09/09/2025
pH হলো পানির অম্লত্ব (acidity) বা ক্ষারত্ব (alkalinity) প্রকাশ করার একটি সূচক বা মাত্রা।
এটি মূলত পানিতে থাকা Hydrogen ion (H⁺) এর ঘনত্বকে নির্দেশ করে।
pH = - \log_{10} [H^+]
আর H⁺ আয়ন যত কম থাকবে → pH তত বেশি (অ্যালকালাইন/ক্ষারীয়)।
সাধারণ তথ্য:
পুকুরের পানির আদর্শ pH = 6.5 – 8.5
মাছ চাষের জন্য সবচেয়ে ভালো থাকে 7.0 – 8.0 রেঞ্জে।
pH < 6.5 হলে পানি অ্যাসিডিক হয় → মাছের বৃদ্ধি কমে যায়, রোগ বাড়ে।
pH > 8.5 হলে পানি অ্যালকালাইন হয় → অ্যামোনিয়া বিষক্রিয়া, গিল ক্ষতি, মাছের মৃত্যু হতে পারে।
আসুন ph নিয়ে দুই/একটা ব্যাতিক্রমধর্মী আলোচনার চেষ্টা করি
pH ও অ্যামোনিয়া টক্সিসিটি:
পানির pH যত বেশি হবে, তত বেশি unionized ammonia (NH₃) থাকবে → এটা মারাত্মক বিষাক্ত।
যেমন: pH 7.0 এ যদি মোট অ্যামোনিয়া 1 mg/L হয়, সেটা নিরাপদ; কিন্তু pH 9.0 এ একই অ্যামোনিয়া মারাত্মক হয়ে ওঠে।
Buffering Capacity (Alkalinity):
পুকুরের মাটিতে যদি পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম/ম্যাগনেশিয়াম না থাকে → pH খুব সহজে ওঠানামা করে।
যেসব পুকুরে Total Alkalinity < 20 mg/L, সেখানে মাছ মারা যাওয়ার ঝুঁকি বেশি।
মাটির রঙের সাথে সম্পর্ক
কালো বা অ্যাসিডিক মাটির পুকুরে সাধারণত pH কম থাকে।লালচে মাটিতে (iron-rich soil) আবার pH সাধারণত বেশি ওঠানামা করে।
Iron & Hydrogen Sulfide:
pH কম হলে (৬ এর নিচে) → লোহা (Fe²⁺) পানিতে দ্রবীভূত হয় → মাছের গিলে জমে শ্বাসকষ্ট হয়।আবার পচা তলায় (anaerobic zone) H₂S (Hydrogen sulfide) তৈরি হয় → অ্যাসিডিক পানিতে এটা বেশি মারাত্মক হয়ে ওঠে।
শৈবাল নিয়ন্ত্রণে pH:
শৈবাল বেশি থাকলে দিনে pH ৯–১০ পর্যন্ত উঠে যেতে পারে।শৈবাল মরে গেলে পচনের কারণে রাতে pH হঠাৎ কমে যায়। ফলে মাছ মারা যায়, যেটা অনেক সময় “রাতের মধ্যে হঠাৎ মরলো” বলে দেখা যায়।
DO (Dissolved Oxygen) এর সাথে সম্পর্ক:
pH বেশি উঠলে সাধারণত DO (দ্রবীভূত অক্সিজেন) ও বেশি থাকে দিনে।আবার রাতে pH কমলে DO ও কমে যায়। তাই pH দেখে DO-এর অবস্থাও কিছুটা আন্দাজ করা যায়।
pH ও ওষুধ/রাসায়নিকের কার্যকারিতা:
ফরমালিন, ব্লিচিং পাউডার, পটাশ ইত্যাদি ওষুধের কার্যকারিতা পানির pH-এর ওপর নির্ভর করে।
যেমন, পটাশ (KMnO₄) এর কাজ বেশি হয় ৭-৮ ph
pH Test করার সময় ভুল ধারণা
অনেকে শুধু সকালে বা শুধু বিকালে pH মাপে → এতে আসল অবস্থা বোঝা যায় না।সকাল ৬–৭টা আর দুপুর ২–৩টা—দুই সময় pH মাপা উচিত।