20/08/2025
মৌলবাদ যার ইংরেজি হলো Fundamentalism,
যদি আভিধানিকভাবে শব্দটির অর্থ দাড় করানো হয় তাহলে সন্ধিবিচ্ছেদ করলে দাঁড়ায় (মূল + বাদ) এখানে "মূল" শব্দের অর্থ হলো ভিত্তি বা মৌলিক, এবং "বাদ" শব্দের অর্থ হলো মতবাদ বা ধারণা।
সুতরাং, পারিভাষিক ভাবে অর্থ দাঁড়ায় "মৌলিক মতবাদ" বা "মৌলিক ধারণার প্রতি সমর্থন।
যদি ইংরেজি অর্থ দাড় করানো হয় তাহলে
অক্সফোর্ড ডিকশনারি অনুযায়ী Fundamentalism হলো Noun বা বিশেষ্যপদ, ক্যামব্রিজ ডিকশনারিতে এভাবে বলা হয়েছে "the belief that the traditional principles" অর্থাৎ এটি একটি মতবাদ বা বিশ্বাস পদ্ধতিকে বোঝায় যেখানে কোনো নির্দিষ্ট ধর্ম বা আদর্শের মূল নীতিগুলির কঠোরভাবে অনুসরণ করা হয়।
১৯২২ সালে আমেরিকায় "ফান্ডামেন্টালিজম" শব্দটি প্রথম ব্যাবহার করা হয় যার কারণ ছিল, খ্রিস্টান ধর্মের মধ্যে একটি রক্ষণশীল এবং ঐতিহ্যবাহী দৃষ্টিভঙ্গির দলের উত্থান যারা তাদের বিশ্বাসকে দৃঢ়ভাবে রক্ষা করার জন্য একত্রিত হয়।তারা বাইবেলের আক্ষরিক ব্যাখ্যা এবং খ্রিস্টীয় বিশ্বাসের মৌলিক বিষয়গুলির উপর জোর দেয় এই প্রেক্ষাপটে, ওইসকল খ্রিস্টান গোষ্ঠী "ফান্ডামেন্টালিস্ট" নামে পরিচিত হয়ে ছিল এবং তখন থেকে যারা ধর্মের মূলে বিশ্বাসী, ধর্মে শতভাগ বিশ্বাসী এবং ধর্মকে শতভাগ ধারণ করে তাদেরকেই ফান্ডামেন্টালিস্ট বা মৌলবাদী বলা হয়, এসব আমি শামিম ইশতিয়াকের মুখের কথা না দলিল ইতিহাস এবং গ্রহণযোগ্য শব্দভাণ্ডারের রেফারেন্স থেকেই বললাম।
এখন আসি পয়েন্টে, আপনি মুসলিম হন, খ্রিস্টান হন, হিন্দু হন কিংবা বৌদ্ধ হন না কেন, আপনার ধর্মীয় গোষ্টির মূলনীতি আদর্শ যে আপনি আঁকড়ে ধরে রেখেছেন কঠোর ভাবে বিশ্বাস করেন এবং মেনে চলে এই জন্যেই আপনি মৌলবাদ, অর্থাৎ সহজ কথায় ধর্ম যে মানবে সে ই মৌলবাদে বিশ্বাসী এবং সে একজন মৌলবাদী অর্থাৎ fundamentalist.
এখন কথা হলো-
আপনি ধর্ম মানলে আপনাকে ধর্মের মূল ধারণা কে বিশ্বাস করে ধারণ করতে হবে।
আপনি নাস্তিক হলেও আপনাকে নাস্তিকতার মূল ধারণা কে বিশ্বাস করে ধারণ করতে হবে।
আপনি রাজনীতি করলে আপনার দলের মূল ধারণা বা আদর্শ কে বিশ্বাস করে ধারণা করতে হবে।
না হলে আপনাকে কেউ ই গ্রহণযোগ্য মনে করবেনা, কারন আপনি মানেন কিন্তু মূল ধারণা কে অর্ধেক মানেন আবার মানেন ও তাহলে আপনি ধর্ম বলেন, দল বলেন, কিংবা নাস্তিকতাই বলেন সব জায়গা থেকেই ডিসকোয়ালিফাই হয়ে যাবেন৷
অর্থাৎ আপনাকে ভন্ড আখ্যা দিয়ে বাদ দিবে কারন আপনি অর্ধেক মানেন অর্ধেক মানেন না।
এখন ধর্মের ব্যাপারেও সেইম প্রসিডিওর আপনি যদি নিজেকে ধর্মের অনুসারী ভাবেন তাহলে আপনাকে ১০০% নিজেকে মৌলবাদী দাবি করতে হবে বা ভাবতে হবে কারন নিজেকে মৌলবাদী দাবি না করলে আপনি ধর্মের ১০০% নীতি আদর্শ মানেন না, বা বিশ্বাস করেন না, এবং কোন ধর্মেই অর্ধেক বিশ্বাস বা মানার সুযোগ নাই, বিশ্বাস করলে বা মানলে সবটাই মানতে হবে বিশ্বাস করতে হবে, আর যারা মুসলমান হয়ে ইসলাম ধর্মকে ১০০% মানেনা তাদের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা সুরা বাকারায় বলেছেন-
"তোমরা কি আল্লাহর কিতাবের একাংশ বিশ্বাস করো এবং আরেক অংশ অবিশ্বাস করো? (সাবধান!) কখনো যদি কোনো (জাতি কিংবা) ব্যক্তি (দ্বীনের অংশবিশেষের ওপর ঈমান আনয়নের) এ আচরণ করে, তাদের শাস্তি এ ছাড়া আর কি হবে যে, পার্থিব জীবনে তাদের লাঞ্ছনা ভোগ করতে হবে, পরকালেও তাদের কঠিনতম আযাবের দিকে নিক্ষেপ করা হবে; তোমরা যা করেেছা, আল্লাহতায়ালা সেসব কিছু থেকে মোটেও উদাসীন নন’
সুতরাং যারা মৌলবাদ বা মৌলবাদী নিয়ে কথা বলেন বা বলবে তারা আগে তার ধর্ম সম্পর্কে সবাইকে ক্লিয়ার করে নিবেন, তারপর মৌলবাদ নিয়ে বক্তব্য পেশ করবে কারন সে যদি কোন ধর্মে বিশ্বাসী হয়ে থাকে তাহলে সে ১০০% মৌলবাদ এবং সে নিজে একজন ১০০% মৌলবাদী।
কিন্তু সে যদি ধর্ম মানে দাবি করে নিজেকে মৌলবাদী দাবি না করে অন্যদের মৌলবাদ বলে তাহলে সে ১০০% হিপোক্রেট।
কিছু তথ্য জেনে রাখুন-
মৌলবাদ বিরোধী আন্দোলন হয়ে সব চেয়ে বেশী ইন্ডিয়ায় কারন হিন্দুরা তাদের মৌলবাদী আচরণ করলে ভারতবাসী অনেকেই ধর্মের বাইরে যেয়ে অন্যায় করতে পারবেনা তাই তারা হিন্দু মৌলবাদ বিরোধী ।
বাংলাদেশে রাজনীতির মানুষ এবং বাম রা মৌলবাদ বিরোধী কারন মুসলমান মৌলবাদ নিয়ে থাকলে তারা সুবিধা করতে পারবেনা।
আমাদের সুবুদ্ধি উদয় হোক!!!
মৌলবাদ জিন্দাবাদ৷
© Shamim Istiak এর টাইমলাইন থেকে