22/07/2025
আমি দাম চাওয়ার গল্প দেখি না। আমি দেখি, মানুষ হয়ে ওঠার গল্প।
কে পানির দাম বেশি চেয়েছে, কে বাড়তি ভাড়া নিয়েছে— এসব আমার চোখে পড়ে না।
আমার চোখে পড়ে, দুর্ঘটনার সাথে সাথেই এক কাপড়ে দৌড়ে আসা তরুণদের, যারা আহতদের বাঁচাতে আশেপাশের ক্লিনিকে ছুটে যায়।
আমি দেখি, মুহূর্তের মধ্যে রক্তদাতার তালিকা বানিয়ে ফেলা ছেলেমেয়েদের।
আমি দেখি, দেশের নানা প্রান্তে থাকা অচেনা মানুষদের মধ্যে ছড়িয়ে থাকা দুশ্চিন্তা আর দায়িত্ববোধ।
আমি দেখি, নিজের বাইক বা গাড়ি নিয়ে জীবন বাঁচাতে পথে নামা ‘বেকার’ যুবকদের।
আমি দেখি, ঘটনাস্থলে ছুটে আসা ছাত্রদের, যাদের চোখে ভয় নেই— আছে শুধু সহানুভূতি আর দায়িত্ব।
আমরা যারা বাইরে থেকে দেখি, তাদের একটাই অভ্যাস—
“এই ছেলেপুলেরা তো সারাদিন রাস্তা ঘুরে বেড়ায়, কাজকাম নেই, ফাঁকিবাজ, ভবঘুরে।”
আমরা হাসাহাসি করি, বিদ্রূপ করি।
কিন্তু বিপদের সময় যখন চারপাশ থমকে যায়, তখন একমাত্র তারাই ঝাঁপিয়ে পড়ে।
যে ছেলেটা নিজের জীবনের ভার নিতে পারেনি, তাকেই দেখি—
একটা অচেনা লাশের দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিতে।
ওদের দেখে আমি গর্বে ভরে উঠি।
ওদের দেখে আমি আশাবাদী হই।
ওদের দেখে আমি বুঝি— এই জাতি এখনো মরেনি।
তাই বলছি, কে কোথায় দাম বাড়িয়েছে— এইসব শেয়ার না করে বরং ছড়িয়ে দিন এই ভালোবাসার গল্পগুলো।
প্রশংসা করুন, উৎসাহ দিন।
কারণ ইতিহাস বলে, বড় বড় দুর্যোগে যারা সত্যিকার অর্থে পাশে দাঁড়ায়— তারা সরকার নয়,
তারাই এই দেশের সাধারণ ছাত্র-জনতা।
আমরা এখনো ভালো আছি।
আমরা এখনো মানুষ হতে পারি।
আর সেই মানুষগুলোর বেশিরভাগই ছাত্র, তরুণ, আর "বেকার" বলে অবহেলা করা সেই ছেলেগুলো।