09/01/2025
অত:পর সংসার জীবনে যা যা শিখলাম:
১) এরপর তারা সুখে শান্তিতে বসবাস করিতে লাগিলো - সংসার জীবনে বাস্তবে এমন কথার অস্তিত্ব নাই! কারণ সংসার একটা রোলার কোস্টার। এখানে এই মনে হয় আসমানে উড়তেসি, এই মনে হয় আসমান থেকে প্যারাস্যুট ছাড়া মাটিতে পড়তেসি!
২) বিয়ের পর হানিমুন পর্ব, তারপর ঝগড়াঝাটি পর্ব, তারপর একটু মিলমহাব্বত, তারপর আন্ডাপান্ডার আগমন, তারপর আবার ঝগড়াঝাটি, তারপর আবার মিলমহাব্বত, তারপর আবার ঝগড়াঝাটি, তারপর আবার....এইখানে কোনো শেষ কথা নাই যদি সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার ইচ্ছা থাকে!
৩) আন্ডা পান্ডা জীবনে আগমনের পর স্বামী স্ত্রী রুম মেট হয়ে যায়!
৪) হাসবেন্ডরা জটিল অটোমোবাইলের হাজারটা পার্টস এর মধ্যে কোন একটা পার্টস এ গ্যাঞ্জাম হইলে বুঝতে পারে এবং সেটা ঠিক করাইতে পারে, কিন্তু বউ বিরক্ত হইলে কেনো বিরক্ত হইসে তা বুঝতে পারে না!
৫) স্ত্রীরা হাসবেন্ডদের যতই মেন্টাল প্যারা দিক না কেনো সেটা তারা (স্ত্রীরা) স্বীকার করতে চায় না! তারা মনে করে এটাই যৌক্তিক আচরণ!
৬) হাসবেন্ড বা ওয়াইফ এর কেউ একজন বেকার থাকলে সংসারে অশান্তি বাড়ে! সংসারের কাজ করাকে আমি বেকারত্ব বলছিনা। বরং সংসারের কাজ যাদের করা লাগেনা তারা যদি অন্য কোনো প্রডাক্টিভ কাজেও জড়িত না থাকে তবে তারা অনেক অশান্তিতে ভোগে ও ভোগায়!
৭) যে মায়েরা সন্তানদের অনেক মারধোর করে তারা অনেক ডিপ্রেসড মা। সংসারের রাগ তারা তাদের সন্তানের ওপর ঝাড়ে।
৮) ভালো হাসবেন্ড বা ভালো ওয়াইফ হওয়া একটা কঠিন স্কিল! আপনি ভালো নেতা/নেত্রী, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, জজ, ব্যারিস্টার, শিক্ষক, প্রফেশনাল হতে পারলেও ভালো স্বামী বা স্ত্রী হবেন এমন কোনো গ্যারান্টি নাই! ভালো জীবনসংগী হতে গেলে সেটা হবার ইচ্ছা থাকা প্রয়োজন, তার জন্যে কন্টিনিউয়াস এফোর্ট দেয়া প্রয়োজন। এটা এককালীন পারচেজের মত বিষয় না। এটা আজীবন ইন্সটলমেন্ট দিয়ে যাবার মত ব্যাপার!
৯) কখনো জীবনসংগীর কোনো ভালো আচরণে মনে হবে জীবন ধন্য হয়ে গেলো। খুশিতে চোখে পানি চলে আসবে। কখনো জীবনসংগীর অবহেলার জন্যে মন বলবে, "আমি বলেই তোমার সাথে ঘর করতেসি!" কম্প্রোমাইজের মানসিকতা না থাকলে সংসার টিকে না। তবে দুজনের মধ্যেই একে অপরকে অসম্ভব ভালো লাগার মত কিছু সবসময়ই থাকার প্রয়োজন আছে যার জন্যে কম্প্রোমাইজ করতে দুজনেরই বাঁধবে না!
১০) কনফিডেন্ট সন্তান পেতে হলে বাবা-মা কে এক টিম হয়ে রোল প্লে করতে হবে। এখানে কম্পিটিশন করা যাবে না মোটেও। অর্থাৎ সন্তানের সামনে বাবা-মা সবসময় একটিম। পিছে দ্বিমত থাকলে বাবা-মাকে সেটা পিছেই সর্ট করতে হবে। সন্তানের সামনে না।
১১) দুনিয়াতে আপনি আপনার জীবনসঙ্গীকে যতই ভালবাসুন না কেনো, এবং সে আপনাকে যতই ভালবাসুক না কেনো, আপনার নিজের যত্ন যতটা সম্ভব আপনার নিজেকেই করতে হবে। আপনাকে ভালো রাখার প্রথম দায়িত্ব আপনার নিজের। সেখানে নিজের বেস্ট এফোর্ট আপনাকে দিতে হবে। আপনার ভালবাসার মানুষ আপনার সব খুশির দায়িত্ব নিবে এটা ভাবা বন্ধ করতে হবে। নিজে শারিরীক ও মানসিক ভাবে সুস্থ থাকলে আপনি আপনার ভালবাসার মানুষকে ভালো রাখতে পারবেন।
১২) প্রতিটা হাসবেন্ড-ওয়াইফের সম্পর্কের স্ট্রাগেল আলাদা আলাদা। ফেসবুকে কারো পরিবারের হাসিখুশি ছবি দেখে নিজের সংসারে গ্যাঞ্জাম করা যাবেনা! কেউ আজীবন ভালো থাকেনা। সবাইকে তাদের স্ট্রাগেলটা সময়ে সময়ে করে যেতে হয়। এটার কথা সবাই ঢোল বাজিয়ে বলে না। তাই কম্পেয়ার না করে শুকরিয়া জ্ঞাপন করতে হবে যা আছে তার জন্যে। এতে পজিটিভিটি বাড়বে। সংসারে শান্তি থাকলে দুনিয়া জয় করা সহজ! আর পজিটিভিটি শান্তি স্থাপনের প্রথম শর্ত।
#সংসার
©