10/09/2025
তামান্না মেয়েটা প্রেগন্যান্ট ছিল। ডাকসুতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে দাঁড়িয়েছিল মেয়েটা। একদমই সাদাসিধে, স্টুডেন্টবান্ধব ছিল সে।
প্রেগন্যান্ট অবস্থায় ঢাবিতে আসাটা তার জন্যে কষ্টকর ছিল তাই তার হাসবেন্ডকে পাঠিয়েছিল ভোটের ফলাফল টা জানার জন্যে।
যেহেতু সে ভোটে দাঁড়িয়েছে তাই তার হাসবেন্ডই ক্যাম্পাস থেকে ভোটের সব আপডেট দিচ্ছিল তাকে।
তার হাসবেন্ডও খুশি মনেই ক্যাম্পাসে এসেছিল। বউ নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে এতে বউয়ের চেয়ে সে নিজেই বেশি খুশি ছিল।
এমনকি সবাইকে জিজ্ঞেসও করছিল তার বউ কেমন সাড়া পাচ্ছে, কেমন ভোট পাচ্ছে।
কিন্তু বউয়ের জন্যে ক্যাম্পাসে আসাটাই যেন কাল হয়ে দাঁড়াল তার। ছাত্রদলের পোলাপানরা দাঁড়ি টুপি পড়িহিত অবস্থায় তাকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে শিবির, শিবির বলে স্লোগান দিয়ে হামলে পড়ে তার উপর।
হাসবেন্ড টা বারবার চিৎকার করে বলছিল - ভাই আমি শিবির না, আমার বউটা প্রেগন্যান্ট, ও নির্বাচনে দাঁড়িয়েছে তাই ভোটের খবরটুকু নিতে এসেছি শুধু।
কিন্তু ছাত্রদলের পোলাপানরা কথা শুনে না, এলোপাতাড়ি চড় থাপ্পড় দিতে থাকে, মারতে থাকে।
ওরা মারছিল আর জোরে জোরে বলছিল- তোর দাঁড়ি টুপি আছে, তুই শিবির।
এগুলো বলেই আরও জোরে জোরে মারতে থাকে। যেন শিবির হলেই মারাটা জায়েজ!
এইদিকে প্রেগন্যান্ট শরীরে অসুস্থ অবস্থায় তামান্না বাসায় হাসবেন্ডের খবরের জন্যে অপেক্ষা করছিল, ভোটের আপডেটের জন্যে অপেক্ষা করছিল।
কিন্তু সে জানতোই না ক্যাম্পাসে তার হাসবেন্ডকে কতটা নির্মমভাবে মারধর করা হচ্ছে শুধুমাত্র দাঁড়ি টুপি পড়েছে বলে।
এটা আজকে ছাত্রদলের নেতাদের ক্যাম্পাসের কর্মকান্ড।
নির্বাচনের পুরোটা সময় জুড়ে ওরা ভোট কারচুপির গুজব ছড়িয়েছে, দাঁড়ি- টুপি দেখলেই মারধর করেছে, মোনামী ম্যামকে মা*গী বলে গালি দিয়েছে, ভিসি স্যারের সাথে দুর্ব্যবহার করেছে।
অথচ নির্বাচনের আগে ওরা বলতো আমরা ক্যাম্পাসে স্টুডেন্টদের জন্যে কাজ করব, নিরাপত্তা দিব।
স্ত্রী প্রেগন্যান্ট বলার পরও সামান্য দাঁড়ি, টুপি দেখেই যারা সাধারণ মানুষকে মারতে পারে তারা ক্যাম্পাসে আর কতটুকুই বা নিরাপত্তা দিবে?