25/10/2025
নায়ক সালমান শাহকে হ**ত্যা করতে কি**লার ভাড়া করেন শাশুড়ি লতিফা হক লুসি।
হ**ত্যার পরিকল্পনা সাজানো হয় গুলিস্তানের একটি বারে।
কিলা**রদের সঙ্গে চুক্তি হয় ১২ লাখ টাকায়। আন্ডারওয়ার্ল্ড ডন আজিজ মোহাম্মদ ভাই,
খলনায়ক ডন, সালমানের স্ত্রী সামিরা সহ আরও ১১ জন অংশ নেন এই হত্যা**কাণ্ডে।
হত্যা***র পর ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে আত্মহ**ত্যা বলে প্রচার চালিয়ে পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করেন আজিজ মোহাম্মদ ভাই।
হত্যা***কাণ্ডে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন আসামি রেজভী আহমেদ ওরফে ফরহাদ।
তিনি জবানবন্দিতে বলেন, সালমান শাহ আ***ত্মহত্যা করেননি।
এটি একটি পরিকল্পিত হ***ত্যা।
জবানবন্দিতে রেজভী বলেন, ‘ডন সালমান শাহর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিল।
সালমানের স্ত্রী সামিরার সঙ্গে ডনের গোপন সম্পর্ক গড়ে ওঠে এবং দৈহিক সম্পর্কও ছিল।
অন্যদিকে সামিরার মায়ের সঙ্গে চিত্র প্রযোজক আজিজ মোহাম্মদ ভাইয়ের গোপন ও দৈহিক সম্পর্ক ছিল। তাই সালমান ডনকে এড়িয়ে চলতেন।’
হ**ত্যার পরিকল্পনার বিষয়ে রেজভী বলেন,
‘সালমান শাহকে হত্যা**র আগের দিন ১৯৯৬ সালের ৫ সেপ্টেম্বর গুলিস্তানের একটি বারে পরিকল্পনা করা হয়।
ওইদিন রাত ৮টায় ডন, ডেভিড, ফারুক, জাভেদ ও আমি বারে যাই।
সেখানে আরও ২ জন ছেলে ছাত্তার ও সাজু আসে। এরপর ফারুক ২ লাখ টাকা বের করে বলে, সামিরার মা ওই টাকা দিয়েছে।
কথা ছিল সালমানকে শেষ করার জন্য মোট ১২ লাখ টাকা দেবে।
কাজের আগে ৬ লাখ ও কাজের পরে ৬ লাখ।
কিন্তু ২ লাখ টাকা পেয়ে ডনের সঙ্গে ফারুকের কথাকাটাকাটি হয়।
পরে ফারুক রাগ করে বাইরে যায়।
২০ থেকে ২৫ মিনিট পরে আরও ৪ লাখ টাকা নিয়ে আসে।
তখন ওখানেই ডন প্লাস্টিকের একটি দড়ি নিজের মাজায় বেঁধে উপরে কালো জ্যাকেট গায়ে দেয়।
বাকি অর্ধেক রশি ফারুকের কাছে দেয়।
এরপর তারা টাকা, সিরিঞ্জ, রিভ**লবার ইত্যাদি গুছিয়ে নেয়।
সামিরার মা এবং আজিজ মোহাম্মদ ভাই দুজনে মিলেই সালমানকে শেষ করার ব্যাপারে ডন ও ফারুকের সঙ্গে কনটাক্ট হয়।’
রেজভী আরও বলেন, ‘এরপর ওই রাতে বার থেকে এফডিসি এসে শুটিং শেষে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী রাত আড়াইটার সময় আমাকে সালমান শাহর বাসায় নিয়ে যায় ডন।
ওই বাসায় ডন, ডেভিড ও ফারুকের যাতায়াত ছিল বলে দারোয়ান কিছু বলেনি।
সালমানের বাসায় লিফটে ওঠার আগেই ডান পাশে রুবী নামে এক মেয়ের রুমের দরজায় ডন নক করলে রুবী নাইটি পরা অবস্থায় দরজা খোলে।
এরপর বলে, “ও তোমরা এসেছ।”
তখন ডন রুবীকে বলে, ‘আজিজ ভাই কোথায়?’ বাথরুম থেকে আজিজ ভাই বের হয়ে আসে।
এরপর আমরা উপরে উঠি।
আজিজ ভাই চারতলায় নেমে যায়।
আর আমরা ১১ তলায় নেমে সালমানের বাসায় যাই। দরজা আগে থেকেই চাপানো ছিল।
দরজা খুলেই দেখা যায় সালমান বেডরুমে শুয়ে আছে। পাশে সামিরা নাই।
তখন ডন, ডেভিড, জাভেদ, ফারুকরা মিলে সালমানের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
এ সময় ফারুক তার পকেট থেকে ক্লোলোফর্মের সিসি বের করে সামিরাকে দেয়।
সামিরা তা দিয়ে সালমানের নাকের ওপর চেপে ধরে। ডন সালমানের বুকের ওপর গিয়ে বসে।
আর ফারুককে বলে, আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে ডাক। ফারুক তখন বাইরে গিয়ে আজিজ মোহাম্মদ ভাইকে নিয়ে আসে।
এরই মধ্যে সামিরার মা ড্রেসিংরুম থেকে বের হয়ে আসে। তখন ধস্তাধস্তি হচ্ছিল।
সালমানের খুব শক্তি ছিল। ইনজেকশন দেওয়া যাচ্ছিল না। তখন সবাই মিলে সালমানকে ড্রেসিং রুমে নিয়ে ডেভিড সালমানের পা বাঁধে।
আজিজ ভাই ডনকে ইনজেকশন দিতে বলে।
পরে সামিরা পুশ করে, তার মা সামিরাকে পুশ করতে সাহায্য করে। পরে সালমান নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ইনজেকশন পুশ করার আগে আজিজ মোহাম্মদ ভাই ফ্যানটা সালমান শাহর ঘাড়ের ওপর ছুড়ে মেরেছিল। ড্রেসিং রুমে একটা মই ছিল।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই আমাকে মইটা আনতে বলে। আমি এনে দিই। এরপর তিনি দড়ি চান।
তখন ডন নিজের কোমরের দড়িটা খুলে আজিজ ভাইয়ের হাতে দেয়।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই নিজেই সিঁড়ি দিয়ে উঠে দড়িটি সিলিং ফ্যানের সঙ্গে বাঁধে।
তাতে আমি, সামিরা, সামিরার মা সাহায্য করি।
পরে সালমানের পায়ে বাঁধা রশিটা খুলে বুকের ওপর উঠে গলায় চাপ দিয়ে রাখে এবং পরীক্ষা করে দেখে যে নিঃশ্বাস নেই।
উপরের রশিটা খানিকটা ঝুলিয়ে রাখা হয়,
যাতে দেখানো যায় যে, লা**শ*টাকে ঝোলানো থেকে খোলা হয়েছে।
পরে সালমান সুই***সাইড করেছে এটা দেখানোর জন্য তাকে তেল মালিশ করা হয়, কাপড় ভিজিয়ে শরীরে রাখা হয়।
এরপর যে যার মতো চলে যাই। আমিও ফরিদপুর চলে যাই। এরপর কারও সঙ্গে যোগাযোগ হয়নি।
কিছুদিন পর ডনের সঙ্গে ঢাকায় দেখা হলে আমাকে জানায় দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নাই।
আজিজ মোহাম্মদ ভাই সব ঠান্ডা করে দিয়েছে।
পরে আমি আবার বাড়িতে গেলে ১৯৯৭ সালের ৪ঠা জুলাই ডন ও ডেভিড আমাদের বাড়িতে আসে। ডন আমাকে বলে, কেইসটা আবার নাড়া দিয়ে উঠেছে। যেহেতু আমাদের সঙ্গে ছিলে।
এখন আমাদের সাহায্য করতে হবে। আমাকে তারা প্রয়াত চিত্রপরিচালক আলমগীর কবিরের ছেলে লেনিন সেজে সালমানের বাবা-মার বাসায় যেতে বলে। এরপর গভীর রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় সালমানের ছোট ভাই বিল্টুকে অপহরণ করে সালমান হ***ত্যা মামলা প্রত্যাহার করা হবে বলে পরিকল্পনা হয়।
তবে ওই বাসায় লেলিন সেজে গেলে আমি ধরা পড়ি। সালমান শাহ আত্ম***হত্যা করেনি।
এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’
শুধু আসামি রেজভীই নয়, আসামি রুবীও স্বীকার করেন এটি একটি হত্যা***কাণ্ড।
আদালতের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়,
রেজভী আহমেদের দোষ স্বীকারোক্তি অবজ্ঞা করার আইনগত কোনো সুযোগ নেই।
তিনি জবানবন্দিতে ভিকটিম সালমান শাহকে হ**ত্যা করার কথা বলেছেন।
কিন্তু ওই স্বীকারোক্তির পরও পুলিশ কর্তৃক সালমান শাহকে হত্যা***র অভিযোগে এজাহার দায়ের করা হয়নি।!
#সালমানশাহ