08/02/2025
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা নিয়ে রোগীর স্বজনদের ক্ষোভ!
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে রোগীর স্বজনদের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, রোগী ভর্তির পর চিকিৎসার সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে দীর্ঘসূত্রিতা, ডাক্তারদের সাথে রোগীর স্বজনদের যোগাযোগের সীমাবদ্ধতা, এবং অতিরিক্ত রিপোর্ট করার চাপের কারণে রোগীর পরিবাররা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন।
এক মাস ধরে ভর্তি, চিকিৎসার অগ্রগতি নেই!
এক রোগীর স্বজন জানান, তাঁর মা ২৫ নম্বর সার্জারি ওয়ার্ডে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে ভর্তি আছেন। রোগীর ব্রেস্ট ইউএসজি (USG of Breast) করার পর গ্রেড ২ স্তরের ক্যান্সার ধরা পড়ে। এরপরও এখন পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত চিকিৎসা বা সার্জারির সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি। প্রতিবার রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর নতুন করে আরও পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
"আমি এখন পর্যন্ত ৬০ হাজার টাকার রিপোর্ট করিয়েছি, কিন্তু চিকিৎসকরা শুধু বলছেন আরও রিপোর্ট দরকার। বড় ডাক্তারদের সাথে কথা বলার সুযোগও দেওয়া হয় না। জুনিয়র ডাক্তার এলে আমাদের বের করে দেওয়া হয়, আর রোগীরা তো সব কিছু খুলে বলতে পারে না।" – এমনটাই জানান রোগীর সন্তান।
ডাক্তারদের আচরণ ও রোগী সেবার অভাব
অভিযোগে আরও বলা হয়েছে, হাসপাতালে ভর্তি থাকার প্রথম দিকে কিছুটা যত্ন দেখানো হলেও কিছুদিন পর থেকে অবহেলা ও হয়রানি শুরু হয়। রোগী এবং স্বজনদের কোনো মতামত বা উদ্বেগ শুনতে চায় না কর্তব্যরত চিকিৎসকরা।
"আমাদের প্রশ্ন করলে তারা শুধু বলে রিপোর্ট আসুক, তারপর বলা হবে। এভাবে দিনের পর দিন চলে যাচ্ছে। কিন্তু রোগীর অবস্থা অপরিবর্তিত থেকে যাচ্ছে।"
প্রাইভেট হাসপাতালে যাওয়ার দ্বিধা
স্বজনরা জানিয়েছেন, যদি দ্রুত কোনো সিদ্ধান্ত না আসে, তাহলে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার কথা ভাবছেন। তবে অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে সেটি করা কঠিন।
"প্রাইভেট হাসপাতালে গেলে খরচ দ্বিগুণ হবে। কিন্তু চট্টগ্রাম মেডিকেলে থেকে এভাবে সময় নষ্ট করে কোনো লাভ দেখছি না।"
চিকিৎসা সেবার মান নিয়ে প্রশাসনের ভূমিকা কোথায়?
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বৃহত্তম সরকারি হাসপাতাল হওয়া সত্ত্বেও এ ধরনের অভিযোগ নতুন নয়। রোগীর স্বজনদের দাবি, হাসপাতাল প্রশাসনকে দ্রুত এ ধরনের সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসা উচিত।