17/01/2025
সুইডেনে যখন কোরআন পোড়ানোর সংবাদ বিশ্বমিডিয়ায় আসতো, তখন মানুষের হৃদয় কেঁপে উঠতো। মানুষ ভাবতো, তারা কীভাবে এতটা সাহস পায় আল-কোরআন পোড়ানোর। ক্ষোভ প্রকাশ করতো, প্রতিবাদ মিছিল করতো। কিন্তু এবার আর এটা বিশ্বমিডিয়ার খবর নয়, নয় ইউরোপের কোনো ঘটনা। কোরআন পোড়ানো হয়েছে দেশের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে।
১২ জানুয়ারি সকালে খবর এলো জিয়া হলের মসজিদে দুটি কোরআন পুড়িয়ে রাখা হয়েছে। এরপর খবর এলো, সৈয়দ আমীর আলী হলের মুক্তমঞ্চে কোরআন পুড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। সারা দিনে খবর পাওয়া গেল আরও সাতটি হলের বিভিন্ন স্থানে—ছাদে, মসজিদে পোড়া কোরআন পাওয়া গেছে।
কারা করলো এই ঘৃণ্য কাজ?
নিশ্চিতভাবেই কোনো উগ্রবাদী ইসলামবিদ্বেষী সংঘবদ্ধ দল। তারা দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় কোরআন পুড়িয়ে দেশের সকল মুসলিমদের প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে।
এ পরিস্থিতিতে মিডিয়া উপস্থিত হলো, সারাদিন ছাত্র, কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং ভিসি স্যারের সাক্ষাৎকার নিল।
কিন্তু, কিসের কী? যমুনা, একুশে টিভি আর আমাদের দেশ পত্রিকা ছাড়া তেমন কোনো মিডিয়া এলো না। দেশের অধিকাংশ মুসলিমই জানলো না এত বড় হৃদয়বিদারক ঘটনা। মিডিয়াগুলো যেন ভাসুরের নাম মুখে নিতে চায় না।
এরপর পুলিশ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আলামত সংগ্রহ করলো। তদন্ত কমিটি গঠন হলো—সেই পুরনো তদন্ত কমিটির মতো, যেগুলোর প্রতিবেদন কখনোই প্রকাশিত হয় না। ছয় দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো তদন্তের কোনো অগ্রগতি পাওয়া যায়নি।
আইনজীবী সাইফুল ভাই হত্যার মতোই এই হৃদয়বিদারক ঘটনাও হারিয়ে যাচ্ছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা হতভম্ব, কারণ এমন পরিস্থিতিতে তারা কখনোই পড়েনি। তারা বিক্ষোভ মিছিল এবং গণ-কোরআন তেলাওয়াত কর্মসূচি দিলেও সেই ইসলামবিদ্বেষীদের কিছুই করতে পারলো না। তারা হয়তো ছাত্রদের এই অস্থিরতা দেখে হাসছে এবং ভবিষ্যতে আরও কোনো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।
তাই প্রশাসন যদি সেই উগ্রবাদী ইসলামবিদ্বেষীদের গ্রেপ্তার এবং কঠোর বিচার করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এদেশের মুসলিমদের ভবিষ্যতে আরও খারাপ দিন দেখতে হবে।