11/05/2025
বাংলাদেশে ২০০৯ সালেই প্রয়োজনের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি ব্যাংক ছিলো। স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার ২০১১-২০২১ সময়কালে আরও ১৪ টি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে।
বলাই বাহুল্য, এই সব ব্যাংকের অনুমোদন ছিলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
1. Citizens Bank (2021) পেয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। প্রথমে তার মা, পরবর্তীতে তার বান্ধবী এই ব্যাংকের চেয়ারম্যান হন।
2. Bengal Commercial Bank (2020) পেয়েছেন আওয়ামী সাংসদ মোরশেদ আলম। তার ভাই মো: জসিম উদ্দিন এই ব্যাংকের চেয়ারম্যান।
3. Community Bank (2019) পেয়েছে পুলিশ।
4. Shimanto Bank (2016) পেয়েছে বিজিবি।
5. Meghna Bank (2013) পেয়েছেন আওয়ামী সাংসদ এইচ এন আশিকুর রহমান।
6. Midland Bank (2013) পেয়েছেন আওয়ামী সাংসদ কাজী জাফরুল্লাহ।
7. Modhumoti Bank (2013) পেয়েছেন আওয়ামী সাংসদ শেখ ফজলে নূর তাপস।
8. NRB Bank (2013) পেয়েছেন প্রবাসী ব্যবসায়ী ইকবাল আহমেদ। পরবর্তীতে দুবাই প্রবাসী ব্যবসায়ী মাহতাবুর রহমান এটি দখল করেন।
9. NRB Commercial Bank (2013) এর লাইসেন্স পেয়েছিলেন প্রবাসী ফরাসত আহমেদ। পরবর্তীতে রাশিয়া প্রবাসী তথাকথিত অলিগার্ক পারভেজ তমাল এটি দখল করেন।
10. Global Islami Bank (2013) এর লাইসেন্স পেয়েছিলেন প্রবাসী উদ্যোক্তা নিজাম চৌধুরী। পরবর্তীতে ব্যাংকটি দখল করেন এস আলম।
11. SBAC Bank (2013) এর লাইসেন্স পেয়েছিলেন ব্যবসায়ী এস. এম. আমজাদ হোসেন। লাইসেন্স পেতে কলকাঠি নাড়েন খুলনার মেয়র তালুকদার খালেক এবং প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মশিহুর রহমান।
12. Union Bank (2013) এর লাইসেন্স পান লেজেহুমু এরশাদ। লাইসেন্স হাতে পাওয়ার পরদিনই বিপুল অর্থের বিনিময়ে লাইসেন্স বিক্রি করে দেন এই বিশ্ববেহায়া সাবেক স্বৈরাচার। পরবর্তীতে ব্যাংকটি দখল করেন এস আলম।
13. Padma Bank (2013, Renamed 2019) এর লাইসেন্স পান তখনকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মখা আলমগীর। তখন এর নাম ছিলো দ্য ফারমার্স ব্যাংক। পরবর্তীতে চৌধুরী নাফিজ শারাফাত ব্যাংকটি দখল করেন।
14. Probashi Kollyan Bank (2011) এটি একটি বিশেষায়িত সরকারি ব্যাংক। বিদেশগামী এবং প্রবাসীদের সেবা দেবার জন্য এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়, যা সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় ছিলো। সরকারি কোনো ব্যাংকে এরকম একটা উইং করে দিলেই এই কাজ করা যেতো।
এই ১৪ টি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে নানামুখী সংকটের দিকে ঠেলে দেয় আওয়ামী সরকার।
ব্যাংকিং সিস্টেম হয়ে পড়ে ভারসাম্যহীন। অসম প্রতিযোগিতায় পড়ে ব্যাংকাররা হয়ে পড়েন দিশেহারা।
২০০৯ সালে বাংলাদেশের সব ব্যাংক মিলিয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিলো মাত্র ২২,০০০ কোটি টাকা।
২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে দেশে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩ লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা, যা মোট বিতরণ করা ঋণের ২০ দশমিক ২০ শতাংশ।
খেলাপি ঋণ ব্যাপক পরিমাণে বাড়ায়, ২০টি ব্যাংকের মূলধন ঘাটতি বেড়ে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ১ লাখ ৭১ হাজার ৭৮৯ কোটি টাকায় পৌঁছেছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ২০২৫ সাল শেষে বাংলাদেশের সব ব্যাংক মিলিয়ে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
এই ১৪টি নতুন ব্যাংক না দিলে দেশের অর্থনীতিতে এতোটা সংকট হতো না।
পাশাপাশি লুটেরা এস আলম এবং সালমান এফ রহমানকে দিয়ে অনেকগুলো ব্যাংক লুট করিয়েছেন স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা।
সব মিলিয়ে, দেশের অর্থনীতিতে লুটপাটের যে অভিঘাত, সেটা থেকে আমাদের মুক্তি সহজে মিলবে বলে মনে হয়না।