17/12/2024
দিন যত যাচ্ছে বিয়েটা ততোই কঠিন হচ্ছে।
- এটা বিয়ে-শাদী না, হয়ে গেছে যুদ্ধ।
একধরনের যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা শুরু হয়েছে। মাত্র ২০ বছরে, হ্যা! মাত্র ২০ বছরে তুমুল চেঞ্জ এসেছে সোসাইটিতে।
একটা নোংরা অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে।
স্টাবলিশ লাইফ, কালারফুল কালচার, ব্রাইট ফিউচারের পেছনে সবাই ছুটছে।
ক্যারিয়ার আর গ্ল্যামারের ঝনঝনানি বাজছে পুরো সোসাইটিতে।
২৫+ অবিবাহিতা নারী ঘরে ঘরে বসে আছে। বিয়ে হচ্ছে না, জিজ্ঞেস করলে জানবেন, ভালো যোগ্যতাসম্পন্নপাত্র পাওয়া যাচ্ছে না।
যোগ্যতাবান পাত্র খুজতে খুজতে কখন যে নিজেই অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে তার খবর কে দিবে!
বিশ বছর আগেও ২৫+ অবিবাহিতা কয়টা মেয়ে আপনি সোসাইটিতে দেখেছেন? এখন তো সংখ্যা ৪০% ছাড়িয়ে গেছে! হিউজ সংখ্যক মেয়ে বিয়ের বাকী রয়ে গেছে।আজকাল ছেলেরাও ৩০ এর আগে বিয়ে করতে চায় না।কিভাবে করবে, যে এক্সপেক্টশনের লিস্ট তার হাতে এই সোসাইটি ধরিয়ে দিয়েছে সেটা সে চাইলেও ৩০/৩৩ এর আগে পারবে না।
একটা ছেলের স্টাডি শেষ হবার পর জবে ঢুকতে মিনিমাম ২৮/২৯ বয়স হয়ে যায়। জবে ঢুকার পর ফিউচার, ক্যারিয়ার, বিয়ের দেনমোহর, খরচ এসব যোগাতে আরো ৩/৪ বছর চলে যায়। ৩৩/৩৪ এ একটা ছেলের বিয়ে করার আগ্রহ অনেকটা কমে যায়। কি কারনে কমে যায় সেটা এই বয়সের ছেলেরা খুব ভালো জানে।
একটা পুরুষ যৌবনপ্রাপ্ত হয় ১৪/১৫ তে, সে বিয়ে করে ৩৩/৩৪ এ।
একটা নারীর নারীত্ব আসে ১২/১৪ তে, সেখানে সে বিয়ে করে ২৫/২৬ এ।
এই যে লম্বা একটা বিগেস্ট গ্যাপ এটার কারন কি? মানুষ যখন কোনো কিছু সহজ পথে না পায় তখন সে বাঁকা পথেই চাহিদা পূরণ করতে চাইবে।
এই বাঁকা পথের মাধ্যমে ইউজ করছে ফোন, ফেজবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, ইমু, ভাইবার এসব।
এজন্য তো লিভ টুগেদার কালচারও শুরু হয়েছে।
আর এসব যখন এভাবেই পাওয়া যাচ্ছে তাহলে বিয়ে করার দরকারটাই কি?
মানুষ প্রচুর অপশন পাচ্ছে। সবার হাতে ২/৪ জন করে রেডি আছে। একজন চলে গেলে কোনো ব্যাপার না। অন্যজন তো আছেই।
অনেকে বলবে ভালো জব বা টাকা ইনকাম না করলে বউকে খাওয়াবে কি?
এ বিষয়ে আমার কিছু কথা আছে-
আমাদের ১/২ জেনারেশন আগেও ১২/১৪ বছরের মেয়ে ১৮/২০ বছরের ছেলের বিয়ে হয়েছে। তাদের কে ছেলের বাবা খাওয়াইছে? কই তারা কি মরে গেছিলো? তাদের বংশ থেকেই তো আমরা বর্তমান প্রজন্ম এসেছি।
উন্নত পশ্চিমা দেশের ব্যাপার অন্যরকম। ওখানে যেমন ক্যারিয়ার আছে, ঠিক তেমনি ২০+ বয়সে ভালো জব বা কাজের ব্যবস্থা আছে। আমরা ব্রিটিশ কলোনীর গোলামী সিস্টেমের পড়াশোনা করছি, যখন মানুষের অর্ধেক জীবন পার হওয়ার পর কাজ পাওয়া যায়। এটাতো ব্রিটিশ করেছিলো, আমরা যাতে সবদিক দিয়ে অকর্মন্য থাকি।
৩০ এর পর বাচ্চা জন্ম নিলে সে বাচ্চা পরিপূর্ণ মানসিক বিকাশ পায় না।
যাই হোক, যা বলছিলাম, ঐ ৩৩/৩৪ ছেলে যখন বিয়ের জন্য পাত্রী খুঁজে তখন সে সুন্দরী খোঁজে।কারন সে দেখেছে, ক্যারিয়ারের ক্ষেত্রে মেয়েরা আপোস করে না। সেও গ্ল্যামারে আপোষ করে না। তখন সে বিয়ে করে ১৮/২০ বছরের মেয়েকে।
এই যে লম্বা সময় গ্যাপ, তাতে ওদের না হয় মেন্টালি ম্যাচ, না হয় ফিজিকাল ম্যাচ। তার ফলে কি হয়? বিয়ের কিছু দিন পর হয় তাদের ডিভার্স হবে, না হয় সেপারেশন না হয় পরকীয়া!
আর ওদিকে ২৮/৩০ বছরের উচ্চশিক্ষিত মেয়ে, যে এতোদিন যোগ্যতাবান পাত্র খুজে পায় নি, সেও কিন্তু এতদিনে যোগ্যতাবান পাত্র পাচ্ছে কিন্তু তার বয়সের ছাপ, আর মলিন মুখ দেখে উল্টো রিজেক্ট হচ্ছে।
আসলে দোষটা কারো নয়। দোষটা হচ্ছে আমাদের চিন্তার, মানসিকতার, সামাজিকতার।
যে সমাজ একজন নিরপরাধ মানুষের হত্যা ঠেকাতে পারে না, একজন মানুষের রুজির ব্যবস্থা করতে পারে না।
সেটা কিসের সমাজ? সেই সমাজের কথা কেন শুনতে হবে?