Kabir, Netrokona (2025)

31/08/2025

সমালোচক কে কখনো শত্রু ভেবনা,
সে-ই প্রকৃত বন্ধু।-জেফারসন

30/08/2025

সূর্যের প্রথম আলোর মতোই আপনার জীবনও উজ্জ্বল হয়ে উঠুক। দিনের শুরুটা হোক অফুরন্ত সম্ভাবনা দিয়ে।

18/08/2025

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে

নিয়ে আমার কিছু অভিজ্ঞতা কথা লিখলাম দয়া করে পড়বেন

চিকিৎসা নাকি টাকার খেলা আর অবহেলার প্রদর্শনী? ময়মনসিংহ মেডিকেলে আমার মায়ের শেষ তিন দিনের দুঃসহ স্মৃতি।

আমার এই লেখাটি কোনো সাধারণ অভিযোগ নয়, এটি একজন সন্তানের বুকফাটা আর্তনাদ। যে সন্তান তার সবচেয়ে বড় আশ্রয়, তার মাকে হারিয়েছেন চিকিৎসা ব্যবস্থার চরম অবহেলা আর দুর্নীতির কারণে। আমি আমার এই দুঃসহ অভিজ্ঞতা সবার সামনে তুলে ধরতে চাই, যাতে আর কোনো সন্তানকে আমার মতো অসহায় হতে না হয়।

ঘটনার শুরু: ১৭ই এপ্রিল, ২০২৫

দুর্গাপুরের একটি হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার আশায় আমার অসুস্থ মাকে নিয়ে আমরা ১৭ই এপ্রিল, ২০২৫, বিকাল ৫টার দিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আসি। ভেবেছিলাম, বড় হাসপাতাল, ভালো ডাক্তার, মা হয়তো দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন। কিন্তু আমাদের সেই আশা হাসপাতালে পা রাখার মুহূর্ত থেকেই দুঃস্বপ্নে পরিণত হতে শুরু করে।

হাসপাতালের ৪ তলায় মাকে নিয়ে যাওয়ার সাথে সাথেই শুরু হয় টাকার খেলা। জরুরি বিভাগ থেকে ওয়ার্ডে নেওয়ার জন্য ট্রলি বয়কে টাকা দিতে হলো। ওয়ার্ডে ঢোকার পর বুয়া এবং ওয়ার্ড বয়দের টাকা না দিলে যেন কোনো কাজই হবে না—এমন একটি পরিস্থিতি। অসহায় আমরা মুখ বুজে তাদের দাবি মেটাতে বাধ্য হলাম।

চিকিৎসার নামে প্রহসন

এরপর শুরু হয় আসল ভোগান্তি। ডাক্তারদের দেখা পাওয়া যেন আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো। একজন ডাক্তার আসেন তো আরেকজন আসেন না। গত তিন দিনে আমরা কোনো সিনিয়র ডাক্তারের সাথে ঠিকমতো কথা বলার সুযোগই পাইনি।

শুধু টেস্ট আর টেস্ট: ভর্তির পর থেকেই শুরু হয় একের পর এক টেস্টের পালা। কিন্তু কোনো নির্দিষ্ট রোগ নির্ণয় বা চিকিৎসার কোনো সমন্বয় ছিল না। দিন যাচ্ছিল শুধু টেস্টের রিপোর্ট সংগ্রহ করতেই।

একেক ডাক্তারের একেক মত: একেক ডাক্তার এসে একেক কথা বলতেন। একজন বলতেন মায়ের ডায়াবেটিসের সমস্যা প্রকট। আরেকজন বলতেন, সমস্যাটা ব্রেইনে। পরক্ষণেই অন্য একজন এসে বলতেন হার্টের গুরুতর সমস্যা রয়েছে। তাদের এই ভিন্ন ভিন্ন মত আমাদের আরও বিভ্রান্ত ও আতঙ্কিত করে তোলে।

অসংলগ্ন প্রেসক্রিপশন: সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হলো, আমার মা তখন প্রায় অচেতন, তার জ্ঞান ছিল না। অথচ একজন ইন্টার্ন ডাক্তার প্রেসক্রিপশনে ট্যাবলেট খাওয়ার নির্দেশ দেন! যে রোগী অজ্ঞান, সে কীভাবে ট্যাবলেট খাবে? এই সাধারণ জ্ঞানটুকুও কি তাদের ছিল না? পরে জানতে পারি, তারা প্রায় সব রোগীকে একই ধরনের একটি প্রেসক্রিপশন কপি করে ঔষধ লিখে দিচ্ছিল।

যোগাযোগের সুযোগ শূন্য

এই তিন দিনে আমরা সিনিয়র ডাক্তারদের সাথে কথা বলার কোনো সুযোগই পাইনি। ওয়ার্ডে যারা আসতেন, তারা মূলত ইন্টার্ন ডাক্তার। তাদের কাছে রোগীর অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে তারা বিরক্ত হতেন অথবা দায়সারা উত্তর দিতেন। মনে হচ্ছিল, রোগীরা তাদের কাছে গবেষণার বস্তু ছাড়া আর কিছুই নয়। কার কাছে যাব, কাকে আমাদের অসহায়ত্বের কথা বলব—তার কোনো পথই খোলা ছিল না।

শেষ পরিণতি: ২০শে এপ্রিল, ২০২৫

এই চরম অব্যবস্থাপনা, সমন্বয়হীনতা আর অবহেলার মধ্যেই ২০শে এপ্রিল, ২০২৫, বিকাল ৫টার দিকে আমার মা আমাদের ছেড়ে চলে যান। যে মানুষটিকে আমরা সুস্থ করার আশায় এখানে নিয়ে এসেছিলাম, তিন দিনের মাথায় তার লাশ হয়ে ফিরে যাওয়াটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না।

আমার কিছু প্রশ্ন এবং আকুতি

একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অবস্থা যদি এমন হয়, যেখানে ট্রলি বয় থেকে শুরু করে ওয়ার্ড বয় পর্যন্ত সবাইকে টাকা দিতে হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?

ডাক্তাররা যদি রোগীর প্রতি ন্যূনতম দায়িত্ববোধ না দেখান, যদি তাদের মর্জি মতো রোগী দেখেন, তাহলে চিকিৎসার মতো একটি মহান পেশার আর কী মূল্য থাকে?

অজ্ঞান রোগীকে ট্যাবলেট খেতে দেওয়ার মতো ভুল প্রেসক্রিপশন যারা লেখে, তাদের হাতে আমাদের জীবন কতটা নিরাপদ?

আমার এই অভিজ্ঞতা থেকে আমি সবাইকে বলতে চাই, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আপনার প্রিয়জনকে নেওয়ার আগে হাজারবার ভাবুন। যদি সম্ভব হয়, ভালো চিকিৎসার জন্য অন্য কোনো বিকল্প খুঁজে নিন। আমার যা হারানোর তা আমি হারিয়েছি, কিন্তু আমি চাই না আর কোনো পরিবার এই অবহেলার শিকার হয়ে তাদের প্রিয়জনকে হারাক।

এই অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলা আমাদের সকলের দায়িত্ব। হয়তো আমাদের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙাতে পারবে।

01/08/2025

বাংলাদেশের ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সীমান্ত ঘেঁষে, নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলায় অবস্থিত এক অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি লেংগুড়া। নাগরিক কোলাহল থেকে দূরে, শান্ত ও নিরিবিলি এক আশ্রয় খুঁজছেন যারা, তাদের জন্য লেংগুড়া এক আদর্শ গন্তব্য। এখানে প্রকৃতি তার আপন খেয়ালে এঁকেছে সবুজের আলপনা, যার বুক চিরে বয়ে গেছে স্বচ্ছ জলের নদী, আর যার আকাশে বাতাসে মিশে আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বের গাঁথা। পাহাড়, নদী, ঐতিহাসিক নিদর্শন আর আদিবাসী সংস্কৃতির বৈচিত্র্যময় সমন্বয়ে লেংগুড়া এক কথায় অনন্য।

ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক পরিবেশ

ময়মনসিংহ বিভাগের নেত্রকোনা জেলা সদর থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে, ভারতের গারো পাহাড়ের পাদদেশে লেংগুড়া ইউনিয়নের অবস্থান। এখানকার ভূপ্রকৃতি মূলত ছোট-বড় টিলা এবং সমতল ভূমির এক মিশ্রণ। সীমান্তের ওপারে ভারতের সুউচ্চ পাহাড়ের সারি এখান থেকে স্পষ্ট দেখা যায়, যা বর্ষাকালে মেঘেদের সাথে মিতালী করে এক অপার্থিব দৃশ্যের জন্ম দেয়। পুরো এলাকাটাই যেন সবুজ চাদরে মোড়া, আর এই সবুজের মাঝেই শান্ত, স্নিগ্ধ জনবসতি। এখানকার বাতাসে নেই কোনো দূষণ, নেই কোনো যান্ত্রিক কোলাহল। আছে কেবল পাখির কলকাকলি আর প্রকৃতির নিস্তব্ধতা, যা মনকে দেয় এক অনাবিল প্রশান্তি। এই অঞ্চলে গারো এবং হাজং-এর মতো ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস, যা লেংগুড়ার সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলকে দিয়েছে এক ভিন্ন মাত্রা।

গঙ্গেরসরি নদী: স্বচ্ছ জলের রূপকথা

লেংগুড়ার অন্যতম প্রধান আকর্ষণ এখানকার গঙ্গেরসরি নদী। কোনো কোনো স্থানীয় উচ্চারণে একে গণেশ্বরী নদীও বলা হয়। মেঘালয়ের পাহাড় থেকে সৃষ্ট এই নদী লেংগুড়ার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। গঙ্গেরসরি নদীর জল কাঁচের মতো স্বচ্ছ। শুকনো মৌসুমে নদীর অনেক অংশেই জল কমে গিয়ে ধবধবে সাদা বালুর চর জেগে ওঠে, আর সেই বালির নিচ দিয়ে ঝর্ণার মতো বয়ে চলে শীতল ও স্বচ্ছ জলধারা। নদীর তীরে দাঁড়িয়ে এর সৌন্দর্য উপভোগ করা এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। পর্যটকেরা প্রায়শই এই নদীর শীতল জলে গা ভিজিয়ে ক্লান্তি দূর করেন। নদীর দুই ধারে সবুজের সমারোহ আর দূরে দৃশ্যমান পাহাড়ের সারি এক মনোরম দৃশ্যের অবতারণা করে। পর্যটকদের মুগ্ধ করে।

মমিনের টিলা:

লেংগুড়া বাজারের কাছেই ফুলবাড়ি গ্রামে অবস্থিত মমিনের টিলা এখানকার আরেকটি আকর্ষণীয় স্থান। এটি মূলত একটি উঁচু টিলা, যা বর্তমানে একটি পার্কের রূপ পেয়েছে। জেলা পরিষদের উদ্যোগে এই টিলার উপরে পর্যটকদের বসার জন্য বেঞ্চ ও ছাতা নির্মাণ করা হয়েছে এবং টিলায় ওঠার জন্য তৈরি করা হয়েছে পাকা সিঁড়ি। মমিনের টিলার চূড়ায় দাঁড়ালে একদিকে যেমন গঙ্গেরসরি নদীর সর্পিল গতিপথ চোখে পড়ে, তেমনি অন্যদিকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সবুজ পাহাড়ের বিস্তৃত দৃশ্য মন কেড়ে নেয়। মেঘমুক্ত আকাশে দূরের পাহাড়গুলোকে এতটাই স্পষ্ট দেখা যায় যে মনে হয় হাত বাড়ালেই ছোঁয়া যাবে। টিলার উপরে বসে নির্মল বাতাসে বুক ভরে নিঃশ্বাস নেওয়া আর প্রকৃতির এই বিশালতাকে উপভোগ করা এক অসাধারণ অনুভূতি। নিরিবিলি পরিবেশে প্রিয়জনের সাথে কিছুটা সময় কাটানোর জন্য মমিনের টিলা এক আদর্শ জায়গা।

সাত শহীদের সমাধি: ইতিহাসের সাক্ষী

লেংগুড়ার সৌন্দর্য কেবল তার প্রকৃতিতেই সীমাবদ্ধ নয়, এর মাটির সাথে মিশে আছে মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস। ১৯৭১ সালের ২৬শে জুলাই, কলমাকান্দার নাজিরপুর বাজারে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সাথে মুক্তিযোদ্ধাদের এক রক্তক্ষয়ী সম্মুখযুদ্ধ সংঘটিত হয়। এই যুদ্ধে সাতজন বীর মুক্তিযোদ্ধা—ডাঃ আব্দুল আজিজ, মোঃ ফজলুল হক, মোঃ ইয়ার মাহমুদ, ভবতোষ চন্দ্র দাস, মোঃ নূরুজ্জামান, দ্বিজেন্দ্র চন্দ্র বিশ্বাস এবং মোঃ জামাল উদ্দিন—শাহাদাৎ বরণ করেন। যুদ্ধের পর এই সাত বীরের মরদেহ লেংগুড়া ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামে, ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের ১১৭২ নম্বর পিলারের কাছে অত্যন্ত যত্নের সাথে সমাহিত করা হয়। সেই থেকেই এই স্থানটি ‘সাত শহীদের সমাধি’ বা ‘সাত শহীদের মাজার’ নামে পরিচিত।

এই সমাধিস্থলটি এখন একটি পবিত্র তীর্থক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে এই বীরদের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করে রাখা হয়েছে। সমাধিস্থলের শান্ত ও ভাবগম্ভীর পরিবেশ দর্শনার্থীদের মনে এক ভিন্ন অনুভূতির জন্ম দেয়। দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করা এই বীরদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এবং মুক্তিযুদ্ধের সেই ভয়াবহ দিনগুলোকে স্মরণ করতে প্রতিদিন বহু মানুষ এখানে আসেন। ঐতিহাসিক এই স্থানটি লেংগুড়াকে এক বিশেষ মাত্রা দিয়েছে, যা একে শুধু একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবেই নয়, বরং একটি ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ স্থান হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করেছে।

আদিবাসী জীবন ও সংস্কৃতি

লেংগুড়ার পর্যটনে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে এখানকার আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি। এই অঞ্চলে গারো ও হাজং সম্প্রদায়ের মানুষের বসবাস। তাদের সহজ-সরল জীবনযাপন, বৈচিত্র্যময় পোশাক, খাদ্যাভ্যাস এবং উৎসব-পার্বণ পর্যটকদের বিশেষভাবে আকর্ষণ করে। তাদের তৈরি হস্তশিল্পের বিভিন্ন সামগ্রী পর্যটকদের জন্য অনন্য স্যুভেনিয়ার হতে পারে। আদিবাসী সংস্কৃতির এই সান্নিধ্য লেংগুড়া ভ্রমণকে আরও বেশি অর্থবহ করে তোলে।

যাতায়াত ও থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা

ঢাকা থেকে লেংগুড়া সরাসরি বাসেও আসতে পারেন, এখন অনেক বাস ঢাকা থেকে লেংগুড়া আসে।( যারা নেত্রকোনা হয়ে আসবেন) ঢাকা থেকে নেত্রকোনা, মহাখালী বাস টার্মিনাল থেকে বিভিন্ন পরিবহনের বাসে করে নেত্রকোনা যাওয়া যায়। নেত্রকোনা শহর থেকে বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা মোটরসাইকেলে করে কলমাকান্দা উপজেলায় যেতে হবে। কলমাকান্দা থেকে আবার স্থানীয় পরিবহনে (মোটরসাইকেল বা অটোরিকশা) করে লেংগুড়া পৌঁছানো যায়। পুরো রাস্তাটিই এখন আগের চেয়ে অনেক উন্নত, তবে কলমাকান্দা থেকে লেংগুড়া পর্যন্ত যাওয়ার পথটি গ্রামীণ এবং মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর।

লেংগুড়াতে থাকার জন্য এখনো বড় কোনো হোটেল গড়ে ওঠেনি। তবে কলমাকান্দা উপজেলা সদরে সরকারি ডাকবাংলো এবং কিছু সাধারণ মানের আবাসিক হোটেল রয়েছে। লেংগুড়া বাজার এবং তার আশেপাশে কিছু স্থানীয় খাবারের হোটেল আছে, যেখানে ঘরোয়া পরিবেশে টাটকা খাবারের স্বাদ পাওয়া যায়।

উপসংহার

প্রকৃতি, ইতিহাস আর সংস্কৃতির এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটেছে লেংগুড়াতে। গঙ্গেরসরি নদীর স্বচ্ছ জল, মমিনের টিলার মনোরম দৃশ্য, সাত শহীদের সমাধির ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট এবং আদিবাসী জীবনের বৈচিত্র্য—সব মিলিয়ে লেংগুড়া পর্যটকদের জন্য এক অফুরন্ত আকর্ষণের ভান্ডার। সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এই অঞ্চলের পর্যটন পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা গেলে লেংগুড়া নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে। যারা যান্ত্রিক জীবন থেকে সাময়িক মুক্তি পেতে চান এবং প্রকৃতির কাছাকাছি থেকে ইতিহাসের ছোঁয়া পেতে চান, তাদের জন্য লেংগুড়া এক অবশ্য গন্তব্য।

25/07/2025

নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার লেংগুড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত একটি শান্ত ও সমৃদ্ধ গ্রাম গোড়াগাঁও। সবুজে ঘেরা এই গ্রামটি মূলত কৃষিনির্ভর। এখানকার উর্বর মাটি আর মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রম গোড়াগাঁওকে দিয়েছে সোনালী ফসলের প্রাচুর্য। শিক্ষার আলোয় আলোকিত এই গ্রামে রয়েছে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি উচ্চ বিদ্যালয়, যা আগামী প্রজন্মকে গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

ভৌগোলিক অবস্থান ও জনসংখ্যা: গোড়াগাঁও গ্রামটি লেংগুড়া ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এর পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ছোট-বড় খাল-বিল যা এই অঞ্চলের কৃষিকাজে সেচের প্রধান উৎস। গ্রামের অধিকাংশ মানুষই বাঙালি এবং তাদের প্রধান ভাষা বাংলা। এখানকার জনসংখ্যা মুসলিম এবং হাজং সম্প্রদায়ের।

শিক্ষা ব্যবস্থা: শিক্ষার প্রসারে গোড়াগাঁও গ্রাম পিছিয়ে নেই। গ্রামে অবস্থিত "গোড়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়" শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার ভিত্তি স্থাপন করে চলেছে। পাশাপাশি, "উত্তর গোড়াগাঁও উচ্চ বিদ্যালয়" এই অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত শিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দুটি গ্রামের এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে, যা এলাকার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে।

কৃষি ও অর্থনীতি: গোড়াগাঁও গ্রামের অর্থনীতি মূলত কৃষির উপর নির্ভরশীল। এখানকার মাটি অত্যন্ত উর্বর হওয়ায় ধান প্রধান ফসল হিসেবে চাষ করা হয়। আমন ও বোরো ধানের বাম্পার ফলন এই অঞ্চলের মানুষের প্রধান আয়ের উৎস। ধান ছাড়াও পাট, গম এবং বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি চাষ করা হয়। পুকুর থাকায় মৎস্য চাষও এখানকার মানুষের একটি গুরুত্বপূর্ণ পেশা। এছাড়াও, গবাদিপশু পালন এবং হাঁস-মুরগির খামার গ্রামের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদান রাখে।

জীবনযাত্রা ও সংস্কৃতি: গোড়াগাঁও গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা সরল ও সৌহার্দ্যপূর্ণ। কৃষিকাজই তাদের দৈনন্দিন জীবনের মূল চালিকাশক্তি। এখানকার মানুষ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব অত্যন্ত জাঁকজমকের সাথে পালন করে। জারি, সারি, বাউল গানের মতো লোক সংস্কৃতির চর্চাও এই গ্রামে দেখা যায়।

সমস্যা ও সম্ভাবনা: অন্যান্য গ্রামের মতো গোড়াগাঁও গ্রামেও কিছু সমস্যা বিদ্যমান। বর্ষাকালে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে অনেক সময় নিচু এলাকা প্লাবিত হয়, যা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করে। উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবও গ্রামের মানুষের একটি বড় সমস্যা। তবে, সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে এই সকল সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হলে গোড়াগাঁও গ্রামটি অত্র অঞ্চলের একটি আদর্শ গ্রাম হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে।

কৃষি, শিক্ষা ও সংস্কৃতির এক অপূর্ব সমন্বয়ে গোড়াগাঁও গ্রাম এক অপার সম্ভাবনার নাম। যথাযথ পরিকল্পনা ও তার সঠিক বাস্তবায়নের মাধ্যমে এই গ্রামটিকে আরও সমৃদ্ধির

09/06/2025

"ম্যাপেল স্ট্রিটে সূর্যোদয়"

ভোরের প্রথম আলো এমার ছোট শোবার ঘরের পর্দা ভেদ করে আস্তে আস্তে ঢুকে পড়ল, তার লেপের উপর সোনালী রেখা এঁকে দিল। অ্যালার্ম আসার আগেই রবিনের মৃদু কিচিরমিচির তার কানে ভেসে এলো। সে লম্বা হয়ে গেল, হাই তুলল এবং ধীরে ধীরে উঠে বসল, সেই শান্ত নীরবতা উপভোগ করতে লাগলো যা কেবল ভোরের আলোই আনতে পারে।

নিচে, তার বাবা ইতিমধ্যেই রান্নাঘরে ছিলেন, তাজা কফি এবং ঝলমলে ডিমের সুগন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছিল। "শুভ সকাল, রোদ," তিনি হাসতে হাসতে বললেন, খালি পায়ে প্যাডিং করার সময়, এখনও তার চোখ থেকে ঘুম ঘষছে।

এমা জানালার পাশে বসে কোকোর একটি উষ্ণ মগ কোঁকড়া করে বসে রইল, ম্যাপেল স্ট্রিটের ঘুমন্ত পৃথিবী ধীরে ধীরে জীবন্ত হয়ে উঠছে তা দেখছিল। মিসেস জেনিংস পাশের বাড়িতে তার ডেইজিগুলিকে জল দিচ্ছিলেন। একজন জগিংকারী সোনালী রঙের একটি রিট্রিভার টেনে, জিভ দিয়ে লাফালাফি করে এবং লেজ নাড়াচ্ছিল। বেকারি ট্রাকটি গলি ধরে গর্জন করে এগিয়ে গেল, দারুচিনি রোলের মৃদু, সুস্বাদু গন্ধ রেখে।

শনিবার ছিল, যার অর্থ ছিল কোনও স্কুল নেই — সামনে কেবল একটি দীর্ঘ, অলস দিন, সাইকেল চালানো, নোটবুকে স্কেচ আঁকা, এবং সম্ভবত তার সেরা বন্ধু মিয়ার সাথে হ্রদে ভ্রমণ।

সূর্য যত উপরে উঠছিল, রান্নাঘর আলো এবং হাসিতে ভরে উঠছিল, এমা তার বুকে এক শান্ত আনন্দ অনুভব করেছিল। কখনও কখনও, সে ভাবত, সেরা অ্যাডভেঞ্চারগুলি কেবল এক কাপ কোকো এবং একটি সুন্দর সকাল দিয়ে শুরু হয়।

08/06/2025

শেষ বেঞ্চ

একটি ছোট গ্রামের কাছেই, নদীর পাশে অবস্থিত একটি শান্ত স্কুল, লেংগুড়া উচ্চ বিদ্যালয়।সে খানে অনায়া নামে একটি মেয়ে এবং কবির নামে একটি ছেলে পড়তো । তারা খুব বেশি কথা বলত না, কিন্তু প্রতিদিন, তারা তাদের অষ্টম শ্রেণীর ক্লাসরুমে একই শেষ বেঞ্চে থাকত।

কবির চুপচাপ ছিল, সবসময় তার নোটবুকে ছবি আঁকত , অন্যদিকে অনায়া প্রশ্নে ভরা থাকত, প্রায়শই ক্লাসে হাত তুলত। সব দিক থেকেই বিপরীত। কিন্তু কোন না কোনভাবে, তারা একে অপরের সম্পর্কে ছোট ছোট জিনিসগুলি লক্ষ্য করত - যখন সে ঘাবড়ে যেত তখন সে কীভাবে তার চুল কানের পিছনে আটকে রাখত, এবং যখন সে ভেবেছিল যে কেউ তাকাচ্ছে না তখন সে কীভাবে হাসত।

একদিন, দুপুরের খাবারের বিরতির সময়, অনায়া টেবিলে একটি ছোট কাগজের নোট রেখে গেল:

"তোমার আঁকাগুলি সুন্দর। তুমি কেন কখনও সেগুলো দেখাও না?"

কবির এটি খুঁজে পেল, চারপাশে তাকাল এবং প্রথমবারের মতো সরাসরি তার দিকে হাসল। পরের দিন, সে তার জন্য একটি ছবি রেখে গেল - একটি গাছের নীচে বই পড়ার একটি স্কেচ। সে লজ্জা পেল, কিন্তু কিছুই বলল না।

সপ্তাহ কেটে গেল, আর কাগজের নোটগুলো নীরব কথোপকথন, গোপন কথা ভাগাভাগি এবং নীরব সমর্থনে পরিণত হল। তারা কখনও "আমি তোমাকে পছন্দ করি" এই কথাটি বলেনি - কিন্তু তাদের নিজেদের লাজুক ভঙ্গিতে, তারা দুজনেই জানত।

স্কুলের শেষ দিনে, যখন তারা বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত ছিল, অনিয়া কবিরের হাতে একটি ভাঁজ করা কাগজ দিল। সে কাগজটি খুলে একটি ছবি খুঁজে পেল - শেষ বেঞ্চে বসে থাকা তাদের দুজনের হাসিমুখ।

সে ফিসফিস করে বলল, "তাহলে তুমি ভুলে যাও নি।"

কবির হেসে উত্তর দিল, "আমি কীভাবে পারব?"

08/06/2025

"ঝাজড় অফিসের সামনের মাঠ "

প্রতি শুক্রবার বিকাল ৫টায়, পাপিয়া অফিসের মাঠের ধারে পুরনো কাঠের বেঞ্চে বসে থাকত, তার কোলে একটা ব্যাগ আর হাতে মোবাইল । সে সেখানে ছিল না, যদিও দৃশ্যটা সুন্দর ছিল। সে সেখানে ছিল কারণ এটি ছিল তার প্রিয় জায়গা।

দুই বছর আগে, সবুজের সাথে তার দেখা হয়েছিল দুর্ঘটনাক্রমে। পার্কটি পূর্ণ হলে সে তাকে আসনটি দিয়েছিল, এবং তারা ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে শেষ করেছিল। সপ্তাহের পর সপ্তাহ, তারা সেই বেঞ্চে ফিরে আসে, চিন্তাভাবনা, নীরবতা, হাসি - এবং অবশেষে, ভালোবাসা ভাগ করে নেয়।

কিন্তু একদিন সকালে, সবুজ আসেনি। পরের দিনও আসেনি। পরের দিনও আসেনি।

জীবন তাকে কেড়ে নিয়েছিল - একটি দুর্ঘটনা, দ্রুত এবং নিষ্ঠুর।

তবুও, পাপিয়া ফিরে এসেছিল। দুঃখের কারণে নয়, কৃতজ্ঞতার কারণে। সেই বেঞ্চ তাকে বিরল কিছু দিয়েছে।

এক শুক্রবার , যখন সে চুপচাপ বসে ছিল, তখন একজন লোক পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, তারপর থেমে গেল।

"এই আসনটি কি দখলে?" সে মৃদুস্বরে জিজ্ঞাসা করল।

পাপিয়া চমকে উঠে তাকালো। তার চোখ সবুজের মতো ছিল - একই রকম নয়, কিন্তু একই রকম দয়ালু।

সে মৃদু হেসে তার পাশের খালি জায়গায় হাত বুলিয়ে দিল।

07/06/2025

শুভ সকাল বন্ধুরা

06/06/2025

মা কত আপন শব্দ,পৃথিবীতে যদি বিনা স্বার্থে যে ভালোবাসে তা হলো, মায়ের মতোন এদুনিয়াতে কেউ এতো ভালোবাসবে না। নিজের শরীরের চামড়া কেটে যদি একজোড়া জুতা বানিয়ে দেয়া হয় তবুও মায়ের ঋণ শোধ হবে না।
আমার মা আমাকে অনেক ভালোবাসতো,
আমার জন্য বিভিন্ন ধরনের খবার রান্না করতো (আমার পছন্দের সব খাবার) আমি একটু আচার খেতে পছন্দ করতাম, আমার মা আমার জন্য হরেক রকমের আচার তৈরি করে রাখতো। আমার মা ছিলো আমার বন্ধুর মতো সবকিছু আমার মাকে শেয়ার করতাম, কাওকে পছন্দ হলেও মাকে বলতাম। আমার মা আমার জন্য খাবার সামনে রেখে রাত পর্যন্ত আমার জন্য অপেক্ষা করতো কখন আমি আসবো, কখন আমাকে খাওয়াবে, আমি বড় হয়েছে গিয়েছি তবুও আমার মা আমার জন্য বাচ্চাদের মতো বিভিন্ন খাবার কিনে আনতো আমাকে সামনে বসিয়ে খাওয়াতো। এখনও আমার মায়ের ডাক আমার কানে ভেসে বেড়ায়। মাঝে মাঝে বলি কেনো আমাকে একা করে চলে গেলে, রাতে বাড়ি ফিরে আর মা বলে ডাকতে পারি না। বলতে পারি না মা দরজাটা খুলো আমি এসেছি।
আমার মায়ের ভালোবাসার স্মৃতিতে

আমার মা ছিলেন আমাদের ঘরের হৃদয়—কোমল, শক্তিশালী এবং অসীম প্রেমময়। তিনি জিজ্ঞাসা না করেই দান করেছিলেন, বিচার না করেই নির্দেশনা দিয়েছিলেন এবং শর্ত ছাড়াই ভালোবাসতেন। তার উষ্ণতা, দয়া এবং শান্ত শক্তি আমাকে গড়ে তুলেছিল। যদিও তিনি এই পৃথিবীতে আর আমার সাথে নেই, তার উপস্থিতি তার শেখানো প্রতিটি পাঠে এবং আমরা ভাগ করে নেওয়া প্রতিটি স্মৃতিতে বেঁচে থাকে। আমি সবসময় তার ভালোবাসা আমার সাথে বহন করব।

আল্লাহ তুমি আমার মাকে জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থান দান করো
আমিন

31/05/2025

আকিকা অনুষ্ঠানে
পূর্বাচল সিটি

Kabir

31/08/2025

30/08/2025

18/08/2025

01/08/2025

25/07/2025

09/06/2025

08/06/2025

08/06/2025

07/06/2025

06/06/2025

31/05/2025

Address

Website

Alerts

Contact The Business

Shortcuts

Share

Category