21/04/2025
আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের একটি হচ্ছে স্বাদ( Taste or Smatch or Gustation)। এটি এমন একটি ক্ষমতা যার মাধ্যমে আমরা খাদ্য, নির্দিষ্ট খনিজ(Certain Minerals) এবং বিষ ইত্যাদি পদার্থ চিনতে বা সনাক্ত করতে পারি।
আমরা জিহ্বা উপরের পৃষ্ঠের উপর অবস্থিত Taste Buds বা Gustatory Calyculi মাধ্যমে স্বাদ পেয়ে থাকি।
আমরা যেসব স্বাদ পেয়ে থাকি তারা মূলত পাঁচ ধরনের হয়ে থাকে। যথাঃ মিষ্টি(Sweet), টক(Sour), তিতা( Bitterness), নোনা(Salty) এবং উমামি(Umami)। আর ঝাল(Spiciness or Piquance,) মোটেই স্বাদ নয়, এটি হচ্ছে মুখের ভিতরের ত্বক ও শ্লৈষ্মিক ঝিল্লির(Mucus Membrane) একধরণের রাসায়নিক অনুভূতি। অনেকেই যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করছেন স্বাদ ছয় ধরনের এবং চর্বিজাতীয় পদার্থ এর স্বাদ হচ্ছে ষষ্ঠ।
সাম্প্রতিক সময়ে পশ্চিমা, চাইনিজ খাবারদাবারের তথা রন্ধনপ্রণালীর (Cuisine) মাধ্যমে Umami নামক স্বাদটি পরিচিতি পেয়েছে। MSG (Mono Sodium Glutamate) একটি শক্তিশালী Umami স্বাদ উৎপাদক।
জাপানি রসায়নবিদ, Kikunae Ikeda লক্ষ করেন যে জাপানি জুস Katsuobushi এবং Kombu এর স্বাদ এতটাই অদ্ভুত যে তা মিষ্টি, নোনা, টক বা তিতা হিসাবে ধরা যায় না। ১৯০৮1908 সালে, Ikeda সমুদ্র - শৈবাল Laminaria japonica, kombu থেকে গ্লুটামিক অ্যাসিড নিষ্কাশিত করে Recrystallization এর মাধ্যমে পরিশুদ্ধ করেন এবং এর নাম দেন ‘Umami’।
আমরা মুখের(mouth) মাধ্যমে একটা খাবারের ফ্লেভার বুঝতে পারি, ঘ্রাণ বুঝতে পারি নাকের Olfactory Epithelium এর মাধ্যমে, খাবারে গঠন অর্থাৎ নরম না শক্ত নাকি তরল বুঝতে পারি Mechanoreceptors, Muscle Nerves ইত্যাদির মাধ্যমে। খাবারের তাপ Thermo Receptors এর মাধ্যমে শনাক্ত করতে পারি।
অ্যারিসটট্ল সর্বপ্রথম স্বাদের একটি তালিকা তৈরি করেন এবং বলেন যে মৌলিক স্বাদ দুইটি মিষ্টি ও তিতা। প্রাচীন ভারতীয চিকিত্সা বিজ্ঞান আয়ূর্বেধ অনুযায়ী মৌলিক স্বাদ হচ্ছে কষাটে(Astringent), তিতা, কটুগন্ধ বা সূচিমুখ(Pungent), নোনা, টক এবং মিষ্টি।
কোনো বস্তুর স্বাদ কুইনাইন, লবনের দ্রবন, হাইড্রোক্লোরিক এসিড, সুক্রোজ এর সাথে তুলনা করে যথাক্রমে তিতা, নোনা, টক, মিষ্টি যাচাই করা হয়। G protein-coupled receptors তিতা, মিষ্টি ও উমামি এই তিনটি স্বাদ গ্রহণ করে।
তাপমাত্রা খাবারের স্বাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। ভালোভাবে গরম করা না হলে বা ঠান্ডা করা না হলে অনেক খাবার আর স্বাদ লাগে না। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে আমরা ঠান্ডা অবস্থায় সোডা, জুস ইত্যাদি পানীয় খেতে পছন্দ করি আবার সুপ, চা, কফি, পিঠা ইত্যাদি খাবার গরমাগরম খেতে পছন্দ করি।