথে খাবো। নয়তো না খেয়েই কাটিয়ে দিবো জীবনের বাকি দিনগুলো।

আম্মা প্লীজ পাগলামি করবেন না। আপনি অসুস্থ মানুষ যেয়ে খেয়ে নিন।

কথা শেষ হতে না হতেই শাশুড়ি হাউমাউ করে কান্না করে দিলো। কান্না করতে করতে সে বার বার বলতে থাকলো শাকিল এতো বড় পাপ এতো বড় অন্যায় আমার মৃত্যুর পর করতো। আমি বেঁচে থাকতে কেন করতে হবে?

শাশুড়ির কান্না দেখে আমারও প্রচণ্ড খারাপ লাগছিলো। এদিকে শাশুড়ির কান্নার সাথে সুর মেলাতে শুরু করলো কোলে শুয়ে থাকা সাবা। শাশুড়ি আম্মা আমার একটা হাত টেনে রান্না ঘরে নিয়ে আসলেন। সে এতো সময় বসে রান্না করেছে। আমাকে সঙ্গে নিয়েই খেতে বসলেন। কিন্তু কেন জানি খাবার আমার মুখের ভিতর নিতে পারছিলাম না শত চেষ্টা করেও। আম্মা বার বার বলে চলেছে অল্প হলেও খেতে হবে নিজের জন্য না হলেও সাবার জন্য। আমি অনেকটা সময় খাবার হাতে নাড়াচাড়া করতে করতে একটা সময় কয়েক নলা খাবার খেয়ে নিলাম। এরপর হাত মুখ ধুয়ে পানি খেয়ে সেখান থেকে উঠে দ্রুত নিজের রুমের দিকে এগিয়ে আসতে শুরু করলাম।

ঘরের দরজার সামনে আসতেই পাশের ঘর থেকে ফিসফিসানির শব্দ কানে ভেঁসে আসতে লাগলো। তীব্র যন্ত্রনায় যেন বুকের ভিতর থেকে হৃদপিন্ডটা বের হয়ে আসছিলো। কোন রকমে বুকটাকে শক্ত করে চেঁপে ধরে রুমের ভিতর ঢুকে আসলাম।
মেয়েটাকে বিছানায় শুয়িয়ে দিয়ে তার পাশেই মাথা লাগিয়ে কান্না করছি আর আল্লাহর কাছে জানতে চাচ্ছি বার বার কি এমন ভুল আমার ছিলো যার জন্য এমন শাস্তী পেতে হচ্ছে আমাকে?

কত ভালোবাসতো মানুষটা আমাকে সব কিছু মিথ্যা প্রমাণ করে দিলো। মানুষ যে বলে সময় বদলে যায়, প্রতিশ্রুতি বদলে যায় বদলে যায় ভালোবাসার মানুষটাও। তাদের কথা গুলোই কি তবে সত্যি? কিন্তু আমিতো বদলে যায়নি, দিনের পর দিন এই মানুষটাকে ভালোবেসেছি। আজও ভালোবেসে চলেছি এই মানুষটাকে। কথা গুলো ভাবতে ভাবতে দু'চোখের পানিতে বালিশ ভিজে একাএকা হয়ে গেলো। তবুও যেনো দু'চোখের পানি শেষ হচ্ছে না। দূর মসজিদ থেকে দিনের সর্বশেষ আযানের ধ্বনি ভেসে আসছে কানে দু'চোখের পানি মুছে উঠে দাঁড়ালাম আমি। ছোট বেলা থেকে আর যাই হোক না কেন নামায, রোযা, সঠিক নিয়মে দান ক্ষয়রাত কখনো আমি বন্ধ করিনি।

তাড়াতাড়ি চোখের পানি মুছে রুম থেকে বের হয়ে আসতেই চোখে পড়লো শাকিল আর তার নতুন বউয়ের হাসাহাসি আর মাতামাতির শব্দ। খাবার খাওয়ার জন্য তারা ঘর ছেড়ে কিচেনের সাথে লাগোয়া ডাইনিং এ এসেছে। বুকটা ছেদ করে উঠলো। এই শাকিল আমি এক বেলা না খেয়ে থাকলে আমাকে খাওয়ানোর জন্য কতই কি না করতো। অথচ আজ আমি একা একটা ঘরে পরে রয়েছি। খেয়েছি কি না খেয়েই পরে রয়েছে সে একটি বারের জন্যও এসে জিজ্ঞাসা করলো না।

কথা গুলো ভাবতেই যেন দম বন্ধ হয়ে আসছিলো। এতোদিন কাকে আমি ভালোবেসে এসেছিলাম? যে মানুষটাকে এতো এতো পরিমাণ ভালোবাসলাম সেই মানুষটা মুহুর্তের ভিতর আমাকে ভুলে গেলো। ভালোবাসা নিয়ে মানুষ অভিনয় করতেই পারে তাই বলে নিজের স্ত্রী সন্তানদের ভালোবাসা নিয়ে অভিনয়? আমার ভালো মন্দ না জানতে চাইতেই পারে কিন্তু সাবা? ওতো ওরই রক্ত তবে কি করে ওকে উপেক্ষা করে সে চলতে পারছে? না আর ভাবতে পারছি না, হৃদয়টা ক্ষতবিক্ষত হয়ে যাচ্ছিলো আমার। কোন রকমে ওদের কথা এড়িয়ে ওয়াশ রুমে এসে ওযু করে নিয়ে, সোজা নিজের রুমের দিকে রওনা হয়ে গেলাম।

জায়নামায বিছিয়ে নামাযে লুটিয়ে পড়লাম। যার কেউ নেই তার জন্য আল্লাহই যথেষ্ট্য। নামায শেষ হতেই সাবার কান্নার আওয়াজ কানে ভেসে আসলো। আমি উঠে যেয়ে মেয়েকে বুকের সাথে লাগিয়ে নিলাম। আমি কষ্ট করে বেঁচে থাকতে পারলেও আমার মেয়েটা কি করে এতো কষ্ট সহ্য করবে?

আর চাচা চাচী, চাচাত ভাইটা যদি জানতে পারে? তবে তারা কিভাবে রিয়াক্ট করবে? কথা গুলো ভাবতেই ভিতরটা কেঁপে উঠছিলো। এ বাড়ি ছেড়ে গেলে শুধু মাত্র ঐ একটাই জায়গা রয়েছে আমার যাওয়ার মত। কিন্তু তারাও যদি আমাকে আর আশ্রয় না দেয়। নানান রকম কথা ভাবতে ভাবতে রাত গভীর হয়ে আসছে। সেই সাথে পাশের রুমের ফিঁসফিঁস শব্দে যেন আমার দম আরও বন্ধ হয়ে আসছে।

দুই দিন আগেও কত কথা বলতাম দু'জন গভীর রাত পর্যন্ত জেগে থেকে আর আজ শাকিল অন্য কারো সাথে জেগে রাত কাটাচ্ছে। সেও তার বিবাহিত স্ত্রী। আমি তার স্ত্রী ছিলাম। কত রকম গল্প বলতাম দু'জন জ্যোৎস্নার আলো নাকি আমার সমস্ত শরীরে মাখিয়ে দিবে। আমি কখনো ঢাকা শহরে যাইনি এবার বৈশাখি মেলায় আমায় ঢাকায় নিয়ে যেয়ে। ঢাকাই শাড়ি রেশমী চুড়ি কিনে দিতে চেয়েছিলো মানুষটা, সবটাই ছিলো শুধুই তার অভিনয়। এতো ভালোবাসার পরও মানুষটা আমার হইলো না। এই দুঃখে না পারবো আমি বেঁচে থাকতে না পারবো আমি মরে যেতে।

নানান রকম চিন্তায় এক সময় ক্লান্ত দু'চোখ ঠিকই বন্ধ হয়ে এলো। ফজরের আযানে বিছানা ছেড়ে উঠে ওযু করে এসে নামাযে দাঁড়িয়ে পড়লাম। নামায শেষে মোনাযাতে আল্লাহর নিটক প্রার্থনায় লুটিয়ে পরলাম যেন যা হয় ভালো কিছু হয়।
"আমি তো আমার দুঃখ ও অস্থিরতাগুলো আল্লাহ্'র সমীপেই নিবেদন করছি!" [সূরা ইউসুফ: ৮৬]

মোনাজাত শেষ করতেই বাহির থেকে চাচাত ভাইয়ের চিৎকার শুনতে পেলাম। যে জিনিসের ভয় পেয়েছিলাম তাই হলো। আমি চাইনি চাচার বাড়ি পর্যন্ত এ খবর পৌঁছে যাক কিন্তু এ গ্রাম আর ঐ গ্রাম মুহুর্তে মানুষের কান থেকে কান অব্দি পৌঁছে যায়। চাচাত একমাত্র ছোট ভাই এবার ইন্টার পরীক্ষা দিয়েছে রক্ত গরম। সব চেয়ে বড় কথা চাচা চাচীর চেয়ে সে আমাকে অনেক বেশী ভালোবাসে। আপন বড় বোনের চেয়ে কোন অংশে কম ভালোবাসে না। আমি ছোট বেলা থেকেই তাকে ছোট ভাইয়ের মত করেই আদর স্নেহ দিয়ে বড় করেছি। রুমানের আওয়াজে এবার আমি দ্রুত রুমের ভিতর থেকে বের হয়ে আসলাম। না জানি আর কার কার ঘুম ভেঙে গিয়েছে। আমাকে দেখে রুমান একদম চুপ হয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে রুমান।

এভাবে তাকিয়ে আছিস কেন ভাই?

রুমান, বুবু তোমার এ কি অবস্থা হয়েছে এক রাতে?

আমি মুখে মিথ্যে হাসি ফুটানোর ব্যর্থ চেষ্টা করে কই আমারতো কিছু হয়নি।

রুমান, বুবু তুই মিথ্যা হাসি দিয়ে তোর সুন্দর চোখের নিচের কালো দাগ লুকাতে পারবি না। পারবি না লোকাতে তোর মুখের ক্লান্তির চিহ্ন। আমিতো আমার বুবুকে চিনি। তুই সব কিছু ব্যাগে ভরে নে আমার সাথে এখুনি চল। এখান থেকে সোজা তুই আমাদের বাড়ি যাবি। তারপর বিকেলে থানায় যেয়ে মামলা করবো।

তুই কি পাগল হইছিস ভাই? কার বিরুদ্ধে মামলা করবি? উনি তোর দুলাভাই, আর আমি এ বাড়ি ছেড়ে আপাতত যাচ্ছি না। তুই বস আমি তোর জন্য চা নাস্তা বানিয়ে নিয়ে আসছি।

রুমান, দুলাভাই ঐ লোকটা আমার কিছু হয়না। যে আমার বোনের কোমল হৃদয়টি ভাঙতে বিন্দু পরিমাণ কার্পন্ন করেনি সে কোন দিনও আমার দুলাভাই হতে পারে না। আমিতো উনাকে জেলের ভাত খায়িয়েই ছাড়বো। তুমি তাড়াতাড়ি সাবাকে নিয়ে আমার সাথে চলো।

ভাই তুই পাগলামি করিস না মাথা ঠাণ্ডা কর, এটা আমার স্বামীর বাড়ি, আর মেয়েরা স্বামীর বাড়ি আসে লাল শাড়ি পরে, আর বের হয় সাদা কাফনের কাপড় পরে। আমিও যেদিন মরবো সেদিন না হয় সাদা কাপড় পরিয়ে নিয়ে যাস।

রুমান, তুমি যাই বলো আপু আমি ঐ লোককে কোনদিন ও ছাড়বো না। আজ হোক কাল হোক তাকে আমি শাস্তি দিবোই।

কথা গুলো বলে রাগে গজ গজ করতে করতে রুমান বাড়ির ভিতর থেকে বের হয়ে গেলো অনেক ডেকেও ওকে আর থামাতে পারলাম না। মাথায় হাত দিয়ে ঘরের মেঝেতে বসে রইলাম। কি করবো না করবো কোন কিছুই যেনো বুঝতে পারছিলাম না। আমার চোখের সামনে নিজের স্বামী সংসার সব অন্য এক মহিলার হয়ে যাচ্ছিলো অথচ আমি কিছুই বলতে পারছিলাম না। কিছুই করতে পারছিলাম না। চাইলেই রুমানের সাথে বের হয়ে যেয়ে শাকিলের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারতাম। কিন্তু সত্যিই কি মানুষ আমাকে ভালো চোখে দেখতো? আর যে মানুষটাকে এতো ভালোবেসেছি সেই মানুষটার বিরুদ্ধেই কি করে আমি মামলা করতাম। প্রচণ্ড রকম মাথাটা ঘুরতে শুরু করলো। চারিদিক অন্ধকার হয়ে আসছে আমি শুধু মা বলে একবার চিৎকার করে উঠলাম। তারপর সব কিছু শুধুই অন্ধকার।

#চলবে...

 ংশফটোতে যে ওয়ারড্রব দেখতে পাচ্ছেন।মূলত ঘটনা টা সেই ওয়ারড্রব নিয়ে।আগেই বলে নেই আমার কাছে আমার ওয়ারড্রব এর এই একটা ফটোই আ...
30/01/2022

ংশ
ফটোতে যে ওয়ারড্রব দেখতে পাচ্ছেন।মূলত ঘটনা টা সেই ওয়ারড্রব নিয়ে।
আগেই বলে নেই আমার কাছে আমার ওয়ারড্রব এর এই একটা ফটোই আছে। অনেক দিন পর প্রফাইল পিক চেন্জ করার সময় ফটোটা দেখে ঘটনা টা মনে পরলো তাই আজ শেয়ার করছি।

তো আমি তখন নতুন ভালো একটা চাকুরি পাই। তার পর একটা ছোট্ট এক রুমের বাসা ভাড়া নেই। বলা চলে পানির দামেই বাসা টা পেয়ে যাই। যাই হোক প্রথম বেতন দিয়ে আমার এই ওয়ারড্রব টা কেনা,মজার ব্যাপার হলো এটা একটা সেকেন্ড হ্যান্ড যা আমি ভান্গারির দোকান থেকে ৩০০০ টাকা দিয়ে নিয়ে আসি। ঘটনা শুরু হয় কেনার এক সপ্তাহ পর থেকে।
যেহেতু আমি হসপিটালিটিতে চাকুরি করি। অনেক সময় অনেক রাত করে বাসায় ফিরতে হতো।
একদিন রাত ১২ঃ৩০ এ বাসায় ফিরে আমি কোন রকম জুতা টা খুলে শুয়ে পরি অনেক ক্লান্ত থাকায় ঘুমিয়ে চলে আসে।
রাত তখন ১-১০ হবে শরিরে একরকম অস্থিরতায় ঘুম ভেংগে যায় বুঝলাম ঘামে ভেজা শরীর গোশল করতে হবে। একটু এদিক সেদিক ফিরে উঠবো তখনি লক্ষ্য করি এই ওয়ারড্রব এর আয়নায় একটা মানুষের আকৃতির ছায়া দেখা যাচ্ছে। আমি ততক্ষণাত পিছনে ফিরে দেখি কিছু নেই। তারপর উঠে লাইট দেই। ক্লান্ত থাকার জন্য ভূল দেখেছি এই ভেবে ব্যাপারটা ভুলে যাই।
তারও কিছুদিন পর। আমি আবার ঠিক একই অবয়ব দেখতে পাই তবে এবার স্পষ্ট কুচকুচে কালো মনে হয় যে কাপড়ে ঠাকা।মুখ, হাত কিছুই দেখা যায় না। আমি শুধু কোন রকম উঠে লাইট টা দেই। বলে রাখি নতুন বাসা দেখে আমার বেড কেনা হয়নি আমি ফ্লোরবেড করে ঘুমাতাম। তাই নিচ থেকে অবয়ব টা খুবি লম্বা দেখায়।
এরপর কিছুদিন লাইট জালিয়ে ঘুমাই। কিন্তু যতই সময় যায় আমার এই বাসায় নানান রকম সমস্যা শুরু হয় কিছুদিন পর পর অসুস্থ হয়ে পরি,শরীর অনেক ভাড় লাগে,অনেক রাত করে বাসায় ফেরার পথে মনে হয় কেউ আমার পিছু নিচ্ছে এমন অনেক সমস্যার সমুক্ষীনহতে থাকি। ভাবলাম সস্তায় ওয়ারড্রব কিনে পান্দে পরলাম নাতো।
তারচেও ভয়ের কথা একদিন আমার এক ফ্রেন্ড বাসায় আসে আমার অফডেতে, দুইজন মিলে আড্ডা দেওয়ার এক পর্যায় আমার ফ্রেন্ড ওয়াস রুম এ যায় আর আমি রুমেই লেপটপে গান শুনি।
কিছুক্ষন পর আমি লক্ষ করলাম আমার ফ্রেন্ড কার সাথে যেন কথা বলছে ভাবলাম ফোনে। কিন্তু একটু পর দেখলাম ওর ফোন বেড এ।
একটু চমকে উঠলাম। তারপর ও আসলে জিজ্ঞেস করি কার সাথে কথা বল্লে এতক্ষন, ও বল্লো এখানে তুই আর আমি ছাড়া আর কে আছে মজা লস?
আমি বল্লাম আমি তো এখানে লেপটপে গান শুনি,
আর ও বলছে তুই আমার সাথে দাড়িয়ে ছিলি এতক্ষন আমি তোর নতুন ফেসওয়াস দেখে তা ব্যবহার করছি আর তোর সাথে কথা বললাম। আমি ওকে আস্সস্ত করলাম আমি ওইখানে ছিলাম না।
আর ওর জবাব ছিল ভাই সত্যি আমার সাথেই তুই দাড়িয়ে ছিলি।...................

আমি ওকে আস্বস্ত করলাম ওইখানে আমি ছিলাম না।
আর ওর জবাব ভাই সত্যি আমার সাথেই তুই দাড়িয়ে ছিলি।
আমি যা বুঝার বুঝতে পারি,তারপর ওকে সব খুলে বলি। ও বল্লো তুই এই বাসায় থাকছিস কিভাবে আর আমি লক্ষ করছি তোর চেহারা ও খারাপ হয়ে গেছে।

দুঃখিত আগেই বলা দরকার ছিল,সেটা হলো আমার বোনের বাসা আমার বাসা থেকে ১কিলো দূরত্বে তিনি তার দুই মেয়ে নিয়ে ঢাকায় থাকেন সাথে ছোট ভাই এস.এস.সি পরিক্ষার্থী। আর ভগ্নিপতি প্রবাসী। তো তাদের কে যে বলবো সেই অবস্থাটাও নেই তিনটা মেয়ে মানুষ একা আর ছোট ভাইকে যে বলবো সাথে থাকতে তাও সম্ভব না তাই তাদের বলিনি।
আমার ফ্রেন্ড বলছে তার সাথে এমনটা হবে ভাবিনি এগুলা বিশ্বাস করতাম না।ভাই তুই তোর মারে জানা।
তারপর মা কে সব খুলে বলি। আমার মা আবার এসবে বিশ্বাস রাখে। কারন আমাদের পরিবারে কম বেশি সবাই কিছু না কিছু উপলব্ধি করেছে তাদের জীবনে।

তো মা বল্লো কয়েকদিন বাড়ি থেকে ঘুরে যা।
একে তো নতুন চাকুরি তার উপর প্রবেশন সময় ৩মাস,ছুটি তো এতটা সোজা না। এরপর ২ দিন আমার ফ্রেন্ড ছিল আমার সাথে পরের কয়েকটা দিন আমি লাইট জালিয়ে ফোনে তিলাওয়াত দিয়ে ঘুমানের চেষ্টা করতাম। কিন্তু ছোট বেলা থেকেই অন্ধকারে ঘুমানোর অভ্যাস তাই লাইটে ঘুম হচ্ছিল না।রীতিমত ঘুমের অভাবে খুব খারাপ অবস্থা আমার।
একদিন এমন ও করেছি ফোনটা রুমে ভিডিও অন করে চার্জিং দিয়ে আপুর বাসায় গিয়ে ঘুমাই।
আপুর বাসায় থাকাটা সম্ভম না কিছু কারনে।
তো ওই একদিনই থেকে পরের দিন সকালে ভিডিও চেক করি।
বোকা হয়ে গেলাম,স্ক্রিন লক এর জন্য ১৫-২০ সেকেন্ড হয়ে লক হয়ে যায়।
মূলত আমার বাসা টা নিচতলায়। চারিদিকে বিল্ডিং তো সূর্যের আলো মোটামুটি রিফ্লেকশন দেয় তাই একটু আলো পরে রুমে।বেশি না।

আর আমার রুমের দুইটা জানালা অনেক বড়,আগের দিনের জানালা গুলো পুরোনো গ্রিলের। জানালা দিয়ে বাহিরে তাকালেই দেখা যেত মানুষ উপরের ফ্ল্যাট থেকে ময়লা ফেলে মানে খুব বাজে অবস্থা। তাই দিনের বেলায়ও জানালা বন্ধ রাখতাম সব।
এরপর অফিসে আমার ম্যানেজার কে অনুরোধ করি আমাকে কিছু দিনের ছুটির ব্যবস্থা করে দেওয়া যায় কিনা বল্লাম অসুস্থ। সে জানাবে বল্লো।
এমন করে আর ১ দিন পার করি মুভি,গান দেখে কোনরকম। ফটো টা লক্ষ্য করলে দেখবেন জানালার সাদা পর্দা। আসলে এটা একটা ফাউন্সান স্কারটিং। নতুন বাসা দেখে ওইটা কেটে কোনরকম জানালা ঢেকে দেই।
এখন ওই সাদা পরদা ফ্যানের বাতাসে উড়তে দেখলেও ভয়লাগে।
তো যাই হোক পরেদিন অফিসে যাওয়ার পর ছুটি মন্জুর হয়েছে ৩দিনের জেনেই কোন রকম ডিউটি শেষ করে বাসায় এসে ব্যাগপ্যাক করে রউনা দেই বাড়ির দিকে। পারিনা আজিই বাড়িটা ছেড়ে দেই কিন্তু দুই মাসের এডভান্স করা দুই মাস আগে জানাতে হবে।
আমার বাসা টা আপুর মাধ্যমেই পাওয়া তাই চাবি একটা তার কাছেও ছিল।
এরপর বাড়িতে ফিরি তাও ভালো ছিলাম না। যেদিন গেলাম তার পরের দিনই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে বসি মাত্র, তখনি বিদ্যুৎ চমকানোর মত আমার শরীরে একটা ঝাকি দিয়ে ওঠে। মনে হয় কারেন্ট এর শক লেগেছে।
একটু পর পিঠ থেকে কোমড় পর্যন্ত অনেক গরম হয়ে যায় অনেক,,, লিখে বুঝাতে পারবো না। এরপর শুরু হলো ব্যাথা মানে এটা কেমন ব্যাথা পুরো কোমড় থেকে পিঠ মনে হচ্ছে কেউ আমার পিঠ আর কোমড় ছিড়ে দিয়েছে। ঘার কোমর কিচ্ছু নাড়াতে পারি না।
উঠতে বসতে অনেক কষ্ট। বিস্বাস করেন ওই যে ব্যাথা আমি আজও মনে করলে আৎকে উঠি। এই ব্যাথা শেষই হচ্ছে না মা,বড় বোন সবাই মালিশ করছে গরম ছ্যাক দিচ্ছে কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না। ব্যাথা টা এত মারাত্মক যে আমি ভেবেছিলাম আমি মনে হয় আর হাঠতে পারবো না। ছুটির আর একদিন। ঠিক না হলে খুব খারাপ হবে।
তো যাই হোক কোন রকম পরের দিন কিছুটা ভালো অনুভব করি কিন্তু ব্যাথা বিদ্যামান। আজই শেষ দিন আজ রউনা দিলে কাল অফিস দুপর ২টায়। তার মানে আজ বিকাল বা সন্ধার টিকেট কাটতে হবে।
কিছুই করার ছিল না একবার ছুটি নিয়ে আবার চাওয়া সম্ভবই না।
তারপর সন্ধার টিকেট কাটি। আপুকে কল দিয়ে জানিয়ে দেই টিকেট কাটার কথা,আর ছোট ভাইকে আমার বাসাটা একটু পরিষ্কার করতে বলি এবং আসতে দেরি হবে ওর দারোয়ান কে উঠাতে হবে এসব ভেবেই ওকে বলি আজকের দিনটা থাকতে আমার সাথে আমার অপেক্ষা করতে, না ঘুমাতে।
এরপর আম্মু কোন হুজুর থেকে এক বোতল পানি,কিছু কিতাব,আর কিছু জিনিস পলিথিনে মোড়ানো দেয় আমাকে আর বলে এগুলা অনেক পবিত্র জিনিস আরবি বই আছে তুমি যাত্রাপথে এই ব্যাগ তোমার সাথেই রাখবা এবং পাক থাকবা।

পরবর্তি পর্ব কাল

Address

Khagrachhari

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Paranormal Stories BD posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share