
27/06/2025
আজ শ্রীশ্রীজগন্নাথদেবের পুণ্য রথযাত্রা ✨🤍
"জগন্নাথ স্বামী নয়ন পথ গামী"
#শ্রীশ্রীঠাকুর—জগন্নাথদেবের যে মন্দির আছে ওখানে, তা ছিল একটা culture এর (কৃষ্টির ) কেন্দ্র। সে যে কত আগের থেকে ছিল তার ঠিক পাওয়া যায় না। চৈতন্যদেবের সময় থেকে না, তারও আগে থেকে। ওখানে একটা বিরাট culture (কৃষ্টি) ছিল। তার সাক্ষী দিচ্ছে জগন্নাথদেবের মন্দির, ভুবনেশ্বরের মন্দির, কোনারকের মন্দির। ··জগন্নাথদেবের ভোগের মধ্যে আছে পান্তাভাত । পান্তাভাতে যথেষ্ট পরিমাণে বি-ভিটামিন থাকে। ওতে একটা flavour ( গন্ধ ) থাকে, ওটা health-এর (স্বাস্থ্যের ) পক্ষে খুব উপকারী। পান্তাভাত, কলা, দই—খুব উপকারী, অথবা পান্তাভাত, কাঁচা লঙ্কা আর নুন।
[দীপরক্ষী প্রথম খণ্ড, পৃষ্ঠা নং ১৬]
“পুরীতে জগন্নাথের মন্দিরে যদি যাও, তাহ’লে দেখতে পাবে জগন্নাথের হাত নেই। জগন্নাথ জনে-জনে হাত বিলিয়ে নিজে হাতহীন হ’য়ে ব’সে আছেন। আমাদের উপর তাঁর কোন হাত নেই। কিন্তু যেই আমরা তাঁকে আমাদের
হাত দু’খানি দিয়ে নিবিড়ভাবে আঁকড়ে ধ’রবো অমনি আমরা তাঁর হাতে চ’লে যাব।
তখন তাঁর ইচ্ছায় আমরা চালিত ক’রবো নিজেদের। এমনি ক’রেই আমরা সেই মঙ্গলের
অধিকারী হবো— যে-মঙ্গল তিনি আমাদের দিতে চান”।
(আলোচনা প্রসঙ্গে, নবম খণ্ড, ৫/৯/১৯৪৭)
#জগন্নাথ দেবের হাত নেই
প্রশ্ন- কর্ম্মের ভিতর-দিয়েই তো হ'চ্ছে, এর মধ্যে কি ঈশ্বর আছেন?
শ্রীশ্রীঠাকুর - কর্ম্মজগতের উপরে ধর্ম্ম, বিভু, ঈশ্বর। আমি কই, তিনি আছেন এবং যা-কিছু হচ্ছে তাঁর বিধি-অনুযায়ী হ'চ্ছে। ফলকথা জগন্নাথের হাত নেই। তাঁকে যদি ধরি, তিনি টেনে নিতে পারেন। কিন্তু জগন্নাথ আমাকে ধ'রে নিতে পারেন না। আমি নিজেকে যেমন ক'রেছি, তেমনি হ'য়েছি, তিনি আমাকে তাই-ই মঞ্জুর ক'রেছেন। (আঃপ্রঃ২২/৯১)
শ্রীশ্রীঠাকুর -.... ছোটবেলা থেকে জগন্নাথের মূর্ত্তি দেখছি। ভাবতাম, কারিকর সব তৈরী করতে পারল, দুখানা হাত তৈরী করতে পারল না- এ কি রকম! কিন্তু পরে মানে বুঝলাম। ভগবানের হাত নেই, যেমন ছাওয়াল জন্মে গেলে মা- বাপের কোন হাত নেই তার উপর। সে তাদের মানতেও পারে আবার ইচ্ছা করলে অমান্যও করতে পারে। দুটোর ফল কিন্তু দুরকম। আমাদের দুহাত দিয়ে ভগবানকে আঁকড়ে ধরে চললে তাঁর অসীম শক্তির সুযোগ পাই আমরা। আমরা তাঁর দিকে যতখানি এগোই, ততখানি দয়া পাই তাঁর। তাঁর হাত না থাকলেও পা আছে, তিনি আমাদের টেনে নিয়ে যেতে পারেন যদি আমরা সক্রিয় অনুরাগের সঙ্গে তাঁকে ধরে থাকি। আমরা যত তাঁকে ধরে চলি তত সপরিবেশ আমাদের বাঁচাবাড়ার পথ, ঐক্যের পথ, মিলনের পথ, মঙ্গলের পথ খুলে যায়। প্রবৃত্তির পথে চ'লে তার কুফলের জন্য তাঁকে দায়ী করার কোন মানে হয় না। তবে আমরা যে-কোন অবস্থার মধ্যেই পড়ি না কেন, তাঁকে ধ'রে তাঁর মাঙ্গলিক নিয়ন্ত্রণের পথে এগুতে পারি।"
(আঃপ্রঃ ১২/১১৩)
শ্রীশ্রীঠাকুর-- জগন্নাথ দেখেছ? দারুণ মূর্ত্তি! বল তো বিশেষত্ব কী? বৈশিষ্ট্য এই যে,কারিকর-মূর্ত্তি ভাল কও, খারাপ কও সব করেছিল,করেনি শুধু হাত দুখানা,অর্থাৎ জগন্নাথ টুণ্ডা। এ কথাটা আমার আগেও মনে জেগেছে,এখনও ভাবি-এর মানে কী? জগন্নাথের টুণ্ডা মূর্ত্তি এতে বোঝা গেল কী? বুঝলাম জগন্নাথের হাত নেই,পা আছে। সেইটা মিলিয়ে দেখতে পাই যেই যেখানে নাথ হয়েছে তারই হাত নেই,পা আছে।
শ্রীশ্রীঠাকুর হঠাৎ জিজ্ঞাসা করলেন-- তোমার ক' ছেলে?
ভাগবতীবাবু-- চার ছেলে।
শ্রীশ্রীঠাকুর-- তাদের সব-কিছুর উপর তোমার হাত আছে?
ভাগবতীবাবু-- নেই।
শ্রীশ্রীঠাকুর-- কারও ছেলের উপর হাত থাকে না যদি ছেলে স্বেচ্ছায় সে অধিকার না দেয়। তাই বলি,বাপকে ছেলে যদি তার টান দিয়ে, সেবা দিয়ে পুরোপুরি আঁকড়ে ধরে,তা'হলেই তার হাত আছে-চালিয়ে নিতে পারে নিজের বুদ্ধি ও অভিজ্ঞতা মত। তাই জগন্নাথকেও যদি আমরা আমাদের active (সক্রিয়) টান দিয়ে ধরি,তাঁর পা আছে,তিনি পারেন টেনে নিতে আমাদের গন্তব্যে। তাঁর অকরণীয় কিছু নেই,কিন্তু এর মধ্যে একটা যদি আছে-যদি আমরা তাঁকে ধরি ও বরাবর ধ'রে থাকি।
আঃপ্রঃ--১২ খণ্ড। ২৪শে আষাঢ়,বৃহস্পতিবার,১৩৫৫ (ইং ৮/৭/১৯৪৮)।।
আমাদের পেজের পক্ষ থেকে সকলকে জানাই রথযাত্রা'র আন্তরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা।🙏
 ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄
[পরবর্তী এইরকম পোষ্ট পেতে আমার এই পেজটিকে Follow করুন!]