17/07/2025
গোপালগঞ্জ আজ এক যুদ্ধ বিধ্বস্ত জনপদ। ইয়াহিয়া, টিক্কা ও নিয়াজীর বংশধরদের প্রতিরোধ করতে নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে লড়াই করছে গোপালগঞ্জবাসী। গোপালগঞ্জের রাস্তায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। আজকের গোপালগঞ্জ যেন বিশ্ব মানচিত্রে এক টুকরো বাংলাদেশ। আজকে গোপালগঞ্জ হয়ে উঠেছে প্রতিরোধের প্রতীক বার্লিন , প্যারিস ও ওয়ারশ শহর।ফরাসি প্রতিরোধ বাহিনী যেভাবে দখলদার জার্মানির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ যুদ্ধ চালিয়েছে আজকের গোপালগঞ্জ যেন এক টুকরো প্রতিরোধের প্যারিস। পোল্যান্ডের ওয়ারশ শহর যেভাবে রাস্তায় রাস্তায় দখলদার নাৎসি বাহিনীকে প্রতিরোধ করেছে, আজকের গোপালগঞ্জ যেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ওয়ারশ শহর।
গোপালগঞ্জ নামটি বিখ্যাত হয়েছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধুর জন্য। আজকে দেশের মাটি ছাড়িয়ে বিদেশের মাটিতেও আলোচিত হচ্ছে প্রতিরোধের দূর্গ বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ মাল্টার দূর্গ গোপালগঞ্জ। নিজের শরীরের শেষ রক্ত বিন্দু থাকা পর্যন্ত প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়া যোদ্ধাদের শহর গোপালগঞ্জ।একদল টোকাই গোপালগঞ্জে গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর মাজার ভাঙার জন্য। যশোর থেকে সেনাবাহিনী নিয়ে , সমগ্র বাংলাদেশ থেকে প্রশিক্ষিত পুলিশ ও আনসার সদস্যদের নিয়ে, এমনকি গোপালগঞ্জের মাটিতে নিজেদের রক্ষার জন্য সেনাঘাঁটি তৈরি করেও আজ তারা গোপালগঞ্জের মাটিতে অবরুদ্ধ।ডিনিস্টার নদীর তীরে খোটিন দূর্গের মতো মধুমতির তীরে অবস্থিত গোপালগঞ্জ আজ বঙ্গবন্ধুর দূর্গে পরিণত হয়েছে। ইয়াহিয়া, নিয়াজী ও টিক্কা খানের বংশধরদের যেকোনো মূল্যে প্রতিরোধ করার দীপ্ত শপথে বলিয়ান গোপালগঞ্জ। সাহসের সবটুকু রক্ত দিয়ে তারা আজ দখলদার হাসনাথ, আসিফ , নাহিদ ও সার্ভিস মলমের জামায়াত শিবিরের আপডেট ভার্সন টোকাই মঞ্চকে প্রতিরোধ করছে।
গোপালগঞ্জকে যেমন মানুষ বঙ্গবন্ধুর জন্য চিনেছে , ঠিক তেমনি সমগ্র বাংলাদেশকেও মানুষ চিনেছে এই মহা মানবের জন্য। গোপালগঞ্জ শহর থেকে বের হওয়ার প্রতিটি রাস্তায় গোপালগঞ্জের সাহসী নারীরা আজ এক একজন ' জোয়ান অফ আর্ক " হয়ে এই প্রতিরোধ যুদ্ধে শামিল হয়েছে।নিজ মাতৃভুমিকে রক্ষার জন্য গোপালগঞ্জের শিশু ও কিশোরেরা আজ হাতে লাঠি নিয়ে মাতৃভুমি গোপালগঞ্জে পাহারা বসিয়েছে।একটা টোকাই যেন পাকিস্তান পালাতে না পারে তার জন্য গোপালগঞ্জ বাসীর এই প্রতিরোধ যুদ্ধ বেলা বাড়ার সাথে সাথে সর্বাত্মক যুদ্ধে পরিণত হয়েছে।
১৪৬৮ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের গোপালগঞ্জ আজ পরিণত হয়েছে ১২ লক্ষ গোপালগঞ্জবাসীর জয় বাংলা স্লোগানে।এক সময় রাজগঞ্জ নামে পরিচিত এই জেলা আজ সমগ্র বিশ্বের কাছে বঙ্গবন্ধুর গোপালগঞ্জ নামে পরিচিত। বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলার মধ্যে গোপালগঞ্জ আজ পরিণত হয়েছে সাহস ও সংগ্রামের প্রতীক হিসেবে। মুক্তির এই মিছিলে বাংলাদেশের ১৭ কোটি মানুষের দোয়া ও ভালোবাসা আজ গোপালগঞ্জের সাথে।।
গোপালগঞ্জ বাংলাদেশের একটি পবিত্র ভূমি। এই গোপালগঞ্জ বীর বিক্রম হেমায়েত উদ্দিনের গোপালগঞ্জ।এই গোপালগঞ্জের মাটিতে জন্মেছেন বীর- উত্তম ইমদাদুল হক, আমিনুল হক , , বীর - বিক্রম মোহাম্মদ আশরাফ আলী খান, বীরপ্রতীক বদিউজ্জামান, গফুর , শরীফ , আসাদ মোল্লাসহ শত শত সাহসী যোদ্ধা। গোপালগঞ্জের মাটিতে শুয়ে আছেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।।
আজ যে ছবিটি সমগ্র বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের নিউজফিডে ঘুরছে , এই ছবিটিও গোপালগঞ্জের এক বীর সন্তানের। পিতার শেষ সম্বল রক্ষার জন্য সন্তানের এই আত্মত্যাগ শত শত বছর স্মরণ রাখবে বাংলাদেশ। গুলিবুদ্ধ বুকেও সে যেন বারবার মুজিব মুজিব বলে চিৎকার করে উঠছিলো। ৫৪ বছর পর পাকিস্তানী হায়েনার বেশে যে বুট আবার দেশপ্রেমিক জনতার বুকে উঠেছে তার সুদে ও আসলে হিসাব এই বাংলায় হবে। ৯৩ হাজার পাকিস্তানি সৈন্য যেভাবে আত্মসমর্পণ করেছে , সেভাবে আবার মুক্ত হবে সমগ্র বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশে গোপালগঞ্জ যেন বঙ্গবন্ধুর দূর্গ , এক অপ্রতিরোধ্য বাংলাদেশ। বুকের তাজা রক্তে ওরা এখনও মুজিবের নাম লিখে। বুলেট বিদ্ধ শরীর যেন চিৎকার করে বলছে , " ৫৬ হাজার বর্গমাইলের বাংলাদেশে আমিই মুজিব, আমিই আজ বাংলাদেশ।"
"দাবায়ে রাখতে পারবা না।"