21/08/2024
প্রেয়সীর কাটার আঘাতও কি মধু লাগে??
হ্যা,,বিষয়টা অনেকটা এমনই।
চলমান ইস্যু নিয়ে কিছু কথা না বল্লে নিজের বিবেকের সাথে অন্যায় করা হবে।
ভারতের পানিতে কি ডুবছেনা হিন্দুরা??কোথায় মোদির সেই মায়াকান্না??
মায়াকান্না এখন থাকবেনা এটা আমি আপনি সবাই মনে মনে জানি,বুঝি। মোদি একজন তুখোড় রাজনীতিবিদ। তবে সে আপনার আমার মত নিজ পায়ে কুড়াল মারা রাজনীতি করেনা। তার রাজনীতি কথিত সংখ্যালঘু নিয়ে অর্থাৎ তিনি সংখ্যালঘু রাজনীতি আসক্ত।
স্বরনকালের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় ডুবছে আমার দেশ। ফেনি,কুমিল্লা,নোয়াখালী এবং সিলেট প্লবিত। ডুবছে ৯০ হাজারের বেশি গ্রাম,লক্ষ লক্ষ মানুষ। এখানে আছে হিন্দু,মুসলমান,মসজিদ,মন্দিরসহ আরো অনেক ধর্মীয় উপাসনালয়। মসজিদে আছে কুরআন,মন্দিরে আছে দেবদেবীর মূর্তিসহ হিন্দুধর্মের ধর্মীয় বিভিন্ন উপকরণাদি।
যুদ্ধের পর থেকে চুষতে থাকা ভারতের সর্বশেষ এই পানি নির্যাতনের কারনে এসব অঞ্চলে বসবাস করা হাজার হাজার হিন্দু পরিবারও অবর্ণনীয় ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। ভারতীয় দেওয়া পানিতে বহু মন্দির, দেবদেবী, হিন্দুদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ডুবে গেছে ইতিমধ্যে।
ছাত্রজনতার আন্দোলন,অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে খুনী,স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার ও তার পোষা গণমাধ্যম বাংলাদেশে কথিত হিন্দু নির্যাতনের নামে ব্যাপকভাবে মিথ্যা প্রোপাগান্ড ছড়ায়,দেশ বিদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন সংবাদ প্রচারের নামে নিজের সংখ্যালঘু রাজনৈতিক শক্তিকে কিছুটা শক্তিশালী করার চেষ্টা করে। কিন্তু আজ তার ছেড়ে দেওয়া পানিতে হাজার হাজার হিন্দু পরিবার বিপর্যয়ের মুখে পড়লেও এ নিয়ে টুঁ শব্দ করতে দেখা যাচ্ছে না তাকে কিংবা তার পোষা মিডিয়াকে। এদেশেরি বহু তেলবাজ দেখেছি এতদিন,যারা মোদির দেখানো পথ অনুসরণ করে রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের ব্যাপক চেষ্টা চালিয়েছে। তাদেরও নেই এ নিয়ে তেমন কোনো দৌড়ঝাপ,মাথাব্যথা। শাহবাগেও নেই কোনো উত্তাল কন্ঠের আন্দোলন। কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় নাই হিন্দু সম্প্রদায়কে ট্রাম্পকার্ড বানিয়ে খেলা করা মোদি সরকারের পক্ষ থেকেও।
ভারত কি আসলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুদের ভালো চায় নাকি তাদের ব্যবহার করে কেবলই নিজেদের ফায়দা লুটতে চায়,প্রশ্নটা রেখে গেলাম সকল হিন্দু ভাই-বোনদের কাছে।
যখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়তাম তখন থেকে শুনে এসেছি "বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ"। মায়ের মুখ থেকে শুনে এসেছি এদের মাটি ও মানুষের শেকড় নদীর সাথে একই সুতোয় গাথা। আর এই নদীকে ব্যবহার করেই ভারত ধ্বংস করছে বাংলাদেশকে।
চলমান ইস্যুতে গুগল ঘাটাঘাটি করে জানলাম দু’ দেশের মধ্যে ৫০টির বেশি নদীর যোগ সংযোগ আছে যার প্রায় প্রতিটি নদীতে ভারত বাঁধ নির্মাণ করছে। ফলাফলস্বরুপ শুকনো মওসুমে ইচ্ছামতো পানি আটকে রাখছে আর বর্ষা মৌসুমে একযোগে বাধগুলাকে ছেড়ে দিয়ে পানির সয়লাব করে বাংলাদেশকে মারছে।যার ফলে প্রতি বছরেই আমাদের দেশের একটি অংশ বন্যায় প্লাবিত হচ্ছে।
ফসলাদি, ঘরবাড়ি ও সম্পদের যে অবর্ণনীয় ক্ষতি হচ্ছে তা একবার ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলেও বুকটা কেপে উঠে।
বন্যার সঙ্গে দেখা দেয় নদীভাঙন। নদী ভাঙনে অসংখ্য গ্রাম-জনপদ, শস্যক্ষেত, বৃক্ষ এমনকি শেষ সম্বল ভিটেমাটি টুকুও নদীগর্ভ বিলীন হয়ে যায়।
বাংলাদেশ-ভারত সিমান্তে নদীগুলোর ভাঙনে বাংলাদেশ এযাবৎ বহু ভুমি হারিয়েছে,নদীভাঙ্গনে হারানো ম্যাক্সিমাম ভুমিগুলো পরবর্তীতে ভারতের দখলেই গিয়েছে।নিশ্চিত থাকুন ভারত বাংলাদেশের প্রতি ১ টি বাক্যও যদি উচ্চারণ করে তবে সেটি নির্ঘাত বোকা বাঙ্গালীকে মারতে এবং তাদের উদ্দেশ্য সফলের লক্ষে করেছে। অথচ এই মোদি এবং ভারতকেই আবার এদেশেরই কিছু সো-কল্ড পলিটিশিয়ান তাদের বন্ধু ভাবছে,সাহায্য চাইছে,প্রাধান্য দিচ্ছে এমনকি মৃত্যুর পূর্বমুহূর্তে একবার ভারতের নামটি উচ্চারণ করে ইহকাল ত্যাগ করছে। ধিক্কার জানাই আপনার মত নব্য রাজাকারের বংশধরদের।জনগণ কম কষ্টে
অর্ধনগ্ন করে গণপিটুনি দিয়ে কান ধরে উঠবস করায়না ভাই.!!
আপনি মানুষ,এসবে মায়া লাগাবেন তবে তার আগে প্লিজ.... একটাবার কথাগুলা বিবেকের খাচায় ট্যানেস্ফার করিয়েন।
এটা বুঝতে আপনাকে কষ্ট করতে হবেনা,খুব সোজা একটা বিষয় চিন্তা করুন ; এই যে ভারত বাঁধ খুলে দিয়ে বাংলাদেশকে ডুবিয়ে দিল, মোদি কী ভেবেছে এতে কত শত হিন্দুর ঘরবাড়ি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে ফসল ডুবে গেছে। স্বপ্ন ভেঙে কত হিন্দু যুবক নিঃস্ব হয়ে গেছে? কত মন্দির, দেবদেবী ডুবে গেছে? এদেশের হিন্দুদের নিয়ে যদি মোদি এবং ভারতের এত মাথাব্যথা থাকতো তাহলে এইভাবে পানি ছাড়ার আগে তাদের কথা চিন্তা করত।বাংলাদেশ এবং হিন্দুদের নিরাপত্তায় অন্ততপক্ষে একটাবার ঘোষনা দিয়ে হলেও বাধ ওপেন করতো। কিন্তু মোদির দরকার রাজনীতি,কোনো হিন্দু কিংবা কোনো সম্প্রদায় নয়। আবার এই সহজ-সরল হিন্দুসম্প্রদায় ভাই-বোনদের ঢাল বানিয়েই তার সিংহাসন।
শুধু এতটুকুতেই শেষ না।
বাংলার মানুষ কিংবা হিন্দুদের নিয়ে ভারতের মিডিয়া বা হিন্দুত্ববাদীরাও কোন কথা বলেনাই, বলবেও না। কথা বলবে না বাংলাদেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। রানা দাশগুপ্ত কিংবা প্রিয়া সাহারা ভারতকে বলবে না, আপনাদের ষড়যন্ত্রে আর নির্যাতনে এই দেশের শত সহস্র হিন্দু নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। ভারত এবং মোদি হিন্দুদের ডুবিয়ে মারলে তা নিয়ে কেউ কথা বলে না।আসলে তারা যেটা করে সেটা হলে সংখ্যালঘু নামে রাজনীতি।ওদের মুখ্য উদ্দেশ্য রাজনীতি,ঢাল সংখ্যালঘু।এই সংখ্যালঘু কেও নির্যাতনের শিকার হলে কিংবা মারা গেলে ওরা বরং বেশি খুশি হয়।তাতে রাজনৈতিক মঞ্চ শক্ত হয়। মনে রাখবেন,আপনি ওদের কাছে শুধুই একজন হিন্দু না,একটি রাজনৈতিক গুটিও।
পরিশেষে এতটুকুই বলতে চাই,নিজেকে আর ব্যবহৃত হইতে দিয়েন না। ওদের কুটকৌশলে রাজনৈতিক গুটি হয়ে থাইকেন না। প্লাবিত ৪ জেলায় বহু হিন্দু ভাইদের খামারের মুরগী,গোয়ালের গরু ভেসে গেছে। বহু হিন্দু ভাই পথে বসেছে,বৃদ্ধ মায়েদের আহাজারি থামছেনা। এর প্রতিবাদ করুন। হিন্দু পরিষদ, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, হিন্দু মহাজোট আপনারা কোথায়? আসুন!
রাজপথে নামুন!
পরিকল্পিত এই নির্যতনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন।
নাকি প্রেয়সীর কাঁটার আঘাতও মধু লাগে?