Last Poem

Last Poem "ফুল শুকিয়ে গেছে,কিন্তু কাটা তো আছে!
ফুল থাকলে বুকে মালা হয়ে থাকতো,
এখন কাটা__কেবল পায়ের তলায় বিধবে"

উপন্যাস:মৃত্যুক্ষুধা
লেখক:কাজী নজরুল ইসলাম

12/06/2025
এই যে আমায় ছাড়া তোমার দিব্যি দিন কেটে যাচ্ছে, আমায় ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছেরা তোমায় পাচ্ছে না, তীব্র আলিঙ্গনে বুকে টেনে নিয়ে দু...
07/06/2025

এই যে আমায় ছাড়া তোমার দিব্যি দিন কেটে যাচ্ছে, আমায় ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছেরা তোমায় পাচ্ছে না, তীব্র আলিঙ্গনে বুকে টেনে নিয়ে দুঠোঁটে পাগলের মতো চুমু খাওয়ার ক্রেবিংস হচ্ছে না, তোমার কী প্রেম পায় না?

হতাশার অতলে তলিয়েও আমি ডুবে থাকি তোমার কল্পনায়। তোমার চুলে, তোমার শরীরের ঘ্রাণে, তোমার চোখের কাজলে কেমন মাতোয়ারা হয়ে থাকি, উন্মাদ হয়ে থাকি। কিন্ত কই? তুমি তো কাছে ডাকো না।

ভালোবাসলে কি দূরে থাকা যায়?
মানুষটাকে ছুঁতে ইচ্ছে করে না? জড়িয়ে ধরার ব্যাকুলতায় শরীরে জ্বর আসে না? প্রতি রাতে ঘুম ভেঙ্গে গেলে অস্থির লাগে না? বৃষ্টির ঝুমঝুম শব্দে হৃদয় উতলা হয়ে ওঠে না?

আমি তো সেই কবে থেকেই ব্যাকুল হয়ে আছি। তুমি আসবে, পাশে বসবে, তারপর অভিমান ভেঙ্গে দিয়ে দু– ঠোঁটে চুমু খেয়ে বলবে, “ ভালোবাসি। "

আমি তো সেই কবে থেকেই হৃদয়ে অসীম প্রেম নিয়ে দ্বিকবিদিক ছুটাছুটি করছি। তোমায় আর পাচ্ছি কই? বলো...

এভাবে ভালোবাসা হয়?
কতদিন কাছে আসো না, ভালোবাসো না।
অথচ তুমি কাছে এলেই উন্মাদ আমি কবি থেকে হয়ে যাবো কামুক প্রেমিক। হতাশায় মুখ থুবড়ে পড়ে থেকেও তোমার কাজল চোখে তাকিয়ে ছুঁয়ে দিবো তোমার ঠোঁট। অভিমানে প্রেম বেড়ে যায়, দূরত্বে বাড়ে অভিযোগ! আমায় না ছুঁয়েও তুমি তো দিব্যি অসুখে ভুগছো। অথচ তোমায় ছোঁয়ার নেশায় আমি পুরো পৃথিবী থেকেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছি!

লেখায়:- মোঃ ফাহাদ মিয়া🌼

#এই #আর #না

পাঁচ জন মিলে বাসায় গাজার আসর বসিয়েছিল। তারমধ্যে তিনজন ছেলে আর দুইজন মেয়ে। সবাই মিলে একটা ভাড়া বাসায় গাঁজা এবং অন্যান্য ম...
17/05/2025

পাঁচ জন মিলে বাসায় গাজার আসর বসিয়েছিল। তারমধ্যে তিনজন ছেলে আর দুইজন মেয়ে।
সবাই মিলে একটা ভাড়া বাসায় গাঁজা এবং অন্যান্য মাদকদ্রব্য খাচ্ছিল।

ওই তিনজন ছেলে এবং একটা মেয়ে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক বাকি মেয়েটাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বেশি গাঁজা খাওয়ায়।

এতে করে ওই মেয়েটা অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং ঘুমানোর কথা বলে।

তিনটা ছেলে এবং একজন মেয়ে তখন ক্রোর হাসি হাসে, বুঝতে পারে তাদের উদ্দেশ্য হাসিল হতে যাচ্ছে।
অসুস্থ হয়ে যাওয়া মেয়েটা জানতে চায়
বিছানাটা কোনদিকে।

দুইটা ছেলে তখন মেয়েটাকে রুম দেখাতে নিয়ে যায়। তারপর মেয়েটা যখন বিছানায় বসে তখনই তাড়াহুড়ো করে ছেলেগুলো গিয়ে দরজাটা লাগিয়ে দেয়।

মেয়েটাকে বাঁধা দিতে চায় কিন্তু তাকে জোর করে অতিরিক্ত সেবনের করানোর কারণে কোন বাঁধা দিতে পারে না।

তারপর দরজা লাগিয়ে সবগুলো ছেলে মিলে তাকে পরপর কয়েকবার ধ*র্ষণ করে। বাইরে থেকে তখন বাকি মেয়েটা পাহারা দিচ্ছিল।

নিজ বান্ধবীকে রুমে ধ*র্ষণ করা হচ্ছে আর অন্য মেয়েটা দরজার সামনে বসে পাহারা দিচ্ছে যাতে কেউ আসলে সতর্ক করতে পারে।

যেই মেয়েটা বাইরে থেকে পাহারা দিচ্ছিল সে নারী সুরক্ষা আন্দোলনের নেত্রী মার্জিয়া প্রভা। আর ছেলেগুলো ছাত্রফ্রন্টের রায়হান আনসারি এবং সজিব তুষার।

আজকে "নারীর ডাকে মৈত্রী যাত্রা" আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া মেয়েটাই এই মার্জিয়া প্রভা। সে আজকে এসেছে নারীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে।

অথচ ৩রা আগস্টেই মৌলভীবাজারের ওই বাসায় সে তার বান্ধবীর ধ*র্ষণকারীদের সাহায্য করেছিল। তার সাহায্যের কারণেই নির্মমভাবে ধ*র্ষিত হয়েছিল তার নিজ বান্ধবী।

তারপর বান্ধবীকে সবাই মিলে ব্ল্যাকমেইলও করেছিল যাতে বিষয়টা কাউকে জানাতে না পারে।

এই মার্জিয়া প্রভার নেতৃত্বে আজকের আন্দোলনে সবাই প্ল্যাকার্ড হাতে স্লোগান দিয়েছে-
"আমরা সবাই বেশ্যা, বুঝে নেবো হিস্যা।"

এটাই হচ্ছে মার্জিয়া প্রভা নামক তথাকথিত নারীবাদীদের স্লোগান। এরা নারীদের সুরক্ষা দিতে এসে বেশ্যা নামক হীন শব্দ ধারণ করতে বলে।

অথচ বাচ্চা মেয়ে আছিয়া, রোজারা যখন ধ*র্ষিত হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাতে কাতরাতে মারা যায় তখন এই তথাকথিত মার্জিয়া প্রভাদের পাওয়া যায় না।

ঈদে যখন গার্মেন্টসের নারীরা ৩ মাসের বেতন না পেয়ে রাস্তায় আর্তনাদ করে তখন এই তথাকথিত নারীবাদীরা মুখ লুকিয়ে থাকে।

স্বামী হারিয়ে ছোট ছোট দুধের বাচ্চা নিয়ে রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো নারীদের দুঃসময়েও এই নারীবাদীদের পাওয়া যায় না।

তাদেরকে পা

11/05/2025

আ.লীগ আর বিএনপি দুইটাই নিষিদ্ধ করা উচিত

উনি আরেকজন উপস্থাপিকা। অতিথিকে বেগুন, শসা এগুলো নিয়ে প্রশ্ন করেন। বেগুন শসা হাতে ধরে বলে যে এগুলো আপনার কাজে লাগবে। গেস...
08/05/2025

উনি আরেকজন উপস্থাপিকা।

অতিথিকে বেগুন, শসা এগুলো নিয়ে প্রশ্ন করেন।

বেগুন শসা হাতে ধরে বলে যে এগুলো আপনার কাজে লাগবে।

গেস্ট কে জিজ্ঞেস করে কক্সবাজারে গেলে তোমাকে আইফোন কে দিয়েছে ?

ভাবলে অবাক লাগে উনি ঢাকা ইউনিভার্সিটি থেকে পড়াশোনা করা।

দেশে অনেক বিকৃত রুচির মানুষ আছে।

এদের প্রোগ্রামের টার্গেট সেই দর্শক রাই।

কিন্তু সমাজে তো প্রচুর সুস্থ মানুষ আছে।

বাচ্চাকাচ্চা আছে।

আমাদের কিছু পারিবারিক মূল্যবোধ আছে।

বাসায় এদের বাবা-মা আছে।

এই মেয়েগুলো এবং যারা এদের প্রডিউসার তারা সমাজের সাধারণ ভদ্রতা এবং রুচিবোধকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে।

এর সুদূরপ্রসারী পরিণাম ভয়াবহ।

সমাজ থেকে লজ্জা একদিনে উঠে যায় না।

আজকালকার পোলাপানের যে লজ্জা কম সেটা হঠাৎ করে হয়ে যায় নি।‌ ২০-৩০ বছর এর পিছনে কাজ করা লেগেছে।

Copy From Dr. Kushal

সতেরো বছর বয়সে বন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই মার্কস প্রেমে পড়লেন। তাঁর দিদি সোফিয়ার বান্ধবী জেনি একদিন তাঁদের বাড়ি ঘুরতে ...
06/05/2025

সতেরো বছর বয়সে বন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েই মার্কস প্রেমে পড়লেন। তাঁর দিদি সোফিয়ার বান্ধবী জেনি একদিন তাঁদের বাড়ি ঘুরতে এসেছিলেন। প্রথম দর্শনেই প্রেম। কিন্তু সে প্রেমের পথ বড়ো ঘোরালো। একে তো জেনি তাঁর চেয়ে চার বছরের বড়ো, উপরন্তু জেনির বাবা বিরাট বড়োলোক, সে তুলনায় কার্লের বাবা হাইনরিথ মার্কস নেহাত ছা-পোষা গেরস্ত। তবে সেই কিশোর বয়সেই গ্যেটে-দান্তে-হোমার-শেক্সপিয়র পড়ে ফেলা এই উজ্জ্বল ছেলেটির প্রতি সুন্দরী জেনি ভেস্টফালেনও দুর্বল হয়ে পড়েন। জেনির বাবার কাছে কার্ল পড়তে যেতেন ঈসকাইলাস আর সার্ভেন্টিসের সাহিত্য। তুখোড় মেধাবী কার্লকে তাই লুভ্‌ভিক ফন্‌ ভেস্টফালেনও পছন্দ করতেন। কার্ল ও জেনির প্রেম তাই প্রাথমিক কিন্তু-কিন্তুর বাধা পেরোবার পর বেশ স্বচ্ছন্দ গতিতেই এগোতে লাগল।
বাবা ও জেনির পরামর্শে বন থেকে মার্কস যোগদান করলেন বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে-- ইচ্ছা, আইন নিয়ে পড়াশুনো করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে কার্লের মাথা গেল ঘুরে। তখন বার্লিনে দর্শন শাস্ত্রের রমরমা। দার্শনিক হেগেল একা সূর্যের মতো জ্বলজ্বল করছেন। পরবর্তীকালে যারা নিজেরাই এক একটা নক্ষত্র হবেন, সেই ডেভিড স্ট্রাউস, ব্রুনো বাউয়ার, ফয়েরবাখরা তাঁর পদতলে বসে দর্শনের পাঠ নিচ্ছেন। হেগেলের শিষ্যরা একত্রে ‘ডক্টর ক্লাব’ নামে এক বুদ্ধিজীবী সংগঠনও খুলেছিলেন। শুধু তারাই নয়, গোটা জার্মানি তখন হেগেল জ্বরে আক্রান্ত। প্রগতিশীল ও রক্ষণশীল-- এই দুই শ্রেণিই হেগেলকে গুরু বলে মানত। হেগেলের মূল তত্ত্বটিই ছিল এমন সোনার পাথরবাটির মতো যে, কেউ চাইলেই তাকে নিজের সুবিধামতো বাঁকিয়ে চুরিয়ে নিজের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারত। হেগেল কি বলতেন? তাঁর মতে যে কোন বাস্তব অবস্থা যে কোন উপায়ে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে চায়। কিন্তু সংসারের গতিময়তার প্রভাবে বাস্তব অবস্থা একদিন অবাস্তব হয়ে গেলে তাঁর অস্তিত্ব বিলুপ্ত হয়ে যাবে। এর প্রথম লাইনটি জার্মান রাজতন্ত্রের বড়ো প্রিয় ছিল। তাঁরা এবং তাঁদের সমর্থক জমিদাররা হেগেলের দর্শন দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করতেন যে জার্মানির ভালোর জন্যই এই রাজতন্ত্রই বাস্তব এবং এঁকে টিকিয়ে রাখতে হলে যে কোন উপায় অবলম্বন করায় কোন দোষ নেই, কারণ মহামতি হেগেলই তো বলেছেন, ইত্যাদি ইত্যাদি। শাসকের এই চরিত্র যে কোন দেশে যে কোন কালে একইরকম। আজও। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে মার্কস বা বাউয়ারের মতো র‍্যাডিক্যাল ছাত্রদের কাছে আকর্ষণীয় ছিল তত্ত্বের দ্বিতীয় অংশটি। তাঁরা বললেন এই রক্ষণশীলতা একদিন অবাস্তবে পরিণত হবে, এবং তখন এর পতন অনিবার্য-- ঠিক যেমন ফরাসি বিপ্লবের পর সেখানকার রাজতন্ত্রের হয়েছিল।

নব্য হেগেলপন্থীরা আর্নল্ড রুগের সম্পাদনায় ‘হ্যালে বার্ষিকী’ নামে একটা পত্রিকা প্রকাশ শুরু করলেন (১৮৩৮)। শুরু থেকে রক্ষণশীলতার বিরোধ করে এতে কলম শানানো শুরু করেন বছর কুড়ির যুবক কার্ল। বাউয়ের ও মার্কস মিলে সরাসরি লিখলেন বাইবেলের গল্পগুলো আসলে রূপকথার ঝুড়ি। ওতে বাস্তবের ছিটেফোঁটা নেই, নিজের পি.এইচ.ডি.-র থিসিসের ছত্রে ছত্রেও ঝরে পড়ল মার্কসের এই নাস্তিকতা। বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয় তখন চরম রক্ষণশীল। কাজেই বিশ্ববিদ্যালয় বদল করে জেনা থেকে মার্কস স্নাতকোত্তর গবেষণার ডিগ্রি পেলেন। পরবর্তীকালে যিনি ‘দাস ক্যাপিটাল’ লিখবেন তাঁর থিসিসে একটু চোখ বোলালেই তখন তাঁর মনোভাব পরিষ্কার বোঝা যাবে। খুব গোদা ভাবে বলতে গেলে মার্কসের থিসিসের বিষয় ছিল গ্রীক দার্শনিক ডিমোক্রিটাস ও এপিকিউরাসের চিন্তার পার্থক্য। ডিমোক্রিটাস হলেন সেই ভদ্রলোক যিনি প্রথম পরমাণুর ধারণা দেন। তাঁর মতে গোটা জগতের উৎপত্তি পরমাণু থেকে এবং পরমাণু প্রকৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। যেহেতু মানুষও তৈরি এই পরমাণু থেকেই, তাই মানুষ প্রকৃতির দাস। তাঁর নিজস্ব চিন্তা বা স্বাধীন ইচ্ছার কোন দাম নেই। এপিকিউরাস এর তীব্র বিরোধিতা করে বলেন মানুষ প্রকৃতির হাতের পুতুল নয়। তাঁর জীবন প্রকৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হলেও সে নিজের ইচ্ছায় জীবনকে পরিবর্তিত করতে পারে। মানুষই নিজের ভাগ্যবিধাতা। খুব স্বাভাবিক ভাবেই মার্কস তাঁর থিসিসে এপিকিউরাসকেই সমর্থন করেন। মানুষের জীবনে প্রকৃতি বা দেবদেবীর অস্তিত্বকে নস্যাৎ করে নিজের থিসিসে তিনি লেখেন, ‘যত দেবদেবী আছে, সকলকেই আমি ঘৃণা করি।’ তাঁর মতে ধর্ম বা ঈশ্বর নয়, মানুষকে সঠিক পথ দেখায় দর্শন। তিনি একথাও লেখেন, ‘দর্শন যেন পুরাণের প্রমেথিউস-- যে স্বর্গ থেকে আগুন চুরি করে মানুষের জীবনে বিপ্লব এনে দেবে।’

মার্কস পি.এইচ.ডি ডিগ্রি পেলেন ঠিকই, কিন্তু এ হেন থিসিসের চোটে কোন বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে শিক্ষকতা দিতে রাজি হল না। ছাত্রদের মধ্যে বিপ্লবের বীজ বুনতে কোন শাসকই বা চায়! অতএব মার্কসের কাছে একটাই পথ খোলা রইল-- সাংবাদিকতা। ‘রাইনিশে ৎসাইটুঙ্‌’ পত্রিকায় নব্য হেগেলবাদীরা জড়ো হলেন। পত্রিকা শুরুর দশ মাসের মধ্যে নিজের কলমের জোরে কার্ল মার্কস পত্রিকাটির সম্পাদক হয়ে বসলেন। তাঁর হাতে পড়ে পত্রিকাটির সরকারের দমন নীতি বিরোধী রূপ তীব্রতর হয়ে উঠল। সেন্সরশিপের বিরোধিতা, মোজেলের আঙুর চাষিদের সমস্যা কিংবা বনে থাকা মানুষদের কাঠ সংগ্রহের অধিকার নিয়ে দিস্তে দিস্তে পাতা লিখতে লাগলেন মার্কস। অতএব, যেমন হয়, ১৮৪৩ সালে পত্রিকাটি নিষিদ্ধ ঘোষিত হল। মার্কসের চাকরি গেল।

এদিকে জেনির বাবা মারা গেছেন। পকেট শূন্য, তবু একরকম বাধ্য হয়েই জেনিকে বিয়ে করে মার্কস পাড়ি দিলেন ফরাসি দেশে। সে দেশে তখন র‍্যাডিক্যাল বুদ্ধিজীবীদের মেলা। হাইনে, বাকুনিন, প্রুধো, কাবে-রা মমার্তের ক্যাফে টেবিলে আলোচনার ঝড় বইয়ে দিচ্ছেন। মার্কস সেখানে গিয়েই তাঁদের সঙ্গে মিশে গেলেন। ঠিক করলেন জার্মান-ফরাসি মেলবন্ধনে একটি পত্রিকা আরম্ভ করবেন। পত্রিকা বেরুল। নাম ‘ডয়েশ্চে ফ্রানৎসোসিশে ইয়ারবুখ’। এই পত্রিকায় জমা দেওয়া একটি প্রবন্ধ পড়ে চমকে উঠলেন মার্কস। কে এই শক্তিশালী লেখক! খোঁজ নিয়ে লেখকের সঙ্গে দেখাও করলেন তিনি। সে লেখকের নাম ফ্রিডরিশ এঙ্গেলস্‌।
পত্রিকাটি খুব বেশিদিন না চললেও তাতে হেগেলীয় দর্শন ও ইহুদীদের সমস্যা নিয়ে মার্কস যে দুটি প্রবন্ধ লেখেন তাতে প্রথমবার শ্রেণি সংগ্রাম ও সমাজতান্ত্রিক গঠন নিয়ে মার্কসের আলোচনা পাই। মার্কস বলেন রাজনীতি কোন বিচ্ছিন্ন ব্যাপার না। শ্রম এবং পুঁজির সঙ্গে রাজনীতির সরাসরি যোগ আছে। আর এর ফলেই যত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ইহুদীদের নিয়ে লেখার সময় মার্কস স্পষ্ট জানান ধর্মের শিকল থেকে মুক্তি না পেলে ইহুদীদের পরিত্রাণ নেই। আসল সমস্যা অর্থনৈতিক ও সামাজিক। ঈশ্বরের উপর সবকিছু ছেড়ে দিয়ে ভাগ্য নিয়ে হা-হুতাশ না করে মানুষকেই নতুন সমাজ গঠনে এগিয়ে আসতে হবে। তখনকার দিনে এত বড় বৈপ্লবিক কথা আর কেউ বলেন নি। প্রবন্ধটি ঐতিহাসিক, কারণ সেই প্রথমবার মার্কসের লেখায় ‘সমাজতান্ত্রিক সমাজ’ শব্দটি পাওয়া গেল।
তবে সমাজতন্ত্রের ভাবনা কিন্তু মার্কসের নিজের নয় একেবারেই। ফরাসি দার্শনিক সাঁ সিঁম, ফুরিয়ের বা সিস্‌মন্ডিরা অনেক আগে থেকেই সমাজতান্ত্রিক ভাবধারার প্রচার করতেন। তবে সে সব ধারণা ছিল নেহাত কফির টেবিলে সীমাবদ্ধ। তাঁদের ধারণা ছিল সমাজ সংস্কার করলে বিত্তবান মানুষের চিত্ত একদিন না একদিন পরিবর্তিত হবে। তখন তাঁরা নিজেরাই সম্পদ বণ্টনে উদ্যোগী হবেন। অর্থাৎ বড়ো বড়ো শিল্পপতিরা বিবেকের দংশনে নিজের সব সম্পদ গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দেবেন। মার্কস বললেন, ইল্লি নাকি! এভাবে কেউ কখনও দেয়! অধিকার চিরকাল ছিনিয়ে নিতে হয়। সমাজতন্ত্র একমাত্র আসতে পারে সংগ্রামের হাত ধরে। এতকাল দার্শনিকরা মানুষকে জগৎ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেখছিলেন কিন্তু মার্কস যুক্তি দিলেন পরিবেশের প্রভাবে মানবসত্তা এক থাকে না, ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে আলাদা আলাদা রূপ নেয়। যে মানুষের ক্ষুধা তাঁকে সামান্য রুটির জন্য চরমতম অপরাধেও প্রবৃত্ত করে, অবস্থার পরিবর্তনে সে-ও অন্যের মুখে ক্ষুধার অন্ন তুলে দিতে পারে। ফলে দর্শনের সঙ্গে অর্থনীতির এক নিগূঢ় যোগ আছে। মার্কসের আগে এ কথা কেউ বলেন নি। ভাবেন নি। ঠিক এখানেই মার্কস অন্য সব দার্শনিকদের থেকে মৌলিক হয়ে গেলেন, ভিন্ন হয়ে গেলেন।

২.
দর্শনের সঙ্গে অর্থনীতির সম্পর্কের কথা বলার পর মার্কস অর্থনৈতিক কার্যকলাপের ইতিহাস নিয়ে গবেষণায় মাতলেন। ১৮৪৪ সালে লিখলেন এ বিষয়ে প্রথম প্রবন্ধ-- ‘অর্থনৈতিক ও দার্শনিক পাণ্ডুলিপি’। যার মূল বক্তব্য সুকান্ত দুই লাইনে লিখে গেছেন, ‘ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময়/ পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি’ অর্থাৎ পেটে ভাত না থাকলে মানুষের দর্শন বদলাতে বাধ্য, খালি পেটে কাব্য করা যায় না। এখানে মার্কস ফয়েরবাখের একটি দর্শনকে নিজের মতো ব্যাখ্যা করেছেন। Alienation বা বিযুক্তি শব্দটি হেগেল প্রথম ব্যবহার করেন মানব দর্শনের ক্ষেত্রে। সোজা বাংলায় প্রকৃত দর্শন সমাজ ও পরিবেশ থেকে মানুষকে বিযুক্ত করে। মানুষ তাঁর উচ্চ দর্শনের ফলে সমাজে থেকেও সমাজ বিযুক্ত হয়। অনেকটা তথাকথিত বুদ্ধিজীবীদের মতো, যারা ঠিক ‘লেভেলের’ লোক ছাড়া কথাবার্তা পছন্দ করেন না। মার্কস করলেন কি, এই বিযুক্তি শব্দটিকেই চরম বাস্তব অর্থে ব্যবহার করলেন। তাঁর প্রবন্ধে তিনি দেখালেন শ্রমিক আপন শ্রমের পুরো মূল্য পায় না ও শ্রম থেকে বিযুক্ত হয়ে পড়ে। এই বিযুক্ত শ্রমই হল পুঁজি, যার দখল পুঁজিপতিরা পায়। একটু বুঝিয়ে বললে এক শ্রমিক রোজ একশো টাকার কাজ করেন। পান পঞ্চাশ টাকা। ফলে শ্রমের বিযুক্তি এই পঞ্চাশ টাকাই পুঁজিপতির হাতে পুঁজি হিসেবে জমা হয়। মার্কসের ভাষায়, ‘Capital is the value of dead labour.’ যদিও প্রকৃত পুঁজি ঠিক এভাবে বিচার করা যায় না, তবু সহজে বুঝতে এ হিসেবটাই যথেষ্ট। এবার এই বিযুক্ত শ্রম পুঁজিপতিকে ফুলে ফেঁপে উঠতে সাহায্য করে এবং যেহেতু উৎপাদন ব্যবস্থাও পুঁজিপতিদের হাতে তাই শ্রমিকরা উৎপাদন থেকেও বিযুক্ত থাকে। অর্থাৎ বিস্কুট কারখানার শ্রমিক বা রুটি কারখানার শ্রমিক নিজে বিস্কুট বা রুটি পাবেই সে নিশ্চয়তা নেই। এবার এই যে উৎপাদন পদ্ধতি, শ্রমের মূল্য, মুনাফা, বিযুক্ত শ্রম, মালিকানা-- সব যেহেতু অর্থনীতির অংশ, তাঁর প্রভাব মানব দর্শনে পড়তে বাধ্য এবং বৃহৎ আকারে গোটা সমাজে পড়তে বাধ্য।
এদিকে ধনতান্ত্রিক অর্থনীতির কাঠামো নিয়ে এসময় এঙ্গেলস একটি প্রবন্ধ লেখেন-- যা পড়ে মার্কস ভবিষ্যতের পথনির্দেশ পান। ব্যক্তিগত মালিকানা ও পুঁজির শাসনে সমাজের চেহারা কেমন হতে পারে, তা আমেরিকার সমাজের উদাহরণ দিয়ে দেখিয়েছিলেন এঙ্গেলস্‌। ১৮৪৪-এ মার্কস ভবিষ্যৎবাণী করেন-- “ব্যক্তিগত মালিকানা ও পুঁজির দুষ্ট প্রভাবে একদিন বিপ্লবের জন্ম হতে বাধ্য-- আর এই বিপ্লবই ধনতন্ত্রের সমাধি রচনা করবে।’ ১৮৪৫ সালে মার্কস ও এঙ্গেলস একত্রে ‘পবিত্র পরিবার’ নামে একটি পুস্তিকা লেখেন যাতে মার্কস পরিষ্কার দেখালেন বস্তু থেকে ভাবকে আলাদা করা যায় না। মানুষ থেকে মানুষের চিন্তাকে আলাদা করে ভাবা বাতুলতা মাত্র। যারা এমন করতে চায় তাঁরা ভাববাদকে প্রশ্রয় দেয়। এ ভাববাদ খালি পেটে হরিনাম করার সামিল-- যাতে চাকা আবার ঘুরে গিয়ে ধর্মতত্ত্বে ফিরে যাবার সম্ভাবনা। মার্কসের লেখা এবার ফরাসি সরকারকেও বিরক্ত করে তুলল। সরকার মার্কসকে ফ্রান্স ত্যাগের নির্দেশ দিলেন।

মার্কস ও এঙ্গেলস্‌ দুজনে এসে পৌঁছালেন ব্রাসেলসে। দুজনে মিলে ‘জার্মান চিন্তাধারা’ নামে একটি বই লেখার সিদ্ধান্ত নিলেন। সেখানে মার্কস দেখালেন মানুষ যেমন প্রকৃতির উপর নির্ভরশীল, তেমনি প্রয়োজনে সক্রিয় মানুষ পরিবেশকে বদলে দিতেও সক্ষম। ইতিহাস থেকে উপাদান সংগ্রহ করে তিনি প্রমাণ করলেন কিভাবে আগুন জ্বেলে, পাথরের হাতিয়ার বানিয়ে, চাকা আবিষ্কার করে মানুষ নিজের পরিবেশকে বদলেছে-- কোন ঈশ্বর বা ধর্মের সাহায্য ছাড়াই। পরিবেশ থেকে মানুষ পরিবর্তনের অনুপ্রেরণা পায় ফলে প্রযুক্তি ও উৎপাদনের প্রয়োজন ঘটে। যখনই উৎপাদন শুরু হয় প্রয়োজন হয় শ্রমের। এই শ্রম একজনের শ্রম নয় বরং সংগঠিত শ্রম। যেই সংগঠিত শ্রমের বিযুক্তি থেকেই পুঁজিবাদের জন্ম।

৩.
লন্ডন, প্যারিস ও বার্লিনের সঙ্গে যোগাযোগের ভৌগলিক সুবিধা থাকায় বহু বিপ্লবী এসময় ব্রাসেলসে পালিয়ে এসেছিলেন। মার্কসের লেখা পড়ে তাঁরা মার্কসকে গুরু বলে মেনে নেন। নিয়মিত তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে থাকেন। মার্কস দেখলেন তাঁর থিয়োরির বাস্তব রূপ একমাত্র এরাই দিতে পারে। ফলে তিনিও এদের সাথে মিলে আন্তর্জাতিক সাম্যবাদী সংগঠন তৈরির চিন্তা শুরু করলেন। এসময় মার্কস বিভিন্ন দেশের শ্রমিক সংগঠনগুলির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। ১৮৪৭-এর জুনে লন্ডনে ‘দি কম্যুনিস্ট লীগ’-এর প্রথম অধিবেশন আহুত হল। দ্বিতীয় অধিবেশন হল নভেম্বরে। মার্কস ও এঙ্গেলস দুজনেই বুঝলেন এমন একটা তাত্ত্বিক খসড়ার প্রয়োজন যাকে ভিত্তি করে এবার সবকটি সংগঠন একসঙ্গে আন্দোলন করতে পারে। ফলে ১৮৪৮ সালে দুজনে মিলে লিখলেন বিখ্যাত ‘কম্যুনিস্ট ম্যানিফেস্টো’।

‘ম্যানিফেস্টো’ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে ইউরোপ জুড়ে বিপ্লবের তাণ্ডব শুরু হল। জার্মানি, অস্ট্রিয়া, ইতালির রাষ্ট্রনায়কদের বিরুদ্ধে গনসংগ্রাম তীব্র হয়ে ওঠে। হেগেলের ভাষায় ‘বাস্তব অবস্থা অবাস্তব’ হয়ে যায়। জার্মানিতে গণবিক্ষোভ শুরু হলে মার্কস আবার জার্মানি ফিরে যান। এবার নিজের আদর্শ ‘নয়ে রাইনিশে ৎসাইটুঙ্‌’ নামে পত্রিকায় প্রকাশ করতে শুরু করলেন মার্কস। আবার জার্মানি থেকে তাঁকে তাড়ানো হল। মার্কস লন্ডনে আশ্রয় নিলেন। এসময় মার্কস মন দিলেন একাগ্র অর্থনীতি চর্চায়। পরবর্তীকালে যে ‘ম্যাগনাম ও পাস’টি লিখবেন তিনি, ১৮৫০-৫৭ পর্যন্ত তাঁর চর্চাতেই মেতে রইলেন। প্রচুর বই পড়লেন, নোট নিলেন, সভ্যতার আদি থেকে বর্তমান অবধি অর্থনীতির গতিপথের সন্ধান করলেন। পরের বছর এসব কিছু প্রায় বারোশো পৃষ্ঠা জুড়ে খসড়া হিসেবে লিখলেন মার্কস। ১৮৫৯-এ তাঁরই অল্প কিছু অংশ প্রকাশ করেন ‘A contribution to the Critic of Political Economy’ নামের প্রবন্ধে। দারুণ সাড়া পেলেন। ১৮৬১ থেকে ৬৩ পর্যন্ত আরও ৪৮০০ পৃষ্ঠার খসড়া বানান মার্কস। তার থেকেই সম্পাদনা করে ঝেড়ে মুছে ১৮৬৭ সালে প্রকাশ পেল কার্ল মার্কসের মহা গ্রন্থ ‘দাস ক্যাপিটাল’ বা পুঁজি-- আজ থেকে ঠিক দেড়শো বছর আগে।

৪.
দাস ক্যাপিটালের বাকি দুই খণ্ড মার্কস প্রকাশ করে যেতে পারেন নি। ইতিমধ্যে তিনি প্রত্যক্ষ রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। শরীরও ভেঙে পড়ছিল। ১৮৮৩ তে তাঁর মৃত্যুর দুবছর পরে এঙ্গেলসের চেষ্টায় ‘ক্যাপিটালের’ দ্বিতীয় ও ১৮৯৪-তে তৃতীয় খণ্ড প্রকাশ পায়।

‘ক্যাপিটাল’ সম্পর্কে যত বেশি নিন্দা ও প্রশংসা এযাবৎ হয়েছে তা অন্য কোন বই সম্পর্কে হয়েছে বলে জানা নেই। আসলে ডারউইন তাঁর ‘অরিজিন অব স্পিসিজ’-এ বিশ্ব সৃষ্টি নিয়ে এতদিনের ধারণাকে যে ধাক্কাটা দিয়েছিলেন অর্থনীতির বিশ্লেষণে মার্কসের এ গ্রন্থের অভিঘাত তাঁর থেকে ব্যাপকতর। তবু খুব কম পাঠকই আছেন যারা এই মহা গ্রন্থটি সম্পূর্ণ পাঠের ধৈর্য্য এবং তিতিক্ষা দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। গ্রন্থটি সুবিশাল এবং ভাষা সাধারণের বোধগম্যতার বাইরে। যদিও সব কিছুর মেড ইজি সম্ভব নয়, তবু সংক্ষেপে দু-চার কথায় বুঝে নেওয়া দরকার, কেন উনবিংশ শতকের এবং আজ পর্যন্ত বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম গ্রন্থদের মধ্যে ‘দাস ক্যাপিটাল’ অন্যতম।

ক্যাপিটালের প্রথম ভাগে মার্কস বলছেন মানুষ আদিতে বাস করত এ সাম্যবাদী সমাজে। ধরা যাক সবাই মিলে একটা ম্যামথ মারল, তারপর সবাই মিলে সেটাকে খেল। অর্থাৎ সবার ভাগ সমান। মার্কস এই সমাজকে বলেছেন আদিম সাম্যবাদী সমাজ। এবার ধীরে ধীরে নিজের প্রয়োজনে মানুষ পরিবেশকে বদলাতে শুরু করল। আগুন, চাকা আবিষ্কার হল। ফসল উৎপাদন শুরু হল। শুরু হল গাঁইতি, কোদাল, কুঠারের মতো যন্ত্র উৎপাদনও। অর্থনীতিবিদদের মতে এরাই আসল পুঁজি। টাকা-পয়সা নয়। পুঁজি হল সেটাই যেটার উৎপাদন পরবর্তী উৎপাদনে কাজে লাগে। যেমন জমিতে ফসল উৎপাদনে ট্রাক্টর লাগে। তাই ট্রাক্টর পুঁজি। সে অর্থে বলদ বা লাঙলও পুঁজি। কিন্তু টাকা দিয়ে আমরা পুঁজি জোগাড় করতে পারলেও টাকা নিজে পুঁজি নয়। টাকার কোন উৎপাদন ক্ষমতা নেই। মার্কস বললেন এই পুঁজির উৎপাদনে ধীরে ধীরে শ্রমিকের ব্যবহার শুরু হল এবং শ্রমিককে শ্রম থেকে বিযুক্ত করে সেই বিযুক্ত শ্রমকে পুঁজিপতিরা নিজেদের পুঁজি হিসেবে জমাতে লাগলেন। কিন্তু এই অমানবিক সম্পর্ক চিরস্থায়ী হতে পারে না। শ্রমিকের সংগ্রামই একদিন এই পুঁজির পাহাড় ভেঙে সমাজতন্ত্র আনতে সক্ষম। অর্থনীতিতে এ ধারণা একেবারেই মার্কসের নিজস্ব চেতনার ফসল।

পুঁজির দ্বিতীয় খণ্ডে মার্কস আরও কঠিন একটি কাজে হাত দিয়েছেন। যার নাম পুঁজির সঞ্চালন-- কিভাবে গোটা সমাজে পুঁজি তৈরি হয়, রূপান্তর হয়, বাজার পদ্ধতিতে যায়, বিনিময় হয় এবং আবার ঘুরে ফিরে সেই পুঁজিপতির হাতেই জমা হয়। প্রতিবার বাজার অর্থনীতির মধ্যে দিয়ে পুঁজি যাবার সময় বিযুক্ত শ্রম জমতে থাকে ও ভারসাম্য থেকে নিয়ত বিচ্যুতি ঘটে। ফলে বড়োলোক ক্রমাগত বড়োলোক হয়। গরিব ক্রমাগত গরিব। একটা উদাহরণ দিয়ে ব্যাপারটা বোঝান যাক--

এক রুটি কারখানার মালিক দিনে ২০০০ রুটি তৈরি করেন। কিন্তু শ্রমিকদের দেন ১০০০ রুটির মূল্যমান। ফলে এই ১০০০ তাঁর পুঁজি হিসেবে জমা হয়। তিনি এই ১০০০ মূল্যমান বোতাম তৈরিতে লাগান এবং দিনে ১০০০০ বোতাম তৈরি করান। যেহেতু বোতামের দাম কম তাই তিনি শ্রমিকদের আরও কম মূল্যমান দেন। ধরি তিনি ২০০০ বোতামের মূল্যমান দেন। অর্থাৎ তাঁর পুঁজি হয় ৮০০০ বোতামের মূল্যমান। এখন একটি রুটি ৪ টাকা ও একটি বোতাম ১ টাকা হলে ৪০০০ টাকা পুঁজিতে তাঁর ৮০০০ টাকা আয় হয়। অর্থাৎ পুঁজি জন্ম দেয় বৃহত্তর পুঁজির। এবং রুটি শ্রমিকরা বা বোতাম শ্রমিকরা কিন্তু গোটা পুঁজির এক অংশও পায় না। এর ফলে সমাজে যে অসাম্য তৈরি হয়, তার ফলেই ধনতন্ত্রের নিয়তি অপেক্ষা করে।

ক্যাপিটালের তৃতীয় খণ্ডের নাম-- পুঁজিতান্ত্রিক উৎপাদন ব্যবস্থার সামগ্রিক চিত্র। এতে মার্কস বিভিন্ন পণ্যের মূল্যমান বিচার, শ্রমিকের মজুরি, মুনাফার হার, উদ্বৃত্ত মুনাফা থেকে প্রাপ্ত মুনাফার হার, সুদ ও খাজনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এখানে রীতিমত অংক কষে মার্কস তাঁর উদ্বৃত্ত মূল্য ও মজুরি ব্যয়ের অনুপাত দেখিয়েছেন।

এ বই মার্কসের জীবনের সেরা কাজ ছিল। তিনি নিজেও সেটা জানতেন। ১৮৫১-র এপ্রিলে মার্কস এঙ্গেলসকে লিখছেন-- ‘এতদিন বাদে আমি ধনবিজ্ঞানের নীরস বাস্তবতা কাটিয়ে উঠেছি। এবার বাড়িতে বসে বইটা লেখার কাজে মন দেব এবং সে জন্য মিউজিয়ামে যাব। ব্যাপারটা তবু বিরক্তিকর। অ্যাডাম স্মিথ ও ডেভিড রিকার্ডোর পর ধনবিজ্ঞানের আর তেমন অগ্রগতি হয়নি।’ বইটি তিনি শেষ করার জন্য মরিয়া ছিলেন। তিনি বুঝেছিলেন এ বই অর্থনীতির মোড় ঘুরিয়ে দেবে। ১৮৬৬-র ১৫ ডিসেম্বর কুগেলমানের কাছে এক চিঠিতে তিনি লিখলেন, ‘বাঁচার তাগিদে আমার হাতের সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। বইটার জন্য দিনে ১২ ঘণ্টাই লিখছি। আমার এই শরীরের অবস্থায় প্রথম খণ্ড আলাদা করে প্রকাশ করতে হবে। ভেবেছিলাম দুটো খণ্ড একত্রে প্রকাশ করব, তা আর হল না।” যেহেতু শেষের দুই খণ্ড মার্কসের খসড়া থেকে প্রকাশিত, তাই লেখাগুলো বিচ্ছিন্ন ও কোথাও অসমাপ্ত। ভাষার দিক থেকে যত্নহীন, কথ্যভাষায় লিখিত, এমনকি কোথাও কোথাও অশালীন ও হাস্যকর বাগধারাও চোখে পড়ে। দেখলেই বোঝা যায় লেখকের যেমন যা মাথায় এসেছে তেমনি লিখেছেন। কোথাও আলোচনা যুক্তিপূর্ণ, কোথাও বা শুধুই আভাষ ইঙ্গিত, ফলে মার্কসের ক্যাপিটালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় খণ্ড আদৌ কোন সমাধানের পথ দেখায় না, বরং সমস্যাগুলো নিয়ে অধিকতর অনুসন্ধান ও চর্চার প্রেরণা যোগায়।

তাহলে মার্কসের দাস ক্যাপিটালের সাফল্য কোথায়? মার্কস নিজের এই লেখাকে বৈজ্ঞানিক বলে দাবি করেছেন। জানতেন এ বই তাঁর জীবনীশক্তি শুষে নিচ্ছে, তাও ‘বুকের পাঁজর জ্বালিয়ে’ একলা লিখে গেছেন এ বই, হতে পারে তাঁর তত্ত্ব অভ্রান্ত নয়, কিন্তু সে তো কোন তত্ত্বই নয়। তবু তত্ত্ব ও ব্যবহারের মধ্যে যে অন্বয়, তা মার্কসের ‘পুঁজি’ স্থাপন করেছিল সুচারুভাবে। সত্য যে ব্যক্তি বা স্বার্থের সেবক নয় বরং সমাজের মুক্ত চিন্তার ঘটনা নির্ভর উত্তর-- তা মার্কসই প্রথম চোখে আঙুল দিয়ে দেখান। ইতিহাস যে আসলে কোন ঘটনার সমষ্টি নয়, মানব চরিত্র ও অভিজ্ঞতার ক্রম যাত্রা, তাও মার্কসীয় চিন্তাধারার ফসল। ১৮৭১-এ পারি শহরের কমিউন পৃথিবীকে চমকে দেয়। এ কমিউনও মার্কসবাদী চিন্তাধারারই প্রমাণ। শ্রমিকরা বুঝতে শেখে যে রাজশক্তির বা ধর্মের সহায়তায় শ্রমিকদের মুক্তি অসম্ভব। মার্কসবাদ ও বিপ্লব কিংবা মার্কসবাদ ও আধুনিক অর্থনীতি নিয়ে দীর্ঘ আলোচনার অবকাশ এখানে নেই, শুধু এটা বললেই যথেষ্ট, যে দাস ক্যাপিটালের আগে ও পরে পৃথিবীটা ঠিক আগের মতো রইল না। যারা এ বইকে চরম ঘৃণা করেন, তারাও স্বীকার করতে বাধ্য, আজ অবধি অন্য কোন বই পৃথিবীর ইতিহাসে এতটা প্রভাব ফেলতে পারে নি।

তবু সময়ের দুস্তর হস্তে মার্কসের ইস্পাতসম লেখনীতেও মরিচা পড়ে। ‘পুঁজি’--এক দুষ্পাঠ্য, অপাঠ্য বইতে পরিণত হয়। মার্কসবাদীরাও বইটিকে সযত্নে আলমারিতে রেখে দেয়, না পড়েই। এ বই গীতা বা কোরানের মতো মার্কসবাদীদের ধর্ম-গ্রন্থ হয়ে ওঠে। হ্যাঁ, সেই ধর্ম যা থেকে মানব জাতিকে মুক্তি দিতে আয়ু ক্ষয় করেছিলেন কার্ল হাইনরিখ মার্কস। সারাজীবন নিয়তিকে নস্যাৎ করা মার্কসের নিয়তি হয়তো এটাই ছিল!

তোমার হৃদয় শূন্যে জ্বলিছে              কত রবি শশী তারাতারই মাঝে আমি ধূমকেতু             এসেছিনু পথ-হারা-কাজী নজরুল ইসলা...
05/05/2025

তোমার হৃদয় শূন্যে জ্বলিছে
কত রবি শশী তারা
তারই মাঝে আমি ধূমকেতু
এসেছিনু পথ-হারা

-কাজী নজরুল ইসলাম

#ইসলাম #কত #তারা

নারীর লজ্জা হচ্ছে লজ্জাবতী গাছের মতো।হাত লাগলেই শেষ। সেটা স্বামীর হাত হোক বা অন্য কোন পুরুষের। এই হাত লাগা মানে শুধুই শা...
04/05/2025

নারীর লজ্জা হচ্ছে লজ্জাবতী গাছের মতো।
হাত লাগলেই শেষ। সেটা স্বামীর হাত হোক বা অন্য কোন পুরুষের। এই হাত লাগা মানে শুধুই শারীরিক স্পর্শ না, একজন পুরুষের সঙ্গতায় ও নারীর লজ্জা কেটে যায়।
যে মেয়ে যত বেশি পুরুষের সংস্পর্শে যাবে, তার লজ্জা তত কমবে। যেমন চিত্র নায়িকারা, ওরা শুধু ব্রা-পেন্টি পরে অর্ধনগ্ন দেহ নিয়েও পুরুষের সামনে ঘুরতে দ্বিধা করে না। কারন- পুরুষের মাঝ থেকে চক্ষু লজ্জা উঠে গেছে তাদের। অথচ কনজারভেটিভ ফ্যামিলির একটা মেয়েকে ওড়না ছাড়া দাঁড়াতে বললেও সে লজ্জায় মরে যাবে।
আর ইদানীং ফেসবুক এই লজ্জা নিবারণের বড় মূখ্য ভূমিকা পালন করছে।
উদাহরণঃ
ফেসবুকে বন্ধু বেশি। আর অতি আধুনিক মেয়েরা ছেলে বন্ধুদেরর সঙ্গে পিরিয়ড নিয়ে কথা বলে। ফ্ল্যার্ট করতে গিয়ে শরীর নিয়ে নগ্ন কথা বলে।
আর মাইন্ড করলে বলে ''জাস্ট কিডিং, টেক ইট ইজি"।
এই ইজিলি নিতে নিতে সেসব অশালীন বিষয় আর
অশালীন লাগে না। মানে লজ্জা শেষ!
আবার এখন ফেসবুকে প্রেমিক বেশি! কেউ প্রেমে পড়েছে তো প্রেমিক রোমান্সের ছলে অশ্লীল কথা বলে।
একদম স্বামীর মতো। এরপর ব্রেকআপ হয়। আবারও কারও প্রেমে পড়ে। আর আবারও চুম্মা-চাটি আরও কত কী করে! অতঃপর আবারও ব্রেকাপ! তখন লজ্জা-শরমের মাথা খেয়ে মেয়েটা এক সময় নির্লজ্জ হয়ে যায়। অশ্লীল প্রেম নারীর লজ্জাশীলতাকে গ্রাস করে ,
ফলে- নির্দিষ্ট একজন পুরুষের প্রতি আকর্ষণটা বিলীন হয়ে যায়।
জাগে বহু পুরুষের স্বান্নিধ্য পাওয়ার ইচ্ছা।
একজন নারীর কাছে পুরুষের উপস্থিতি হচ্ছে ইয়াবার মত। প্রথমে একটা খেলেই পিনিক আসে। পরে ২০-২৫টা খেলেও কাজ হয় না। ব্যাস!
এক সময় পুরুষের প্রতি তার আর ফিলিংস কাজ করে না। প্রেমিকের ভালোবাসা তার কাছে পানসে লাগে। একটার পর একটা পুরুষ বদল করে। কিন্তু স্থির হতে পারে না কোনোটাতেই। জানা-শোনা শেষ হলেই আর ভালো লাগে না কাউকে। বোরিং লাগে। কারণ, ডিফারেন্ট টেস্ট নিতে নিতেই তার ভালোবাসার অনুভূতিই শেষ। তখন বর্তমান হয়ে যায় এক্স। তারপর আবারও খোঁজা শুরু নতুন মুখ, নতুন প্রেমিক।
আগে মুরব্বীরা বলতেন, বিয়ের পরে মেয়েদের লজ্জা
কমে। বাচ্চা হওয়ার পরে আরও কমে যায়। তখন আমি বুঝতাম না। ভাবতাম লজ্জা 'ফোঁড়ার' মতো কিছু।
বিয়ের পরে গলে যায়।
কিন্তু এখন বুঝি। আগে মেয়েদের কাছে স্বামীই ছিল পুরুষ। তাই বিয়ের পরের কথা এসেছে। এখন বিয়ে লাগে না, পুরুষের কাছে আসতে ফেসবুক হলেই চলে। এখন ফেসবুক-ই সেই স্বামীর ভূমিকা পালন করে।
যাইহোক, সবশেষে নারীদের মাথায় রাখা উচিতঃ
এভাবে বাসা বদলের মতো প্রেমিক বদলের খেলাটা
নিজেকে খুবই সহজলভ্য করে দেয়। আর যে জিনিস সহজে পাওয়া যায় তার কদর থাকে না। সৃষ্টি কর্তা কে ভয় করে এই সব অনৈতিক কাজ থেকে বেরিয়ে আসুন
লেখাটি না বুঝলে আরেকবার পড়ুন। তবুও না বুঝলে মাথা খাটিয়ে একটু ভাবুন, তারপর মন্তব্য করুন।
বিঃদ্রঃ কথালগুলো নারীদের উদ্দেশ্য হলেও, নারী পুরুষ উভয়ের জন্যই শিক্ষণীয়।

Address

55/21 SM Maheh Road, Tanbazar
Narayanganj
1400

Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Last Poem posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Share