মাটির গন্ধ

মাটির গন্ধ মানবতা ও সনাতন, একই সাথে দু'জন।

গেঞ্জির বাংলা।
01/11/2025

গেঞ্জির বাংলা।

শুভ দীপাবলি।
20/10/2025

শুভ দীপাবলি।

18/10/2025

আমরা হলাম সমন্বয়ক— জুলাই-আগস্ট— কোটার,
সময় এখন— যখন যা পাই— দু’হাত খুলে লোটার।
কোটার নেতা, লোটার নেতা— আমরা দেশের মালিক; আমরা হলাম মস্ত ইগল, তোমরা চড়ুই-শালিক।
লুটছি দেশের ভেতর-বাহির, ছুটছি চড়ে বিমান;
মূর্খ লোকে ভাবছে— ‘আহা, শক্ত ওদের ইমান!’
ইমান-বেচা ধর্মজীবী— বিমান চেপে উড়ি;
জুলাই মাসে শুটকো ছিলাম, উটকো এখন ভুঁড়ি।
চলতে লাগে বিমান এখন, টলতে শিভাস রিগ্যাল;
দেশের সবাই বেআইনি আর আমরা কেবল লিগ্যাল।
আগের বছর খেতাম হলের শবজি এবং ডাল;
এখন কি আর রোচবে ওসব, আমরা এখন ‘লাল’।
এখন রোচে কোপ্তা-কাবাব, এখন রোচে সুশি;
খাচ্ছি এখন, দাচ্ছি এখন— যখন যেমন খুশি।
এই তো সেদিন— পায়ের তলায় একশো টাকার চটি;
বাদ দিয়েছি লাখের হিশাব, এখন গুনি— কোটি।
জুলাই মাসে কী পরেছি, দেড়শো টাকার জামা;
এখন পরি গুচ্চি, আহা— বুঝতে হবে, মামা!
সোনারগাঁয়ে খাচ্ছি এখন, ওয়েস্টিনে ঘুম;
ঘুমপাড়ানি চুম্মা-হুজুর অঙ্গে আঁকেন চুম।
ঘুমের ঘোরে, চুমের ঘোরে যাচ্ছে জীবন কেটে;
আমলা কাঁপে, যখন ঢুকি সেক্রেটারিয়েটে।
ও ভোলা মন, ‘ভাতের হোটেল’ কেমন করে ভুলিস;
ওঠায়-বসায় দিচ্ছে সালাম আমলা এবং পুলিশ।
কোথায় কারা যুক্ত হবে, কোথায় কারা বিয়োগ;
কিশোরকালেই দিচ্ছি সচিব-বিচারপতি নিয়োগ।

আমরা হলাম রাষ্ট্র এখন, আমরা হলাম আইন;
নাড়ছি দেশের কলের কাঠি, মারছি দেশের পাইন।
লুটছি দেশের গঞ্জ-গ্রাম-শহর-নগর-পোর্ট;
নাকের ফুটোয় বেন্ধে দড়ি ঘুরাই এখন কোর্ট।
খাচ্ছি লুটে বাজার যত, দিচ্ছি পুড়ে মাজার;
করছি দেশের এমন দশা— যেমন দশা গাজার।
জুলাই মাসের পঙ্গু যারা, পুষুক দেহে ক্ষত;
নিজের বোঝা নিচ্ছি বুঝে নিজের ভাগের যত।
মরুক যত শহিদপিতা, অশ্রু ঝরুক মায়ের;
আমরা কেবল বয়ান দেব দরদ এবং দায়ের।
কঠিন-কঠিন তত্ত্ব জানি, পালনবাদী ফাঁপড়;
দেশের মাথায় পাগড়ি এখন, নিতম্বে নেই কাপড়।
দোকলা ছিলাম আন্দোলনে, খাওয়ার বেলায় একা;
ফোকলা হবে রাষ্ট্র যখন, দিচ্ছি কি আর দেখা!
বৈরী হবে বাতাস যখন, উড়াল দেব— ফুড়ুৎ;
পাঁচতারকায় খাচ্ছি এখন কাপ্পুচিনো— সুড়ুৎ।

এই তো সাজি বিজ্ঞ আলেম, এই তো আবার সেকু;
হঠাৎ ছাড়ি হুমকি, আবার হঠাৎ করেই নেকু।
জুলাইজুড়ে শিষ্ট শিশু, আমরা এখন ভালুক;
‘দুই দশমিক শূন্য’— এ-দেশ নিজের কেনা তালুক।
লোকাল বাসের যাত্রী ছিলাম জুলাই মাসের আগে;
এখন, শালার, রিলিফ দিতে বিমানবহর লাগে।
হাজার টাকার রিলিফ দিতে লক্ষ টাকার ফুয়েল;
আমরা দেশের সূর্যতরুণ, আমরা জাতির জুয়েল।
বিমান লাগে শৌচকাজে— আমরা এমন নবাব;
টাকার হিশাব চাইলে দেব দন্তভাঙা জবাব!
এই তো সেদিন মিটিং হলো, গেলাম নিজের শহর;
সঙ্গে ছিল নয়শো লোকের ছয়শো গাড়ির বহর।
কত্ত ছিল ব্যানার-তোরণ— আমার ছবি সাঁটা,
দেশের মানুষ দেখল আমার লালগালিচায় হাঁটা।
আমলা এল সালাম নিয়ে, পুলিশ দিল গার্ড;
ইগল চেনো, তোমরা যারা গরিব হামিং বার্ড?
পূরণ হলো একশো কলা— মনের যত শখ;
দেশের রাজা হলাম যখন, মরল ঝড়ে বক।

সকল কিছু সত্ত্বে, তবু, চিন্তা জাগে মনে;
কখন যে হায় কোন সে পোকা কিসের যে জাল বোনে!
কী হয়ে যায় কখন দেশে, কখন যে কী ঘটে;
ওলটে যদি গণেশ আবার, মানুষ যদি চটে!
এখন নাহয় চড়ছি বিমান, দিচ্ছি আকাশ পাড়ি;
ভাগা-ই যদি ভাগ্যে থাকে, জুটবে গরুর গাড়ি?

আখতারুজ্জামান আজাদ
১৮ মার্চ ২০২৫

(লেখাটি পড়ে লেখককে 01842376781 নাম্বারে বিকাশ, নগদ বা রকেটের মাধ্যমে সম্মানী পাঠানো যাবে; সম্মানী পাঠিয়ে মেসেঞ্জারে স্ক্রিনশট পাঠানো যেতে পারে)

শুভ রাত্রি।
13/10/2025

শুভ রাত্রি।

06/10/2025

Hi everyone! 🌟 You can support me by sending Stars - they help me earn money to keep making content you love.

Whenever you see the Stars icon, you can send me Stars!

04/10/2025

দামোদর মাস ব্রত

হিন্দু ধর্মে কার্তিক মাস সর্বাধিক পূণ্যপ্রদ ও ভগবান শ্রীশ্রীদামোদরের প্রিয় মাস। এই মাসে পালনীয় ব্রত, উপবাস, দীপদান, তুলসী পূজা, দামোদরাষ্টকম পাঠ ও বৈষ্ণব সেবা জীবনে অশেষ কল্যাণ ও মুক্তিদায়িনী। শাস্ত্রে বলা হয়েছে— কার্তিক মাসে ভগবান শ্রীদামোদরের একবার নাম উচ্চারণও অগণিত জন্মের পাপ নাশ করে।

🪔 ২০২৫ সালে দামোদর (কার্তিক) মাস শুরু হবে ৮ অক্টোবর থেকে এবং শেষ হবে ৫ নভেম্বর।

এই সময়ে পালনীয় ব্রত-বিধান, গ্রহণীয় ও বর্জনীয় বিষয়, সংকল্প ও অর্ঘ্যমন্ত্র, এবং প্রতিদিনের করণীয় নিচে তুলে ধরা হলো।

💫দামোদর মাসে ব্রত পালনের বিধিসমূহ🔰

কার্তিক মাসে প্রতিদিন ভোরে ব্রাহ্মমুহূর্তে উঠে শুচি হয়ে স্নান করতে হয়। স্নানের সময় হাতে অল্প জল ও তুলসীপাতা নিয়ে সংকল্প মন্ত্র পাঠ করে ভগবান শ্রীদামোদরের উদ্দেশ্যে অর্ঘ্য নিবেদন করতে হয়।

সংকল্প মন্ত্র হলো—

কার্তিকে’হং করিষ্যামি প্রাতঃস্নানং জনার্দন।
প্রীত্যর্থং তব দেবেশ দামোদর ময়া সহ॥

“হে জনার্দন, হে দেবেশ, হে দামোদর, আমি শ্রীরাধিকার সঙ্গে আপনার প্রীতির জন্য কার্তিক মাসে প্রতিদিন প্রাতঃস্নান করব”। তোমার প্রীতি অর্জনের উদ্দেশ্যে রাধিকা সহ আমি এই ব্রতের সংকল্প করছি।

স্নান শেষে পূজামণ্ডপে বা তুলসীমঞ্চে অর্ঘ্য নিবেদন করতে হয়।

অর্ঘ্য মন্ত্র হলো—

কার্তিকে স্নানমাচরন দামোদর জনার্দন।
অর্ঘ্যং তে প্রতিগৃহ্ণীষ্ব দিত্যেন্দ্রনিসূদন॥

“হে দামোদর, হে দনুজেন্দ্রনিসূদন, আমি কার্তিক মাসে বিধিপূর্বক স্নান করেছি, আমার প্রদত্ত এই অর্ঘ্য গ্রহণ করো”।

এরপর তুলসী, ফুল, ধান, প্রদীপ দিয়ে ভগবানকে পূজা করতে হয়। প্রতিদিন সন্ধ্যায় তুলসীমঞ্চে বা আকাশদীপ জ্বালানো, দামোদরাষ্টকম পাঠ এবং ভগবানের নামসংকীর্তন করা বিশেষভাবে ফলদায়ক।

👉 এইভাবে প্রতিদিন ভগবান শ্রীদামোদরের সেবায় থাকাই কার্তিক ব্রতের মূল করণীয়।

পদ্মপুরাণে ব্রহ্ম-নারদ সংবাদে বলা হচ্ছে-

❌ দামোদর (কার্তিক) মাসে বর্জনীয়

১. কার্তিক মাসে রাজমাষ (বরবটি) ও শিমসমূহ ভক্ষণ করলে, হে মুনিবর কল্পকাল (১ হাজার চতুর্যুগ) নরকাবাসী হয়।

২. কার্তিক মাসে যে ব্যক্তি কলমী শাক, পটল, বেগুন, আচার (চাটনি) ত্যাগ না করে, তাকে কল্পকাল (১ হাজার চতুর্যুগ) নরকবাসী হতে হয়।

৩. ধর্মাত্মা ব্যক্তি কার্তিক মাসে মৎস্য ও মাংস ভক্ষণ করবেন না।

৪. পরান্ন, পরশয্যা, পরধন, পরস্ত্রী-কার্তিককে প্রাজ্ঞ ব্যক্তি বিশেষভাবে বর্জন করবেন।

৫. কার্তিক মাসে তৈল মর্দন, শয্যা, পরান্ন ও কাসার পাত্রে ভোজন ত্যাগ করলে পরিপূর্ণ ব্রতী হওয়া যায়।

৬. কার্তিক মাস উপস্থিত হলে পরান্ন দর্শন করে যে মানব বর্জন করে, প্রতিদিন কৃচ্ছব্রতের ফল প্রাপ্ত হন।
পদ্মপুরাণে শ্রীরুক্মাঙ্গদ-মোহিনী-সংবাদে বলা হচ্ছে-

৭. কার্তিকে তৈল, মধু, কাসার পাত্র ও পঁচা বাসি অম্ল দ্রব্য, আচার ইত্যাদি বর্জন করবে।

৮. হে সুভ্রু! মৎস্য, কচ্ছপ মাংস ঔষধ হিসেবেও অন্য মাংস ভক্ষণ করবে না। কার্তিকে মাংস ভক্ষণে চণ্ডাল হয়।

🔰 দামোদর মাসের মাহাত্ম্য 🔰

✅ যে কোনও দেশে কার্তিকে স্নান ও দান বিশেষতঃ পূজাতে তা অগ্নিহোত্র সমফল।

✅ কুরুক্ষেত্রে কোটিগুণ ফল, গঙ্গায়ও তৎসম ফল, তার থকে অধিক পুস্করে, হে ভার্গব! দ্বারকায়ও অধিক। কার্তিক মাসে স্নানও শ্রীভগবৎপূজন শ্রীকৃষ্ণসালোক্যপ্রদ।

✅ হে মুনিগণ! মথুরা ব্যতীত, অন্যপুরী সকল তার সমান, যেহেতু মথুরা-মণ্ডলেই শ্রীহরির দামোদর লীলা প্রকট হয়েছিল।
অতএব কার্তিকে মথুরায় শ্রীগোবিন্দের প্রীতিবর্দ্ধন, কার্তিকে মথুরাতেই চরম ফল প্রাপ্তি হয়।

যেমন মাঘে প্রয়াগতীর্থ, বৈশাখে জাহ্নবী, কার্তিকে মথুরা সেবা তা থেকে উৎকর্ষ আর নাই।

কার্তিকে মথুরাতে মানবগণ স্নান করে দামোদরের পূজা করলে তারা কৃষ্ণসারূপ্য প্রাপ্ত জানবেন, এ বিষয়ে বিচার কর্তব্য নয়।

হে বিপ্র! এই জগতে মানবগণের পক্ষে মথুরাতে কার্তিক মাস দুর্লভ। যেখানে পূজিত হয়ে দামোদর নিজরূপ ভক্তগণকে প্রদান করেন।

✅ শ্রীহরি অর্চিত হয়ে অন্যত্র সেবিত ভক্তগণকে ভুক্তি মুক্তি দান করেন, এই শ্রীহরি কিন্ত ভক্তি দান করেন না, যেহেতু শ্রীহরির বশ্যকারী।

✅ কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে একবারও শ্রীদামোদরের পূজা থেকে সেই ভক্তি কিন্তু অনায়াসে মানবগণ শ্রীহরি হতে লাভ করে।
শ্রীদামোদরদেব কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে মন্ত্র-দ্রব-বিহীন পূজাকেও স্বীকার করেন।

যে পাপের মরণান্তেই বিনিষ্কৃতি হয় তার শুদ্ধির জন্য কার্তিক মাসে মথুরাপুরীতে হরিপূজাই সুনিশ্চয়, এই প্রায়শ্চিত্ত শাস্ত্রে উক্ত হয়েছেন।

✅ বালক ধ্রুব কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে শ্রীদামোদরের পূজা ও ধ্যান দ্বারা যোগিগণ দুর্লভ শ্রীভগবানকে শীঘ্র দর্শন প্রাপ্ত হয়েছিলেন। পৃথিবীতে মথুরা সুলভা, সেই রকম প্রতিবছর কার্তিক মাস সুলভ, তথাপি এই জগতে মূঢ় মানবগণ ভবসমুদ্রে জন্ম-মৃত্যু প্রবাহে ভাসছে।

✅ যজ্ঞসমূহের কি প্রয়োজন, তপস্যার কি প্রয়োজন, অন্য তীর্থসমূহের সেবাতে কি প্রয়োজন? যদি কার্তিকে মথুরা-মণ্ডলে শ্রীরাধিকা প্রিয় শ্রীদামোদরের অর্চিত হন।

✅ সকল পবিত্র তীর্থ, নদ-নদী, সরোবর কার্তিক মাসে এই মথুরা-মণ্ডলে সকলেই বাস করেন।

✅ কার্তিকে কেশবদেবের জন্মস্থানে যে মানবগণ একবার প্রবিষ্ট হয়, তারা পরম অব্যয় শ্রীকৃষ্ণকে প্রাপ্ত হন।

✅ কার্তিক মাসে মথুরাতে হরিপূজাকের উপহার উদ্দেশ্যে হরিপূজা দ্বারা দুর্লভ পদ প্রাপ্ত হওয়া যায়, তখন ভক্তিমান হয়ে পূজা করলে যে কি ফল, তার আর কি বলব।

‼️🔰 কার্তিক-কৃত্য-বিধি 🔰‼️

১. আশ্বিন মাসের যে শুক্লা একাদশী হবে বা পূর্ণিমাতে, নিরলসভাবে কার্তিক মাসের ব্রতসমূহ ঐ দিন হতে আরম্ভ করবে।

২. নিত্য শ্রীভগবানকে জাগরণ করাবার জন্য রাত্রির শেষ প্রহরে উঠে শুচি হয়ে শ্রীভগবানকে জাগিয়ে অনন্তর স্তোত্র পাঠসহ প্রভুর আরতি করবে।

৩. বৈষ্ণববৃন্দসহ আনন্দে বৈষ্ণবধর্মসমূহ শ্রবণ করে গীতবাদ্যাদিসহ প্রাতঃকালে প্রভু দামোদরদেবকে আরতি করবে।

৪. নদী আদি জলাশয়ে গিয়ে আচমনপূর্বক সংকল্প করবে। প্রভুকে প্রার্থনা জানিয়ে পরে তাঁকে যথাবিধি অর্ঘ্যদান করবে।

৫. সংকল্পমন্ত্র- হে জনার্দন! হে দেবেশ! হে দামোদর! শ্রীরাধিকাসহ আপনার প্রীতির জন্য কার্তিকে আমি প্রাতঃস্নান করব।

৬. প্রার্থনা মন্ত্র- হে দেবেশ! তোমার ধ্যানসহ এই জলে আমি স্নান করতে উদ্যত, হে দামোদর! তোমার প্রসাদে আমার পাপ বিনাশ যাক।

৭. অর্ঘ্যমন্ত্র-আমি কার্তিক মাসে বিধিবৎ স্নানকারী, হে দামোদর! হে দনুজেন্দ্রনিসূদন আমার প্রদত্ত অর্ঘ্য গ্রহণ কর।

৮. নিজদেহকে তিলকদ্বারা লেপন করে শ্রীকৃষ্ণ নারায়াণাদি নাম উচ্চারণ পূর্বক স্নান করে নিজ বিধিমতে সন্ধ্যা উপাসনা করে গৃহে আগমন করবে।

৯. দেবমন্দির অগ্রে মার্জনা করে স্বস্তিকমণ্ডল রচনা করে প্রভুকে তুলসী, মালতী, পদ্ম, অগস্ত (বক) পষ্পাদি দ্বারা অর্চনা করবে।

১০. নিত্য বৈষ্ণব সঙ্গে ভগবৎ কথা সেবন, অহোরাত্র ঘৃত, দীপ বা তিল দ্বারা অর্চন করবে।

১১. কার্তিক মাসে বিশেষ বিশেষ নৈবেদ্য অর্পন করবে, সেই রকম অষ্টোত্তর শত প্রণাম, যথাশক্তি একবার আহারাদি ব্রত আচরণ করবেন।
পদ্মপুরাণে কার্তিক প্রসঙ্গে

১২. প্রাতঃকালে উত্থান শৌচাদি করে পবিত্র জলাশয়ে গিয়ে বিধিবৎ স্নান, অতপর দামোদর অর্চন কর্তব্য।

১৩. কার্তিক ব্রতধারী মৌন অবলম্বনে ভোজন, ঘৃত দ্বারা বা তিল তৈল দ্বারা দীপাদান কর্তব্য।

১৪. বৈষ্ণববৃন্দসহ কৃষ্ণকথা আলাপ দ্বারা দিন যাপন, কার্তিক মাসে ব্রত সংকল্প পালন।

১৫. আশ্বিনে শুক্লপক্ষের হরিবাসরে আরম্ভ, অথবা পৌর্ণমাসি হতে অথবা তুলারাশি আগমে সংক্রান্তিতে আরম্ভ।

১৬. শ্রীবিষ্ণুর নিকট অখণ্ড দীপদান, দেবালয়ে, তুলসীতে, আকাশে উত্তম দীপ দান করবেন।

১৭. হে ভাবিনি! কার্তিকমাসে কার্তিকব্রত গৃহে করবে না, বিশেষতঃ তীর্থে কার্তিকব্রত সর্বপ্রযত্নে করবে।

⭕ শ্রীরাধাদামোদর-পূজাবিধি ⭕

১. শ্রীকৃষ্ণের প্রিয়তমা, পোপিকাগণ মধ্যে শ্রেষ্ঠা, কার্তিকে শ্রীদামোদর নিকটে শ্রীরাধিকার পূজা করা উচিত।

২. ব্রজবাসী ব্রাহ্মণ এবং তৎপত্নীকে বস্ত্র, অলঙ্কার ও ভোজনাদি দান দ্বারা পূজা করা কর্তব্য।

৩. হে বিপ্রগণ! কার্তিকে শ্রীরাধিকার সন্তোষের জন্য যিনি শ্রীরাধিকা প্রতিমাকে পূজা করে তার প্রতি শ্রীমান্ দামোদর হরি তুষ্ট হন।

৪. কার্তিকে প্রতিদিন ‘দামোদরাষ্টকম্’ নামক স্তোত্র (সত্যব্রত মুনি কথিত) পাঠ করবে, তা দামোদরের অর্চন স্বরূপ ও শ্রীদামোদরের আকর্ষণকারী।

দীপদান’ এবং ‘আকাশ দীপ’ এর মহিমা!

স্কন্দপুরাণে পূর্বকালে দ্রাবিড়দেশে বুদ্ধ নামে এক ব্রাহ্মণ ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ছিল খুবই দুষ্টা প্রকৃতির এবং দুরাচার সম্পন্না। ঐ স্ত্রীর সংসর্গে থাকার ফলে ব্রাহ্মণের আয়ু ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হলেন। পতির মৃত্যুর পরেও ঐ স্ত্রীলোকটি আরও বিশেষভাবে ব্যভিচারে লিপ্ত হলো।

এমনকি লোকনিন্দার ভয় না করে সে নির্লজ্জের মতো ব্যবহার করতে লাগল। তার কোনো পুত্র বা ভাই ছিল না। সে সর্বদাই ভিক্ষার অন্ন ভোজন করত। নিজের হাতে প্রস্তুত না করে সর্বদাই ভিক্ষার অন্ন ভোজন করত। নিজের হাতে প্রস্তুত না করে সর্বদাই পরের বাড়ি থেকে ভিক্ষা করে বাসি অন্ন খেত এবং অনেক সময় অপরের বাড়িতে রান্না করতে যেত।

তীর্থযাত্রা আদি থেকে সর্বদাই দুরে থাকত। সে কখনও কোনো ভালো কথায় কর্ণপাত করত না।
একদিন এক বিদ্ধান তীর্থযাত্রী ব্রাহ্মণ তার গৃহে আগমন করল। যার নাম ছিল কুৎস। তাকে (ঐ স্ত্রীকে) ব্যভিচারে আসক্ত দেখে সেই ব্রহ্মর্ষি কুৎস বললেন-

ওরে মুর্খ নারী! মনোযোগে সহকারে আমার কথা শ্রবণ কর। পৃথ্বি আদি পঞ্চভূত দ্বারা তৈরী এই রক্তমাংসের শরীর, যা কেবল দুঃখেরই কারণ, তুই তাকে যত্ন করছিস? এই দেহ জলের বুদবুদের মতো, একদিন যা অবশ্যই বিনষ্ট হবে। এই অনিত্য শরীরকে যদি তুই নিজ বলে মানিস্ তাহলে নিজের বিচার পূর্বক এই মোহ পরিত্যাগ কর।

ভগবান বিষ্ণুকে স্মরণ কর এবং তাঁর লীলাকাহিনী শ্রবণ কর। এখন কার্তিক মাস আগত হবে, তখন ভগবান দামোদরের প্রীতি বিধানের জন্য, স্নান, দান আদি কর্ম করে গৃহে বা মন্দিরে বিষ্ণুর উদ্দেশ্যে দীপ নিবেদন করে শ্রীবিষ্ণুকে পরিক্রমা করবে এবং তাঁকে প্রণাম করবে। এই ব্রত বিধবা এবং সৌভাগ্যবতী নারী উভয়েরই অবশ্য পালনীয়। যার ফলে সমস্ত প্রকারের পাপের শাস্তি তথা সকল উপদ্রব নষ্ট হয়।

কার্তিক মাসে দীপদান নিশ্চিতরূপে ভগবান বিষ্ণুর প্রীতি বর্ধন করে। এই কথা বলে ব্রাহ্মণ কুৎস অপর একটি গৃহে গমন করলেন। তখন ঐ ব্রাহ্মণী ব্রহ্মর্ষি কুৎসের এই রকম উপদেশ শ্রবণ করে নিজ কর্মের জন্য অনুতাপ করতে লাগল এবং সে স্থির করল যে সে অবশ্যই কার্তিক মাসে এই ব্রত পালন করবে।

তারপর যখন কার্তিক মাস আগত হলো তখন সে পুরো মাস সূর্যোদয়ের সময় প্রাতঃস্নান তথা বিষ্ণুকে দীপদান সহ নিষ্ঠা সহকারে এই ব্রত পালন করল। তারপর কিছুকাল বাদে আয়ু শেষ হলে তার মৃত্যু হলো। তখন সে স্বর্গলোকে গমন করল এবং পরে মুক্তি লাভ করল। সে সমস্ত মানুষ কার্তিক ব্রত পালন ও দীপদান আদি সম্পন্ন করে তারা যদি এই ইতিহাস শ্রবণ করে তাহলে তারাও মোক্ষ লাভ করে।

ব্রহ্মা এরপর বললেন- নারদ! এখন আকাশ দীপের মহিমা শ্রবণ কর। কার্তিক মাস আগত হলে যিনি নিয়মিত ব্রাহ্মমুহূর্তে স্নান করে আকাশদীপ দান করেন তিনি সমস্ত লোকের প্রভু এবং অন্তে মোক্ষ লাভ করেন। এই জন্য কার্তিক মাসে স্নান, দান আদি কর্ম করার সাথে সাথে ভগবান বিষ্ণুর মন্দিরে এই একমাস দীপদান করা অবশ্য কর্তব্য।

মহারাজ সুনন্দ চন্দ্রশর্মা নাম ব্রাহ্মণের পরামর্শ অনুসারে এই একমাস বিধিপূর্বক ব্রত অনুষ্ঠান করেছিলেন। কার্তিক মাসে প্রতিদিন প্রাতঃস্নান করে পবিত্র হয়ে কোমল তুলসীদল দ্বারা ভগবান বিষ্ণুর পূজা এবং রাত্রিতে আকাশ দীপ দিতেন। দীপ প্রদানের সময় তিনি এই মন্ত্র পাঠ করতেন-

দামোদরায় বিশ্বাস বিশ্বরূপধরায় চ।
নমস্কৃত্যা প্রদাস্যামি ব্যোমদীপং হরিপ্রিয়ম্॥

🙏♻️...হরিবোল....♻️🙏
-----------------------------------------------------

সদা সর্বদা শ্রী শ্রী রাধা ও কৃষ্ণের পাদপদ্মের কথা স্মরণ করুন, তাহলে শ্রীকৃষ্ণের দ্বারা আপনার জন্য বরাদ্দকৃত কার্য সম্পাদন করতে কোনও অসুবিধা অনুভব করতে হবে না।

জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণের কৃপার প্রতি অগাধ বিশ্বাস ও ভরসা রাখতে হবে।
শ্রীকৃষ্ণের পবিত্র নামটিতে অসাধারণ আধ্যাত্মিক শক্তি রয়েছে কারণ শ্রীকৃষ্ণের নাম স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণের থেকে আলাদা নয় ....

ঐকান্তিক ভালবাসা এবং নিষ্ঠার সাথে এই নামগুলি জপ করুন তবেই আপনি চিণ্ময় আনন্দ অনুভব করবেন:

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে ...(১০৮ বার)

হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করুন এবং সুখী হন ...

জয় শ্রীল প্রভুপাদ

পুজা পরবর্তী আড্ডায় তিন বন্ধু।
03/10/2025

পুজা পরবর্তী আড্ডায় তিন বন্ধু।

💤 ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমানোর উপকারিতাঘুম শুধু শরীরকে বিশ্রাম দেয় না, সঠিক ভঙ্গিতে ঘুমালে তা শরীর ও মনে আনে বাড়তি উপকারও। ব...
03/10/2025

💤 ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমানোর উপকারিতা

ঘুম শুধু শরীরকে বিশ্রাম দেয় না, সঠিক ভঙ্গিতে ঘুমালে তা শরীর ও মনে আনে বাড়তি উপকারও। বিশেষজ্ঞদের মতে, ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমানোতে রয়েছে কিছু বিশেষ সুবিধা—

১️⃣ হৃদপিণ্ডের চাপ কমে
যেহেতু হৃদপিণ্ড শরীরের বাম পাশে থাকে, ডান দিকে ঘুমালে এর উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে না। বিশেষ করে যাদের হৃদরোগের সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এটি বেশ উপকারী হতে পারে।

২️⃣ লিভারের উপর বাড়তি চাপ পড়ে না
লিভার ডান পাশে অবস্থান করে। ডান দিকে শোওয়ার ফলে এটি শরীরের নিচের দিকে থাকে এবং অতিরিক্ত চাপ কম পড়ে। ফলে হজম প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ হয়।

৩️⃣ অ্যাসিডিটি ও বুক জ্বালা কমায়
বাম দিকে ঘুমালে পাকস্থলীর অ্যাসিড সহজে উপরে উঠে আসে, যা হার্টবার্ন বা বুক জ্বালার কারণ হতে পারে। ডান পাশে শোওয়া এ ধরনের অস্বস্তি অনেকটা কমিয়ে দেয়।

৪️⃣ লিম্ফ সিস্টেম সক্রিয় থাকে
শরীর থেকে বর্জ্য ও টক্সিন বের করে দেয় লিম্ফ্যাটিক সিস্টেম। গবেষণায় দেখা গেছে, ডান দিকে ঘুমালে এ প্রক্রিয়া সহজ হয় এবং শরীর হালকা অনুভূত হয়।

৫️⃣ গর্ভবতীদের জন্য নয় – সতর্কতা
গর্ভবতী নারীদের জন্য বরং বাম দিকে শোওয়াই সবচেয়ে উপকারী। এতে ভ্রূণ ও গর্ভাশয়ে রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক থাকে, যা শিশুর জন্য নিরাপদ।

৬️⃣ শ্বাস-প্রশ্বাসে স্বস্তি আনে
যাদের ঘুমের মধ্যে শ্বাসকষ্ট বা স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা থাকে, ডান দিকে শোওয়া তাদের জন্য আরামদায়ক হতে পারে।
---
✨সুতরাং, ঘুম শুধু বিশ্রামের বিষয় নয়; ভঙ্গির সঠিকতা শরীরের সুস্থতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ডান দিকে কাত হয়ে ঘুমানো হতে পারে অনেকের জন্য আরামদায়ক ও স্বাস্থ্যকর অভ্যাস।

"ওঁ জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোস্তুতে" । "ওঁম সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে...
29/09/2025

"ওঁ জয়ন্তী মঙ্গলা কালী ভদ্রকালী কপালিনী দুর্গা শিবা ক্ষমা ধাত্রী স্বাহা স্বধা নমোস্তুতে" । "ওঁম সর্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থ সাধিকে শরণ্যে ত্রাম্বকে গৌরী নারায়ণী নমোহস্তুতে"।
মা তুমি এই পৃথিবীকে অসুরের হাত থেকে রক্ষা করো ।
প্রতিটা ঘরে শান্তি এবং সমৃদ্ধিতে পূর্ণ কর।

" শ্রী শ্রী শারদীয় দূর্গা পূজার আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা "

দিন তিনেক আগে, সোশ্যাল মিডিয়ায় আসামের সংগীত শিল্পী জুবিন গার্গের মারা যাওয়ার খবর পড়লাম। এই নামের কাউকে চিনি বলে আমার মনে...
28/09/2025

দিন তিনেক আগে, সোশ্যাল মিডিয়ায় আসামের সংগীত শিল্পী জুবিন গার্গের মারা যাওয়ার খবর পড়লাম। এই নামের কাউকে চিনি বলে আমার মনে পড়লোনা। পরে খবরের বিস্তারিত পড়তে গিয়ে দেখি, উনি ২০০৬ সালে গ্যাংস্টার সিনেমার ”ইয়া আলী” গানের সেই বিখ্যাত শিল্পী। আমার খানিকটা মন খারাপ হলো। ব্যস এইটুকুই!

কিন্তু ফেসবুক এলগরিদম কঠিন জিনিস। এরপর স্ক্রল করলেই জুবিন গার্গ বিষয়ক নানা খবর নিউজফিডে আসতে শুরু করল। এর মধ্যে একটা ভিডিও দেখে আমি নড়েচড়ে বসলাম।

জিপ টাইপের একটা গাড়িতে করে জুবিনের মৃতদেহ এয়ারপোর্ট থেকে গুয়াহাটি শহরের দিকে নিয়ে আসা হচ্ছে। রাস্তার দুই ধারে হাজার হাজার মানুষ দাঁড়িয়ে আছে! আর গাড়ির পেছনে পাগলের মত দৌড়াচ্ছে আরও কয়েক হাজার মানুষ!

এরপর গত তিন দিন ধরে আমি জুবিন গার্গকে নিয়ে পড়াশোনা করার চেষ্টা করলাম। তার দেয়া নানা সাক্ষাৎকার পড়লাম, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তার পারফম্যান্স দেখলাম! বোঝার চেষ্টা করলাম, একজন সংগীত শিল্পীর মৃ্ত্যুতে আসামের মানুষ এমন উন্মাদ হয়ে গেলো কি কারণে?

বিশেষ করে এমন এক সময়ে, যখন কেউ মারা গেলেও তাকে নিয়ে ট্রল হয়, মৃত ব্যক্তি আমার পছন্দের না হলে তার মৃত্যুর খবরের নিচে হাহা রিয়েক্ট পড়ে, মতাদর্শের বিপরীতে পোশাক পরলে মোরাল পুলিশিং করতে একবিন্দু পিছপা হইনা আমরা...

মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে ওঠা জুবিনের মা ও বোন সংগীত শিল্পী ছিলেন। মা ইলাবতি অসমীয়া ভাষার ঐতিহ্যবাহী লোকসংগীত শিল্পী ছিলেন, বোন জুনলিও অসমীয়া গান পরিবেশন করতেন। দুজনেই আঞ্চলিকভাবে পরিচিত ছিলেন। ওইটুকুই...

ছোটবেলায় মায়ের কাছে গান শিখেছেন জুবিন। স্কুল-কলেজে গান গাইতেন। ২০ বছর বয়সে, ১৯৯২ সালে আসে তার প্রথম এ্যালবাম। এরপর গানের সাথেই লেগে ছিলেন। ২০০২ সালে সড়ক দূর্ঘটনায় বোনের মৃত্যুর পর, জুবিনের জীবন পাল্টে যায়। বিরহ এসে চিরস্থায়ী ভর করে তার কণ্ঠে...

এরপর, দিনে দিনে তার গানের সংখ্যা বেড়েছে! প্রায় ৪০টা ভাষায় অন্তত ৩৮ হাজার গান রেকর্ড করেছেন তিনি। গেয়েছেন সব বয়সী মানুষের জন্য গান।

২০০৬ সালে প্রথমবারের মত বলিউডে ব্রেকথ্রু পান। অনুরাগ বসুর গ্যাংস্টার সিনেমায় ”ইয়া আলী”র মত হিট গান ও পরে ফিল্ম ফেয়ারের জন্য মনোনীত হওয়ার পর, আর আসামে পড়ে থাকার কোনো কারণ ছিলনা। কিন্তু গানের জন্য সারা দুনিয়া চষে বেড়ালেও, মূলত: আসাম ছেড়ে কোথাও যেতে চান নাই জুবিন। বিভিন্ন স্টেজশোতে নিজেকে ”পাহাড়ের সন্তান” বলে পরিচয় দিতেন।

১০/১৫ বছর আগে কোলকাতার বাংলা সিনেমা যখন পুরনো ধাঁচ থেকে আধুনিক বাণিজ্য ও আর্ট ফিল্মের ঘরানায় বদলে যেতে শুরু করল, তখন জিৎ ও দেবের বিভিন্ন সিনেমায় একের পর হিট গান উপহার দিয়েছেন জুবিন। বিশেষ করে বিরহ ও বেদনার গানে জুবিন হয়ে উঠেন বিকল্পহীন!

কোলকাতায় তার অধিকাংশ গানের সংগীত পরিচালক ছিল জিৎ গাঙ্গুলি। আসাম থেকে রাতের শেষ ফ্লাইটে কোলকাতায় এসে গান রেকর্ডিং করে ভোরে আবার আসাম ফেরত যেতেন। জিৎ গাঙ্গুলি বিরক্তি প্রকাশ করলে বলতেন, ”এমন দরদ আর বেদনার গান রাত গভীর না হলে গাওয়া যায়, দাদা?” মূলত ওসব গানের মধ্য দিয়েই জুবিন কোলকাতার বাংলাভাষী মধ্যবিত্তের জীবনে ঢুকে পড়েন। ঘটনাটা এমন দাঁড়ায় যে, ভাসান থেকে গায়ে হলুদ, ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট থেকে ট্রাকের পেছনে সাউন্ড বক্স ঝুলিয়ে পাড়া দাপানো- জুবিনের গান ছাড়া অসম্ভব!

কিন্তু প্রশ্ন হলো, গানতো আরও অনেকেই গায়। জুবিনের চেয়ে ঢের ভালো শিল্পীও আছে। কিন্তু জুবিনকে কেনো মানুষ এত ভালবাসতো? তাও আবার এমন এক শিল্পী, যে কিনা গত ৫/৬ বছরে একটা হিট গান দিতে পারে নাই, মদ ছিল যার জীবনের সঙ্গী, মঞ্চে উঠে এলোমেলো গিটার বাজাতেন, যেকোনো সামাজিক ইস্যুতে রাজনীতিবিদদের এক হাত ‍নিতে ছাড়তেন না। এমনও দিন গেছে, মঞ্চে উঠে মদের তোড়ে আর গানই গাইতে পারেন নাই। ঘুমিয়ে পড়েছেন।

ভাবেন তো আমাদের দেশে হলে কি হতো? ঘাড় ধরে মঞ্চ থেকে নামিয়ে দিতো না? আয়োজকদের হাতে মার খাওয়ার কথাতো! এরকম খবরতো আমরা প্রায়ই পত্রিকায় পড়ি!

আসল ঘটনা হলো, শুরু থেকেই ”মানুষ-জুবিন” ”শিল্পী-জুবিন”কে ছাড়িয়ে গিয়েছিলেন।

জুবিন ছিলেন সমাজ সেবক। যখনই কোথাও কেউ বিপদে পড়তো, জুবিন সেখানে হাজির! কেউ তার সাথে হাত মিলাতে আসলে জুবিন তার দিকে হাসিমুখে বুক বাড়িয়ে দিতেন। রাজ্যের নানা জায়গায় ঘুরে ঘুরে গাছ লাগাতেন। বিজেপি সরকার যখন রাজ্যে নাগরিক সনদ বানানো শুরু করলো, জুবিন কাউকে তোয়াক্কা না করে সেটার বিরুদ্ধে কথা বলেছেন। করোনার সময় নিজের বাড়ি ছেড়ে দিয়ে ওটাকে ”কোয়ারেন্টাইন সেন্টার” বানিয়েছিলেন।

পশু-পাখির প্রতি তার ছিল গভীর প্রেম। তাই তার মৃত্যুর পর তার স্ত্রী যখন পালিত কুকুর চারটাকে নিয়ে গেল জুবিনকে শেষবারের মত দেখার জন্য, সেই কুকুদের চোখে যে বিষাদ ঝরে পড়ল, সেই দৃশ্য দেখে বুকে মোচড় দিয়ে উঠে।

১৫ বছরের বিবাহিত জীবনে নিজেদের কোনো সন্তান ছিল না, কিন্তু জুবিন ও তার স্ত্রী গরিমা ছিলেন ১৫ সন্তানের পিতা-মাতা। গণধর্ষণের শিকার মেয়েকে তুলে এনে আশ্রয় দিয়েছেন নিজের কাছে। বাড়িতে ঝি”র কাজ করা কাজলি নামের এক মেয়ে যখন প্রবল নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুর সাথে লড়ছে, তখন জুবিন তাকে তুলে এনেছেন, আদালতে মামলা লড়েছেন, সেই মামলায় জিতেছেনও! সেই খবর বিদ্যুৎবেগে ছড়িয়ে পড়েছে ঘরে ঘরে। ফলে সব জেনারেশনের মানুষের অন্দরমহলে জুবিন ঢুকে পড়েছেন। ”ক্যারিয়ারে চারটা গান কম হোক, চারটা স্টেজ শো কম না হয় হলো, কিন্তু জীবন থেকে চারটা ভালবাসার মুহুর্তকে ছেটে ফেলা যাবে না” - এই ছিল তার জীবনদর্শন!

এতিমদের ভরণপোষণ দিতেন। মুসলমান এতিম শিশুদের জন্য খুলেছিলেন মাদ্রাসা ও এতিমখানা, একটা ভিডিওতে দেখলাম, জুবিনের মৃত্যুর পর সেই এতিমখানার ছাত্র-শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে তার গান গাইছে! রাস্তায় রাস্তায় তার ছবি টানিয়ে শোক পালন করছে সব ধর্মের মানুষ। মুসলমান ইমামের মোনাজাতে প্রদীপ জ্বালিয়ে বসে আছে প্রবল ধর্মবিশ্বাসী হিন্দু নারী! এক মুসলিম ছেলে জুবিনের ঢাউস সাইজের ছবির সামনে বসে কোরআন খতম দিচ্ছে…

জুবিনের একটা ডায়লগ খুব জনপ্রিয় ছিল। জনপ্রিয় শব্দটা আমি ইচ্ছা করেই ব্যবহার করলাম। ”আমার কোনো ধর্ম নাই, আমার কোনো জাত নাই। আমার কোনো ভগবান নাই। আমি মুক্ত। আমি কাঞ্চনজঙঘা।” বলেছিলেন, ”মৃত্যুর পর আমাকে পোড়াইয়ো না। ব্রক্ষ্মপুত্রে ভাসিয়ে দিও...”

তার মানে জুবিন নাস্তিক ছিলেন। মঞ্চে দাঁড়িয়ে এরকম একটা কথা বাংলাদেশের কেউ বললে তার কি অবস্থা হতো ভাবা যায়? আমার ২০১৩/১৪ সালের দিকে নাস্তিক ব্লগারদের মৃত্যুর কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। এখনকার পরিস্থিতি নাইবা বললাম!

অথচ যেই মানুষটা ভরা মঞ্চে টির্শাট উপরে তুলে বলে, ”আমার কোনো পৈতে নাই”, মানুষ সেসবকে গায়েই মাখলোনা। আসাম কিন্তু ছোট একটা রাজ্য। মানুষজন তত শিক্ষিতও না। অথচ সেই রাজ্যের প্রায় ”গেঁয়ো” ”অশিক্ষিত” লাখ-লাখ মানুষ একটা ধর্মহীন লোককে ভগবানের কাতারে বসিয়ে দিল।

আজ একটা ভিডিও দেখলাম, মহালয়ার প্রস্তুতি চলার কথা। দূর্গাপূজার উৎসব শুরু হয়ে যাওয়ার কথা এরমধ্যে। কিন্তু কোনো রাস্তায় একটা মানুষ নাই। স্কুল বন্ধ, অফিস আদালত অটো বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসা বাণিজ্য স্থবির। তিন দিনের রাস্ট্রীয় শোক! সুইগি, জামোটায় সব অর্ডার বন্ধ! ওখানকার মুখ্যমন্ত্রী বাকি সবার সাথে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে জুবিনের গান গাইতেছে, আর চোখ মুছতেছে...

এক ঘরোয়া আড্ডায় জুবিন মজার ছলে বলেছিলেন, ”কেউ মরলে বোম্বে বন্ধ হয় না, চেন্নাই বন্ধ হয়না। কিন্তু আমি মরলে আসাম সাত দিনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ আমি লিজেন্ড!” আসামবাসী যেনো জুবিনের কথাকে বাস্তবে রূপ দিতে বদ্ধপরিকর।

মানুষ তার এক জীবনে টাকা-পয়সা-সোনাদানা-হীরে-জহরত কত কি জমায়! গত তিন দিনে আমার মনে হলো, জুবিন মানুষ জমাতে চেয়েছেন।

তাই তার যতগুলো ভিডিও আমি দেখলাম, দেখলাম যে, এই মানুষটার চোখে অসম্ভব প্রেম। যখনই কারো দিকে তাকান, সেই দৃষ্টি প্রেম আর আকুতিতে ভরা। একেবারে পিউর। ফলে ৫২ বছরের জীবনে আসামের মত এক ছোট শহরের শিল্পী এক’শ কোটি টাকার মালিক হয়েও, রাস্তার পাশের ঝুপড়িতে বাবু সেজে বসে ভাত খেতে পারতেন। পকেট থেকে টাকা বের করে সেখান থেকে গুণে গুণে কয়েকটা নোট পাশে বসে থাকা দরিদ্র মানুষটার হাতে গুঁজে দিয়ে বাকিটা আবার নিজের পকেটে রাখতেন। না, সেই দেয়ায় কোনো স্টারডম নাই, কোনো লোক দেখানো ভেল্কি নাই।

ফলে আসামের মানুষ এক সামান্য জনদরদি গায়কের ভেল্কিতে আটকে গেছে!

রবিন শর্মার একটা বইয়ের নাম, ”হু উইল ক্রাই, হোয়েন ইউ ডাই।” এটা আমার খুব প্রিয় একটা বই। গত তিনদিন ধরে এই বইটার কথা বারবার মনে পড়ছে।

নাহ! মৃত্যুর পর সবার জন্যই অনেক মানুষকে দলবেঁধে কাঁদতেই হবে, এমন কোনো কথা নেই। এটা ব্যক্তিগত চয়েজ!

কিন্তু এক অসমিয়া শিল্পীর মৃত্যুর পর যখন তার অন্ত্যোষ্টিক্রিয়ায় ১৭ লাখ মানুষ জড়ো হয়ে এক সাথে তার গান গায়, চিৎকার করে কাঁধে, তখন ছাই হয়ে বাতাসে লীন হতে থাকা শরীরের প্রতিটা ইঞ্চি কেমন বোধ করে, সেটা ভেবে শিহরিত না হয়ে উপায় কি?

_সংগৃহীত

27/09/2025

ট্যাক্স ছাড়া ১৯ ধরনের যেসব পণ্য আনা যাবে বিদেশ থেকে

জেনে নিন এবং নিজের টাইমলাইনে রেখে দিন

বর্তমানে ১২ বছর বা তার বেশি বয়সী যাত্রী ৬৫ কেজি এবং ১২ বছরের নিচে যাত্রীরা ৪০ কেজি ওজন পর্যন্ত ব্যাগেজ ট্যাক্স ফ্রি আনতে পারবেন।

ট্যাক্স ছাড়া আনা যাবে যেসব পণ্য (১৯ ধরনের):
১) সর্বোচ্চ ২টি MTE ব্যবহৃত ও ১টি নতুন মোবাইল
২) ২৯ ইঞ্চি পর্যন্ত টিভি
৩) ল্যাপটপ
৪) ডেস্কটপ
৫) প্রিন্টার
৬) স্ক্যানার
৭) ভিডিও/ডিজিটাল ক্যামেরা
৮) মাইক্রোওয়েভ
৯) রাইস কুকার
১০) প্রেসার কুকার
১১) গ্যাস ওভেন
১২) ব্লেন্ডার
১৩) কফি মেকার
১৪) সেলাই মেশিন
১৫) টেবিল ফ্যান, খেলাধুলার সামগ্রী
১৬) এক কার্টন সিগারেট
১৭)সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম সোনার গয়না (বছরে একবার)
১৮) মিউজিক সিস্টেম (সিডি ও স্পিকারসহ)
১৯) ১৫ বর্গমিটার আয়তনের কার্পেট

ট্যাক্স দিয়ে আনা যাবে যেসব পণ্য (১১ ধরনের):
• ১১৭ গ্রাম পর্যন্ত সোনার বার (প্রতি ভরিতে শুল্ক ৫০০০ টাকা, বছরে একবার)
• ২৩৪ গ্রাম রৌপ্যবার
• ৩০ ইঞ্চির বেশি টিভি, হোম থিয়েটার
• রেফ্রিজারেটর, এয়ারকন্ডিশনার, ডিপ ফ্রিজ
• ঝাড়বাতি, এইচডি ক্যামেরা, ডিশ অ্যানটেনা
• ওয়াশিং মেশিন, ডিশওয়াশার, ক্লথ ড্রায়ার

এবার থেকে বছরে একবার একটি নতুন মোবাইল এবং সর্বোচ্চ ১০০ গ্রাম সোনার গয়না বিনা শুল্কে আনার সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।

Address

Nabiganj
3370

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when মাটির গন্ধ posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Contact The Business

Send a message to মাটির গন্ধ:

Share