09/09/2024
আমি একটা মাথা মোটাকেও বোঝাইতে পারিলাম না যে পড়া শোনার দরকার নাই।আগে মানুষ হহহহহহহহহহহ
অন্য দেশের একজন লোকের লেখা কোন গান কেন আমাদের জাতীয় সঙ্গীত হবে? অনেকের যুক্তি এটা। আমাদের কাজী নজরুল ইসলাম থাকতে রবীন্দ্রনাথের গান কেন এদেশের জাতীয় সঙ্গীত হবে? এই যুক্তিতে বিশ্বাসী এমন একজনের সাথে কথা হচ্ছিলো। তাকে বললাম, “ভাই, কবি কাজী নজরুল ইসলাম ও তো অন্য দেশের লোক”। খুব অবাক হলেন তিনি। তিনি জানতেনই না, কাজী নজরুল ইসলাম এর জন্ম ভারতের বর্ধমান জেলায়। তিনি ভেবেছিলেন তার জন্মস্থান চুরুলিয়া বোধহয় বাংলাদেশেরই কোনো একটা জায়গা হবে। তবুও তিনি নারাজ। এবারের যুক্তি, একজন বিধর্মীর লেখা গান কেন মুসলিম প্রধান দেশের জাতীয় সঙ্গীত হবে? তাই মুসলমান কবি কাজী নজরুল ইসলামের লেখা কোনো গান কেই জাতীয় সঙ্গীত করার জোর দাবি তার। অথচ ওই দিকে কবি কাজী নজরুল ইসলাম অনেক আগেই খোদার আসন আরশ সব ছেদ করে ফাতাফাতা করে ফেলেছেন সেটা তার জানাই নাই। তাকে কাজী নজরুল ইসলাম এর বিদ্রোহী কবিতার ৫ লাইন পরে শুনলাম।
“চন্দ্র সূর্য গ্রহ তারা ছাড়ি
ভূলোক দ্যুলোক গোলক ভেদিয়া
খোদার আসন আরশ ছেদিয়া,
উঠিয়াছি চির-বিস্ময় আমি বিশ্ববিধাতৃর!
মম ললাটে রুদ্র ভগবান জ্বলে রাজ-রাজটীকা দীপ্ত জয়শ্রীর!”
চুপ করে রইলেন!
উনার চুপচাপ থাকা দেখে জিজ্ঞেস করলাম, ভাই আপনি কি জানেন, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিয়ে করেছিলেন একজন বিধর্মী কে? যার নাম আশালতা সেনগুপ্ত (প্রমীলা দেবী), এবং হিন্দু-মুসলিম ভেদাভেদ দূর করার জন্য তিনি তার নিজের ছেলের নাম রেখেছিলেন কৃষ্ণ মুহম্মদ?
এবারেও চুপ করে রইলেন এবং তার চোখেমুখে হতাশা খুব স্পষ্ট।
কবিদের জাতপাত বিচার করতে হয় না, দেশের গন্ডি পেরিয়ে কবিরা সুদূরপ্রসারী প্রভাব বিস্তার করেন। ধর্ম দিয়ে কবিদের আবদ্ধ করা যায় না। কবিরা কোনো ধর্ম বিশেষের জন্য লেখেন না, তারা মানুষের জন্য লেখেন।
আগে হিন্দু মুসলমান হওয়ার চেয়ে মানুষ হওয়াটা বেশি জরুরি ভাই।
বঙ্গভঙ্গের প্রেক্ষাপটে ১৯০৫ সালে লেখা আমাদের জাতীয় সঙ্গীত। এই দেশটাকে ভাঙ্গতে প্রতিদিন কেউ না কেউ চক্রান্ত করছেই। আমার এই সোনার বাংলাকে আজকে ভালোবাসবেন না তো আর কবে ভালোবাসবেন? চলেন দৃপ্ত কণ্ঠে একবার নিজেকে নিজে বলি,
“আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”🇧🇩🇧🇩🇧🇩
~সংগৃহীত