
23/06/2025
ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হা*ম*লা: আরব রাষ্ট্রগুলোর নীরব সহযোগিতাই কি বড় দায়ী?
▪️সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বি-২ স্টিলথ বোমারু বিমানগুলো মিজৌরি অঙ্গরাজ্যের ঘাঁটি থেকে উড্ডয়ন করে দীর্ঘ প্রায় ৩৭ ঘণ্টার বিমান অভিযানে ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হা*ম*লা চালিয়েছে। বিশ্বজুড়ে এই হা*ম*লার নিন্দা ও সমালোচনা চললেও বিশ্লেষকদের মতে, কেবলমাত্র যুক্তরাষ্ট্রই নয়—এই বর্বর ও অনৈতিক হা*ম*লার পেছনে পরোক্ষভাবে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে মধ্যপ্রাচ্যের আরব রাষ্ট্রগুলো।
এই হা*ম*লায় ব্যবহৃত জ্বালানির বড় অংশই এসেছে মধ্যপ্রাচ্যের তেলসম্পদসমৃদ্ধ দেশগুলো থেকে। শুধু তাই নয়, হা*ম*লার রুটে এসব আরব দেশের আকাশসীমা ব্যবহার করেই ইরানে প্রবেশ করেছে মার্কিন যু*দ্ধ*বিমানগুলো। প্রশ্ন উঠেছে, আরব রাষ্ট্রগুলোর এই অব্যক্ত সমর্থন ও সহযোগিতা না থাকলে যুক্তরাষ্ট্র কি এত সহজে এই ধরণের অভিযান পরিচালনা করতে পারত?
মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি
▪️বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে প্রায় ৩৫টি মার্কিন সামরিক ঘাঁটি রয়েছে। এর মধ্যে কুয়েতে সবচেয়ে বেশি ৫টি। এছাড়া বাহরাইন, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) এবং ওমানেও রয়েছে উল্লেখযোগ্য মার্কিন সামরিক ঘাঁটি। পাশাপাশি সিরিয়া, ইরাক, জর্ডান, সৌদি আরব ও মিশরেও রয়েছে মার্কিন সেনা উপস্থিতি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব সামরিক ঘাঁটি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা কৌশল নয়, বরং মধ্যপ্রাচ্যের ভূরাজনৈতিক বাস্তবতায় পশ্চিমা আগ্রাসনের এক করুণ চিত্র তুলে ধরে।
ই/স/রা/য়েল-ইরান দ্বন্দ্বে আরব রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা
▪️ই/স/রা/য়েল ও ইরানের মধ্যকার চলমান উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্রের এই হস্তক্ষেপকে অনেকেই ‘প্রক্সি আগ্রাসন’ বলে আখ্যায়িত করছেন। তবে প্রশ্ন থেকে যায় আরব রাষ্ট্রগুলো যদি নিজেদের ভূখণ্ড ও আকাশসীমা যুক্তরাষ্ট্র বা ই/স/রা/য়েলের জন্য ব্যবহার করতে না দিত, তাহলে কি এই আ*ক্র*মণ বাস্তবায়ন সম্ভব হতো?
এই ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যের অনেক সাধারণ মানুষও মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ই/স/রা/য়ে/লের আ*ক্রমণের চেয়ে বেশি ক্ষতি করছে আরব রাষ্ট্রগুলোর পরোক্ষ সহযোগিতা ও নীরবতা।
▪️ইরান থেকে ই/স/রা/য়ে/লের উদ্দেশ্যে নিক্ষেপিত ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ই/স/রা/য়ে/লে/র ভূখণ্ডে পৌঁছানোর আগেই প্রতিহত করা হয় জর্ডান ও সৌদি আরবের আকাশসীমায়। এর মাধ্যমে আরব দেশগুলো কার্যত ইরানকে সহযোগিতা করার পরিবর্তে, ইরানের বিরুদ্ধে অবস্থান গ্রহণ করেছে—এমনটিই প্রতীয়মান হয়।
ডলারের আধিপত্যে আরব ভূমিকা
▪️বিশ্ব অর্থনীতিতে ডলারের আধিপত্যের নেপথ্যেও রয়েছে আরব রাষ্ট্রগুলোর ভূমিকা। পেট্রো-ডলার ব্যবস্থার আওতায় মার্কিন ডলারে অপরিশোধিত তেল বিক্রির কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে ডলারের চাহিদা দিনদিন বেড়েছে। এতে করে যুক্তরাষ্ট্র যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছে, তেমনি বিশ্বব্যাপী অন্যান্য মুদ্রার উপর ডলারের আধিপত্য আরও সুদৃঢ় হয়েছে।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, মধ্যপ্রাচ্যের এসব আরব রাষ্ট্রগুলো আজ কীভাবে ইসলামী সংহতির প্রতিনিধি হয়ে থাকতে পারে? বরং তাঁদের ভূমিকাই আজ মুসলিম বিশ্বের স্বার্থের পরিপন্থী। অনেকের মতে, এসব আরব দেশ ইসলামী বিশ্বের প্রকৃত শত্রুতে পরিণত হয়েছে—যারা কথায় ইসলামপন্থী হলেও কাজে মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও স্বার্থকে পদদলিত করছে।