Rahe Nazat Page

  • Home
  • Rahe Nazat Page

Rahe Nazat Page Male

04/07/2025
04/07/2025
02/07/2025

আমরা হকপন্থী আলেমদেরকে কিভাবে চিনবো?

হকপন্থী আলেমদের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য যেনে রাখুন!

👉যারা নবী-রাসূলগণের দাওয়াতী নীতি অনুসরণ করেন: আলেমে দ্বীনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হ’ল দাওয়াতের ক্ষেত্রে নবী-রাসূলগণের নীতি অনুসরণ করা। নবী-রাসূলগণ মূলত: জীবনের সর্বক্ষেত্রে শিরক মুক্ত তাওহীদ বিশ্বাস ও ত্বাগূতদকে বর্জন এবং বিদ‘আতমুক্ত আমলের দিকে মানুষকে আহবান করেছেন। আলেমগণ মানুষকে সেদিকেই আহবান করবেন। মহান আল্লাহ বলেন,وَلَقَدْ بَعَثْنَا فِي كُلِّ أُمَّةٍ رَسُولًا أَنِ اعْبُدُوا اللهَ وَاجْتَنِبُوا الطَّاغُوْتَ- ‘প্রত্যেক সম্প্রদায়ের নিকটে আমরা রাসূল প্রেরণ করেছি এই মর্মে যে, তোমরা আল্লাহর ইবাদত কর এবং ত্বাগূত থেকে দূরে থাক’
(নাহল ১৬/৩৬)।

👉যারা হকের উপর অবিচল থাকেন: আল্লাহ বলেন,الْحَقُّ مِنْ رَبِّكَ فَلاَ تَكُنْ مِنَ الْمُمْتَرِينَ ‘সত্য কেবল তোমার পালনকর্তার পক্ষ হ’তে আসে। অতএব তুমি সংশয়বাদীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না’
(আলে ইমরান ৩/৬০)।
আলেমে দ্বীনের বৈশিষ্ট্য হ’ল হকের উপর অটল থাকা। যেমন রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেন,لاَ تَزَالُ طَائِفَةٌ مِنْ أُمَّتِى ظَاهِرِينَ عَلَى الْحَقِّ لاَ يَضُرُّهُمْ مَنْ خَذَلَهُمْ حَتَّى يَأْتِىَ أَمْرُ اللهِ وَهُمْ كَذَلِكَ ‘চিরদিন আমার উম্মতের মধ্যে একটি দল হক-এর উপর বিজয়ী থাকবে। পরিত্যাগকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, এমতাবস্থায় ক্বিয়ামত এসে যাবে, অথচ তারা ঐভাবে থাকবে’।
(মুসলিম হা/১৯২০)।

👉যারা নিজের বিরুদ্ধে হ’লেও সর্বদা হক কথা বলেন: আলেমগণ সর্বদা হকের পথের দিশারী হবেন। যেমন কোন বক্তব্য বা ফৎওয়া প্রদানের পর পরবর্তীতে যদি তা ভুল প্রমাণিত হয়, তবে তা থেকে ফিরে আসা এবং ভুল স্বীকার করে সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদান একজন আলেমের জন্য আবশ্যক। এক্ষেত্রে নিজের সিদ্ধান্তকে বহাল রাখার জন্য ইলম গোপন করা, জেনেশুনে ভুল ফৎওয়া প্রদান করা চরম অন্যায়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন,مَنْ سُئِلَ عَنْ عِلْمٍ يَعْلَمُهُ فَكَتَمَهُ أُلْجِمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِلِجَامٍ مِنْ نَارٍ، ‘কাউকে তার জ্ঞাত কোন বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হ’লে যদি সে তা গোপন রাখে, ক্বিয়ামতের দিন তার মুখে আগুনের লাগাম পরিয়ে দেওয়া হবে’।
(আহমাদ ২/৭৮৮৩; আবূদাঊদ ২/৩৬৫৮; তিরমিযী ২/২৬৪৯; ছহীহুল জামে‘ ৬২৮৪; মিশকাত হা/২২৩।)

👉যাঁরা সত্যের সংগ্রামে ও মিথ্যার মূলোৎপাটনে সীসাঢালা প্রাচীর।

👉যাঁরা নিজেদের জান-মাল আল্লাহর কাছে বিক্রয় করে দিয়েছেন জান্নাতের বিনিময়ে আল্লাহ বলেন,
اِنَّ اللّٰهَ اشۡتَرٰی مِنَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ اَنۡفُسَهُمۡ وَ اَمۡوَالَهُمۡ بِاَنَّ لَهُمُ الۡجَنَّۃَ ؕ یُقَاتِلُوۡنَ فِیۡ سَبِیۡلِ اللّٰهِ فَیَقۡتُلُوۡنَ وَ یُقۡتَلُوۡنَ ۟ وَعۡدًا عَلَیۡهِ حَقًّا فِی التَّوۡرٰىۃِ وَ الۡاِنۡجِیۡلِ وَ الۡقُرۡاٰنِ ؕ وَ مَنۡ اَوۡفٰی بِعَهۡدِهٖ مِنَ اللّٰهِ فَاسۡتَبۡشِرُوۡا بِبَیۡعِكُمُ الَّذِیۡ بَایَعۡتُمۡ بِهٖ ؕ وَ ذٰلِكَ هُوَ الۡفَوۡزُ الۡعَظِیۡمُ
“নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও সম্পদ কিনে নিয়েছেন (এর বিনিময়ে) যে, তাদের জন্য আছে জান্নাত। তারা আল্লাহ্র পথে যু_দ্ধ করে, অতঃপর তারা মারে ও মরে তাওরাত, ইঞ্জীল ও কুরআনে এ সম্পর্কে তাদের হক ওয়াদা রয়েছে। আর নিজ প্রতিজ্ঞা পালনে আল্লাহর চেয়ে শ্রেষ্ঠতর কে আছে? সুতরাং তোমরা যে সওদা করেছ সে সওদার জন্য আনন্দিত হও। আর সেটাই তো মহাসাফল্য”।
(সূরা: আত তাওবা ৯: ১১১)

👉যাঁরা নিজেদের বাড়ী-ঘর ত্যাগ করে পাহাড়-পর্বত, বন-জঙ্গল ও গিরিগুহাকে নিজ আবাসস্থল বানিয়ে নিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, “বল, ‘যদি তোমাদের পিতারা, আর তোমাদের সন্তানেরা, আর তোমাদের ভাইয়েরা, আর তোমাদের স্ত্রীরা, আর তোমাদের গোষ্ঠীর লোকেরা আর ধন-সম্পদ যা তোমরা অর্জন করেছ, আর ব্যবসা তোমরা যার মন্দার ভয় কর, আর বাসস্থান যা তোমরা ভালবাস (এসব) যদি তোমাদের নিকট প্রিয়তর হয় আল্লাহ, তাঁর রসূল ও তাঁর পথে জিহাদ করা হতে, তাহলে অপেক্ষা কর যতক্ষণ না আল্লাহ তাঁর চূড়ান্ত ফয়সালা তোমাদের কাছে নিয়ে আসেন।’ আর আল্লাহ অবাধ্য আচরণকারীদেরকে সঠিক পথ প্রদর্শন করেন না”।
(সূরা: আত তাওবা ৯:২৪)

👉যাঁরা কখনো বন্দুকের ছায়াতলে আবার কখনো ট্যাংকের গোলায় জান্নাত খুজে বেড়ায়।

👉যাঁরা অসহায় নারী-শিশু ও মজলুমানদের ফরিয়াদের জবাবে অলী ও নাসীর (বন্ধু ও সাহায্যকারী) হয়ে রণাঙ্গনে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন।

👉যাঁরা গভীর রজনীতে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে মহান রবের দরবারে শাহাদাতের মৃত্যুর জন্য আবেদনে মগ্ন থাকেন।

👉যাঁরা দুশমনের মোকাবেলা করতে গিয়ে হাত-পা, নাক-কান ইত্যাদি হারিয়ে পঙ্গুত্বের জীবন যাপন করছেন।

👉যাঁরা ঘোড়ার লাগাম ধরে কোন অসহায় নারী ও শিশুর চিৎকার ও মজলুম ভাইয়ের আহবানে সাড়া দেওয়ার জন্য সদা প্রস্তুত।

👉যাঁরা পার্থিব ভোগ-বিলাসিতা তাদের লক্ষ্য নয়, বরং আখিরাতের জীবন তাদের কাছে বেশি মূল্যবান।

তবে একজন আলেমকে বহুবিধ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হ’তে হয়। প্রকৃত আলেম তিনি, যিনি আল্লাহ সম্পর্কে, তাঁর প্রেরিত জীবন-বিধান পবিত্র কুরআন এবং ছহীহ সুন্নাহ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান রাখেন। যিনি মানুষের মধ্যে আল্লাহকে সবচেয়ে বেশী ভয় করেন। যিনি কেবলমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ এবং পরকালীন মুক্তির লক্ষ্যে জ্ঞান অর্জন ও তার প্রচার ও প্রসারে আত্মনিয়োগ করেন। তাকেই প্রকৃত আলেম বলা হয়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে হকপন্থী আলেমদের অনুসরণ করার তৌফিক দান করুন, আমীন ইয়া রাব্বি।

✍️আবু সাঈদ আল-খুদরী

01/07/2025

BALমুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বার্ষিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।

30/06/2025

একজন অধ্যাপক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছিলেন। ক্লাস শুরু হতেই এক ছাত্র শিস দিয়ে বসল।

অধ্যাপক থেমে গিয়ে বললেন, কে শিস দিল?

কেউ কোনো উত্তর দিল না।

তিনি আবার পাঠ দেওয়া শুরু করলেন। কিছুক্ষণ পর সেই ছাত্র আবার শিস দিল।অধ্যাপক আবার থেমে জিজ্ঞেস করলেন, কে শিস দিচ্ছে?

তবু কেউ উত্তর দিল না।

তিনি আবার ক্লাস শুরু করলেন। কিন্তু এবার যখন তৃতীয়বারের মতো শিস এল, তিনি কলম বন্ধ করলেন এবং বই গুটিয়ে বললেন, আজকের ক্লাস এখানেই শেষ। তবে আমি তোমাদের একটা গল্প শোনাব।

ক্লাসে নেমে এল নিস্তব্ধতা, সবাই মনোযোগ দিল।

অধ্যাপক বললেন, এক রাতে ঘুম আসছিল না, অস্থির হয়ে বাসা থেকে বেরিয়ে গাড়ি চালিয়ে কোথাও যাচ্ছিলাম। কোনো নির্দিষ্ট গন্তব্য ছিল না। হঠাৎ দেখি এক বৃদ্ধা, হাতে ভারি বোঝা নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে আছেন। আমি গাড়ি থামিয়ে জিজ্ঞেস করলাম, মা, কিছু সাহায্য লাগবে?

তিনি খুশি হলেন, গাড়িতে উঠলেন। চলতে চলতে বুঝলাম, তিনি আমাকে ভালোভাবেই চেনেন।

তিনি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন, ডক্টর সাহেব, আমার একটা অবৈধ সন্তান আছে, সে আপনার ইউনিভার্সিটিতেই পড়ে। আমি চাই আপনি তার পাশে থাকুন, তাকে মানুষ হিসেবে গড়ে তুলুন।’

আমি বললাম, নিশ্চয়ই মা, কিন্তু নামটা বললে তো আমি তাকে চিনতে পারব।

তিনি হেসে বললেন, নাম বলার দরকার নেই। আপনি নিজেই তাকে চিনে ফেলবেন — সে খুব দুষ্ট, সব সময় ক্লাসে শিস দেয়।

এই কথা শুনে ক্লাসের সব ছাত্র ঘুরে তাকালো সেই শিস দেওয়া ছাত্রের দিকে!

অধ্যাপক তখন বললেন, এসো ছোট ভাই, তুমি কি ভাবছ আমি এই পিএইচডি সার্টিফিকেট গাধার হাট থেকে কিনেছি?

#লেখকের নাম জানি না। গল্পটা ভালো লাগায় ফেসবুক থেকে কপি করেছি।

24/06/2025

★জানা প্রয়োজন গায়রত কী?
**************************
প্রিয় নবীজীর সাহাবীরা তাদের স্ত্রী'র নাম পর্যন্ত পরপুরুষকে বলতো না।
এটাই গায়রত।তথা-(( গোপনীয়তা)) personal matter
একজন গায়রতহীন পুরুষ বড়ই ভয়ংকর।
এখনকার সময়ের পুরুষদের গায়রত থাকবে তো দূরে, তারা তাদের স্ত্রীর বেপর্দা ছবি ফেসবুকে আপলোড দেয়!!
আল্লাহুম্মাগফিরলী..!হায় আফসোস

♦ঘটনা ১
**********
একদিন এক ব্যাক্তি আলি ইবনু আবি তালিব (রা:) কে জিজ্ঞাসা করলেন তার স্ত্রী কেমন আছে?
তিনি উত্তর দিলেন:
" যদি তোমার রক্ত হালাল হতো,তাহলে আমি তরবারি দিয়ে তোমার মাথা কেটে ফেলতাম।"
[ ইবনে কাসীর,আল- বিদায়া ওয়ান- নিহায়া]

♦ঘটনা ২
*********
সে যুগে মক্কার এক মুশরিক তার উটকে জবেহ
করে দিচ্ছিলো। তখন তাকে জিজ্ঞেস করা হলো আপনি উট টি জবেহ কেন করলেন?
আপনার টাকার প্রয়োজন হলেত বিক্রি করে দিতে পারতেন।
তখন লোকটি বললো,
এই উটের উপর আমার মহিলারা বসতো, বিক্রি করে দিলে এই উটের উপর অন্যপুরুষ বসবে এটা আমার সহ্য হবে না,
তাই এই উটই আমি রাখবো না।
একজন মুশরিক হওয়া সত্বেও তার কত গায়রত!!!
আর আমাদের ভাই- বোনদের কি দশা??
আস্তাগফিরুল্লাহ্

গায়রতহীন পুরুষরা সবাই দাইয়ুজ। রসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ তারা জান্নাত তো পাবেই না, জান্নাতের গন্ধও পাবে না।

وَ مَا الۡحَیٰوۃُ الدُّنۡیَاۤ اِلَّا مَتَاعُ الۡغُرُوۡرِ ﴿۲۰﴾
আর দুনিয়ার জীবনটা তো ধোকার সামগ্রী ছাড়া আর কিছুই নয়।
(সুরা হাদীদ-২০)

এবং সেদিন জাহান্নামকে আনা হবে!
সেদিন মানুষ স্মরণ করবে, কিন্তু এই স্মরণ তার কি কাজে আসবে?
(সূরা ফাজর,আয়াত-২০)
স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বন্ধুদের সাথে হাসি তামাসা আড্ডায় ব্যস্ত থাকে!!
বউয়ের চুল দেখা যাবে তাতে কষ্ট পাবে তো দূর, বিয়ের সময় বন্ধুকে নিজের বউকে দেখিয়ে পরে আবার শোনে, মেয়েটা কেমন রে!!
বন্ধুদের চোখের খোরাক বানিয়ে তারপর সে বিয়ে করে!
আর এটাই নাকি এখনকার ভদ্র সমাজের ট্রেন্ড!

আল্লাহুম্মাগফিরলী!!
আর এখনকার পুরুষদের গায়রত থাকবে তো দূরের কথা,,,
অনেকে গায়রত কি সেটাও জানেনা
হায় আফসোস!

এই মুসলিম উম্মাহ কোনো নারী গায়রতহীন পুরুষকে আপন করে নিছে এমন নজির নাই।
হায় আফসোস!
এই উম্মার পুরুষরা আজ জানেই না
গায়রত কী? তবে চেষ্টা করুন।
মহিলারা আজ বোঝে না গায়রতের মর্ম। হিজাব বা পর্দা মহিলাদের জন্য ফরজ।
বরং তারা গায়রতহীন চাকচিক্যময় নিবেদিত পুরুষদেরই খুঁজে ফেরে হর হামেশা
গায়রতহীন পুরুষরা সবাই দাইয়ুজ রসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ তারা জান্নাত তো পাবেই না, জান্নাতের গন্ধও পাবে না।
ইয়া রব বুঝার তৌফিক দান করুন সকল মুসলিম ভাই বোনকে।
আল্লাহুম্মা আমীন..!🤲

চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার শরয়ী হুকুম:-[মুফতী আবদুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ]بسم الله الرحمن الرحيمالحمد لله، وسلام على عباده الذي...
17/06/2025

চেয়ারে বসে নামাজ পড়ার শরয়ী হুকুম:-
[মুফতী আবদুল মালেক হাফিজাহুল্লাহ]

بسم الله الرحمن الرحيم

الحمد لله، وسلام على عباده الذين اصطفى، وأشهد أن لا إله إلا الله وحده لاشريك له، وأشهد أن محمدا عبده ورسوله،
أما بعد:

ইসলামে সবচে বড় ইবাদত এবং ঈমানের পর সবচে বড় ফরয হচ্ছে সালাত।" أَقِيمُوا الصّلَاةَ ও يُقِيمُونَ الصّلَاةَ" এসব বাণীসহ কুরআনে কারীমের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিসের মাধ্যমে বারবার সালাত আদায়ের নির্দেশ এসেছে।
আর সালাত কায়েম করার অর্থ হল- সলাতের ফারায়েয ও আরকান, ওয়াজিবাত ও সুনান, আদাব ও মুস্তাহাব্বাত ইত্যাদি বিষয়গুলোর প্রতি যত্নবান হয়ে নামায আদায় করা।

সালাতের মূল ভিত্তি হলো, তার আরকান ও ওয়াজিবগুলো। এর মাঝে সবচে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে কিয়াম, কিরাত, রুকু, সিজদা এবং কা‘দা তথা বৈঠক। আর নামাযের রূহ হলো- আদব ও তাওয়াজু এবং নম্রতা ও বিনয়ের সাথে খুশু-খুযু অবস্থায় আল্লাহ তাআলার সামনে ছোট হয়ে হাজির হওয়া।

এই হাকীকত ও রূহানিয়্যাতের প্রতি খেয়াল করলে চেয়ারে বসে নামায আদায় করার কথা কল্পনাও করা যায় না। কেননা এতে না কিয়ামের ফরয আদায় হয়, না রুকু-সিজদার ফরয, আর না এর মাধ্যমে তাশাহহুদের জন্য যমিনে বসার হুকুম আদায় হয়। আর নামাযের যে রূহ অর্থাৎ সবিনয়ে আল্লাহ তাআলার সামনে হাজির হওয়া তাও এখানে অনুপস্থিত। কারণ চেয়ার সাধারণত আরাম ও মর্যাদার আলামত, তাওয়াজু ও বিনয়ের আলামত নয়।

এজন্য নামায আদায়ের পদ্ধতি হলো, নামাযের সকল আরকান, ওয়াজিবাত, সুনান এবং আদাব ও মুস্তাহাব্বাতের প্রতি যথাযথ খেয়াল রেখে নামায আদায় করা। দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা এবং রুকু-সিজদা যথা নিয়মে আদায় করা।

নামাযে বৈঠকের যে বিধান রয়েছে- তার অর্থই হলো, যমিন বা সমতল জায়গায় বসা। আর সিজদা, যা মূলত নামাযের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ রুকন। এর হাকীকতই হলো- শরীরের উপরের অংশ নিচু হওয়া আর পেছনের অংশ উঁচু হওয়া। সিজদার পদ্ধতি সম্পর্কে হাদীস শরীফে এসেছে, আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন,

أُمِرْتُ أَنْ أَسْجُدَ عَلَى سَبْعَةِ أَعْظُمٍ، عَلَى الجَبْهَةِ وَأَشَارَ بِيَدِهِ عَلَى أَنْفِهِ وَاليَدَيْنِ وَالرّكْبَتَيْنِ، وَأَطْرَافِ القَدَمَيْنِ.

আমাকে সাতটি অঙ্গ দ্বারা সিজদা করতে (আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে) আদেশ করা হয়েছে : ১. কপাল ও নাক। ২, ৩. দুই হাত। ৪, ৫. দুই হাঁটু। ৬, ৭. দুই পায়ের অঙ্গুলিসমূহ। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৮১২)

এ হাদীস থেকে এটি স্পষ্ট যে, এই সাত অঙ্গ ব্যবহার করে সিজদা করলেই তা পরিপূর্ণ সিজদা হবে এবং আল্লাহ তাআলা এভাবেই সিজদা করারই হুকুম প্রদান করেছেন। আর নিচে বসে সমতল জায়গায় সিজদা করার দ্বারাই এ হুকুম আদায় হয়। চেয়ারে বসে এভাবে সিজদা আদায় করা আদৌ সম্ভব নয়।

মোটকথা, কুরআন-সুন্নাহ্য় নামাযের যে পদ্ধতি ফরয করা হয়েছে, চেয়ারে বসে নামায আদায় করার ক্ষেত্রে সেই ফরয আদায় করা আদৌ সম্ভব নয়।

এখন প্রশ্ন হলো, মাযূর ও অসুস্থ ব্যক্তি কী করবে?

এর উত্তর হলো, মাযূর ও অসুস্থ মুসল্লী তো আজই প্রথম নয়। আগেও তো মাযূর ও অসুস্থ মুসল্লী ছিল। ওযর ও অসুস্থ অবস্থায় কীভাবে নামায আদায় করতে হবে এর তালীমও কুরআন-সুন্নাহ এবং ইসলামী শরীয়তে রয়েছে। প্রয়োজন হলো, ওজরের সময় নামায আদায় করার পদ্ধতি-সংশ্লিষ্ট শরয়ী বিধি-বিধানের ইলম যথাযথ হাছিল করা এবং সে অনুযায়ী আমল করা। সহজতা, আরামপ্রিয়তা এবং নিছক আন্দাজ ও ধারণার ভিত্তিতে এমনি এমনি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেওয়া যে, "আমার জন্য চেয়ারে বসে নামায পড়া জায়েয আছে" এমনটি করা কখনই উচিত নয়। এতে যেরূপ শরীয়তের ব্যাপারে এক ধরনের বেপরোয়া ভাব প্রকাশ পায়, তদ্রুপ নামাযের মত আযীমুশ শান ইবাদতের ক্ষেত্রে চরম পর্যায়ের উদাসীনতাও প্রকাশ হয়। ওযরের ক্ষেত্রে শরীয়তের উসূল ও মূলনীতি হলো, যে কোনো ওযরের কারণেই কেউ মাযূর সাব্যস্ত হয় না। তাই মামুলী ওযরের কারণে নিজেকে মাযূর মনে করা বৈধ নয়।

আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উসূল হলো, যতটুকু ওজর ততটুকু রুখসত বা ছাড়। এমন নয় যে, এক ওজরের কারণে সকল ফরয থেকেই অব্যাহতি। যেমন: নামাযে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই বলে- রুকু-সিজদাও মাফ। রুকু-সিজদার ক্ষমতা না থাকার কারণে কা‘দা (তাশাহহুদের জন্য যমিনে বসা)ও মাফ।
বিষয়টি এমন নয়।

হাদীস শরীফে এসেছে, ইমরান ইবনে হুসাইন রা. বলেন,

كَانَتْ بِي بَوَاسِيرُ، فَسَأَلْتُ النّبِيّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ عَنِ الصّلاَةِ، فَقَالَ: صَلِّ قَائِمًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ.

আমার অর্শরোগ ছিল, তাই আমি কীভাবে নামায পড়ব- এ ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলাম। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, তুমি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করবে। দাঁড়িয়ে পড়তে সক্ষম না হলে বসে বসে নামায পড়বে। বসে পড়তেও সক্ষম না হলে কাত হয়ে শুয়ে নামায আদায় করবে। (সহীহ বুখারী, হাদীস ১১১৭)

দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক নিয়মে রুকু-সিজদা করে নামায পড়তে পারেন না এমন ব্যক্তির নামাযের পদ্ধতির ব্যাপারে এ হাদীসে মৌলিক নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। এ হাদীসের ব্যাখ্যায় ইমাম ইবনে আবদুল বার রহ. বলেন,

هَذَا يُبَيِّنُ لَكَ أَنّ الْقِيَامَ لَا يَسْقُطُ فَرْضُهُ إِلّا بِعَدَمِ الِاسْتِطَاعَةِ ثُمّ كَذَلِكَ الْقُعُودُ إِذَا لَمْ يَسْتَطِعْ ثُمّ كَذَلِكَ شَيْءٌ شَيْءٌ يَسْقُطُ عِنْدَ عَدَمِ الْقُدْرَةِ عَلَيْهِ.

এ হাদীস স্পষ্টভাবে বলে দিচ্ছে যে, কিয়াম করতে অক্ষম হওয়ার আগ পর্যন্ত নামাযে কিয়াম করা ফরয, তা বাদ দেওয়া যাবে না। তেমনি কা‘দা (বৈঠক)। তা আদায়ে অক্ষম হওয়ার আগ পর্যন্ত তা আদায় করার ফরয বিধান বহাল থাকবে। নামাযের অন্যান্য ফরয-ওয়াজিব আমলগুলোও এমনি। যখন যেটি আদায়ে অক্ষম হবে তখন কেবল সেটিই ছাড়া যাবে। (আততামহীদ ১/১৩৫)

উপরোক্ত হাদীস ও শরীয়তের অন্যান্য দলীলের ভিত্তিতে মুজতাহিদ ইমামগণ মাযূর ও অসুস্থ ব্যক্তির নামাযের যেসব বিধি-বিধান উল্লেখ করেছেন তার আলোকে চেয়ারে বসে নামাযের হুকুম সামনে তুলে ধরা হলো।



অসুস্থ হলেই চেয়ারে নামায জায়েয হয়ে যায় না:

এখানে বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, বর্তমানে সামান্য অসুস্থতা, সামান্য দুর্বলতা, হালকা ব্যথা-বেদনার অজুহাতে চেয়ারে বসে নামায আদায়ের প্রবণতা অনেকের মধ্যে লক্ষ করা যাচ্ছে। দিন দিন এ প্রবণতা বেড়েই চলেছে। ফলে মসজিদে মসজিদে চেয়ারের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অথচ চেয়ারে বসে নামায আদায়কারীদের মধ্যে এমন লোকও থাকেন, যারা হাঁটা-চলা, উঠা-বসা থেকে শুরু করে দৈনন্দিন কাজকর্ম স্বাভাবিকভাবেই করে যাচ্ছেন। কিন্তু নামাযের সময় তারা মাযূর হয়ে চেয়ার নিয়ে বসে পড়েন।

ভালোভাবে মনে রাখা দরকার, যে কোনো অসুস্থতার কারণেই চেয়ারে বসে নামায জায়েয হয়ে যায় না। বরং ইমরান ইবনে হুসাইন রা. থেকে বর্ণিত পূর্বোক্ত হাদীসটিতে সুস্পষ্টভাবে বলা হয়েছে

فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَقَاعِدًا، فَإِنْ لَمْ تَسْتَطِعْ فَعَلَى جَنْبٍ.

‘দাঁড়িয়ে পড়তে সক্ষম না হলে বসে বসে পড়বে। বসে সক্ষম না হলে কাত হয়ে শুয়ে আদায় করবে।’

এর থেকে স্পষ্ট যে, বসে নামায পড়ার জন্য শর্ত হল দাঁড়ানোর সক্ষমতা না থাকা। তেমনি যমিনে/সমতলে না বসে পড়ার জন্যও শর্ত, যমিনে/সমতলে বসার সক্ষমতা না থাকা।

আর কোন্ প্রকারের অসুস্থতা অক্ষমতা গণ্য হবে কোনটি গণ্য হবে না এবং এর মানদন্ড কী ফকীহগণ তা নির্ণয় করে দিয়ে গেছেন।

মুসান্নাফে আবদুর রায্যাকে বর্ণিত হয়েছে, আমর ইবনে মায়মূন রাহ. বলেন, তার পিতা মায়মূন ইবনে মেহরান রাহ.-কে প্রশ্ন করা হল

مَا عَلَامَةُ مَا يُصَلِّي الْمَرِيضُ قَاعِدًا؟

অসুস্থ ব্যক্তি কখন বসে নামায পড়তে পারবেন এর মানদন্ড কী?

উত্তরে তিনি বলেন

إِذَا كَانَ لَا يَسْتَطِيعُ أَنْ يَقُومَ لِدُنْيَاهُ فَلْيُصَلِّ قَاعِدًا.

যখন সে তার দুনিয়াবী কাজের জন্য দাঁড়াতে পারে না এ অবস্থায় পৌঁছলে সে বসে নামায পড়তে পারবে। (মুসান্নাফে আবদুর রায্যাক, বর্ণনা ৪১২৬)

হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ কিতাব আলমুহীতুল বুরহানীতে আছে

وقال عليه السلام لعمران بن حصين رضي الله عنه حين عاده وهو مريض: صل قائماً فإن لم تستطع فقاعداً، فإن لم تستطع فعلى الجنب تومىء إيماءً والمعنى في ذلك أن الطاعة بحسب الطاقة. وقوله: فإن عجز عن القيام وقدر على القعود يصلي المكتوبة قاعداً، لم يرد بهذا العجز العجز أصلاً لا محالة بحيث لا يمكنه القيام بأن يصير مقعداً، بل إذا عجز عنه أصلاً، أو قدر عليه إلا أنه يضعفه ذلك ضعفاً شديداً حتى تزيد علته لذلك، أو يجد وجعاً بذلك، أو يخاف إبطاء البرء، فهذا وما لو عجز عنه أصلاً سواء.

(আলমুহীতুল বুরহানী ৩/২৬)

অর্থাৎ অক্ষমতার প্রথম অর্থ হল, কাজটির সামর্থ্যই না থাকা। আর যদি সামর্থ্য থাকে, কিন্তু এটি করলে সে বেশি দুর্বল হয়ে পড়ে বা এর কারণে তার রোগ বেড়ে যায় কিংবা এর কারণে তীব্র ব্যথা অনুভব করে অথবা এমনটি করলে তার রোগ নিরাময় হতে বিলম্ব হবে এ অবস্থাগুলোই কেবল অক্ষমতার অন্তর্ভুক্ত।

ইমাম ইবনুল হুমাম রাহ. বলেন,

(قوله إذا عجز المريض) المراد أعم من العجز الحقيقي حتى لو قدر على القيام، لكن يخاف بسببه إبطاء برء أو كان يجد ألما شديدا إذا قام جاز له تركه، فإن لحقه نوع مشقة لم يجز ترك القيام بسببها.
(ফাতহুল কাদীর ২/৩)

এখানে তিনি আরো স্পষ্টভাবে বলেছেন, দাঁড়ালে অনেক বেশি ব্যথা হলেই কেবল না দাঁড়িয়ে নামায পড়ার সুযোগ আছে। শুধু কিছু ব্যথা বা কষ্ট লাগার কারণেই কিয়ামের ফরয ছেড়ে দেওয়া জায়েয হবে না।

আর রোগ বেড়ে যাওয়া এবং রোগ নিরাময় হতে বিলম্ব হওয়ার বিষয়টি কীভাবে ফয়সালা করা হবে এর মূলনীতিও ফকীহগণ নির্ধারণ করে দিয়ে গেছেন। ইমাম ইবনুল হুমাম রাহ. বলেন

وتحقق الحرج منوط بزيادة المرض أو إبطاء البرء أو فساد عضو، ثم معرفة ذلك باجتهاد المريض، والاجتهاد غير مجرد الوهم، بل هو غلبة الظن عن أمارة أو تجربة أو بإخبار طبيب مسلم غير ظاهر الفسق.
(ফাতহুল কাদীর ২/৩৫১)

অর্থাৎ রোগ বেড়ে যাওয়া এবং রোগ নিরাময় হতে বিলম্ব হওয়ার ফয়সালা শুধু ধারণা বা অনুমানের উপর নির্ভর করে করা যাবে না। বরং স্পষ্ট কোনো আলামত বা রোগীর পূর্ব অভিজ্ঞতা কিংবা মুসলিম অভিজ্ঞ ভালো কোনো ডাক্তারের বক্তব্যের উপর ভিত্তি করে তা নির্ণয় করতে হবে।

আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রাহ.-ও একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন

(قوله خاف) أي غلب على ظنه بتجربة سابقة أو إخبار طبيب مسلم حاذق.
(রদ্দুল মুহতার ২/৯৬)

এখানে লক্ষণীয় যে, এক্ষেত্রে ডাক্তার মুসলিম হওয়ার শর্ত এজন্য করা হয়েছে যে, ডাক্তার যদি অমুসলিম হয় তাহলে একে তো তার কাছে নামাযের গুরুত্ব থাকবে না। দ্বিতীয়ত নামাযের পদ্ধতি সম্পর্কেও তার কোনো ধারণা থাকার কথা নয়। সেজন্য নামাযের আরকান যথাযথ আদায় করলে রোগীর শারীরিক ক্ষতি হবে কি না এ সম্পর্কেও তার বাস্তব ধারণা থকবে না। সবচেয়ে বড় কথা হল, দ্বীনী বিষয়ে কোনো অমুসলিমের উপর আস্থা রাখা যায় না। এজন্যই মুসলিম ডাক্তার শর্ত করা হয়েছে। তবে কখনো কখনো মুসলিম ডাক্তারের মাঝেও দ্বীনী বিষয়ে উদাসীনতা লক্ষ্য করা যায়। তাই চেয়ারে বসে নামায শুরু করার পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শের পাশাপাশি নিজের অবস্থার পুরোপুরি বিবরণ দিয়ে কোনো মুফতী বা ফতোয়া বিভাগ থেকে মাসআলা জেনে নিতে হবে। নতুবা ক্ষেত্রবিশেষে নামায সহীহ নাও হতে পারে।

মোটকথা, অসুস্থ হলেই চেয়ারে বসে নামায জায়েয হয়ে যায় না। বরং অসুস্থতার ধরন হিসেবে এর হুকুমও ভিন্ন হয়ে থাকে। ১. এমন অসুস্থতা, যা সত্তে¡ও চেয়ারে বসে পড়লে নামায শুদ্ধই হবে না। ২. এমন অসুস্থতা, যার কারণে নামাযের আংশিক চেয়ারে বসে আদায় করলে নামায ফাসেদ হবে না। ৩. এমন অসুস্থতা, যার কারণে পুরো নামায চেয়ারে বসে পড়া জায়েয।



যাদের জন্য চেয়ারে বসে নামায পড়া নাজায়েয:

১. যে ব্যক্তি শরীয়তের দৃষ্টিতে মাযূর নয়, অর্থাৎ কিয়াম, রুকু-সিজদা করতে সক্ষম, তার জন্য যমিনে বা চেয়ারে বসে নামায আদায় করাই জায়েয নয়। অথচ কখনো কখনো দেখা যায়, এ ধরনের সুস্থ ব্যক্তিও সামনে চেয়ার পেয়ে চেয়ারে বসে নামায আদায় করে নেয়। ফলে তার নামাযই হয় না।

২. শুধু আরামের জন্য অথবা মামুলি কষ্টের বাহানায় চেয়ারে বসে নামায পড়লে নামায আদায় হবে না। এমনকি যমিনে বসে পড়লেও আদায় হবে না।

৩. যার পায়ে বা কোমরে ব্যথা। দাঁড়িয়ে স্বাভাবিক নিয়মে রুকু-সিজদা করে নামায পড়লে শরীরে ব্যথা লাগে। কিন্তু তার ব্যথা এ পরিমাণের নয় যে, তা অনেক বেশি। যা সহ্যের বাইরে; বরং এ ব্যথা নিয়ে সে কিয়াম ও রুকু-সিজদা করে নামায পড়তে পারে তবে তার জন্যও যমিনে বা চেয়ারে বসে নামায পড়ার কোনো সুযোগ নেই। এমন করলে নামায আদায় হবে না।

৪. যে কিছুটা অসুস্থ। কিন্তু তার অসুস্থতা এ পর্যায়ের নয় যে, সে কিয়াম ও রুকু-সিজদা করে নামায পড়তে সক্ষমই নয়, বা এভাবে নামায পড়লে তার রোগ বেড়ে যাবে কিংবা রোগ নিরাময় হতে বিলম্ব হবে এমনও নয়। এমন অল্প অসুস্থতার অজুহাতে যমিনে বা চেয়ারে বসে নামায পড়লে নামায আদায় হবে না।

৫. যে ব্যক্তি নামাযে কিয়াম তথা দাঁড়াতে সক্ষম। যমিনে সিজদাও করতে পারে। কিন্তু পা ভাঁজ করে তাশাহহুদের সুরতে বসতে পারে না। তবে পা ছড়িয়ে বা চারজানু হয়ে বা এক পা বিছিয়ে আরেক পা উঠিয়ে কিংবা এক পায়ের পাতা বিছিয়ে আরেক পা বের করে অথবা উভয় পা বের করে বা অন্য যে কোনো পদ্ধতিতে যমিনে বসতে পারে এবং যমিনে সিজদাও করতে পারে তার জন্যও চেয়ারে বসে নামায পড়া জায়েয নয়। সে যেভাবে সম্ভব বসেই যমিনে সিজদা করে নামায আদায় করবে এবং কিয়াম ও রুকুও যথানিয়মে আদায় করবে। পুরোপুরি সুন্নত তরিকায় তাশাহহুদের সুরতে বসতে না পারার অজুহাতে তার জন্য চেয়ারে বসে নামায পড়ার কোনো সুযোগ নেই। এমন ব্যক্তি যমিনে সিজদা না করে চেয়ারে বসে ইশারায় সিজদা করলে তার নামায সহীহ হবে না।

৬. যে ব্যক্তি নামাযে কিয়াম তথা দাঁড়িয়ে নামায আদায় করতে সক্ষম নয়, কিন্তু যমিনে বা সমতলে কোনো না কোনো পদ্ধতিতে বসতে পারে এবং যমিনে সিজদাও করতে পারে, তবে চেয়ারে বসে নামায শুরু করলে সিজদা ও কা‘দা (বৈঠক)-এর জন্য যমিনে নামতে সক্ষম নয় তার জন্যও চেয়ারে বসে নামায পড়া জায়েয নয়। এমন ব্যক্তি যেহেতু সমতলে বসে সিজদার ফরয আদায় করতে সক্ষম তাই শুরু থেকেই সে যমিনে বা সমতলে বসে যথানিয়মে সিজদা করে নামায আদায় করবে; নতুবা তার নামায আদায় হবে না।

৭. যে ব্যক্তি নামাযে কিয়াম তথা দাঁড়িয়ে নামায পড়তে সক্ষম, আবার যমিনে বা সমতলে বসতেও পারে এবং যমিনে সিজদাও করতে পারে, কিন্তু নামাযে দাঁড়ানো অবস্থা থেকে বসতে পারে না, তেমনি বসলে আবার দাঁড়াতে পারে না তার জন্যও চেয়ারে বসে পড়া জায়েয নয়। বরং সে পুরো নামায নিচে বসে আদায় করবে, যাতে যথানিয়মে যমিনে সিজদা করতে পারে; নতুবা তার নামায সহীহ হবে না।

নামাযের আংশিক চেয়ারে আদায় করার হুকুম

১. যে ব্যক্তি নামাযে কিয়াম তথা দাঁড়িয়ে নামায পড়তে সক্ষম নয়, কিন্তু যমিনে বা সমতলে কোনো না কোনোভাবে বসতে পারে এবং যমিনে সিজদাও করতে পারে। তার জন্য সিজদা ও কা‘দা (বৈঠক) যমিনে বসে যথানিয়মে আদায় করা জরুরি। এমন ব্যক্তি যদি সিজদার সময় চেয়ারে বসে ইশারায় সিজদা আদায় করে তবে তার নামায সহীহ হবে না; বরং এক্ষেত্রে সে পুরো নামাযই যমিনে বসে আদায় করবে। আর সে যদি এক্ষেত্রে সিজদা ও কা‘দা (বৈঠক) যমিনে বসে যথানিয়মে আদায় করে কিন্তু কিয়াম ও রুকুর সময় চেয়ারে বসে তবে তার নামায ফাসেদ না হলেও যমিনে বসে আদায় করতে সক্ষম হওয়া সত্তে¡ও চেয়ারে বসার কারণে তার নামায মাকরূহ হবে।

আর এমন ব্যক্তি চেয়ারে বসে নামায শুরু করলে সিজদা ও কা‘দা (বৈঠক)-এর জন্য যমিনে নামতে না পারলে তার জন্য কিয়ামের সময় চেয়ারে বসাই নাজায়েয। বরং শুরু থেকেই তার যমিনে বসে নামায পড়া জরুরি; যা একটু আগেই উল্লেখ করা হয়েছে।

২. যে ব্যক্তি কিয়াম করতে সক্ষম এবং দাঁড়ানো থেকে চেয়ারে বসতেও পারে, কিন্তু যমিনে কোনো পদ্ধতিতেই বসতে পারে না এমন ব্যক্তির জন্য বিধান হল, সে যথা নিয়মে দাঁড়িয়ে নামায শুরু করবে। এরপর স্বাভাবিকভাবে রুকু করতে পারলে রুকুও করবে। তারপর অবশিষ্ট নামায চেয়ারে বসে পড়বে। কিন্তু এক্ষেত্রে কিয়াম করতে সক্ষম হওয়া সত্বে ও তার জন্য শুরু থেকেই চেয়ারে বসে নামায পড়া সহীহ নয়।

এখানে উল্লেখ্য যে, যে ব্যক্তি যমিনে সিজদা করতে সক্ষম নয় তার ব্যাপারে হানাফী মাযহাবের প্রসিদ্ধ মত হল, এমন ব্যক্তির উপর দাঁড়িয়ে নামায আদায় করা জরুরি নয়; বরং সে বসে ইশারায় নামায আদায় করতে পারে।

এ বক্তব্যটি যদিও একেবারে দলীলবিহীন নয়, কিন্তু অনেক মুহাক্কিক ফকীহের দৃষ্টিতে এই মাসআলায় দলীলের বিচারে ফিকহে হানাফীর ঐ বক্তব্য বেশি শক্তিশালী, যা ইমাম আবু হানীফা রাহ.-এর শাগরিদ ইমাম যুফার ইবনে হুযাইল রাহ.-এর মাযহাব। আর এটাই বাকি তিন ইমামের (ইমাম মালেক রাহ., ইমাম শাফেয়ী রাহ. এবং ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল রাহ.) মাযহাব। আর তা হল, এমন ব্যক্তি (যে ব্যক্তি যমিনের উপর সিজদা করতে অক্ষম) যদি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করতে সক্ষম হয় তাহলে তাকে দাঁড়িয়েই নামায আদায় করতে হবে। আর যেহেতু সে সিজদা করতে অক্ষম তাই সে ইশারায় সিজদা করবে (যদি রুকু করতেও অক্ষম হয় তাহলে রুকুও ইশারায় আদায় করবে)। যমিনে সিজদা করতে অক্ষম হওয়ার কারণে দাঁড়ানোর ফরয ছাড়া যাবে না।

হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম তাঁর একটি ফতোয়াতে এই মাসআলার উপর বিশদ আলোচনা করেছেন এবং ‘ফাতহুল কাদীর’ খ. ১ পৃ. ৪৬০, ‘আননাহরুল ফায়েক খ. ১ পৃ. ৩৩৭ এবং ‘ইলাউস সুনান খ. ৭ পৃ. ২০৩ ইত্যাদির বরাতে দালায়েলের আলোকে এই ‘কওল’ (বক্তব্য)-কেই শক্তিশালী বলেছেন যে, কিয়ামের ফরয আদায় থেকে শুধু ঐ ব্যক্তি ছাড় পাবে, যে দাঁড়িয়ে নামায আদায় করতে অক্ষম। সিজদা করতে অক্ষম হওয়ার কারণে কিয়াম না করার ছাড় পাবে না। তিনি সেখানে বিশদভাবে ঐ কথারও খন্ডন করেছেন যে, ‘শুধু সিজদার জন্য কিয়াম ফরয করা হয়েছে। তাই সিজদা করতে অক্ষম হলেই কিয়াম জরুরি থাকে না।’ তিনি একাধিক দলীল দ্বারা একথা প্রমাণ করেছেন যে, কিয়াম নামাযের একটি স্বতন্ত্র ফরয; তা শুধু সিজদার জন্য নয়।

এমনকি হযরত মাওলানা মুহাম্মাদ তাকী উসমানী দামাত বারাকাতুহুম ঐ ফতোয়ায় একথাও লিখেছেন যে, যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামায শুরু করতে পারে, কিন্তু সিজদার জন্য যমিনে বসার পর আবার দাঁড়াতে তার অনেক কষ্ট হয়, এমন ব্যক্তিও কিয়াম (দাঁড়িয়ে নামায পড়া) একেবারে ছাড়বে না। বরং প্রথম রাকাত দাঁড়িয়ে আদায় করবে। এরপর উঠে দাঁড়াতে কষ্ট হওয়ার কারণে বাকি নামায বসে আদায় করবে।

এর সাথে সাথে হযরত দামাত বারাকাতুহুম এ-ও বলেছেন যে, যমিনের উপর সিজদা করতে অক্ষম কোনো মুসল্লী যদি ফিকহে হানাফীর প্রসিদ্ধ মত অনুযায়ী আমল করে এবং পুরা নামায বসে আদায় করে এবং ইশারায় রুকু-সিজদা করে তাহলে তার নামায ফাসেদ হয়েছে বলব না।

(لأن المسألة من الاجتهاديات، و القول المشهور و إن كان مرجوحا من حيث الدليل و لكنه ليس من الزلات المحضة، فله بعض الأدلة أيضا، مذكور في "مختصر اختلاف العلماء" ج ১ ص ৩২৫.)

৩. যে ব্যক্তি কিয়াম ও রুকু করতে সক্ষম এবং সরাসরি যমিনে বা সমতলে কোনো না কোনোভাবে বসতেও পারে, কিন্তু যমিনে সিজদা করতে পারে না, সে তো কিয়াম ও রুকু যথানিয়মেই আদায় করবে। এরপর যমিনে বসে যাবে। ইশারায় সিজদা আদায় করবে এবং তাশাহহুদ যমিনে বসেই আদায় করবে। এমন ব্যক্তি যেহেতু মাটিতে বা সমতলে বসতে পারে তাই তার জন্য যমিনে কা‘দা-এর পরীবর্তে চেয়ারে বসা মাকরূহ তাহরীমী। যা পরিহার করা কর্তব্য।

৪. যে ব্যক্তি নামাযে কিয়াম তথা দাঁড়াতে সক্ষম নয়, কিন্তু যমিনে বা সমতলে কোনো না কোনোভাবে বসতে পারে এবং যমিনে সিজদাও করতে পারে। সে যদি চেয়ারে বসে নামায আদায় করে এবং সিজদার জন্য চেয়ার থেকে নেমে মাটিতে সিজদা আদায় করে তবে এক্ষেত্রে তার সিজদা যথানিয়মে আদায় হলেও কা‘দা অর্থাৎ বৈঠক চেয়ারে আদায় করার কারণে নামায মাকরূহ তাহরীমী হবে; যা পরিহার করা কর্তব্য।



পুরো নামায যার জন্য চেয়ারে বসে পড়া জায়েয

যে ব্যক্তি নামাযের কিয়াম, রুকু-সিজদা ও কা‘দা (তাশাহহুদের জন্য বসা) কোনোটিই স্বাভাবিকভাবে আদায় করতে সক্ষম নয়; বরং শুধু চেয়ারেই বসতে পারে কেবল এমন অসুস্থ ব্যক্তির জন্য পুরো নামায চেয়ারে বসে আদায় করা জায়েয।

কিন্তু এক্ষেত্রে বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, এই ব্যক্তি যে কিয়াম, রুকু-সিজদা ও কা‘দা (বৈঠক) সবগুলোই যথানিয়মে স্বাভাবিকভাবে আদায় করতে সক্ষম নয় তা বাস্তবসম্মত ও সুপ্রমাণিত হতে হবে। এর জন্য ডাক্তারের পরামর্শের পাশাপাশি কোনো মুফতী সাহেবকে নিজের অবস্থা পুরোপুরি জানিয়ে তার থেকে মাসআলা নিয়ে সে অনুযায়ী আমল করবে। নতুবা নিজে নিজে ভুল সিদ্ধান্ত গ্রহণের কারণে কখনো নামায নাও হতে পারে।

মোদ্দাকথা এই যে, যে ব্যক্তি দাঁড়িয়ে নামায আদায় করতে অক্ষম তার জন্য বিকল্প পদ্ধতি হল, যমিনে বসে তা আদায় করা। আর যে রুকু-সিজদা করতে অক্ষম তার জন্য বিকল্প পন্থা হল, ইশারায় রুকু-সিজদা আদায় করা। আর যে ব্যক্তি যমিনে বসতে অক্ষম তার জন্য যমিনে বসে কা‘দা আদায়ের বিকল্প হল চেয়ারে বসা। কেবল প্রথম ও দ্বিতীয় ওযরের কারণে চেয়ারে বসা জায়েয নয়।



চেয়ারে বসে নামাযের ক্ষেত্রে সিজদা আদায়ের পদ্ধতি

যে ব্যক্তি যমিনে সিজদা করতে অক্ষম তার ব্যপারে হুকুম হল, সে ইশারায় সিজদা আদায় করবে। এমন মাযূর ব্যক্তি যদি বাস্তব ওযরেই চেয়ারে বসে নামায আদায় করে তাহলে সেও ইশারায়ই সিজদা করবে। সামনে তখতা বা টেবিল রেখে তাতে সিজদা করবে না। কেননা সিজদার জন্য সামনে টেবিল বা উঁচু বস্তু রাখা এবং তাতে সিজদা করার কোনো বিধান হাদীস দ্বারা প্রমাণিত নয়। অবশ্য এর দ্বারা যেহেতু ইশারার কাজ হয়ে যায় ফলে নামায আদায় হয়ে যাবে। উল্লেখ্য, ইশারায় সিজদা আদায় করার নিয়ম হল, রুকুর জন্য মাথা যতটুকু ঝোঁকাবে সিজদার জন্য তার চেয়ে একটু বেশি ঝোঁকানো।

আর সিজদার জন্য ইশারা করার সময় হাত হাঁটুতেই রাখবে। কেউ কেউ তখন যমিনে সিজদা করার মত হাত চেহারা বরাবর রাখে। এটি ভুল নিয়ম।



শেষ কথা

সম্মানিত পাঠক! যদি উল্লিখিত মাসআলাগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ে থাকেন তাহলে আশা করি এ বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে থাকবে যে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে চেয়ারে বসে নামায আদায় করা একেবারেই নাজায়েয। এসব ক্ষেত্রে নামাযই শুদ্ধ হয় না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নামাযের আংশিক চেয়ারে বসে আদায় করলে যদিও নামায ফাসেদ হয় না, কিন্তু তা মাকরূহ। কেবল একটি ক্ষেত্র এমন, যেখানে চেয়ারে বসে নামায আদায় করলে নামায আদায়ও হয়ে যায় এবং মাকরূহও হয় না।

এই বাস্তবতাটি যদি আমরা যথাযথ উপলব্ধি করতে পারি তাহলে এ বিষয়টি বুঝতে আমাদের কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় যে, বর্তমানে মসজিদগুলোতে চেয়ারের যে ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে (এবং দিন দিন যা বেড়েই চলেছে) এটা কেবল এজন্যই যে, মাসআলা জানা না থাকার কারণে এমন অনেক মুসল্লীও নামাযে চেয়ার ব্যবহার করে থাকেন, যাদের জন্য নামাযে চেয়ার ব্যবহার জায়েযই নয়। সম্মানিত মুসল্লীবৃন্দ যদি হিম্মত করে শরয়ী ওযর ব্যতীত নামাযে চেয়ার ব্যবহার পরিত্যাগ করেন এবং নামাযে চেয়ার ব্যবহারকে শরয়ী রুখসত (শরীয়ত কর্তৃক অনুমোদিত ছাড়) পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখেন তাহলে মসজিদগুলোতে চেয়ারের এই ভিড় হ্রাস পাবে ইনশাআল্লাহ। অধিকাংশ মসজিদে চেয়ারের কোনো প্রয়োজনও পড়বে না। আর এমনটিই হওয়া চাই, কেননা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের যামানায়ও চেয়ারের অস্তিত্ব ছিল; বরং এরও বহু পূর্ব থেকে ছিল। আর প্রথম থেকেই মাযূর ও অসুস্থ মুসল্লী ছিলেন। কিন্তু ইতিহাসে এমন কোনো নজির পাওয়া যায় না যে, মসজিদগুলোতে চেয়ার পাতা থাকত। অথবা মাযূর মুসল্লীগণ চেয়ার নিয়ে এসে তাতে নামায আদায় করতেন। মসজিদে চেয়ার পেতে রাখা এবং চেয়ারে নামায আদায় করার যে প্রবণতা লক্ষ করা যাচ্ছে তা সম্পূর্ণ নতুন রেওয়াজ। এটাকে নিরুৎসাহিত করাই কাম্য। আর অনুসৃত পন্থার প্রতি মনোনিবেশ করার মাঝেই রয়েছে কল্যাণ।

যেই কঠিন প্রয়োজনে নামাযে চেয়ার ব্যবহারের সুযোগ বের হয়ে আসে সেক্ষেত্রে এ বিষয়টির প্রতিও খেয়াল রাখা চাই যে, যদি উঁচু মোড়া, টুল ব্যবহারে কাজ হয়ে যায় তাহলে চেয়ার ব্যবহার করবে না। তেমনিভাবে হাতলবিহীন চেয়ারে যদি কাজ সেরে যায় তাহলে হাতলযুক্ত চেয়ার ব্যবহার থেকে বিরত থাকবে।

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সুস্থ জীবন দান করুন। সর্বক্ষেত্রে নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, খুলাফায়ে রাশেদীন এবং সাহাবায়ে কেরামের সুন্নত অবলম্বন করার তাওফীক দান করুন। বিদআত থেকে দূরে রাখুন। অন্য ধর্মাবলম্বীদের আচার-সভ্যতা ও রীতি-নীতি থেকে হেফাযত করুন । আমীন।

ইস্তিগফারের উপকারিতা—(দুয়া কবুলের অব্যর্থ হাতিয়ার।)১। অধিক ইস্তিগফারের কারণে প্রচুর বর্ষণ হয়। বাগান ও শস্যে ভালো ফসল হয়।...
03/06/2025

ইস্তিগফারের উপকারিতা—(দুয়া কবুলের অব্যর্থ হাতিয়ার।)

১। অধিক ইস্তিগফারের কারণে প্রচুর বর্ষণ হয়। বাগান ও শস্যে ভালো ফসল হয়। নদী-নালা থাকে জীবন্ত।

২। ইস্তিগফারকারীকে আল্লাহ উত্তম সন্তান, সম্পদ ও জীবিকার দ্বারা সম্মানিত করেন।

৩। দ্বীন পালন সহজ হয়। এবং কর্মজীবন হয় সুখের।

৪। আল্লাহ ও বান্দার মাঝে যে দূরত্ব আছে, তা ঘুচে যায়।

৫। ইস্তিগফারকারীর কাছে দুনিয়াকে খুব তুচ্ছ করে দেয়া হয়৷

৬। মানব ও জ্বীন শ`য়তান থেকে তাকে হিফাযত করা হয়৷

৭। দ্বীন ও ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করা যায়।

৮। আল্লাহর ভালোবাসা অর্জিত হয়।

৯। বিচক্ষণতা ও বিশ্বাস বৃদ্ধি পায়।

১০। দুশ্চিন্তা, পেরেশানি দূর হয়।

১১। বেকারত্ব দূর হয়।

১২। আল্লাহ তা'আলার নৈকট্য অর্জিত হয়। তার তাওবার কারণে আল্লাহ আনন্দিত হন।

১৩। মৃ*ত্যুর সময় ফেরেশতারা তার জন্য সুসংবাদ নিয়ে আসে৷

১৪। হাশরের মাঠে মানুষ যখন প্রচন্ড গরম ও ঘামের মধ্যে থাকবে, তখন ইস্তিগফারকারী থাকবে আরশের ছায়াতলে।

১৫। কি'য়ামতের দিন মানুষ যখন অস্থির থাকবে, ইস্তিগফারকারী তখন ডানপন্থী মুত্তাকিনদের দলে থাকবে।

১৬। মন্দ কজ থেকে বেঁচে থাকা যায়।

১৭। আরশ বহনকারী ফেরেশতাগণও তার জন্য দু'আ করেন।

[উৎস : নাদ্বরতুন নাঈম ফি মাকারিমি আখলাকির রাসূল, ২/৩০২]

Address


Website

Alerts

Be the first to know and let us send you an email when Rahe Nazat Page posts news and promotions. Your email address will not be used for any other purpose, and you can unsubscribe at any time.

Shortcuts

  • Address
  • Alerts
  • Claim ownership or report listing
  • Want your business to be the top-listed Media Company?

Share