𝐀𝐛𝐮 𝐇𝐮𝐫𝐚𝐢𝐫𝐚 𝐒𝐚𝐤𝐲 𝐒𝐡𝐚𝐤𝐢𝐥 (2025)

26/09/2025

ছবিতে যা দেখা যাচ্ছে
একটা আস্ত খাসির মাংস
সাথে অনেকগুলো মিষ্টি (প্রায় ১০ কেজি)
নদীর ঘাটে বা নির্জন স্থানে রাখা

এটা সাধারণত “ভোগ দেওয়া” নামে পরিচিত। অনেক সময় মানুষ জ্বীন, ভূত, পীর-ফকির বা অদৃশ্য শক্তিকে খুশি করার জন্য এই ধরনের কোরবানি বা খাবার রেখে যায়।

ইসলামের দৃষ্টিতে এর অবস্থান
কোরবানি কেবল আল্লাহর জন্য

কোরআনে আল্লাহ বলেছেন:

> “তুমি নামাজ পড় আমার জন্য এবং কোরবানি কর কেবল আমার জন্য।”
(সূরা আল-কাউসার: ২)

অর্থাৎ কোরবানি বা যবেহ আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে দেওয়া যাবে না।
অন্য কারো নামে যবেহ করা শিরক

রাসূল ﷺ বলেছেন:

> “আল্লাহ তাঁর অভিশাপ বর্ষণ করেছেন সেই ব্যক্তির উপর, যে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে যবেহ করে।”
(সহিহ মুসলিম ১৯৭৮)

তাই দেবতা জ্বীন, ফকির, গাছ, নদী, বটতলা—যার জন্যই হোক না কেন, এটা শিরক।
মানত / ভোগ

যদি কেউ বলে: “আমি যদি বিপদ থেকে বাঁচি তাহলে খাসি কেটে নদীতে রাখব”—এটা বাতিল, কবুল হয় না।

মানত বা নযর কেবল আল্লাহর জন্য, এবং তা গরিব-মিসকিনকে খাওয়ানোর মাধ্যমে পূর্ণ করতে হবে।

ফলাফল কী হয়

এতে জ্বীন আরও শক্তি পায় এবং মানুষের উপর প্রভাব বিস্তার করে।

যাদু-সিহরের পথ খুলে যায়।

সবচেয়ে বড় ক্ষতি—মানুষের ঈমান নষ্ট হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে।

করণীয়

এ ধরনের ভোগ মানত বা নিবেদন থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকা ফরজ।
আন্তরিকভাবে তাওবা করা দরকার।
দোয়া, কুরআন তিলাওয়াত, নামাজ ও বৈধ রুকইয়াহর মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে।
মনে রাখতে হবে, সুরক্ষা ও সমস্যা দূর করার ক্ষমতা শুধু আল্লাহর কাছেই আছে।

মোট কথা
আস্ত খাসি আর মিষ্টি নদীর ঘাটে রাখা আল্লাহর জন্য না হলে এটি শিরক। ইসলামে এই কাজ সম্পূর্ণ হারাম। এতে ঈমান চলে যাওয়ার ভয় আছে।
কালেক্ট

10/09/2025

#নাথিং

১।
রাত বাজে তিনটা। এই সময়ে ঘুম ভাংলো কেনো?
চারদিক চুপচাপ, নৈঃশব্দ। ওয়াশরুমে যাওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। কোন ফোন কল আসেনি। তবু ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
এই অড সময়ে গল্পের বই পড়তেও ইচ্ছা হবে না।
অভ্যাসবশতঃ মোবাইল হাতে নিলাম। এতো রাতে গান বাজিয়ে শোনাটা ঠিক হবেনা। অন্যদের ঘুম ভাংবে। এখন নিঃশব্দে ফেসবুকই ভরসা।
-কেমন আছো?
খটকা লেগে গেলো। আমিও মোবাইল হাতে নিলাম, সাথে সাথে মেসেজ, এমন একটা অবস্থা যেনো, সে জানতো আমি মোবাইল হাতে নিয়ে জেগে আছি।
ফারহানা?
ফেসবুক প্রোফাইলে যার ছবি দেয়া আছে সেটা ফারহানার না। আর কোন ভাবেই মোবাইলের ওই প্রান্তে যার সাথে কথোপকথন হচ্ছে সে ফারহানা হবার সুযোগ নেই। কারন গত বছর ফারহানা মারা গিয়েছে। ব্যাপারটা সুইসাইডাল। একসময়ে ফারহানা আমার মোর দ্যান ফ্রেন্ড ছিলো।
না, মোর দ্যান ফ্রেন্ড না, আমাদের গভীর প্রেম ছিলো। আমি ভালোবাসতাম ফারহানাকে।
কিন্তু বিষয় হচ্ছে, আত্মা এসে তো মেসেঞ্জারে নক দেবে না। আমার প্রোফাইলে প্রচুর আননোন ফ্রেন্ড। কবিতা টবিতা লিখি, ফলোয়ার বাড়াতে অপরিচিত অনেককে এড করি। কাজের বিভিন্ন ব্যস্ততার মধ্যে কবিতা লেখালেখি অনেক রিল্যাক্স দেয়।
মেয়েটার প্রোফাইলে ঢুকলাম।
এই ফারহানাও কবিতা লেখে। বেশ ভালো লেখে, আমার চেয়ে ভালো।
-আছি ভালো।
উত্তর দেয়াটা ভদ্রতা। এই প্রোফাইলটা ফারহানার নিজেরই হতে পারে। ও ছিলো পাগলাটে টাইপ। ফেসবুকে অনেকদিন ইনেকটিভ ছিলো। ওর প্রোফাইল হয়তো অন্য কেউ ঘাঁটে। কিন্তু কিছু জিজ্ঞেস করার ইচ্ছা হলো না।
-এতো রাতে জেগে কি করেন? কবিতা লেখেন?
আসলে আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা, এই মেয়ে আমার সম্পর্কে এতো জানলো কিভাবে?
-আমরা কি আগে কথা বলেছি?
-আপনার কি মনে হয়?
-আমি বুঝতে পারলে তো জিজ্ঞেস করতাম না। আসলে এই নামে আমার এক বান্ধবী ছিলো।
-কেনো এখন বান্ধবী নেই?
-আমি ভেবেছিলাম, আপনি সেইই। ও ফেসবুক প্রোফাইলে নিজের ছবি রাখেনা। আজব আজব ছবি, অথবা অন্য কারো ছবিও দিয়ে রাখতো?
-এখন কি তার সাথে যোগাযোগ নেই?
ফারহানার মৃত্যুর ব্যাপারটা এই মেয়েটার সাথে আলোচনা করতে চাইনা।
-আপনি তো দেখলাম, খুব ভালো কবিতা লেখেন।
-বাহ, তাহলে আমার প্রোফাইলে ঘাঁটাঘাঁটি করে ফেলেছেন। আপনিও ভালো লেখেন। আচ্ছা, আপনার লেখা একটা কবিতা পড়ি।
এই মাঝ রাতে অপরিচিত একটা মেয়ের সাথে এতো আলাপচারীতা ব্যাপারটা অদ্ভুত। আর যার সাথে কথা চলছে, সেটা ফেইক আইডি হলে এটা পুরুষ কারো প্রোফাইলও হতে পারে। তবে ঘুম যেহেতু আসছে না, আলাপচারীতা চালিয়ে যাচ্ছি।
-‘নক্ষত্রেরা নিভে যাবে, রাত হবে আরো অন্ধকার, নিভে যাবে রাতও কি এখন,
প্রেম মোহ, প্রেম মৃত্যু, পুরুষ জানো কি মৌমাছির মতোই মিলনে ফুরাবে জীবন… ‘
-বিরহেও তো অহরহ মরে পুরুষেরা। হাহাহা, পুরুষ মৌমাছির যৌনতার ব্যাপারটা কেমন না? জেনে শুনেই রানী মৌমাছির কাছে যায়, আর অকাতরে মরে যায়।
-পুরুষের জীবনটাই এমন। সমাজে নারীবাদীদের চোখে পুরুষেরা ভিলেইন। কিন্তু ছেলেরা ঘর বানায়, সংসার পাতে নারীর জন্যেই। পুরুষেরা আজন্ম বৈরাগী। নাহলে এতো যুদ্ধের প্রয়োজন হয় কেনো পুরুষের? যে সম্পদ পুরুষ অর্জন করে সেটা তো একা পুরুষের প্রয়োজনে না। নারী, সংসার তাকে যুদ্ধে নামায়।
-আপনিও তো দেখি আরেক পুরুষবাদী। ছেলেরা তো সব কিছুকেই ভোগের পন্য বানিয়েছে।
যুদ্ধ তো পুরুষ নিজেও শুরু করে প্রায়ই।
-ঘুম আসছে। ভোর হয়ে গেলো প্রায়। এভাবে আরো রাত জেগে থাকলে ভমিটিং টেন্ডেন্সি হবে। সকালে অফিস আছে।
-বমি ব্যাপারটা কিন্তু খারাপ না। মৌমাছির বমি তো মধু হিসাবে দেদারসে খেয়ে চলেছে মানুষ।
নিঃশব্দে হাসলাম। মেয়েটার হিউমার ভালো। ফেসবুক প্রোফাইলে মাত্র দুটো ছবি, ভালো করে চেহারা বোঝা যায়না। তবে এটা ফারহানার ছবি না, আর যার ছবি এখানে দেয়া সে তেমন সুন্দরী কেউ না।
নিশ্চিত হলাম, এটা ফারহানার প্রোফাইল না।
-আমি তো একটা কবিতার লাইন বললাম, সদ্য প্রষ্ফুটিত। আপনার লেখা একটা কবিতা পড়ি তাহলে। শোধ-বোধ।
-আমি হঠাৎ করে লিখতে পারিনা। মুড লাগে।
-তাহলে আগে লেখা থেকে কিছু দেন দেখি। পড়ে দেখি।
-‘তুমি নেই, অনুভুতিটা শূন্যতার, সেই অনুভুতিই কিভাবে দখল করে থাকে সবটুকু আমার, অনুভুতি কি পাখীর পায়ের ছাপ, মুছে যায় শূন্যতায়, বিন্দু থেকে শুরু, কিন্তু তার আগে কি ছিলো। কিছু কি ছিলো?
নেই, কিছু নেই। ‘
একটু চমকালাম আবার। ব্যাপারটা কোইন্সিডেন্স। ফারহানাও ভালো কবিতা লিখতো, তবে এই মেয়েটার মতো এতো ভালো না। এই মেয়েটার লেখার হাত খুব ভালো।
-ঘুম আসছে। আপনার সাথে হঠাৎ এমন দীর্ঘ আলাপ হলো। পরে কথা হবে।

২।
ফারহানার সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো মেজো চাচার বাসায়। ফারহানা বেসিক্যালি আমার কাজিন স্বর্ণার সিনিয়র বান্ধবী। মেজো চাচার কিডনী ডায়ালাইসিস করতে হয়। সেদিন উনাকে দেখতে গিয়েছিলাম। ওখানেই পরিচয় ফারহানার সাথে, দেখলাম আমরা আসলে ব্যাচমেট। ওকে ভালো না লাগার তেমন কোন কারন পাইনি আমি। খুব মিষ্টি চেহারা। পরিচয়, ফোন নাম্বার দেয়া-নেয়া হলো।
বাসায় ফিরে বিছানায় গা এলিয়ে দিয়েছি। দেখি ফারহানার ফোন। মেয়েটা খুব সপ্রতিভ। সে তার যেটা ইচ্ছা, তাই করে। সপ্রতিভ।
ওইদিন সারা রাত কথা বলেছি। সারা রাত আসলে কি কথা বলা যায়, কারো সাথে সেটা এখন বুঝিনা। আমরা দুজন সব সময় এক সাথেই চলি। ওর বাসায় বোধ হয় রেস্ট্রিকশন কম।
ফারহানার সাথে বন্ধুত্বের আগে আমার একটা এফেয়ার ছিলো, ক্লাসমেট লিজির সাথে। লিজি খুব হেল্পফুল মেয়ে। কোন সমস্যা ছিলো না।
ফারহানার সাথে বন্ধুত্বের শুরুতেই ওর সাথে রিলেশনশীপ কাট আপ। ফারহানার সাথে তুলনাতেই আসেনা লিজি। তবে হঠাৎ সম্পর্ক ছিন্ন হওয়াতে লিজি বোধ হয় একটু আঘাত পেয়েছিলো।
ফারহানা একটু ডোমিনেটিং। ওর বাসায় সবাই ওকে ভয় পায়। ও যাই বলে, তাই করে। ওর চাওয়া গুলোও অদ্ভুত। ফারহানা অন্য সবার চেয়ে আলাদা।
ফ্যাশন সেন্স অনন্য। একেকদিন একেক রকম স্টাইল করে ক্লাসে আসে। হাই হিল পড়ে। এদিকে আবার জীবনানন্দ দাসের অনুরাগী পাঠক। ও বেশ ভালো আবৃত্তি করে।
ইংরাজী সাহিত্যেও ঝোঁক আছে।
সারাদিন ইংরাজী গান শোনে। আমার আবার দেশী ব্যান্ডের গানই পছন্দ। ব্র্যান্ডেড জুতা, কসমেটিক্স। মোবাইলে হ্যালো বলার স্টাইলটাও অন্যরকম।

একদিন ফোন করে বললো, কাল রাতের ট্রেনে সিলেট যাবো। রাত দশটায় কমলাপুর চলে আসবি।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, কে কে যাবো আমরা?
ফারহানা উত্তর দিলো, আমরা দুজন।
এভাবে বলা নেই, কওয়া নেই, যখন তখন ঢাকার বাইরে যাওয়া তো সমস্যা। ফারহানার সাথে সেই প্রথম ঢাকার বাইরে বেড়াতে যাওয়া।
আমার অনেক বন্ধু-বান্ধব, ফারহানার সাথে বন্ধুত্বের পরে সবার সাথে ডিসকানেক্টেড হয়ে গেলাম। তবে আমার সব টুকু উজাড় করে নেওয়ার জন্য ফারহানাই যথেষ্ট ছিলো।
আমরা রোমান্সে ভাসছি, থার্ড এয়ারে এসে একদিন দেখি ফারহানাকে ফোনে কানেক্ট করতে পারছিনা। তখন ফেসবুক আসেনি। দু’দিন যোগাযোগ নেই। আমি তখন মোহে বুঁদ।
ইউনিভার্সিটিতে ক্লাসে দেখা হচ্ছে না। বিষয়টা বুঝতে পারছিনা। একবার ভাবলাম ওদের বাসায় খোঁজ নিই।
সেটার প্রয়োজন পড়েনি।
পরেরদিন দেখা পেলাম ফারহানার। তবে যেভাবে দেখা হলো, আমি অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। ক্যাম্পাসে নিরিবিলি গাছের নীচে ফারহানা ফর্সা চেহারার একটা ছেলের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে বসে আছে। আমাকে দেখে ফারহানার কোন ভাবান্তর হলো বলে মনে হলো না।
পরে জেনেছি, ফর্সা ছেলেটা আমাদের সিনিয়র ব্যাচের। নতুন সম্পর্ক।
এরপরে অনেকবার জিজ্ঞেস করেছি, এই রকম করা কি প্রয়োজন ছিলো? আমার প্রতি যদি মোহ কেটেই যায়, বললেই পারতো।
এইভাবে বেইজ্জতি না করলেও হতো।
সবাই মুখ টিপে হাসে, নাহয় সমবেদনা জানায়।
রাগে দুঃখে অনেকদিন কথা বলিনি ফারহানার সাথে।
একদিন করিডোরে হঠাৎ ওকে একলা পেয়ে গেলাম। আসলেই কৌতুহল ছিলো।
-ফারহানা, আমার সাথে এমন করলে কেনো? বললেই পারতে। সবার কাছে এভাবে হাসির খোরাক বানালে। তুমি ডোন্ট কেয়ার জানি। কিছু যায় আসেনা তোমার। কিন্তু হোয়াট ইজ মাই ফল্ট? আমি কি শুধু তোমার টাইম পাসের সংগী ছিলাম।
ফারহানার চোখ দুটো খুব তীক্ষ্ণ। ও তাকালো পুর্ন দৃষ্টিতে আমার দিকে।
আমি আবার বললাম, বলো, আমার কি ফল্ট?
-নাথিং।
এইটুকু বলে ফারহানা অবহেলায় আমার ছায়া মাড়িয়ে চলে গেলো।

৩।
এরপরে কিছুদিন এভাবেই চলতাম যেনো ফারহানার সাথে দেখা না হয়। কিন্তু এক্সিডেন্টালি দেখা হয়ে গেলো একটা রেস্টুরেন্টে। আমার কফি খাওয়ার নেশা।
ফারহানার সাথে একটা ছেলে। নতুন বয়ফ্রেন্ড নাকি?
আমার কি আসে যায়। কতোদিন যোগাযোগ নেই। আশ্চর্য ব্যাপার হচ্ছে, ওর বয়স একটুও বাড়েনি। আরো সুন্দরী হয়েছে। ঠোঁটে কড়া মেরুন কালারের লিপস্টিক।
কফির অর্ডার করতে কিউতে দাঁড়িয়েছি, আমার পিছনেই এসে দাঁড়ালো ফারহানা। কথা বলার বিন্দুমাত্র ইচ্ছা নেই আমার।
-কেমন আছো?
ফারহানা নিজেই আগ বাড়িয়ে জিজ্ঞেস করলো। ওর মধ্যে কি পাপবোধ কাজ করছে?
আল্লাহ জানেন।
দ্রুত কফি শেষ করতে গিয়ে জিভ পুড়ে গেলো। আমি তাড়াতাড়ি কফিশপ ছেড়ে আসলাম।
এই শহর অনেক বড়ো। কিছু মানুষের সাথে দেখা হয়না, চাইলেও। আবার কারো কারো সাথে অকারনে দেখা হয়ে যায়।
সুপার শপে দেখা যেদিন হলো, সেদিন ওর সাথে অন্য একটা লোক। কিছুটা বয়স্ক। মাথার চুল কম। চেহারা মন্দ না। আমি শুধু খুঁটিয়ে দেখি।
লোকটাকে ওর নতুন বয়ফ্রেন্ড মনে হলো। এখনো বিয়ে করেনি?
আমি ওকে না দেখার ভান করে শপিং শেষ করলাম।
অফিসের কাজে কয়েক বছর সিঙ্গাপুরে কাটালাম। জীবন মন্দ না। তবে মাঝে মাঝে ক্লান্তি লাগে। একটু থিতু হতে ইচ্ছা হয়।
দেশে ফিরছি। এয়ারপোর্টে চেক আউট করে একটু লাউঞ্জে বসেছি। আবার দেখি সেই ফারহানা।
একটু আশ্চর্য লাগে। ওর সাথে বারবার কিভাবে যেনো দেখা হয়ে যায়। বেশ লম্বা হ্যান্ডসাম একটা লোকের সাথে ফারহানা। দুটো বাচ্চা, দুজনেই ছোট। আমি এড়িয়ে যেতে চেয়েছিলাম, কিন্তু ফারহানা চোখের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো।
দেশে ফিরে আত্মীয় বন্ধু বান্ধবের সাথে দেখা করতে করতেই মাস খানেক সময় লেগে গেলো।

ফোন বাজছে।
-হ্যালো।
আমার চিনতে ভুল হওয়ার কথা না।
-আমার এতোদিনের পুরাতন নাম্বার এখনো আছে তোমার কাছে?
-আসলে আমার ইনট্যুশন বলছিলো, এই নাম্বারে এখনো তোমাকে পাবো।
-কি চাও?
-না কিছু চাওয়া, বা অনুরোধ করার অধিকার আমি হারিয়েছি অনেক আগে। আসলে র‍্যান্ডম কল করেছি। তুমি তো জানো, আমি যা ইচ্ছা তাই করি।
ভালো না লাগলে কল কেটে দাও।
-না, অসুবিধা নেই। বলো, কিছু বলবা?
-একদিন তোমার সাথে কথা বলতে চাই। দেখা করতে চাই।
-আমার সাথে আবার তোমার কিসের আলাপ? তোমার হাসবেন্ড দেখলে কি বলবে? খুব কি জরুরী দেখা হওয়া?
-তুমি না চাইলে নেই। এক কাপ কফি খাওয়ার মতো সময় যদি হয়।
-আচ্ছা আসবো। কবে দেখা করতে চাও? আগামী সপ্তাহে একটু ঢাকার বাইরে যাবো।
আমাদের যেদিন দেখা হলো, সেদিন কফি শপে ভিড় কম।
একদম নিরুত্তাপ বসে আছি দুজন। কফির কাপে উত্তাপ, ধোঁয়া, কিন্তু আমাদের তাল কেটেছে তো বহুদিন আগে।
অনেকক্ষণ চুপ থেকে এক সময় নৈঃশব্দ ভাংলাম।
-কিছু বলতে চাও। ডাকলে কেনো?
হঠাৎ যেনো ভেংগে পড়লো ফারহানা। মুখ ঢেকে কান্না শুরু করলো।
কি মুশকিল।
-আজাদ আমাকে মারে। এই যে দেখো।
ফুল হাতা জামা একটু তুলে দেখালো ফারহানা হাতে অনেকগুলো কালশীটে দাগ।
আমার খুব অস্বস্তি হচ্ছিলো, ফারহানার প্রতি কোন মোহ কাজ করে না আর।
আমি নিষ্পৃহ ভাবে তাকালাম।
-দেখো এগুলো তোমার একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। আমি কি করতে পারি। দাম্পত্যকলহ ব্যাপারটা খুব সাধারণ ঘটনা। সব ফ্যামিলেতেই কমবেশী ঘটে। একান্ত বেশী যন্ত্রণা লাগলে কিছুদিন বাবার বাড়িতে গিয়ে থাকো।
ফারহানা একটু চোখ মুছে আমার দিকে পুর্ণ দৃষ্টিতে তাকালো।
-তোমারও কি ফ্যামিলিতে ঝগড়া ঝাটি হয়?
আমার ব্যাপারটা কিন্তু ঝগড়া-ঝাটির লেভেলের না। ও খুব ব্রুটাল। রেগে গেলে যা খুশী বলে। একবার তো হসপিটালে ভর্তি হতে হলো। ঠোঁট কেটে গিয়েছিলো।
-আমার আবার ফ্যামিলি।
-কেনো?
-বিয়েটা তো করা হয়নি। আমার দাম্পত্য কলহের প্রসংগ অপ্রাসংগিক।
-কি বলো? এখনো বিয়ে করোনি। বয়স তো কম হলো না আমাদের। কেনো?
-উত্তর জানা কি খুব জরুরী?
-না, নিঃসন্দেহে আমি কোন অধিকার রাখিনা।
আচ্ছা, আমাকে সত্যিই কি খুব ভালোবাসতে? আমার আসলে তখন এতোটা মনে হয়নি। ভেবেছিলাম সহজেই মানিয়ে নেবে।
-এই প্রশ্ন কিন্তু এই এতো বছর পর অবান্তর। তোমার মনে নেই, করিডোরে আমিই তো তোমাকে প্রশ্ন করেছিলাম, তুমি কেনো এমন করলে।
কি উত্তর দিয়েছিলে মনে নেই? হঠাৎ চলে যাওয়ার কারন বলেছিলে, নাথিং।
আমারও আসলে বিয়ে করা বা না করার কারন কিছু নেই। নিজেকে এতো গুরুত্বপুর্ণ ভাবার কারন দেখিনা।
আমাদের একদিন জন্ম হয়েছিলো, একদিন মৃত্যুও হবে। আমরা এর কারন কি জানি? আর আমাদের জীবদ্দশার এই সময়সীমার আগে অসীম সময় পার হয়েছে। তার প্রায় কিছুই আমরা জানিনা। আমাদের মৃত্যুর পরেও অসীম সময় এই দুনিয়া টিকে থাকবে। তখন কি ঘটবে তার কিছুও আমি জানিনা। এতো তুচ্ছ সময় আমাদের জীবনে বেঁচে থাকার জার্নি। তুমি আমি আমরা সবাই নাথিং।
এই আনসার্টেন সময়ে আমাদের গন্তব্য কোথায় সেটাও আমরা জানিনা। ধর্মীয় ও সামাজিক কারনে আমরা অনেকেই এসবের অর্থ খুঁজে ফিরি।
আমরা সবাই সব কিছুর কারন খুঁজে বেড়াই। কিন্তু গাছে পাতা কেনো গজায় এর কারন কে জানে? আমাদের জিজ্ঞাসা এক সময় থেমে যায়।
নাথিং।
এই মহাবিশ্ব কতো বিশাল এখনো মানুষ সেটা নির্নয় করতে পারেনি। আমাদের পৃথিবী যে গ্যালাক্সীতে অবস্থান করে, সেটার আকারই প্রায় এক লক্ষ আলোকবর্ষ। শুধু আমাদের গ্যালাক্সীতেই একশো বিলিয়ন তারা আছে। অনেক দুরের তারার আলো এখনো পৃথিবীতেই পৌঁছায়নি।
আমরা কতো তুচ্ছ। আমরা নাথিং।
কি যেনো বলছিলো, আমি তোমাকে ভালোবাসতাম কিনা। বাসতাম খুব ভালো বাসতাম। এতোটা ভালোবাসতাম যে, সারাজীবন তোমার অপেক্ষায় কাটিয়েদিতে পারি। আর এখন তোমাকে ঘৃণা করি, কতো ঘৃণা করি, সেটা একজন মানুষ কাউকে যতো ঘৃণা করতে পারে, ততোটাই।
কিন্তু এই যে বললাম, এই মহাবিশ্বের মহাজগতের মাঝে আমরা কতোটা তুচ্ছ। মহাকালের মাঝে আমাদের বেঁচে থাকাটা কতো তুচ্ছ, অকিঞ্চিৎকর।
সেই তুলনায় তোমার অবহেলা, অপমান কিচ্ছু না।
তোমার জন্য আমার অপেক্ষা, প্রতীক্ষা, মোহ-ভালোবাসা, ঘৃণা, রাগ, ক্ষোভ সবকিছুই অকিঞ্চিৎকর।
এই মহাকালের মাঝে কতো মানুষ এসেছে, কতো মানুষ চলে যাবে। অসংখ্য ঘটনার মধ্যে আমার প্রেম নাথিং। তোমার বিট্রেয়াল নাথিং। আমার ঘৃণা সব কিছুই নাথিং।

এর পর আর ফারহানার সাথে দেখা হয়নি। কিন্তু কয়েক বছর ফেসবুকে কানেক্টেড ছিলাম। মাঝে মাঝে কবিতা পোষ্ট করতো। আমি লাইক, কমেন্ট করতাম। তারপর দেখি ওকে আর ফেসবুকে খুঁজে পাচ্ছি না। ভাবলাম সুখে আছে, থাকুক। যোগাযোগের চেষ্টা করিনি, ইচ্ছা হয়নি।
আমার এক পুরাতন বন্ধুর কাছে ওর মৃত্যু সংবাদ পেয়েছিলাম। অফিসের কাজে আবার সিংগাপুর গিয়েছিলাম। খবরটা পাইনি সময় মতো। সুইসাইডাল। অনেকগুলো স্লিপিং পিল খেয়ে মারা গিয়েছে ফারহানা।

গল্পগ্রন্থ #ফিসফিসানি। প্রকাশক ‘স্টুডেন্ট ওয়েজ’।
রকমারি লিংক: https://www.rokomari.com/book/454807/fishfishani

04/09/2025

বাংলাদেশের দুজন দায়ী - দাওয়াতি কাজ করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।💝🌀

29/08/2025

বিএনপি'র ঐতিহাসিক ঈদের পরের আন্দোলন, যা ঐতিহাসিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে..!!

বিএনপি কি কখনো একজন হাসনাত আব্দুল্লাহ তৈরি করতে পারবে?
এই হাসনাত আব্দুল্লাহরা নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লড়েছে, দেশকে মুক্ত করেছে!
আর বিএনপি?
বছরের পর বছর ধরে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছে—★
“ঈদের পর আন্দোলন হবে, হাসিনার পতন হবে!”
কিন্তু বাস্তবতা..? আন্দোলন তো দূরের কথা, জনগণের সঙ্গে করেছে প্রতারণা!
এখন আবার মুখে বড় বড় কথা!

23/07/2025

আমি আবারও কথা বলতে চাই
এমন এক পরিবর্তনের কথা, যা আমাদের নিজেকে, আমাদের সমাজকে ও আমাদের দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারে।
পরিবর্তন শুরু হয় ব্যক্তি থেকে। যখন আমরা নিজের ভেতর থেকে শক্তি খুঁজে পাই, তখনই আসল উন্নয়ন সম্ভব হয়। এটি কোনো দূরদৃষ্টি নয়, এটি বাস্তব. আমাদের দেশের প্রতি অগাধ সম্ভাবনার প্রতি বিশ্বাস।

বাংলাদেশের মানুষ পরিশ্রমী, সৃজনশীল ও দৃষ্টি রেখেছে উন্নয়নের পথে। আমাদের আছে প্রাকৃতিক সম্পদ, যুবসমাজের উদ্যম এবং প্রযুক্তির চমৎকার সুযোগ। কিন্তু আমরা কি যথেষ্টভাবে সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাচ্ছি?

1. আমাদের জীবনে ছোট ছোট অভ্যাস বদলাতে হবে
2. নিজের শিক্ষার প্রতি মনোযোগ দিতে হবে বেশি,
3. প্রযুক্তি ও নতুন দক্ষতা আয়ত্ত করতে হবে,
4. সমাজের নিয়ম-কানুন মেনে চলতে হবে ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে,
5. সহমর্মিতা ও ঐক্যের মূল্য বুঝতে হবে,
6. আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, নিজের প্রতি এবং দেশের প্রতি দায়বদ্ধ হতে হবে।

আমাদের চারপাশের পরিবেশ বদলাতে চাইলে আমাদের নিজেকে বদলাতে হবে। উন্নয়ন শুধু রাষ্ট্রের কাজ নয়, আমাদের প্রত্যেকের হাতেই রয়েছে সেই ক্ষমতা।

এই দেশে কত লোক আছে, যারা প্রতিদিন নতুন উদ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে, কৃষক থেকে উদ্যোক্তা, শিক্ষক থেকে প্রকৌশলী, শ্রমিক থেকে শিল্পী। তাদের গল্পগুলো জানুন, শিখুন এবং নিজেকে অনুপ্রাণিত করুন।

আমার ব্যক্তিগত ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতায়, প্রয়োজনে আমি আমার গল্প শেয়ার করতে, পরামর্শ দিতে প্রস্তুত আছি, যা একজন মানুষ, একটি গোষ্ঠী কিংবা পুরো জাতিকে সঠিক পথে পদার্পনে সহায়তা করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কারণ আমি জানি, সঠিক দিক নির্দেশনা অনেক সময়েই পরিবর্তনের প্রথম ধাপ।

আমাদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল, যদি আমরা সচেতন হই, একতাবদ্ধ হই এবং কাজ করি। আমি বিশ্বাস করি, আমরা নিজেকে বদলে জীবনে ছোট বড় উন্নতি করে আমাদের দেশকে সত্যিকারের উন্নয়নের পথে নিয়ে যেতে পারি।

আপনারা কী মনে করেন? আপনার জীবনের কোন ছোট বড় পরিবর্তন হয়েছে যা আপনার জীবন মান উন্নত করেছে? আপনার গল্প শেয়ার করুন, কারণ সেই গল্পই অন্যদের অনুপ্রেরণা হবে।

চলুন, একসঙ্গে বদলাই নিজেকে, বদলাই সমাজকে, বদলাই বাংলাদেশকে।

#বাংলাদেশ #উন্নয়ন #পরিবর্তন #সচেতন_নাগরিক # #সচেতন #প্রশাসন
#রাজনীতি #জনগণ #শিক্ষা #নাগরিক_দায়িত্ব #সমাজ #মানুষ #প্রথম #দেশপ্রেম #সরকার

21/07/2025

আপনাকে খুব মিস করি........
মাঝে মাঝে চুপচাপ বসে থাকি। কিছু না... এমনিই।
সব ঠিক আছে, সব চলছে—তবুও কেমন জানি লাগে।
হৃদয়ের ভেতর কোথাও যেন ফাঁকা ফাঁকা। কেউ নেই, অথচ ভীষণ ভিড়!
তখন হঠাৎ করে মনে হয়—আল্লাহকে কি হারিয়ে ফেললাম? নাকি ভুলেই গেছি?

একসময় খুব আপন ছিলাম হয়তো তাঁর।
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজে চোখ ভিজতো। দোয়ার শব্দে বুক কাঁপতো।
আর এখন...? এখন শুধু কষ্ট হলে বলি—"আল্লাহ বাঁচান!"
তাঁকে ভালবেসে ডাকি না, শুধু দরকারে ডাকি।

রাত গভীর হলে, সবাই ঘুমিয়ে গেলে, জানালার পাশে বসে চাঁদের আলোতে ভাবি আমি কি এখনো তাঁর প্রিয়?
আমি কি এখনো তাঁর সেই বান্দা; যে শুধু তাঁর জন্য কেঁদে ফেলত?

অনেক কিছু পেয়েছি দুনিয়ায়—মানুষ, নাম, কাজ, স্বীকৃতি…
কিন্তু যা পাইনি সেটা বড় একটা শূন্যতা হয়ে বুকের মাঝে জমে থাকে।
হয়তো সেইটাই আল্লাহ! হয়তো এই শূন্যতার নামই—তাঁকে না পাওয়া।

জানি, আমি দূরে চলে গেছি। জানি, আমি ব্যস্ত হয়ে গেছি—নিজেকে নিয়ে, দুনিয়া নিয়ে, অন্যদের মন পাওয়ার জন্য…
কিন্তু একটা প্রশ্ন এখনও তাড়া করে ফেরে—

আল্লাহকে কি মিস করেন না...?

কখনো কি কেঁদেছেন শুধুই তাঁর জন্য?
কখনো কি ভয় পেয়েছেন—যদি তিনি রাগ করে মুখ ফিরিয়ে নেন?

জানি না আপনি কীভাবে জীবন কাটাচ্ছেন…
কিন্তু আমি মাঝেমধ্যে হঠাৎ থেমে যাই। চোখ বন্ধ করে শুধু বলি:

"ইয়া আল্লাহ… আমি আপনাকে মিস করি। ভীষণ মিস করি।"

✍️ নওমুসলিম মুহাম্মদ রাজ

16/07/2025

আপনি জীবনে নানা স্তরে নানা মানুষকে ভালোবাসা দিবেন। অবশ্যই নিঃস্বার্থ না, আপনি আশা করবেন বিনিময়ে সেই মানুষগুলো আপনাকে ভালোবাসা ব্যাক দিবে। এবং হয়তো কিছু মানুষ থেকে আপনি ভালোবাসা ব্যাক ও পাবেন। কিন্তু আপনি হঠাৎ আবিষ্কার করবেন, যে মানুষগুলো থেকে আপনার এক্সপেক্টেশন সবচেয়ে বেশি, তারা আপনাকে একসময় ভালোবাসা দিলেও, এক পর্যায়ে সেই ভালোবাসা সরিয়ে নিয়ে আপনাকে নানা কাজে ব্যবহার করতে শুরু করবে।

বয়স কম থাকতে আপনি ভাববেন, বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, আপনার পছন্দের অমুক-তমুক, এরকম অনেকে আপনাকে প্রকৃত অর্থেই ভালোবাসে। আপনি মনে করবেন এই ভালোবাসা অবিচলিত, অশেষ। কিন্তু যতই বয়স বাড়বে ততই খেয়াল করবেন, তারা আসলে আপনাকে ভালোবাসে “শর্তসাপেক্ষে”। সেই শর্তের ভিতর ঢুকে থাকে উপকার পাওয়ার প্রত্যাশা। আপনার ওপর অধিকার বজায় রাখার আকাঙ্ক্ষা। অথবা তাদের জীবন ব্যর্থ না হোক এই মানসিক চাপে আপনাকে বেঁধে রাখার প্রচেষ্টা। •

তারপর একদিন দেখবেন, তারা আপনাকে তাদের আসল রূপ দেখিয়ে দিলো। এমন রূপ, যেটা আপনি কল্পনাও করেননি। এই রূপ শীতল, হিসেবি, মাঝেসাঝে নির্মম। আপনি ভাববেন এটা ব্যতিক্রম, কিন্তু কিছুদিন পর বুঝবেন, এটাই আসলে নিয়ম। •

এভাবে একসময় আপনি যুবক বয়স পার করে প্রৌঢ় হবেন। সময় যাবে, অনেক কিছু বদলাবে। কিন্তু এই প্যাটার্ন এর কোনো পরিবর্তন দেখতে পারবেন না। বরং নতুন চরিত্র আসবে একই নাটকে। আপনার প্রচুর“বন্ধু”থাকবে। আপনার স্ত্রী, সন্তান হবে। তাদের মাঝেও ভালোবাসা থাকবে, কিন্তু সেই ভালোবাসার গভীরে আপনি আবিষ্কার করবেন এক প্রকার স্বার্থনির্ভরতা। যতক্ষণ আপনি তাদের প্রয়োজন মেটান, তাদের স্বপ্ন ধারণ করেন, কিংবা তাদের পরিচয়ের জন্য আপনি থাকেন নিরাপত্তার চাদর হয়ে, ততক্ষণ তারা আপনাকে ভালোবাসবে। •

বন্ধু, কলিগ, আত্মীয়, অনেকেই থাকবে। আপনার পাশে দাঁড়াবে, কথা বলবে, হাসবে। কিন্তু কেউ আপনি যেভাবে ভালোবাসা আশা করছেন, ঠিক সেভাবে আপনাকে ভালবাসবে না, ভালবাসতে পারবে না। কেউ আপনার ভেতরের প্রতিনিয়ত যুদ্ধের সংবাদ জানতে চাইবে না। কেউ আপনার চেপে রাখা কান্না শুনতে পারবে না। কেউ আপনার হৃদয়ের ক্ষতগুলোর উৎস ধরতে আগ্রহী হবে না।

এরপর আপনার বয়স আরো বাড়বে। বৃদ্ধ অবস্থায় আপনি বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে যাবেন। একদিন আপনি নিজেকে বিছানায় শুয়ে দেখবেন, একা। আপনাকে কেউ ব্যস্ত পৃথিবী থেকে সময় দেবে না। তখন আপনি হঠাৎ বুঝতে পারবেন, এত বছর ধরে আপনি যাদের জন্য এত বছর ভালোবাসা, ত্যাগ, সহ্যক্ষমতা, অভিমান জমিয়ে রেখেছিলেন, তাদের কাছে আপনার আসলে কোনো মূল্য ছিল না। আপনি ছিলেন দায়িত্বের নাম। অভ্যাসের রুটিন। কখনো বা আবেগের দায়। কিন্তু কখনোই নিঃস্বার্থ ভালোবাসার জায়গা না। •

তখন আপনি উপলব্ধি করবেন, শুধুমাত্র একজনই ছিলেন, যিনি আপনাকে বিনিময় ছাড়া ভালোবেসেছেন, যিনি আপনার প্রতিটি কান্না, প্রতিটি নিঃশ্বাস, প্রতিটি আশা, প্রতিটি হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন জানতেন। তিনিই হলেন আপনার রব, আল্লাহ। •

আপনার সমস্ত কথা, সমস্যা, আশা, এক্সপেক্টেশন, আসলে শুধুমাত্র আল্লাহর কাছেই নির্ভয়ে, নির্লজ্জে, খোলামনে বলতে পারেন। কিন্তু ততদিনে খুব দেরী হয়ে গিয়েছে। কারণ আপনাকে ৬০ বছর হায়াত দেয়া হয়েছিলো, আপনি ৫৯ বছরে এসে কুরআনে ইরশাদ করা “আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সাঃ) এর প্রতি সর্বোচ্চ ভালোবাসার আদেশ” এর মর্ম উদঘাটন করতে পেরেছেন। •

আপনি আত্নজিজ্ঞাসায় ডুবে যাবেনঃ“তাহলে কি আমি লাইফের মেজরিটি টাইম কিছু অকৃতজ্ঞ মানুষের জন্য ব্যয় করলাম? মানুষের ভালোবাসা মাত্রই ছিল ক্ষণস্থায়ী, শর্তযুক্ত, অনেক সময় মেকি, সে যে মানুষই হোক না কেনো। অথচ যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন, লালন করেছেন, প্রতি মুহূর্তে রিজিক দিয়েছেন, তাঁর ভালোবাসার প্রতিশ্রুতি আমি ধরতে পারিনি।”°

আপনি জীবনের অর্থ খুঁজেছেন মানুষের এক্সপেক্টেশনের মধ্যে। অর্থের মধ্যে। সামাজিক স্ট্যাটাসের মধ্যে। আপনি চেয়েছেন “সাবলম্বী” হতে, “প্রমাণ” করতে, “ভালো” হতে। কিন্তু কখনো ভাবেননি এই শব্দগুলোর সংজ্ঞা কারা ঠিক করেছে, কারা আপনাকে শেখায় কাকে ভালোবাসা উচিত, কাকে নয়। •

অথচ ঐ যে নীরবে নিভৃতে জায়নামাজের উপর সিজদারত অবস্থায় ৫৯ বছর ৯ মাস বয়সে আপনি কান্নারত অবস্থায় অনুভব করছেন, আপনার রব আপনার জন্য সবসময়ই ভালোবাসা রেখে দিয়েছিলেন, আপনি সেই ভালোবাসা টাচও করে দেখেননি। সেই ভালোবাসা ছিল নীরব, শুদ্ধ, অফুরন্ত, যা আপনি উপেক্ষা করে গেছেন। •

অতঃপর মৃত্যুর সময় ক্ষণিকের মুহূর্তে আপনার সামনের পার্থিব পর্দাটা তুলে ধরা হবে। তখন আপনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ এর ঠিক আগমুহূর্তে দেখতে পারবেন, আল্লাহ আসলে আপনাকে কতভাবে বুঝিয়েছেন, যে এই পার্থিব জীবনের সম্পূর্ণটাই ছিলো মিথ্যা এক মেকি প্রবঞ্চনা। লোক দেখানো ভালোবাসা, কৃত্রিম সফলতা, অলস উচ্চাশা। সমস্তকিছু ছিল এক সুপরিকল্পিত ফাঁদ। •

প্রকৃত সত্য ছিলো শুধুমাত্র একটি সম্পর্ক। আপনার সাথে আপনার রবের কানেকশন। সেই কানেকশন ছাড়া সবকিছু ছিল অস্থায়ী, অপ্রয়োজনীয়, শেষ পর্যন্ত নিষ্ফল। •

এভাবেই আপনি মৃত্যুবরণ করবেন। আপনার জীবনের সমস্ত অর্জন আপনার সাথে মাটিতে পদার্পণ করবে।
আপনার ছড়ানো ছিটানো ভালোবাসা অনেক মানুষ ব্যবহার করবে। আর আপনি? আপনি মিলিয়ে যাবেন এই নশ্বর ক্ষণিকের মোহময় পৃথিবী থেকে। আপনার সর্বশেষ চোখের ভাষায় পড়ে থাকবে একটি দেরিতে অনুধাবন করা ভালোবাসার উপলব্ধি। একটি নির্বাক চাহনী। আপনার খোলা চোখ বন্ধ করে দেয়া হবে। শুরু হবে আপনার নতুন বাসস্থানের প্রস্তুতি। এটাই জীবনের একমাত্র গল্প। এই গল্পতেই আমরা চলছি, কেউ এ পাতায়, কেউ ও পাতায়। •

কিন্তু কত মিথ্যা আশ্বাস এবং প্রতারণার পর আমরা বুঝবো যে, শুধু আল্লাহ তায়ালার কাছেই আমাদের প্রত্যাবর্তন? আল্লাহ আমাদের ভিতরে দিয়েছেন ফিতরাত, বাইরে দিয়েছেন ঐশী বাণী। আমাদের জীবনে দিয়েছেন শত শত নিদর্শন। তবুও আমরা বিপদগামী, ছুটে চলেছি এক মিথ্যা মায়ার পিছনে, যার গন্তব্য কালো অন্ধকার আগুন ছাড়া আর কিছুই না। পোকার মতো দৌড়ে যাচ্ছি আগুনে ঝাঁপ দেয়ার জন্য। বলুন তাহলে, কেনো আমরা নরক ডিজার্ভ করি না?

07/07/2025

- ঝেড়ে ফেলে দিন আপনার অতীতকে কি আছে তাতে তা দেখার দরকার নেই!

- আপনি একজন জুলুমকারী ছিলেন?
- ব্যভিচারে লিপ্ত ছিলেন?
- চুরি করতেন?
- মিথ্যা বলতেন?
- গীবত করতেন?
- পরনিন্দা করতেন?

- আপনিই যাই ছিলেন যত পাপই আপনি আপনার আমলনামায় লিখিয়েছেন না কেন মনে রাখবেন তার চাইতেও বিশাল আপনার রবের ক্ষমা!

- ইসলামের সবচেয়ে বড় সৌন্দর্য এখানে কারোর অতীত দেখা হয় না!

- তাওবা করুন তার কাছে ক্ষমা চান!🌸

- হীনমন্যতায় ভুগবেন না!
- আপনি দ্বীনের পথে এসেছেন লোকে হয়ত আপনাকে দেখে টিপ্পনী কেটে বলে,"আরে সেই দিনও দেখলাম অমুক তমুক পাপ করে বেড়াচ্ছে আর আজ এসেছে আমাদের দ্বীন শেখাতে!"

- দরকার নেই সেইদিকে নজর ফেলার!
- অন্যের কাছে মহৎ হতে পারার মধ্যে কোন লাভ নেই , কারো কাছে খুব ভালো মানুষ হয়ে বেঁচে থাকার মধ্যে ও কোন গৌরব নেই!

- আপনি আল্লাহ্‌র কাছে ভালো হোন!
- তিনিই কিয়ামত দিবসের মালিক!

- আপনি যখন অন্যের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হবেন , কাউকে গালি দিবেন তখন ভাবুন আল্লাহ্‌ কি ভাবছেন ?

- আপনি দ্বীনের পথে হাঁটা শুরু করেছেন। আপনাকে দেখে আশেপাশে লোকেরা কি বলছে দরকার নেই সেইসব নিয়ে ভেবে সময় নষ্ট করার। আল্লাহ্‌র কসম কবরে যখন আপনি একা থাকবেন তখন আপনার ভাল কাজগুলো ব্যতিত আর কোন কিছুই আপনার কাজে আসবে না..!

- মানুষ যখন আপনার বিষয়ে খারাপ মন্তব্য করবে শুধু মাত্র আপনি তাকে ক্ষমা করে দিন। অচিরেই তার মন্তব্য তাকে গ্রাস করবে..!🥀

- আপনি সব লোকের কাছে ভালো হতে যাবেন না,সাধারণ হয়ে যান..!

- ওয়াল্লাহি সেদিন এমন বহু লোক বিনা হিসেবে জান্নাতে যাবে যাদের মূল্য দুনিয়াতে কিছুমাত্র ছিলনা, যে জীর্ণ বস্ত্রের ছিল, যে দুনিয়াতে ঠিকমতো খেতে পারতোনা..!

- আমাদের দ্বীন যেন কেবল দুনিয়ার জন্য না হয়, তাদের মন্তব্যগুলো যেন আমাদের ব্যথিত না করে..!🌺

- আসুন দ্বীনের পথে..!
- চলুন ইসলামের পথে..!
- নিঃসন্দেহে আল্লাহ মহান..!🌸

#সংগৃহীত

21/06/2025

হঠাৎ পুরনো স্ট্যাটাস গুলো ঘেঁটে দেখবেন, কমেন্ট করা অনেক বন্ধুই এখন আর fb তে নেই। এমনকি আপনার life এ ও নেই।

ব্যস্ততার ভিড়ে বাস্তবতার কাছে নিজেকে সোঁপে দিয়েছে,
মেসেঞ্জারে পিছিয়ে পড়া মেসেজ গুলো যখন পড়বেন,
হয়তো কারোও জন্য চোখের পাতা ভিজে যেতে পারে নিজের অজান্তেই,

হঠাৎ ভার্চুয়াল জগতে প্রিয় হয়ে উঠা বন্ধুটিও ১দিন হারিয়ে যেতে পারে। একদিন মেসেজ না দিলে রেগে যাওয়া মানুষটিও মাসের পর মাস মেসেজের রিপ্লাই দেওয়ার মতো সময় পাবে না।

বাস্তবতার কাছে আমরা সবাই পরাজিত, তবুও দিনশেষে রাতের আধাঁরে, কিছু কিছু স্মৃতি আমাদের তাড়া করে বেড়ায় নিজের অজান্তেই...

কিছু কষ্ট একান্তই নিজের হয়। তাতে আর কি আসে যায়, সবাইতো ভালো আছে। ভালো থাকুক আমাদের ভালোবাসার মানুষগুলো। ভালো থাকুক তাদের ভালোবাসা হাসি তামাশা.. ❤

-সংগৃহীত

Monday	09:00 - 22:30
Tuesday	09:00 - 22:40
Wednesday	09:00 - 23:40
Thursday	09:00 - 23:40
Friday	09:00 - 23:30
Saturday	09:00 - 23:45
Sunday	09:00 - 17:00

𝐀𝐛𝐮 𝐇𝐮𝐫𝐚𝐢𝐫𝐚 𝐒𝐚𝐤𝐲 𝐒𝐡𝐚𝐤𝐢𝐥

26/09/2025

10/09/2025

04/09/2025

29/08/2025

23/07/2025

21/07/2025

16/07/2025

07/07/2025

21/06/2025

Address

Opening Hours

Website

Alerts

Contact The Business

Shortcuts

Share