Pall Kantha Roy

Pall Kantha Roy তিক্ত পল

বাংলার সুন্দরবন অঞ্চলে এমন এক দেবীর পূজা হয়, যার নাম শুনে শাস্ত্রীয় দেবী মনে হলেও আসলে তিনি নন। নারায়ণী দেবীর নাম শুনে ন...
05/05/2025

বাংলার সুন্দরবন অঞ্চলে এমন এক দেবীর পূজা হয়, যার নাম শুনে শাস্ত্রীয় দেবী মনে হলেও আসলে তিনি নন। নারায়ণী দেবীর নাম শুনে নারায়ণ কিংবা বিষ্ণুর স্ত্রী বলে মনে হলেও, আদতে তাঁর সঙ্গে বিষ্ণু কিংবা শাস্ত্রীয় কোনো দেবদেবীর কোনো সম্পর্কই নেই। ইনি অত্যন্ত প্রাচীন এবং প্রসিদ্ধ দেবী হলেও, বর্তমানে তাঁর পূজা কমে এসেছে অনেকাংশে। লৌকিক এই দেবীর পূজা হয় সুন্দরবন, বাংলাদেশের খুলনা অঞ্চল এবং পশ্চিমবঙ্গের চব্বিশ পরগণা অঞ্চলে। তবে এই অঞ্চলের মানুষের কাছে মর্যাদা ও জনপ্রিয়তার দিক থেকে দক্ষিণরায়ের পরই তাঁর স্থান। ধারণা করা হয়, এই অঞ্চলে বনবিবির পূজা প্রচলিত হওয়ার আগেই নারায়ণীর পূজা প্রচলিত ছিলো। পরে বনবিবির জনপ্রিয়তার আড়ালে ঢাকা পড়ে যান দেবী নারায়ণী।

বনবিবির 'জহুরা নামায়' বনবিবি ও নারায়ণীর জঙ্গ (যুদ্ধ) নামে একটি অধ্যায় আছে। ওই অধ্যায়ে নারায়ণী দেবী আর বনবিবির পূজার উৎপত্তি সম্পর্কে কিছুটা ধারণা পাওয়া যায়-

“খোদাতালার হুকুমে মক্কা থেকে বনবিবি ভাটী দেশে অর্থাৎ সুন্দরবনে এলেন অধিকার করতে। কিন্তু ঐ সময় সুন্দরবনের রাজা ছিলেন দক্ষিণ রায়। তিনি বনবিবির আগমনের উদ্দেশ্য জানতে পেয়ে তাঁর বিরুদ্ধে যুদ্ধযাত্রায় উদ্যোগী হলে রাজমাতা নারায়ণী বাধা দিয়ে বললেন:

‘তুমি থাক আমি যাই, হারি জিতি ক্ষতি নাই,
আওরতে আওরতে লড়া ভাল।
নারায়ণী ইহা বলে, দেও-দানা লিয়ে চলে,
সেনা শিষ্য যত তার ছিল॥
সারাদিন জঙ্গ চলে, কেহ কারে নাহি
বনবিবি বিপাক দেখিয়া।
মা বরকত বলে ডাকে, উদ্ধারিয়া লেহ মোকে
নারায়ণী ডালিল মারিয়া॥'

বনবিবি মা বরকতকে ডাকতেই নারায়ণী ধরাশায়ী হলেন। তখন বনবিবি -

'দাবাইয়া বৈসে বুকে,চুলে ধরে ছের ঠোকে,
খুন্তি ফের দিতে চায় গলে।
নারায়ণী দেখে ডরে, বিবীর দুই পাও ধরে,
কহে বাত সই সই বলে॥'

'সই' বলাতে তুষ্ট হয়ে বনবিবি শুধু জঙ্গ থামালেন না, সুন্দরবনের ভাগ দিতেও রাজি হলেন।

'বোনবিবি বলে সই শুন দেল দিয়া।
সকলে আঠার ভাটি লইব বাটিয়া॥'

অর্থাৎ, এই কাব্যে বর্ণিত যুদ্ধের পরে, নারায়ণী দেবী আর বনবিবির মধ্যে নিজেদের মাঝে আপোস করে তাদের পূজার এলাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিতে দেখা যায়। এবং এখনো শুধুমাত্র ওই অঞ্চলেই এই দেবীদের পূজার প্রাধান্য দেখা যায়। এখানে চমকপ্রদ একটি বিষয় হলো বনবিবি ও নারায়ণীর মাঝে ‘সই’ বলে সম্পর্ক স্থাপন। নৃবিজ্ঞানের ভাষায় এটি এক ধরণের “ফিকটিভ কিনশিপ”। অর্থাৎ মুখে বলে সম্পর্ক স্থাপন। আর এই চর্চাটি বিশেষত সুন্দরবন অঞ্চলে দেখা যায়, যার সাথে জড়িয়ে আছে ইতিহাস। মোঘল ও ইংরেজ আমলে বাংলা ও পার্শ্ববর্তী রাজ্য গুলো থেকে বিভিন্ন লোকজনকে এনে এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করতে দেয়া হয়। পরিচিত স্থান, পরিবার, বন্ধু ছেড়ে এসে সম্পূর্ণ নতুন এই পরিবেশে বসতি স্থাপন করা মানুষ গুলো অনেকটা নিজেদের বন্ধন দৃঢ় করতেই এই ধরণের চর্চার উৎপত্তি ঘটায়, যার ছাপ আমরা খুঁজে পাই বনবিবি ও নারায়ণীর গল্পেও।

যাই হোক। ধারণা করা যায়, নারায়ণী পূজার উৎপত্তি হয়েছিল দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার 'খাড়ি' নামে এক জায়গায় । এখানে এই দেবীর সবচেয়ে প্রাচীন ও বিখ্যাত মন্দির এখনো আছে। নারায়ণীর বিশেষ পূজা হয় পৌষ সংক্রান্তি আর মাঘের শুরুতে, এ সময় দেবীর ঘট পূজা হতে দেখা যায়। ঘট পূজার সময় দুটি ঘট একসাথে থাকে, একটি ঘট দক্ষিণরায়ের ও আরেকটি নারায়ণী দেবীর। এ পূজায় মদ ও মাংস নৈবেদ্য দিতেও দেখা যায়। বন অধ্যুষিত অঞ্চলে অনেক সময় রাতভর মশাল জ্বালিয়ে ঢাকঢোল বাজিয়ে পূজা হয়।

এককালে নারায়ণী দেবী পূজার যে বিশেষ প্রাধান্য ছিল সেটা বোঝা যায়। এককালে দেবীর পূজায় বলি সহ অন্যান্য লৌকিক রীতি প্রচলিত ছিলো, এটাও ধারণা করা হয়। তবে সেন রাজত্বের সময় বিষ্ণুধর্মাবলম্বী রাজাদের প্রভাবে দেবীর পূজায় নিরামিষাশী বৈশিষ্ট্য আবির্ভূত হয়। ‘ডাকার্ণব’ গ্রন্থে তান্ত্রিক দেবীদের তালিকায় নারায়ণীর নাম পাওয়া যায়, যদিও তান্ত্রিক পূজার ধারা কিংবা আচার এই দেবীর পূজায় খুব একটা দেখা যায় না।

— জাকিয়া তাবাসসুম শশী

তথ্যসূত্রঃ
১। গোপেন্দ্রকৃষ্ণ বসু, “বাংলার লৌকিক দেবতা”, দে’জ পাবলিশিং (১৯৬৬)
২। “বাংলার প্রাচীনতম দেবী নারায়ণী”, দৃষ্টিভঙ্গি (মে ২৭, ২০২৩)

মনের অসুরকে বধ করতে হবে! চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব ১৪৩১, ১৩ই এপ্রিল ২০২৫ স্থান: লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ।
16/04/2025

মনের অসুরকে বধ করতে হবে!
চৈত্র সংক্রান্তি উৎসব ১৪৩১, ১৩ই এপ্রিল ২০২৫
স্থান: লৌহজং, মুন্সীগঞ্জ।

28/05/2024
01/04/2024

🔺সুবাদার ইসলাম খানের ঢাকা হাইকোর্ট মাজার থেকে ফতেপুর সিক্রি যাত্রা ...............................................................................
সম্রাট আকবর যা পারিনি টোডরমল ও মানসিংহকে দিয়ে,
বাদশাহ জাহাঙ্গীর তা করিয়ে দেখিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে রয়েছে প্রেমিক, মদ্যপ,সবচাইতে ভাবুক, সাম্রাজ্য বিস্তারে যার কোন অবদান নেই, ইত্যাদি হাজার অপবাদ। অনেক ঐতিহাসিক জাহাঙ্গীরকে স্ত্রী নূরজাহান দিয়ে নিয়ন্ত্রিত সম্রাটের তকমা এটে দেন। সেই বাদশাহ জাহাঙ্গীরই ভারতের সবচাইতে বেশি অর্থ রাজস্ব প্রদানকারী সুবা বাংলাকে মোঘল সাম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত করেন। কার মাধ্যমে এই বিজয় হয়? সে কে??

আমরা কম বেশি সবাই খাজা মঈনউদ্দিন চিশতি (রহ.) ও সেলিম চিশতির নাম শুনেছি। আমাদের অনেকেই ভারতের আজমীর শরীফ দর্শণে যাই। কিন্তু কয়জন জানি তারই বংশধরের হাত ধরে জাহাঙ্গীরনগর নাম নিয়ে রাজধানী করা হল ঢাকাকে!! আরো পরিচয় আছে তার। তিনি ছিলেন মায়ের দিক দিয়ে সেলিম চিশতির নাতি ও আকবরনামা রচয়িতা আবুল ফজলের আত্বীয়। এত ভূমিকা যার জন্যে- তিনি হলেন বাংলার মুঘল সুবাদার ইসলাম খান। তিনি সুবাদার হয়ে ১৬১০ সালের জুন-জুলাই মাসে ঢাকা আসেন। যদিও দায়িত্ব পান ১৬০৮ সালে। এ দুই বছর তিনি নিজেকে প্রস্তুত করেন বাংলা বিজয়ের জন্য।

এই প্রবন্ধে আমরা খুঁজে বের করবো- বাংলার মুঘল সুবাদার ইসলাম খানের কবর হাইকোর্ট মাজার থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে ফতেপুর সিক্রিতে নানা সেলিম চিশতির কবরের পাশে সমাহিত করা হল কি করে এবং কেন? আরো প্রশ্ন জাগে, তিনি কিভাবে মারা গেলেন? তারপর, একজন সুফি-দরবেশ হয়ে তিনি কিভাবে বাংলা জয় করলেন? এখানে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হল।

পরিচয়:
ইসলাম খান চিশতি ছিলেন সম্রাট জাহাঙ্গীরের ছোটবেলার খেলার সাথী। তার প্রকৃত নাম শেখ আলাউদ্দীন চিশতি। তার বাবার নাম শেখ বদরউদ্দিন চিশতি। তার নানা ভারতের ফতেহপুর সিক্রির বিখ্যাত দরবেশ শেখ সেলিম চিশতি।
সমগ্র ভারতবর্ষ আকবরের দখলে কিন্তু মনে তার কোন শান্তি নেই। তাঁর প্রথম দুটি সন্তান হাসান ও হুসেন মারা যাওয়ার পর তিনি তাঁর উত্তরাধিকারীশূন্যতা দেখে চিন্তায় বিমর্ষ হয়ে পড়েন। সকল সভাসদ তাকে শেখ সেলিম চিশতি দরবেশের দরগায় প্রার্থনা করতে বললে; তিনি তাই করেন। দরবেশ শেখ সেলিম আকবরকে শুধু ১টি সন্তানেরই আশ্বাশ দেননি, ৩টি সন্তানের আশীর্বাদ করেন।

তারপর মরিয়ম-উজ-জামানি সন্তান সম্ভবা হন এবং ১৫৬৯ সালে জন্ম নেয় পুত্র জাহাঙ্গীর, যার নাম রাখেন দরবেশের নামানুসারে ‘শেখ মুহাম্মদ সেলিম’। আদর করে আকবর ডাকতেন ‘শেখু বাবা’ বলে। রাজ্যাভিষেক হলে তিনি ‘জাহাঙ্গীর’ উপাধি ধারন করেন। সেই থেকেই মুঘল পরিবারের সাথে চিশতি পরিবারের একটা ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাছাড়া ভারত উপমহাদেশে খাজা মঈনউদ্দিন চিশতি (রহ.) এর মাধ্যমে গড়ে ওঠা চিশতিয়া সুফিধারা বিখ্যাত। ইসলাম খান চিশতি ছিলেন সেই পরিবারের ছেলে। তার সামরিক প্রশিক্ষণ ছিল না কিন্তু তিনি মুঘল ঐতিহ্যের আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পারিবারিক সূত্রে পেয়েছিলেন । যা তাকে বিদ্রোহী বাংলা জয় করতে সাহস যুগিয়েছিল । ১৬০৫ সালে সম্রাট জাহাঙ্গীর সিংহাসনে বসার পর, সম্রাট তাকে দু'হাজারী মনসবদারীতে উন্নীত করে “ইসলাম খাঁ” উপাধি দেন। তাকে জাহাঙ্গীর প্রথমে বিহার প্রদেশের সুবাদারের দায়িত্ব দেন, তারপর বাংলার সুবাদারিতে পাঠান এবং পাঁচ বছরেরও বেশি সময় তিনি বাংলার মুঘল সুবাদার ছিলেন।

বাংলা বিজয়:
সম্রাট আকবর তাঁর বারোজন দক্ষ সামরিক কর্মকর্তাকে বাংলা জয় করার জন্য অনেকবার অভিযানে পাঠালেও সামন্ত বিদ্রোহের কারণে তা সফল হয়নি। সেসময় স্থানীয় রাজা, বারো ভূঁইয়া, জমিদার ও আফগান নেতারা বাংলাকে নিজেদের মধ্যে ভাগ করে স্বাধীনভাবে শাসন করতেন। কাজেই পিতা আকবরের ইচ্ছাপূরণের দায়িত্বটা পুত্র জাহাঙ্গীরের ওপর বর্তায় এবং সানন্দে তিনি তা গ্রহণ করেন ও তিনি বাংলা বিজয়ের লক্ষ্যে ইসলাম খানকে পাঠান। ইসলাম খানের বয়স তখন ৩৮ বছর। প্রথমেই সরাসরি যুদ্ধ না করে, তিনি বাংলার রাজনীতি ও ভৌগলিক পরিবেশ গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। তারপর অভিযান পরিচালনার পরিকল্পনা করেন। তিনি বাংলায় মুঘল শাসন প্রতিষ্ঠার প্রধান বাঁধার কারণ চিহ্নিত করেন। সেই মোতাবেক বারো ভূঁইয়ার ভাটি এবং খাঁজা উসমানের অধীনস্থ আফগানদের সরিয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেন। তিনি ছোট-বড় নদী ও খালে পরিপূর্ণ ভাটি অঞ্চলে যুদ্ধের জন্য শক্তিশালী নৌ-বাহিনী গঠিত করেন। যা ছিল তার সাফল্যের মূল কারণ। এছাড়া, পূর্ব বাংলা থেকে রাজধানী রাজমহলের দূরত্ব ছিল অনেক। তাই কৌশলগত দিক দিয়ে তিনি রাজধানী ঢাকায় স্থানান্তর করেন এবং বাদশাহ জাহাঙ্গীরের নামানুসারে ‘জাহাঙ্গীরনগর’ নাম দেন। আধুনিক ঢাকা শহরের গোড়াপত্তন ঘটে।

ঢাকা অবস্থিত ছিল ভাটি অঞ্চলের কেন্দ্রে এবং নদী দিয়ে যোগাযোগের জন্য সুবিধাজনক স্থান। ধারণা করা হয় এই সময়ে তিনি খিজিরপুর দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। বিখ্যাত পূর্বসূরিরা যেখানে ব্যর্থ হয়েছিল সেখানে চট্টগ্রাম ছাড়া সমগ্র বাংলা জয় করে মুঘলদের নিয়ন্ত্রণে আনার সাফল্যে সুবাদার ইসলাম খান বিরাট খ্যাতি অর্জন করেন। তার সামরিক এবং নৌবাহিনীকে পুনগঠিত করে প্রথমে বারো ভূঁইয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান চালান। বারো ভূঁইয়াদের মিত্র যশোরের শক্তিশালী রাজা প্রতাপাদিত্য এবং ভুসনার রাজা সতরঞ্জিতকে দমন করেন। ১৬১১ সালের শেষের দিকে বারো ভূঁইয়াদের প্রধান মুসা খানও আত্মসমর্পন করেন। রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে খাজা উসমানের মৃত্যুতে মুঘল সৈন্যরা আরো সুবিধা অর্জন করে। বাংলা বিজয়ের পর মুঘল বাহিনী অগ্রসর হয়ে সিলেটের বায়জিদ কররানীর অধীনস্থ আফগান সৈন্যদের পরাজিত করে এবং তারপর কুচবিহার, কামরূপ এবং কাছাড় রাজ্য জয় করেন।

অন্যান্য কৃতিত্ব:
ঢাকার ইসলামপুর তার নামেই। পারসিয়ান শব্দ ‘পুর’ অর্থ যেখানে পূর্বপুরুষরা বাস করত। রমনার একাংশ একসময় তার বংশের নামে মহল্লা চিশতীয়া বলে পরিচিত ছিল। সৈয়দ আওলাদ হোসেন লেনের মসজিদটি ইসলাম খান নির্মাণ করেন। এখন সেটি ইসলাম খানের মসজিদ নামেই পরিচিত। ঢাকার বর্তমান কেন্দ্রীয় কারাগারে একটি দুর্গ ছিল যা ইসলাম খান পুননির্মাণ করেছিলেন এবং টাকশাল তৈরি করেন, যা ১৭৭২ পর্যন্ত টাকা তৈরির কাজে ব্যবহৃত হতো। যেটি জাহাঙ্গীরনগর দুর্গ নামে পরিচিত বলে মত আছে।

মৃত্যু ও তার কবর:
ইসলাম খান ঢাকা থেকে ২৫ মাইল উত্তরে বর্তমান গাজীপুরের ভাওয়ালে অপ্রত্যাশিতভাবে মারা যান। জানা যায়, দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে বিভিন্ন যুদ্ধ ও অভিযানের পর ইসলাম খান ভাবল তার সুবাদারীর অনেক কাজ শেষ করেছেন। এখন তার একটু আনন্দ ও বিশ্রামের প্রয়োজন। সেজন্য তিনি ভাওয়াল অঞ্চলে শিকারে যান। শিকারের সময় হঠাৎ তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে দ্রুত তাবুতে নিয়ে আসা হয়। তাবুতে অবস্থান করার সময় বুকে ব্যাথা নিয়েও বিভিন্ন রাজকার্যে ব্যস্ত হয়ে যান ঠান্ডা মাথায় স্থিরচিত্তে । তার শরীর তা সহ্য করতে পারিনি। তিনি কাজের মধ্যেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। হাকিম কুদসি তার চিকিৎসা করছিলেন এবং চন্দনের প্রলেপ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার জ্ঞান আর ফেরেনি। হয়তো যদি সঠিক ঔষধ দিতেন, তাহলে ইসলাম খানের অকাল মৃত্যু ঘটতো না। ততক্ষনে তিনি না ফেরারা দেশে চলে গেছেন, দিনটি ছিল ১৬১৩ সালের ২১ আগস্ট। কিন্তু তার মৃত্যুর খবর গোপন রাখা হয়।

পরে সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় সন্মান দিয়ে কফিনটি ঢাকায় এনে তাকে প্রথমে কবর দেয়া হয় ‘বাদশাহী বাগে’, যা বর্তমানে ঢাকার পুরনো হাইকোর্ট মাযার এলাকা। মুঘল আমলে ঐ এলাকায় বাদশাহী বাগান গড়ে তোলা হয়েছিল। ইসলাম খানকে সমাহিত করার পর ঐ এলাকা ‘চিশতি-বেহেশতি’ নামে পরিচিত হয়।

তবে মুনতাসির মামুনের হারিয়ে যাওয়া ঢাকার খোজে বই থেকে, তোইফুরের মতে, ইসলাম খানকে কবর দেয়া হয়েছিল হাইকোর্ট মাযার এলাকায়। পরে সম্রাট জাহাঙ্গীরের নির্দেশে তার দেহাবশেষ ফতেহপুর সিক্রিতে নিয়ে যাওয়া হয় এবং তার নানা শেখ সেলিম চিশতির কবরের পাশে আবার সমাহিত করা হয়।তারপর থেকে শূন্য সমাধি অবহেলিতভাবে পড়ে ছিল। তা জঙ্গলে ঢেকে যায়। মূল ব্যাপার হল ১৯৪৩ সালেও লেখক তোইফুর সমাধিটি দেখেছিলেন। কিছুদিন পর দেখা গেল এক চতুর ব্যক্তি সমাধিটি পরিস্কার করে সেখানে মাযার সাজিয়ে বসে। পরে ভক্তেরও সমাবেশ ঘটে। রাতারাতি বিখ্যাত হয়ে ওঠে এই মাজার। সত্য-মিথ্যা জানি না । জাহাঙ্গীর ফতেহপুর সিক্রিতে একটি সমাধি সৌধ তৈরি করেন তাঁর দুধ ভাই ও বাল্য বন্ধুর স্মৃতির স্মরণে।......................
বিঃ দ্রঃ- ঢাকাকে রাজধানী করা সহ ইসলাম খানের কুচবিহার, কামরূপ এবং কাছাড় রাজ্য জয়ের আরো ইতিহাস পরবর্তী পর্বে লেখার ইচ্ছা আছে এসআইএস ক্রিয়েটিভ রাইটিং টিমের।

Stay Curious SIS
Siddiqui's International School

নতুন বই হাতে পেলে গন্ধ শোঁকেন না—এমন বইপ্রেমী কি আছে? কেউ আবার পুরনো বইয়ের গন্ধ বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু জানেন, এটি আসলে ...
18/02/2024

নতুন বই হাতে পেলে গন্ধ শোঁকেন না—এমন বইপ্রেমী কি আছে? কেউ আবার পুরনো বইয়ের গন্ধ বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু জানেন, এটি আসলে মৃত্যুর গন্ধ?

শুনুন, বই যত পুরনো হয় তত সুন্দর গন্ধ বেরোয়। কাগজে রাসায়নিক সেলুলোজ ও লিগনিন জাতীয় উপাদান থাকে বইয়ে। লিগনিন হলো সুগন্ধি অ্যালকোহলের পলিমার। এটি পুরনো বইয়ের পাতা হলুদ করে দেয়। এছাড়া থাকে ইথাইল হেক্সানোল, বেনজালডিহাইড, টলুইন, ভ্যানিলিন ও ইথাইল বেনজিন-সহ আরও কিছু রাসায়নিক।

সেলুলোজ ও লিগনিনের মিশ্রণের ফলে যে রাসায়নিক বিক্রিয়া হয়, তা-ই ওই গন্ধ তৈরিতে দায়ি। সঙ্গে মেশে বাঁধাইয়ের আঠা ও কালির গন্ধ।

ইথাইল বেনজিনও মিষ্টি গন্ধ তৈরি করে, ইথাইল-হেক্সানল পুরনো হলে ফুলের মতো গন্ধ বেরোয়, ফারফুরাল থেকে বাদামের গন্ধ বেরোয়। সব মিলিয়ে নেশা ধরানো গন্ধটি তৈরি হয়।

আর এই গন্ধ হয়ে ওঠে—মৃত্যুর গন্ধ। কেন?

না না, এর সঙ্গে পাঠকের মৃত্যুর সম্পর্ক নেই—এই গন্ধ বইয়ের ‘মৃত্যুর গন্ধ’। সময়ের সাথে সাথে গন্ধ যত মিষ্টি হয়, বইয়ের আয়ুও তত ফুরিয়ে আসে। অর্থাৎ, বইটি মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যায়।

কেতাবি ভাষায় বইয়ের গন্ধ শোঁকার নেশাকে কী বলে জানেন? বিবিলিয়োসমিয়া (Bibliosmia)। যদিও অক্সফোর্ড অভিধানে আপনি শব্দটি খুঁজে পাবেন না। নিতান্ত বইপ্রেমীদের গড়া এই শব্দ।

#বইবাহিক

22/01/2024

পাওয়ার অব থটস | Mind Power and the Creative Power of ThoughtsFor business, Contact: [email protected] Power and the Creative Power of Thought...

একেই বলে বিয়ে! মহারাজার বিয়ের মেনু!-----------------------------------------১৯৪৭ সালের ৯ই ডিসেম্বর বিয়ে হয়েছিল নদিয়ার মহ...
21/01/2024

একেই বলে বিয়ে!
মহারাজার বিয়ের মেনু!
-----------------------------------------

১৯৪৭ সালের ৯ই ডিসেম্বর বিয়ে হয়েছিল নদিয়ার মহারাজা সৌরীশচন্দ্র রায় বাহাদুর এবং মহারানি তুষারিকা দেবীর।

মহারাজার বিয়ের একটা বিশেষ আকর্ষণ ছিল আতশবাজি প্রদর্শনী। সেজন‍্য ফ্রান্সের এক সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আতশবাজিগুলি উপরে উঠে গিয়ে শুধুই এ বিয়ের পাত্র-পাত্রী মহারাজা ও রানিমার মুখ ফুটিয়ে তুলছিল আকাশে।

কৃষ্ণনগরের প্রবীণ ব্যক্তিরা আজ‌ও এই অনুষ্ঠান মনে করতে পাবেন।

বাংলা ১৩৫৪ সাল। নদিয়ার রাজবাড়িতে মহারাজকুমার সৌরীশচন্দ্র রায়ের বিবাহ উপলক্ষ্যে আয়োজন করা হয়েছিল বিরাট প্রীতিভোজ ও উৎসব-অনুষ্ঠানের।

রাজকীয় প্রীতিভোজে অতি সুখাদ্যের বিপুল সম্ভার তো ছিলই, তার সঙ্গে ছিল নাচ-গান, নাটকের রাশি রাশি আনন্দ। হিন্দুস্তানি ক্লাসিক্যাল সঙ্গীতের কিংবদন্তী শিল্পী বাবা আলাউদ্দিন খাঁ সাহেব নিজে এসেছিলেন নদিয়ার রাজবাড়িতে সঙ্গীত পরিবেশন করতে। রাজবাড়িতে করা হয়েছিল প্রোজেক্টরে একাধিক সিনেমা দেখানোর ব‍্যবস্থা। সে যুগে যা ছিল অতি বিরল।

উচ্চাঙ্গের এসব বিনোদনের সঙ্গে ছিল ১৩৮টি আইটেমের এই বড়োসড়ো মেনু। মহারাজার বিয়েতে খেতে আসা আমন্ত্রিত অতিথিরা সবাই খুব খুশি ও তৃপ্ত হয়েছিলেন সন্দেহ নেই।
রাজকীয় বিয়ের মেনু কেমন হতো তা দেখে নিন।

সূত্রঃ এই সময়

গোবিন্দ হালদার ১৯৩০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বাঙালি গীতিকার। তাঁর রচিত প্র...
19/01/2024

গোবিন্দ হালদার ১৯৩০ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি একজন বাঙালি গীতিকার। তাঁর রচিত প্রথম কবিতা ছিল ‘আর কতদিন’। তিনি প্রায় সাড়ে তিন হাজার কবিতা ও গান লিখেছেন। তাঁর প্রকাশিত প্রথম কাব্যগ্রন্থ দূর দিগন্ত।

বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতারে সম্প্রচারিত তার লেখা গানসমূহ মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করতো। মুক্তিযুদ্ধের সময় তার রচিত উল্লেখযোগ্য গানের মধ্যে মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে, পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, লেফট রাইট লেফট রাইট, হুঁশিয়ার হুঁশিয়ার, পদ্মা মেঘনা যমুনা, চলো বীর সৈনিক, হুঁশিয়ার, হুঁশিয়ার বাংলার মাটি অন্যতম। তিনি ভারতের আকাশবাণী বেতারের তালিকাভুক্ত গীতিকার ছিলেন।

আয়কর বিভাগে কর্মরত অবস্থায় বন্ধু কামাল আহমেদের অনুপ্রেরণায় এবং উৎসাহে তিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের উপর গান রচনা করেন। কামাল আহমেদ তাকে স্বাধীন বাংলা বেতারের কর্ণধার কামাল লোহানীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেন এবং তার হাতে ১৫টি গানের একটি খাতা দেন। এ গানগুলোর মধ্যে স্বাধীন বেতারে প্রথম প্রচারিত হয় সমর দাসের সুরারোপিত পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে গানটি। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়েই তার আরও কিছু গান স্বাধীন বেতারে সম্প্রচারিত হয়। পাক বাহিনীর আত্মসমর্থনের খবর পাওয়ার পরপরই সন্ধ্যায় ১৬ই ডিসেম্বর প্রচারিত হয় এক সাগর রক্তের বিনিময়ে গানটি যা সুর দিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত সুরকার ও কণ্ঠশিল্পী আপেল মাহমুদ এবং মূল কণ্ঠ দিয়েছিলেন স্বপ্না রায়। আরও কণ্ঠ দিয়েছিলেন আপেল মাহমুদ এবং সহশিল্পীরা।

তিনি ২০১৫ সালের ১৭ই জানুয়ারি কলকাতায় মারা যান। গীতিকার গোবিন্দ হালদার এর দশম প্রয়ান দিবসে রইল শ্রদ্ধাঞ্জলি।

(সূত্র: উইকিপিডিয়া)
✍️ Satya Dam
গান ও কবিতা নামক গ্রুপ থেকে নেওয়া।

22/12/2023

Address

Tongibari
Munshiganj

Telephone

+8801672492942

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Pall Kantha Roy posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to Pall Kantha Roy:

Share