09/08/2025
আমাদের আশে-পাশে এমন অনেক বাবা-মা (পরিবার) রয়েছে— যারা তাদের ছেলে-মেয়েদের দ্বীন পালনে বাধা দেয়। বিশেষ করে মেয়েদের পর্দা পালনে বাধা এবং অসহযোগিতা করে। এবং বিয়ের বিষয়েও বেদ্বীন ছেলের কাছে মেয়েকে বিয়ে দেয়। এমন বাবা-মায়ের জন্য লজ্জা। এমন পরিস্থিতিতে যে বোনেরা রয়েছেন, তাদের জন্য পরামর্শ হলো—
১। শরীয়তের দৃষ্টিতে বিষয়টি খুবই স্পষ্ট— পর্দা পালন করা ফরজ, আর ফরজের ক্ষেত্রে কারো বাঁধা মানা জায়েজ নয়, এমনকি বাবা-মা হলেও। আল্লাহর হুকুম সবার উপরে। যদি বাবা-মা এমন কিছু করতে বলেন যা আল্লাহর আদেশের বিরোধী, সেখানে তাদের মানা যাবে না; তাদের আপত্তি থাকলেও পর্দা পালন চালিয়ে যেতে হবে।
২। যেহেতু পর্দা পালন করার কারণে— আপনার সাথে তারা খারাপ ব্যবহার করে এবং মানসিকভাবে কষ্ট দেয়। এক্ষেত্রে বলবো— সবর করুন করুন এবং আল্লাহর কাছে তাদের হেদায়েতের জন্য দু'আ করুন। দ্বীন পালন করতে গিয়ে যত বেশি বাধা ও কষ্ট সহ্য করবেন, আল্লাহ আপনাকে তত বেশি প্রতিদান দিবেন এবং আখিরাতে সম্মানিত করবেন। তাই হতাশ হবেন হবে না। হযরত আছিয়া (আ.) এর কথা চিন্তা করুন, যিঁনি ফে*রাউনের স্ত্রী ছিলেন। ফে*রাউনের মতো এতো বড় জা*লিমের স্ত্রী হওয়া সত্ত্বেও তাঁর তাকওয়া ও দ্বীন পালনে অবিচল থাকার কারণে, তিঁনি আল্লাহর কাছে সম্মানিত এবং জান্নাতের সর্বশ্রেষ্ঠ নারীদের একজন।
৩। আপনার বাবা-মাকে নরমভাবে, ধৈর্য ধরে বুঝানোর চেষ্টা করুন। এবং অন্য আত্মীয় বা বিজ্ঞ আলেমের মাধ্যমে তাদের বুঝানোর চেষ্টা করুন।
৪। প্রাপ্তবয়স্ক হলে পরিবারকে বিয়ের জন্য বলুন। এবং বিয়ের সময় ছেলের সাথে আলাদা করে এ বিষয়ে কথা বলে নিবেন, যে— “আমি আপনার কাছে একটা জিনিসই চাই, তা হলো আমাকে দ্বীন পালনে সহযোগিতা করতে হবে এবং পর্দা পালনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।” প্রয়োজনে ছেলের মায়ের সাথে আলাদা করে খুব দরদ দিয়ে এই কথাগুলো বলবেন। যেন বিয়ের পর তিনিও আপনাকে এ বিষয়ে সহযোগিতা করে। আরেকটা কথা— বিয়ের ক্ষেত্রে অবশ্যই দ্বীনদার ছেলেকে বিয়ে করবেন, বেদ্বীন কোনো ছেলেকে বিয়ে করবেন না।
পরিবারের বিরোধিতা সহ্য করে আল্লাহর হুকুম মানা একটি বড় ইবাদত। তাই বলবো— সবর করুন এবং আল্লাহর নিকট দু'আ করুন। তিঁনি যেন আপনাকে এই অবস্থা থেকে হেফাজত করেন। দ্বীন পালন ও পর্দা পালনের জন্য পরিবারের দেওয়া এই কষ্টকে পরীক্ষা হিসেবে দেখুন। মনে করুন— আল্লাহ আপনাকে এভাবেই পরীক্ষা করছে। আপনাকে এ পরীক্ষায় অবশ্যই উত্তীর্ণ হতে হবে। দুনিয়াতে যে যত বেশি কষ্ট সহ্য করবে, আখিরাতে সে তত বেশি সুখে থাকবে।
উত্তরে : মাহমুদুল হাছান