03/08/2025
রিযিক…
গত তিনদিন ধরে পুরো উত্তরা, টঙ্গীবাজার ঘুরে আমার পাখির খাবার না পেয়ে আজ সকাল বেলা কাঁটাবন খাবার খুঁজতে গেলাম।
পাখির খাবার কিনে বের হবো এমন সময় একটা ভ্যানের উপর কিছু রেডিমেইড থ্রিপিস দেখলাম। একটা ভাঁজ করা থ্রিপিস চোখে পড়লো দূর থেকেই। কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম দাম।
আমি থ্রিপিস একেবারেই পরিনা। আমার সংগ্রহে শাড়ি আর ওয়েস্টার্ন সব। থ্রিপিস একেবারেই হাতে গোনা। বড়জোড় ১২ পিস। আমি এতোটাই কম পড়ি থ্রিপিস।
তাও আমার অজান্তেই কিভাবে কিনলাম, কি মনে করে কিনলাম, কেনো কিনলাম আমার কাছে যুক্তি নেই। আমার কোনোভাবেই ওই পোশাক কেনার কথা না।
আসার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতে দেখলাম একটি মেয়ে পুরোপুরি উলঙ্গ হয়ে শুয়ে আছে। মাথার নিচে দুহাত ভাঁজ করে দিয়ে, আকাশের দিকে সটান তাকিয়ে। বলাবাহুল্য সে মানসিক ভারসাম্যহীন।
আমি অনেকটা ভয়ে ভয়ে কাছে গেলাম। চুপচাপ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। কিছু রিক্সাওয়ালা দেখি ওকে দেখে মজাই পাচ্ছে। যেহেতু ড্রাইভার কিংবা কোনো সহযোগী সাথে নেই, সত্যি বলতে আমি কাছে যেতে ভয় পাচ্ছিলাম।
মিনিট দশেক এভাবেই দাঁড়িয়ে সাহস করলাম, পুরোপুরি কাছে গেলাম, সে আমার দিকে তাকিয়ে। থ্রিপিসটা বের করে ওর হাতে দিলাম।
মেয়েটি উঠে বসে থ্রিপিস নিলো। কোনো কথা না বলে পরেও নিলো। আবার একই ভাবে শুয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো।
সাথে পানির বোতল, আর বিস্কুট ছিলো। ওর পায়ের কাছে সেটা রাখলাম। ও একবার আঁড়চোখে দেখে নিয়ে আবার আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকল।
ঘুম থেকে উঠে এতো সকালেই আমার কাঁটাবন যাওয়া লাগলো!! আমি জানিনা সেই জামাটি কেনো আমাকে টেনেছিলো, আমি জানিনা কেনো আমি কিনলাম!!
উত্তর একটাই রিযিক। এই ভারসাম্যহীন মেয়েটির ঘটনা তখন থেকে আমার মাথায় ঘুরছে। আমি এতো আশ্চর্য আর কোনোদিন হইনি। তার রিযিকের জামা দিতেই আল্লাহপাক আমাকে ওখানে নিয়েছিলেন, তিনি নিজেই হয়তো সেই জামাটি এই মেয়েটির জন্য পছন্দ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ
আল্লাহপাক কখন কার সাহায্য করার জন্য কাকে পাঠিয়ে দেন তা একমাত্র তিনিই জানেন। আল্লাহ পাকের দরবারে লাখো শুকরিয়া আমার ঈমান আজকের এই ঘটনায় আরও শক্ত করে দেয়ার জন্য।
আল্লাহু আকবার, তিনিই রাব্বুল আলামীন🤲❤️
Mitu