03/07/2025
কুমিল্লা এক নারীর পরকীয়ার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর ধর্ষণ বলে।
মামলা করে এই ঘটনায় সারা দেশবাসী পোস্ট করে
মায়া কান্না দেখায় এবং আন্দোলন শুরু করে।
HSC শিক্ষার্থী ধনীর দুলালী লিটনের ফ্লাটে যায় সময় কাটাতে সেটা নিয়ে হাজার হাজার পোস্ট হয় বড় বড় সেলিব্রিটি রাজনীতিবিদ পোস্ট করতে থাকেন অথচ সত্য ঘটনা নিয়ে পোস্ট করার মত হিম্মত বা সাহস কারোই হলো না।
রাজনৈতিক দলের কর্মী হলে জাতি দেখতে পেত কত মিছিল মিটিং কত দফারফা।
মিডিয়ার জাউরামি আরোও কত কী!
একজন গার্মেন্টস শ্রমীক বলে আজ নেই সেসব কিছুই।
কি অপরাধ ছিল তার যেকারণে এভাবে তাকে পিটিয়ে হত্যা করতে হলো!?
তার নাম হৃদয়। উনিশ বছরের একটা ছেলে। গাজীপুরের কোনাবাড়িতে গ্রিনল্যান্ড পোশাক কারখানায় কাজ করত ইলেকট্রিক মেকানিক হিসেবে।
বহুত দিনের স্বপ্ন ছিল, একটা মোটরসাইকেল কিনবে, ঈদের দিন মা-বোনকে উঠিয়ে ঘুরাবে।
তবে সেই স্বপ্নের আগে মালিকের চোখে তার পরিচয় ছিল, গরিব মিস্ত্রি,অশিক্ষিত মজুর।
শনিবার সকাল।
কারখানায় কিছু গোলমাল হয়। হৃদয় নাকি ‘অফিশিয়াল নির্দেশনা না মেনে’ সার্ভিস দিয়েছিল।
বাকি কর্মীরা বলে, সে শুধু যা খারাপ হয়েছিল ঠিক করছিল।
কিন্তু মালিকপক্ষের কেউ কেউ বলে, অর্ডার অমান্য হয়েছে।
তাদের মনে হলো, একটা গরিব ছেলে এত সাহস দেখায়?
তাকে ডেকে আনা হয় অফিসে।
তারপর... দরজা বন্ধ।
লোহার রড, পাইপ, বুট, ঘুষি...
পিটিয়ে... থেঁতলে... নিস্তেজ করে ফেলে তাকে।
একজন সহকর্মী দরজার বাইরে দাঁড়িয়ে কাঁপা কাঁপা গলায় বলেছিল, ভাই, বাঁচান, ওরে মারতেছে।
জবাব আসে,
তোদেরও উচিত শিক্ষা দিতে হবে।
ঘণ্টা খানেক পর হৃদয়ের নিথর দেহ পড়ে থাকে কারখানার পেছনের ঘরে।
হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তার বলেন—
ডেড অন অ্যারাইভাল।
চোখদুটো অর্ধ খোলা, এক হাত মুঠো করা। যেন কিছু করতে চেয়েও পারেনি।
এই খবর যেন কেউ না জানে, সেই চেষ্টায় উঠে পড়ে লাগে মালিকপক্ষ।
পুলিশ আসে, ফাইল তৈরি হয়,
“অসুস্থ হয়ে মৃত্যু”
বলা হয়, “হৃদয়ের পরিবার শান্ত আছে।”
অথচ হৃদয়ের মা তখন পাগলের মতো দৌড়াচ্ছে হাসপাতালের বারান্দায়,
চিৎকার করে বলছেন,
“আমার ছেলে অসুস্থ ছিল না! ওরে পিটিয়ে মারছে… ওর মুখের ওপর পা দিছে!”
কিছু শ্রমিক জেনেশুনে রাস্তায় নামতে চাইলে,
তাদের জবাব দেয় রাষ্ট্র।
পুলিশ, র্যাব, জলকামান দিয়ে।
বলা হয়,
তথ্য বিভ্রান্তিমূলক।
আর সাহসী সাংবাদিকতা হলো,
গুজব ছড়িয়ে বিশৃঙ্খলা।
একটা জাতীয় দৈনিক এমন শিরোনাম করে,“একটি মহল বেতন না বাড়ানোর ইস্যুতে কারখানায় উত্তেজনা ছড়াতে চায়”
হৃদয়ের নাম একটিও নেই সেই খবরে।
তাকে কবর দেওয়া হয় সন্ধ্যাবেলা।
চারজন শ্রমিক কাঁধ দেয়, এক ভাই ফোনে কান্না চেপে রাখে,
মা শুধু একবার জিজ্ঞেস করে—
— “ওরে মারলো ক্যান গো? সে কি মানুষ আছিল না?”
কেউ উত্তর দেয় না।